লংৎলাই জেলা | |
---|---|
মিজোরামের জেলা | |
![]() মিজোরামে লংৎলাইয়ের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মিজোরাম |
সদরদপ্তর | লংৎলাই |
তহশিল | ৪ |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | মিজোরাম |
• বিধানসভা আসন | ১. তুইচং ২. পূর্ব লংৎলাই aও ৩. পশ্চিম লংৎলাই |
আয়তন | |
• মোট | ২,৫৫৭ বর্গকিমি (৯৮৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,১৭,৮৯৪ |
• জনঘনত্ব | ৪৬/বর্গকিমি (১২০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২০,৮৩০ |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৬৫.৮৮ |
• লিঙ্গানুপাত | ৯৪৫ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ২৫৫৮ মিমি |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
উত্তর পূর্ব ভারতে অবস্থিত মিজোরাম রাজ্যের আটটি জেলার মধ্যে একটি জেলার নাম লংৎলাই জেলা৷ জেলাটি বাংলাদেশ, লুংলেই জেলা, সাইহা জেলা ও মায়ানমারের সাথে সীমানা ভাগ করে৷ জেলাটির জেলাসদর লংৎলাই শহরে অবস্থিত৷
জেলাটির অধিবাসীরা মুলত বিভিন্ন জনজাতিভুক্ত তাদের মধ্যে পাঙ, লাই ও চাকমা উল্লেখযোগ্য৷ এরা মিজোরাম রাজ্যে সংখ্যালঘু জনজাতির অন্তর্ভুক্ত৷ অধিকাংশ লোক গ্রামীণ জীবনযাত্রার সঙ্গে যুক্ত এবং প্রধানত কৃৃষিনির্ভর৷ চামদুর উপত্যকা ব্যতীত সমগ্র জেলাটি পর্বতসংকুল৷
বর্তমান ভেংপুইতে লাই সম্প্রদায়ের প্রধান হাইহ্মুঙ্গা লঞ্চেউ লংৎলাই গ্রামটি পত্তন ঘটান ১২৮৭ বঙ্গাব্দে (১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে)৷ পার্শ্ববর্তী কালাদান নদীর ওপর নৌকাবাইচের সৌন্দর্যের জন্য জায়গাটির নাম হয় লংৎলাই৷ শব্দটি দুটি ভিন্ন শব্দের সমন্বয়ে গঠিত, লং অর্থ নৌকা ও ত্লাই অর্থ কবলিত বা প্রাচুর্য৷[১] পরে সদরের নামে জেলাটির নাম রাখা হয়েছে৷
খ্রিস্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইংরেজ শাসন চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত এই জেলাটি গ্রামভিত্তিক ছোটো ছোটো মোড়লদের দ্বারা পরিচিলিত হত৷[২] ১২৯৫ বঙ্গাব্দে (১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দ) ফুংকাহ গ্রামের প্রধান সমীক্ষারত ব্রিটিশবাহিনীর ওপর আক্রমণ করলে লেফ্টেন্যান্ট স্টেওয়ার্টসহ চারজন মারা যান৷ ঐ একই বছরে তারা লংৎলাই অঞ্চলকে বাংলা প্রেসিডেন্সির দক্ষিণ লুসাই পাহাড় বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করেন৷[২] ১৩০৫ বঙ্গাব্দে (১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দ) উত্তর ও দক্ষিণ লুসাই পাহাড় বিভাগকে একত্রিত করে লুসাই পাহাড় জেলা গঠন করা হয় ও তা আসাম প্রদেশের একটি জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়৷ ১৩২৬ বঙ্গাব্দে (১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ) ভারত