লম্বা চুল একধরণের হেয়ারস্টাইল যেখানে মাথার চুলের যথেষ্ট দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করতে দেওয়া হয়। লম্বা চুলের দৈর্ঘ্যের বিষয়টি এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে বা একই সংস্কৃতির মধ্যেও ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু সংস্কৃতিতে চিবুক পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের চুলযুক্ত একজন মহিলার চুলকে ছোট চুল বলা যেতে পারে, আবার একই সংস্কৃতিতে ঐ একই চুলের দৈর্ঘ্যযুক্ত একজন পুরুষের চুলকে লম্বা চুল বলা হয়।
বহু সংস্কৃতিতে ছোট দৈর্ঘ্যের চুল থাকা পুরুষদের সমাজের নিয়ন্ত্রণাধীন হিসাবে দেখা হয়, যেমন- সামরিক বা কারাগারে থাকাকালীন বা কোনও অপরাধের শাস্তি হিসাবে থাকা ব্যক্তিদের। মহিলাদের দীর্ঘ চুল সাধারণত পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের কাছেই সকল সংস্কৃতি জুড়ে আকর্ষণীয় বলে বিবেচিত হয়[১][২]
মানুষ, ঘোড়া, বনমানুষ এবং সিংহরা জীব প্রজাতিদের মধ্যে কয়েকটি প্রজাতি যারা তাদের মাথার চুল বা কেশর খুব দীর্ঘ আকারে বাড়াতে পারে। প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলস্বরূপ, ২.৫-৩ মিলিয়ন বছর পূর্বে বনের বাসস্থান থেকে উন্মুক্ত সাভানায় স্থানান্তরিত হওয়ার সময় মানুষ হোমিনিড হিসাবে তাদের পশম হারিয়েছিল বলে মনে করা হয়; এই বিকাশটি নিরক্ষীয় অঞ্চলের নিকটেই অতিরিক্ত উত্তপ্ত হওয়া ছাড়াই দ্রুত হয়েছিল এবং প্রাণী শিকার করা সম্ভব করে তুলেছিল । মাথার চুলগুলি ব্যতিক্রম ছিল, যা বেঁচে থাকার বৈশিষ্ট্যসূচক ছিল কারণ এটি সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা করার জন্য মাথার ত্বকের তাপ নিরোধক হিসেবে কাজ করে, অতিবেগুনী বিকিরণ (ইউভি) থেকে রক্ষা করে এবং শীতলতা সরবরাহ করে (যখন ভেজানো চুল থেকে ঘামের বাষ্প হয়)। [৩]
বিজ্ঞানীরাও যৌন নির্বাচনের ফলস্বরূপ খুব দীর্ঘ চুল গজানোর দক্ষতা দেখেন, যেহেতু দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর চুল উর্বরতা এবং তারুণ্যের লক্ষণ।[৪]
নৃতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে লম্বা মাথার চুলের কার্যকরী তাৎপর্যটি হতে পারে সৌন্দর্যবোধ।
চুলের দৈর্ঘ্য প্রায়শই কপালের মাথার ত্বকের লাইন থেকে মাথার খুলির সর্বোচ্চ বিন্দু থেকে সমাপ্তির অবধি পরিমাপ করা হয় এবং কখনও কখনও মুকুট পর্যন্ত পরিমাপ করা হয়ে থাকে যার ফলস্বরূপ গড় হিসেব ১০ সেন্টিমিটার নিম্ন মানের হয়।[৫]