রেড ২ | |
---|---|
পরিচালক | ডিন প্যারিসট |
প্রযোজক | লরেনজো ডি বোনাভেনটোরা |
চিত্রনাট্যকার | জন হোবার এরিক হোবার |
উৎস | ওয়ারেন এলিস কলি হ্যামনার কর্তৃক রেড |
শ্রেষ্ঠাংশে | ব্রুস উইলিস জন ম্যাকোভিচ ম্যারি লুইস পার্কার ক্যাথেরিন জেটা জোন্স বিউং হান লি অ্যান্থনি হপকিন্স হেলেন মিরেন |
সুরকার | অ্যালান সিলভাস্ট্রি |
চিত্রগ্রাহক | এনরিক চেদিয়াক |
সম্পাদক | ডন জিমারম্যান |
প্রযোজনা কোম্পানি | ডিসি এন্টারটেইনমেন্ট ডি বোনাভেনটোরা পিকচার্স |
পরিবেশক | সামিট এন্টারটেইনমেন্ট লায়ন্সগেট |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১১৬ মিনিট[১] |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $ ৮ কোটি ৪০ লক্ষ[২] |
আয় | $ ১৪ কোটি ৮১ লক্ষ[২] |
রেড ২ ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি অ্যাকশন-কমেডি ঘরানার মার্কিন চলচ্চিত্র। এর আগের কিস্তি রেড চলচ্চিত্রটি ২০১০ সালে মুক্তি প্রায়। চলচ্চিত্রটি ওয়ারেন এলিস ও কলি হ্যামনার লিখিত একই শিরোনামের কমিক বইয়ের ছায়া অবলম্বনে নির্মিত। এতে অভিনয় করেছেন ব্রুস উইলিস, অ্যান্থনি হপকিন্স, ক্যাথেরিন জেটা জোন্স, জন ম্যাকোভিচ, হেলেন মিরেন সহ আরো অনেকে। ছবিটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ডিন প্যারিসট এবং চিত্রনাট্য লেখেন জন হোবার ও এরিক হোবার। রেড ২ চলচ্চিত্রটি ১৯ জুলাই, ২০১৩ সালে মুক্তি পায়।
রেড ২ চলচ্চিত্র শুরু হয় তার আগের কিস্তির ৩ বছর পরের ঘটনাপ্রবাহ দিয়ে। ফ্রাঙ্ক মূসা (ব্রুস উইলিস) তার বান্ধবী সারাহ রসের সাথে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এসময় মার্ভিন বগস তার সাথে দেখা করে বলে যে এখনও তাদেরকে মারার জন্য কেউ পিছু নিয়েছে। কিন্তু ফ্রাঙ্ক তার কথা খারিজ করে দেয়। মার্ভিন ফ্রাঙ্ককে বারবার অনুরোধ করে। তা সত্ত্বেও ফ্রাঙ্ক তার কথায় রাজি না হওয়ায়, মার্ভিন তার নিজের পথে রওনা হয়। হঠাৎ এসময় তার গাড়ি বিস্ফোরণ হয়। ফ্রাঙ্ক বিশ্বাস করতে পারে না যে মার্ভিন মারা গেছে। কিন্তু তার বান্ধবী সারার অনুরোধে মার্ভিনের শেষকৃত্যে ফ্রাঙ্ক অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠান শেষ হবার পরে, ফ্রাঙ্কের সাথে কিছু লোক দেখা করতে আসে। তারা তাকে সরাকারী এজেন্ট হিসাবে পরিচয় দেয় এবং তাকে ইয়াংকি হোয়াইট ফ্যাসিলিটিতে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালে, জ্যাক হর্টন (নীল ম্যাকডোনা) একটি সশস্ত্র সোয়াট টীম সমেত ফ্যাসিলিটিতে প্রবেশ করে এবং সেখানকার অধিকাংশ কর্মচারীদের মেরে ফেলে। তারপরে সে ফ্রাঙ্ককে বলে যে সে কিছু প্রশ্নের উত্তর চায়। আর ফ্রাঙ্ক যদি উত্তর দিতে অস্বীকার করে তবে সারাকে নির্যাতন করা হবে। এসময় মার্ভিন আবির্ভূত হয়। দেখা যায় যে, সে আসলে মারা যায় নি। তারপরে মার্ভিনের সহায়তায় ফ্রাঙ্ক হর্টনের কাছ থেকে পালিয়ে যায়। তারপরে তারা সারাকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। মার্ভিন সব খুলে বলে ফ্রাঙ্ককে যে কেন তাদেরকে মারতে চায়। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন রাশিয়াতে গোপনে একটি নিউক্লিয়ার অস্ত্র নিয়ে যাবার জন্য একটি অপারেশন পরিচালিত হয়েছিল যার নাম ছিল ক্ল্যান্ডেস্টিন অপারেশন বা নাইটশেড। আর এই অপারেশনে যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্যে ফ্রাঙ্ক ও মার্ভিনের নামও তালিকাভুক্ত আছে। হর্টন বিশ্বের আর সব দেশের গোয়েন্দা সংস্থাদের বোঝাতে পেরেছে যে, ফ্রাঙ্ক ও তার সঙ্গী-সাথিরা আসলে সন্ত্রাসী এবং তাদেরকে যে কোন মূল্যে আটকাতে হবে। এসময় ভিক্টোরিয়া (হেলেন মিরেন) তাদেরকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে এমআই৬ তাকে তাদেরকে খুন করতে বলেছে। ইতিমধ্যে হর্টন পৃথিবীর সেরা আততায়ীদের একজন হান চো বাই (বিউং হান লি) এর সাথে যোগাযোগ করে এবং ফ্রাঙ্ক ও তার দলবলকে মেরে ফেলতে বলে। হান চোর সঙ্গে আগে থেকেই ফ্রাঙ্কের শত্রুতা ছিল। তাই সে রাজি হয়ে যায়।
ফ্রাঙ্ক, সারা ও মার্ভিন হানের উড়োজাহাজ চুরি করে প্যারিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয় "দ্য ফ্রগ" (ডেভিড থিউলিস) নামের এক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে। প্যারিসে যাওয়ার পরে ফ্রাঙ্কের সাথে রাশিয়ার গুপ্ত চর কাতিয়ার (ক্যাথেরিন জেটা জোন্স) সাক্ষাৎ হয়। কাতিয়া ও ফ্রাঙ্ক একে অপরকে ভালবাসত। কাতিয়াও নাইটশেড সমস্যার সমাধানে ফ্রান্সে "দ্য ফ্রগ" কে খুঁজতে এসেছে এবং ফ্রাঙ্কের সাথে হাত মেলায়। ফ্রগকে ধরার জন্য তারা পরিকল্পনা করে। ফ্রগ সে পরিকল্পনা বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় ফ্রাঙ্ক ও কাতিয়া তাকে ধরে ফেলে। অতঃপর সারার সহায়তায় ফ্রাঙ্ক ফ্রগের সিন্দুকের চাবি পায় যা পরবর্তীতে কাতিয়া ফ্রাঙ্ককে অজ্ঞান করে হাতিয়ে নেয়। কিন্তু মার্ভিন এধরনের সম্ভাবনার কথা আগে থেকেই বুঝতে পারে। তাই ফ্রাঙ্ক কাতিয়ার দেখা করার আগেই ফ্রাঙ্কের কাছে থাকা চাবি সে বদলে দেয়। পরে তারা সে চাবি দিয়ে ফ্রগের সিন্দুক খুলে কিছু দলিল-দস্তাবেজ দেখতে পায়। সেখান থেকে তারা জানতে পারে যে অপারেশন নাইটশেড বোমার জনক হলেন ডক্টর এডওয়ার্ড বেইলি (অ্যান্থনি হপকিন্স) যিনি একজন নামকরা পদার্থবিদ।
তারা আরো জানতে পারে যে এডওয়ার্ড বেইলি এখনও জীবিত আছেন। তাকে লন্ডনে মানসিকভাবে অসুস্থ অপরাধীদের জন্য তৈরি সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত একটি কারাগারে ৩২ বছর ধরে বন্দী রাখা হয়েছে। এদিকে ভিক্টোরিয়ার সাথে তাদের আচমকা দেখা হয় যা মার্ভিনই তাকে জানিয়েছিল ফ্রাঙ্ককে কোন কিছু না জানিয়ে। ভিক্টোরিয়া তাদেরকে মেরে ফেলা হয়েছে এমন ভুয়া প্রমাণ তৈরি করে এবং বেইলি যে কারাগারে আছে সেখানে ফ্রাঙ্ককে নিয়ে প্রবেশ করে। সেখানে তারা বেইলির দেখা পায়। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া ঔষধে বেইলি অতিক্রিয়তায় ভুগছিল। তাদের কোন প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর সে দিতে পারে না। তাই তারা তাকে মার্ভিনের সেফহাউজে নিয়ে যায়। ঔষধের ক্রিয়া খানিকটা কেটে গেলে বেইলির মনে পড়ে যে বোমাটা এখনও মস্কোতেই আছে। অতঃপর তারা মস্কোতে যায়। সেখানে যাবার পরে বেইলি বলে যে বোমাটা ক্রেমলিনে লুকানো আছে। তারা ক্রেমলিনে গোপনে প্রবেশ করে বোমাটাকে খুঁজে বের করে। দেখা যায় যে বোমটার জ্বালানী হল রেড মার্কারি যা থেকে কোন তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায় না। কাজেই সেটা কখনো চিহ্নিত হতে পারে নি। যখন তারা বোম সমেত বাইরে আসতে চায়, কাতিয়া তাদের পথ আটকায়। ফ্রাঙ্ক কাতিয়াকে বুঝিয়ে তাকে তার পক্ষে নিয়ে আসে। তারপরে তারা ক্রেমলিন থেকে পালিয়ে যায় আর তাদের জয় উদ্যাপন করে। এদিকে ভিক্টোরিয়াকে এমআই৬ কর্তৃপক্ষ ফ্রাঙ্ক ও তার সাথিদের খুন না করতে পারার কারণে কারাগারে প্রেরণ করে। সেখানে সে বোমার আসল রহস্য জানতে পারে এবং কারাগার থেকে পালায়। এর পরে ভিক্টোরিয়া ফ্রাঙ্ককে ফোন করে জানায় যে বেইলিকে এতদিন বন্দী করে রাখার কারণ হল সে এই বোমাটাকে বিস্ফোরিত হতে দেখতে চায়। বেইলি ফ্রাঙ্ককে বন্দুকের মুখে জিম্মি করে আর স্বীকার করে যে সে বোমাটাকে বিস্ফোরণ করতে চায়। আর এ বিষয়ে হর্টন ও যুক্তরাষ্টের সাথে তার চুক্তি হয়েছে। বেইলি বোমা নিয়ে চলে আসার আগে কাতিয়াকে গুলি করে যাতে মনে হয় ফ্রাঙ্ক কাতিয়াকে খুন করেছে। পরবর্তীতে হর্টন বেইলির সাথে চুক্তিভঙ্গ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বন্দী করে। কিন্তু বেইলি তার সৃষ্ট নার্ভ গ্যাস দ্বারা হর্টন বাদে উড়োজাহাজের সবাইকে মেরে ফেলে। তারপরে সে লন্ডনে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসে যায়। ফ্রাঙ্ক তাকে পিছু করার সময় হান তার ওপর চড়াও হয়। কিছুক্ষণ হাতাহাতির পরে ফ্রাঙ্ক হানকে বোঝাতে সক্ষম হয় আর বলে যে তাদের সাথে যোগ দিয়ে যেন বেইলিকে আটকাতে সাহায্য করে। অতঃপর পাঁচজন মিলে পরিকল্পনা করে কীভাবে বেইলিকে আটকিয়ে বোমাটাকে উদ্ধার করা যায়।
পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সারাহ প্রথমে ইরানীয় দূতকে প্রলুব্ধ করে তাকে জিম্মি বানায়। মার্ভিন ইরানে যাবার জন্য ভিসাপ্রার্থী হিসাবে দূতাবাসে যায় এবং গোসলখানার পানির নল ত্রুটিযুক্ত করে। আর তা মেরামত করার জন্য সবাই ছদ্মবেশে দূতাবাসে ঢোকে। সারাহ ইরানীয় দূতকে বন্দুকের মুখে বোমার অবস্থানের কথা জেনে নেয়। সেখানে যাবার পরে তারা দেখতে পায় বেইলি আগেই বোমার টাইমার সচল করে গেছে এবং হর্টনকে মেরে ফেলেছে। এরপরে তারা দূতাবাসের প্রহরীদের দ্বারা চিহ্নিত হয়, এবং তাদের সাথে বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের এক ফাঁকে বেইলি সারাহকে উঠিয়ে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ফ্রাঙ্ক, মার্ভিন, হান ও ভিক্টোরিয়া বেইলির পিছু নেয়। অনেক চেষ্টার পরেও মার্ভিন বোমাটাকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে না। শেষে ফ্রাঙ্ক একাই বোমার কেস নিয়ে হানের উড়োজাহাজে উঠে বেইলির মুখোমুখি হয়। বেইলি সারাহকে ছেড়ে দিয়ে তাদেরকে উড়োজাহাজ থেকে জোর করে নামিয়ে দেয়। পরে সবাই একত্রে মিলিত হয় এবং মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এদিকে বেইলির বিমান আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পরে ব্যাপকভাবে বিস্ফোরিত হয়। ফ্রাঙ্ক তখন সবাইকে বলে যে সে আগেই বোমাটাকে বিমানের বহির্গমনের রাস্তার একটি খাঁজে লুকিয়ে রেখেছিল আর খালি বোমার কেস নিয়ে বেইলির মুখোমুখি হয়েছিল। সর্বশেষে দেখা যায় যে সারাহ, ফ্রাঙ্ক ও মার্ভিন ক্যারাকাসে একটি মিশনে অংশ নিচ্ছে।