লালতিখড়া Indian Red Admiral | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Lepidoptera |
পরিবার: | Nymphalidae |
গোত্র: | Nymphalini |
গণ: | Vanessa |
উপগণ: | Cynthia |
প্রজাতি: | V. indica |
দ্বিপদী নাম | |
Vanessa indica (Herbst, 1794) | |
প্রতিশব্দ | |
Vanessa calliroe (Hübner, 1808) |
লালতিখড়া[১](বৈজ্ঞানিক নাম: Vanessa indica (Herbst)) যার মূল শরীর খয়েরি-বাদামি বর্ণের এবং ডানা দুটি কমলাটে লাল এবং কালো ও সাদা বর্ণের ছোপ দেখা যায়। এরা নিমফ্যালিডি পরিবার এবং চারাক্সিনি উপগোত্রের সদস্য।
লালতিখড়ার প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৫৫-৬৫মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।
ভারতে প্রাপ্ত লালতিখড়ার উপপ্রজাতিসমূহ হল-[২]
এদের হিমালয়-সন্নিহিত এবং কাশ্মীর থেকে অরুনাচল প্রদেশ পর্যন্ত দেখা যায়। পশ্চিম হিমালয়ে ১০০০০ ফুট এবং পূর্ব হিমালয়ে ৮০০০ ফুট উচ্চতা অবধি এদের দেখা মেলে।
লালতিখড়ার শরীর এবং ডানার কিছু অংশ গাঢ় খয়েরি রঙের। সামনের ডানার শীর্ষ থেকে ডানার ভিতরের দিকে এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল জুড়ে কালো রঙ দেখা যায়।
লালতিখড়া প্রজাপতি বিন্তি (Painted lady) প্রজাপতির সাথে সাদৃশ্য তবে এদের ডানার উপরি এবং নিম্ন উভয়তলের গ্রাউন্ড কালার অথবা মূল রঙ অপেক্ষাকৃত কালচে এবং ডানার কমলা দাগগুলিও তুলনামূলকভাবে গভীর এবং সমৃদ্ধ। বিন্তির সাথে এর পার্থক্যগুলি হল-
এরা দ্রুত বেগে ওড়ে। পাহাড়ি জঙ্গলের খোলামেলা জায়গায় প্রধানত নদীর ধারে এদের দেখা যায়। অনেক সময় রাস্তার ধারে সবুজ ঘাসজমিতে অথবা ফুলের মধু খেতে এবং মাটির কাছাকাছি গাছের পাতায় অথবা মাটিতে বসে রোদ পোয়াতে এদের প্রায়শই দেখা মেলে।[৩]
ঊভয় লিংগের লালতিখড়াদের পাহাড়ি বিছুটি প্রজাতির গাছের আশেপাশে প্রায়শই দেখা যায়। পুরুষ লালতিখড়ারা স্ত্রী লালতিখড়াদের আশেপাশে ঘুরতে থাকে এবং স্ত্রীরা ডিম পাড়ার জন্য উপযুক্ত পাতা খুঁজতে থাকে। পুরুষ প্রজাপতিগুলি আঞ্চলিক এবং স্ত্রী প্রজাপতিদের সাথে মিলনের উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ পছন্দপ্সই স্থান নির্বাচন করে যেখান থেকে উড়ে বেড়িয়ে তারা অন্যান্য প্রজাপতিদের বিশেষতঃ স্ত্রী প্রজাপতির গতিবিধির উপর নজর রাখে। পুরুষগুলি সাধারনত কলহপ্রবন এবং প্রায়শই সাক্ষাৎ মাত্রই এদের মারামারি করতে দেখা যায়। উর্ধাকাশে অ্যাক্রোবেটিক কলা কৌশল এর ন্যায় দেখায়।[৪]
অনেক সময় পূর্নাংগ প্রজাপতিরা পাকা ফল, বিভিন্ন ফুলের রস এবং গাঁজানো গাছের রস থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে দেখা যায়।[৫] খুব কম পাখির বিষ্ঠার উপর বসতে দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে এবং শুষ্ক আবহাওয়ায় পুরুষ লালতিখড়ারা ভেজা মাটিতে বসে জলপান করে।[৪]
উচ্চতর অঞ্চলে ঠান্ডা বাতাসের আধিক্যের কারণে তাপমাত্রা সকালের দিকে কম থাকে। ফলতঃ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং ডানা সঞ্চালনের প্রয়োজনীয় শক্তি লাভ করার জন্য প্রতিনিয়ত রৌদ্র পোহানোর প্রয়োজন হয়।[৪]
স্ত্রী লালতিখড়ারা পাতার নিচে একটি করে ডিম পাড়ে।
লালতিখড়ার শূককীট কালো বর্ণের এবং এদের গায়ে খুব সূক্ষ রোঁয়া থাকে, সেই জন্য এদের দেহের উপরিভাগ দেখতে মখমলের মতো। গোটা শরীর জুড়েই বিভিন্ন আকারের কাঁটা দেখা যায়। পূর্নবয়স্ক শূককীটের কাটাগুলি হালকা হলুদ বর্ন ধারণ করে। এরা ভয় পেলে এদের দেহ ঝাঁকাতে থাকে।
এই শূককীট পাহাড়ি বিছুটি প্রজাতির উদ্ভিদ যেমন- Urtica dioica এছাড়া Girardinia diversifolia, (Boehmeria) sp গাছের কচি পাতার রসালো অংশ আহার করে।[৬]
এদের মূককীটের গড়ন চ্যাপ্টা প্রকৃতির এবং সবজে আভাযুক্ত খয়েরি রঙের হয়। বক্ষে একটা উঁচু অংশ দেখা যায়, যার ডগা সোনালি-ব্রোঞ্জ বর্ণের।