লন নল | |
---|---|
খেমার প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১০ মার্চ, ১৯৭২ – ১ এপ্রিল, ১৯৭৫ | |
প্রধানমন্ত্রী | সিসোওয়াথ সিরিক মাতাক সন নক থান হ্যাং থুন হাক ইন তাম লং বরেত |
পূর্বসূরী | চেং হেং |
উত্তরসূরী | সকাম খয় (ভারপ্রাপ্ত) |
২৩তম কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৪ আগস্ট, ১৯৬৯ – ১১ মার্চ, ১৯৭১ | |
রাষ্ট্রপতি | নরোদম সিহানুক চেং হেং (ভারপ্রাপ্ত) |
ডেপুটি | সিসোওয়াথ সিরিক মাতাক |
পূর্বসূরী | পেন নুথ |
উত্তরসূরী | সিসোওয়াথ সিরিক মাতাক |
কাজের মেয়াদ ২৫ অক্টোবর, ১৯৬৬ – ১ মে,১৯৬৭ | |
রাষ্ট্রপতি | নরোদম সিহানুক |
পূর্বসূরী | নরোদম কান্তল |
উত্তরসূরী | সন সান |
সোশ্যাল রিপাবলিকান পার্টির নেতা | |
কাজের মেয়াদ ১৫ জুন, ১৯৭২ – ১ এপ্রিল, ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্ট |
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
প্রতিরক্ষামন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৯৬৮ – ১৯৬৯ | |
প্রধানমন্ত্রী | সন সান পেন নুথ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | প্রে ভেং, কম্বোডিয়া | ১৩ নভেম্বর ১৯১৩
মৃত্যু | ১৭ নভেম্বর ১৯৮৫ (বয়স ৭২) ফুলারটন, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
সমাধিস্থল | লমা ভিস্তা মেমোরিয়াল পার্ক ফুলারটন, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
রাজনৈতিক দল | সোশ্যাল রিপাবলিকান পার্টি |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | সাংকুম (১৯৭০ পর্যন্ত) |
দাম্পত্য সঙ্গী | সভানা লন[১] |
সন্তান | ৯ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কম্বোডীয় রয়্যাল মিলিটারী একাডেমি |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | কম্বোডিয়া খেমার প্রজাতন্ত্র |
শাখা | খেমার ন্যাশনাল পার্টি |
কাজের মেয়াদ | ১৯৫২-১৯৭৫ |
পদ | ফিল্ড মার্শাল |
কমান্ড | খেমার ন্যাশনাল আর্মড ফোর্সের কমান্ডার-ইন-চীফ |
যুদ্ধ | প্রথম ইন্দো-চীন যুদ্ধ |
মার্শাল লন নল (জন্ম: ১৩ নভেম্বর, ১৯১৩ - মৃত্যু: ১৭ নভেম্বর, ১৯৮৫) প্রে ভেং প্রদেশে জন্মগ্রহণকারী কম্বোডিয়ার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও জেনারেল ছিলেন। ১৯৬৬-৬৭ ও ১৯৬৯-৭১ মেয়াদে দুইবার কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। এরপূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭০ সালে প্রিন্স নরোদম সিহানুক সরকারের বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন ও নিজেকে নবগঠিত খেমার প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। সোশ্যাল রিপাবলিকান পার্টি প্রতিষ্ঠাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ও খেমার ন্যাশনাল আর্মড ফোর্সের কমান্ডার-ইন-চিফ হন।
খেমার-চীনা বংশোদ্ভূত পরিবারের সন্তান তিনি।[২] বাবা তে নিন প্রদেশ থেকে খেমার ক্রম জনগোষ্ঠীর থেকে এসেছেন।[৩] মাতুলালয়ের দাদা ফুজিয়ান প্রদেশ অভিবাসিত হন[৪] ও পরবর্তীকালে প্রে ভেংয়ের গভর্নর মনোনীত হয়েছিলেন।[৩] সাইগনে অধ্যয়ন শেষে কম্বোডীয় রাজকীয় সেনা একাডেমি থেকে পড়াশোনা করেন।
ফরাসী ঔপনিবেশিক আমলে ১৯৩৭ সালে সরকারী কাজে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হন ও ১৯৩৯ সালে ফরাসী শাসনের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক বিরোধী বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ রুখে দেন।[৫] ১৯৪৬ সালে তিনি ক্রাতাই প্রদেশের গভর্নর হিসেবে পদোন্নতি পান। রাজা নরোদম সিহানুকের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন। ১৯৪০-এর দশকের শেষদিকে রাজতন্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত ডানপন্থী স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এ দলটি উত্তরোত্তর কম্বোডিয়ার রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করে। ১৯৫২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ও ভিয়েত মিনের বিপক্ষে সামরিক আক্রমণ পরিচালনা করেন।
দেশের স্বাধীনতার পর ১৯৫৫ সালের নির্বাচনের লক্ষ্যে সিহানুক কর্তৃক সাংকুম গঠন করা হলে নলের জাতীয়তাবাদী খেমার রিভল্যুশনারী পার্টিসহ ছোট ছোট ডানপন্থী দলগুলো তাকে সহায়তা করেন।[৬]