সরকার ১৯১৯ আইনানুসারে লুসাই পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী কিছু পাহাড়ি জেলাগুলিকে "পিছিয়ে পড়া এলাকা" ও ১৩৪২ বঙ্গাব্দে (১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ) "বহির্ভূত এলাকা" নামে উল্লেখ করা হয়৷ ১৩৫৯ বঙ্গাব্দে (১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দ) জেলাটির স্বায়ত্তশাসন অধিকির পুরোপুরিভাবে খর্ব করা হয়৷ ১৩৮০ বঙ্গাব্দে (১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ) মিজোরাম রাজ্য গঠনের গঠনের সময় সেই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয় ও ১৩৯৪ বঙ্গাব্দে (১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দ) রাজ্য পুণর্গঠনকালে জেলাটির নতুন নামকরণ করা হয়৷[২] তার আগে পর্যন্ত এটি ছিম্তুইপুই জেলার অংশ ছিলো৷ লংৎলাই অংশঠি সমগ্র জেলার চারটি প্রশাসনিক উপখন্ড নিয়ে গঠিত ছিলো৷[২] ২৪ শে কার্তিক ১৪০৫ বঙ্গাব্দে (১১ই নভেম্বর ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ) ছিম্তুইপুই জেলা থেকে নতুন লংৎলেই জেলা গঠন করা হয়৷[২][৩]
লংৎলাই জেলার উত্তরে মিজোরাম রাজ্যের লুংলেই জেলা, উত্তর পূর্বে(ঈশান) মায়ানমার রাষ্ট্র, দক্ষিণ পূর্বে(অগ্নি) মিজোরাম রাজ্যের সাইহা জেলা, দক্ষিণে মায়ানমার রাষ্ট্র ও পূর্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র অবস্থিত৷[৪]
মোট জনসংখ্যা ৭৩৬২০(২০০১ জনগণনা) ও ১১৭৮৩৪(২০১১ জনগণনা)৷ রাজ্যে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্রমাঙ্ক ৮ টি জেলার মধ্যে ৪র্থ৷ মিজোরাম রাজ্যের ১০.৭৪% লোক লংৎলাই জেলাতে বাস করেন৷ জেলার জনঘনত্ব ২০০১ সালে ২৯ ছিলো এবং ২০১১ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৬ হয়েছে জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০০১-২০১১ সালের মধ্যে জনসংখ্যা বৃৃদ্ধির হার ৩৪.৮৭%, যা ১৯৯১-২০১১ সালের ৬০.১৪% বৃদ্ধির হারের থেকে কম৷ জেলাটিতে লিঙ্গানুপাত ২০১১ অনুযায়ী ৯৪৫(সমগ্র) এবং শিশু(০-৬ বৎ) লিঙ্গানুপাত ৯৬৭৷[৫]
লংৎলাই জেলার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ২০১১ [৬]
জেলাটির স্বাক্ষরতা হার ৬৭.১৬%(২০০১) তথা ৬৫.৮৮%(২০১১)৷ পুরুষ স্বাক্ষরতার হার ৭২.৭৪%(২০০১) তথা ৭৪.১৬%(২০১১)৷ নারী স্বাক্ষরতার হার ৬০.৯৬%(২০০১) তথা ৫৭.১২% (২০১১)৷ জেলাটিতে শিশুর অনুপাত সমগ্র জনসংখ্যার ১৯.০৭%৷[৫]
মিজোরামের দক্ষিণে অবস্থিত এই জেলাটিতে দুই স্বায়ত্ত্ব অঞ্চল রয়েছে যথা, চাকমা ক্ষেত্রীয় পরিষদ ও লাই ক্ষেত্রীয় পরিষদ৷
এছাড়া জেলাটি চারটি গ্রামোন্নয়ন ব্লকে বিভক্ত,[৯] যথা -
সদরের নামেই গ্রামোন্নয়ন ব্লকগুলির নাম৷ সর্বসাকুল্যে লংৎলাই সদর ছাড়া সমগ্র জেলাতে ১৫৮ টি গ্রাম রয়েছে৷ জেলাটির তিনটি বিধানসভা নির্বাচনকেন্দ্র তপশিলি উপজাতি সংরক্ষিত৷