রেবতী | |
---|---|
জন্ম | আশা কেলুন্নি নয়ার ৮ জুলাই ১৯৬৬ |
পেশা | অভিনেত্রী
|
কর্মজীবন | ১৯৮৩-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুরেশ চন্দ্র মেনন (বি. ১৯৮৬; বিচ্ছেদ. ২০১৩)[১][২] |
সন্তান | ১ |
আত্মীয় | |
পুরস্কার | নিচে দেখুন |
ওয়েবসাইট | revathy |
আশা কেলুন্নি নয়ার (জন্ম ৮ জুলাই ১৯৬৬; যিনি পেশাগতভাবে রেবতী নামে পরিচিত) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি তামিল ও মালয়ালম চলচ্চিত্রে কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি তিনটি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ছয়টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন।
রেবতী একজন প্রশিক্ষিত ভারতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। তিনি সাত বছর বয়স থেকে নৃত্য শিখেন এবং ১৯৭৯ সালে চেন্নাইয়ে তার নৃত্য পরিবেশনার অভিষেক ঘটে। ১৯৮৩ সালে তামিল ভাষার মন বাসনাই চলচ্চিত্র দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে। এই কাজের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার দক্ষিণ অর্জন করেন। তিনি তেবর মাগান (১৯৯২) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে,[৩] মিত্র, মাই ফ্রেন্ড (২০০১) চলচ্চিত্র প্রযোজনার জন্য শ্রেষ্ঠ ইংরেজি ভাষার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে[৪] এবং রেড বিল্ডিং হোয়্যার দ্য সান সেটস চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পারিবারিক কল্যাণে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[৫]
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি রেবতী বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বন্যান, অ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন, ট্যাঙ্কার ফাউন্ডেশন ও বিদ্যাসাগর। তিনি চেন্নাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবসহ কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রেবতী ভারতের কেরল রাজ্যের কোচিনে (বর্তমান কোচি) জন্মগ্রহণ করেন। জন্মনাম আশা কেলুন্নি নয়ার। তার পিতা মালঙ্ক কেলুন্নি নয়ার ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর এবং মাতা ললিতা কেলুন্নি।[৬] তার পিতার জন্মস্থান পালক্কাড়ের কল্লাদিক্কড়। মালয়ালম অভিনেত্রী গীতা বিজয়ন ও নিরঞ্জনা অনুপ তার আত্মীয়।[৭]
বিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি একটি ফ্যাশন শোতে অংশগ্রহণ করেন। এই শোয়ের দলগত ছবি তোলা হয় এবং একটি ছবি একটি জনপ্রিয় তামিল পত্রিকার প্রচ্ছদের জন্য নির্বাচিত হয়। সেই ছবিটি ছিল রেবতীর ছবি। ছবিটি পরিচালক পি. ভারতীরাজার নজর কাড়ে, তিনি সে সময় তার নতুন চলচ্চিত্র মন বাসনাই-এর জন্য নতুন নায়িকার সন্ধান করছিলেন।[৮]
১৯৮৩ সালে পি. ভারতীরাজার তামিল ভাষার মন বাসনাই দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর। এই চলচ্চিত্রে গ্রাম্য তরুণী মুতুপেচি চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ফিল্মফেয়ার বিশেষ পুরস্কার দক্ষিণ অর্জন করেন। একই বছর ভারতনের পরিচালনায় মালয়ালম ভাষার কাত্তাতে কিলিক্কুড়ু চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি কেরালায় সফলতা অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ মালয়ালম অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মস ফ্যান অ্যাসোসিয়েট পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত তৃতীয় চলচ্চিত্র বাপু পরিচালিত তেলুগু ভাষার সিতাম্মা পেল্লি। এরপর তিনি রজনীকান্তের বিপরীতে জে. মহেন্দ্রনের তামিল ভাষার কাই কোডুক্কুম কাই চলচ্চিত্রে একজন অন্ধ ও ধর্ষণ থেকে বেঁচে যাওয়া নারী সীতা চরিত্রে অভিনয় করেন।[৯]
কাই কোডুক্কুম কাই চলচ্চিত্রের সফলতার পর রেবতী ভারতীরাজার পুন্ডুমাই পেন চলচ্চিত্রে সীতা চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি সুব্রমন্যিয়া ভারতীর পুডুমাই পেন কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত। পৌরণিক সীতার মত এই চলচ্চিত্রে সীতাকে তার সতীত্বের পরীক্ষা দিতে দেখা যায় এবং রেবতী পুরুষ তান্ত্রিক সমাজের প্রত্যাশাকে অস্বীকার করা নারী চরিত্রে প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। একই বছর তিনি আর. সুন্দরাজনের তামিল ভাষার বৈদেহি কাতিরুন্তাল চলচ্চিত্রে একজন মদ্যপ পিতার সাথে বসবাসরত যুবতী ও একাকী বিধবা চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রের "আজাগু মালার আদা" গানে তার ভারতনাট্যম নৃত্য সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। চলচ্চিত্রটি ব্যাপক সফলতা লাভ করে এবং পরে এটি তেলুগু ও কন্নড় ভাষায় পুনর্নির্মিত হয়।[৯]
রেবতী ১৯৮৬ সালে চিত্রগ্রাহক ও পরিচালক সুরেশ চন্দ্র মেননের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মতের পার্থক্যের জন্য তারা ২০০২ সাল থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন এবং ২০১৩ সালে ২৩শে এপ্রিল চেন্নাই অতিরিক্ত পারিবারিক আদালতে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়।[১০] এই দম্পতির কোন সন্তান নেই। তবে ২০১৮ সালে তিনি প্রকাশ করেন যে ইন ভাট্রো ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে জন্ম লাভ করা মাহী নামে তার এক কন্যা সন্তান রয়েছে।[১১]