১৯৫৫ সালে আর্মি চিফ অব স্টাফ মনোনীত হন। এরপর ১৯৬০ সালে সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ঐ সময় তিনি সিহানুকের পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন।
১৯৬৩ সালে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। দ্বিতীয় ইন্দো-চীন যুদ্ধের প্রভাব থেকে সিহানুক নিরপেক্ষ থাকার বৈদেশিক নীতি অবলম্বন করেন। অন্যদিকে, নল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন ও ১৯৬৩ সালের পর থেকে মার্কিন সাহায্য না পাবার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।[৭]
১৯৬৬ সালের সংসদীয় নির্বাচনে ক্ষমতার ভারসাম্য লন নলের দিকে চলে যায়। ডানপন্থী সাংকুম দলসহ রক্ষণশীল ও ডানপন্থী প্রার্থীরা জয়ী হয়।[৮] ঐ নির্বাচনে লন নল প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন।
১৯৬৭ সালে গাড়ী দূর্ঘটনায় তিনি আহত হন ও সাময়িকভাবে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। ১৯৬৮ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে ও ১৯৬৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন ও সিহানুক বিরোধী ও মার্কিনপন্থী প্রিন্স সিসোওয়াথ সিরিক মাতাক তার সহকারী হিসেবে নিযুক্ত হন।
১৯৭০ সালে অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। সিহানুক পরবর্তীকালে দাবী করেন যে, এ অভ্যুত্থানের ফলে দীর্ঘকালের শত্রু, নির্বাসিত রাজনীতিবিদ সন নক থান ও সিরিক মাতাকসহ সিআইএ’র সমর্থন ও পরিকল্পনমাফিক মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হয়।[৯] কিন্তু, এর বিপরীতে এ অভ্যুত্থানে সিআইএ’র সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি।[১০][১১][১২]
মার্চ, ১৯৭০ সালে সিহানুকের বিদেশে অবস্থানকালে নম পেনে ভিয়েতনাম বিরোধী দাঙ্গা হয়। ১২ মার্চ লন নল ও সিরিক মাতাক সিহানুকভিল বন্দর বন্ধ করে দেন যাতে ভিয়েত কংদের জন্য অস্ত্র আসতো। এরফলে কম্বোডিয়ার মাটি থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর ভিয়েতনামী ও ভিয়েত কং বাহিনীকে চলে যেতে বাধ্য হয়।[১৩]
শুরুতে রাষ্ট্রপ্রধান থেকে সিহানুকের ক্ষমতাচ্যুতিতে তিনি বাদ সাধেন। প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে সিহানুকের টেপ-রেকর্ডকৃত কথায় সিহানুক দেশে অস্থিতিশীলতার দোষারোপ করেন ও নমপেনে ফিরে উভয়কে ফাসীকাষ্ঠে ঝোলানোর কথা বলেন।[১৪] ১৭ মার্চ, সিরিক মাতাক তিনজন সেনা কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যান ও বন্দুকের নলের মুখে প্রয়োজনীয় দলিলে স্বাক্ষর করান।[১৫]
১৮ মার্চ, জাতীয় পরিষদে ভোটে সিহানুককে ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়। জরুরীভিত্তিতে জেনারেল লন নল রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেন। ২৮ ও ২৯ মার্চ সিহানুকের সমর্থনে বিভিন্ন প্রদেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন হলেও লন নলের অনুগত বাহিনী কয়েকশত লোককে নিহত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।[১৬]
কম্বোডিয়া দখল করার পর খেমার রুজদের প্রধান কাজ ছিল কোনরূপ কালবিলম্ব না করে নেতাসহ শীর্ষসারির কর্মকর্তাদের ফাসীতে ঝোলানো।[১৭] কিন্তু লন নলের ভাগ্যে তা ঘটেনি। ১ এপ্রিল তিনি পদত্যাগ করেন ও দেশ ছেড়ে পলায়ণ করেন। ফাসীতে চড়ার জন্য খেমার রুজদের প্রণীত তালিকায় তাকে শীর্ষে রাখা হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ায় চলে যান ও পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। প্রথমে তিনি হাওয়াইয়ে ও পরে ক্যালিফোর্নিয়ার ফুলারটন এলাকায় বাস করেন। সেখানে তার সাথে দ্বিতীয় স্ত্রী সোভানা লন ও নয় সন্তান ছিল। ১৭ নভেম্বর, ১৯৮৫ তারিখে সেন্ট জুড মেডিক্যাল সেন্টারে হৃদরোগের সমস্যায় তার দেহাবসান ঘটে।[১৮]
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী প্রিন্স নরোদম কান্তল |
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ১৯৬৬-১৯৬৭ |
উত্তরসূরী সন সান |
পূর্বসূরী পেন নুথ |
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ১৯৬৯-১৯৭২ |
উত্তরসূরী সিসোওয়াথ সিরিক মাতাক |
পূর্বসূরী চেং হেং (রাষ্ট্রপ্রধান) |
কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপতি ১৯৭২-১৯৭৫ |
উত্তরসূরী সকাম খয় (রাষ্ট্রপ্রধান) |