শরৎ চন্দ্র সিংহ | |
---|---|
মুখ্যমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭২ – ১৯৭৮ | |
নেতা | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
পূর্বসূরী | মহেন্দ্র মোহন চৌধুরী |
উত্তরসূরী | গোলাপ বরবরা |
সভাপতি, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (সমাজবাদী) - শরৎ চন্দ্র সিংহ | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৪ – ১৯৯৯ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | চাপড় | ১ জানুয়ারি ১৯১৪
মৃত্যু | ২৫ ডিসেম্বর ২০০৫ গুয়াহাটি | (বয়স ৯১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দল, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (সমাজবাদী), ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (সমাজবাদী) - শরৎ চন্দ্র সিংহ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | শিক্ষক সমাজকর্মী |
ধর্ম | হিন্দু |
শরৎ চন্দ্র সিংহ (অসমীয়া: শৰৎ চন্দ্র সিংহ) অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী[১] ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (সমাজবাদী) ও জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা ছিলেন[২]। তাঁর সমর্থক তাঁকে গান্ধীবাদী চিন্তাধারা, নিম্নশ্রেণীর প্রতি ভালোবাসা, সততা ও সরলতার জন্য সম্মান করিতেন। তিনি একজন লেখক ছিলেন।
১৯১৪ সনের ১ জানুয়ারি তারিখে অসমের ধুবড়ী জেলার চাপড় নামক স্থানে শরৎ চন্দ্র সিংহ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গ্রামের স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন। ধুবুরী জেলার বিলাসীপারা হাইস্কুল থেকে তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। ঘড় থেকে তাঁর স্কুলের দূরত্ব ছিল প্রায় ২৫কি.মি.। এই পথ তিনি পায়েঁ হেটে বা সাইকেল নিয়ে চলাচল করিতেন।[৩] তিনি কটন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী ও কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রী লাভ করেন। তারপর তিনি গুয়াহাটিতে উকালতি করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সহকারী শিক্ষক রুপে কর্মজীবন আরম্ভ করে হেডমাষ্টার রুপে ধুবুরী জেলার বিভিন্ন স্থানের স্কুলে শিক্ষা প্রদান করেন।[৩] ১৯৫০ সনের প্রথমভাগে ভাষাভিত্তিক বিভাজনের ফলে অসমের গোয়ালপাড়া জেলাকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করার কথা উঠেছিল কিন্তু শরৎ চন্দ্র সিংহ এর বিরোধিতা করেন। তারপর গোয়ালপাড়া জেলাকে অসমের ভৌগোলিক সীমার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৪]
১৯৪৬ সনে শরৎ চন্দ্র সিংহ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রবেশ করেন। তিনি বিলাসীপাড়া বিধানসভা সমষ্টি থেকে ১৯৪৬-৫২, ১৯৬২-৬৭, ১৯৭২-৭৮ ও ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সন পর্যন্ত মোট চারবার অসম বিধান সভায় নির্বাচিত হন।[৪] ১৯৭২ সনে তিনি কিছুদিন ইন্দিরা গান্ধীর অন্তবর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রীরুপে নিযুক্তি দেওয়া হয় । পরবর্তী সময়ে তিনি কংগ্রেসের বিভিন্ন পদ যেমন সহকারী সম্পাদক, উপ-সভাপতি, সভাপতি ইত্যাদিতে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী অসমে ঘোষণা করা আপাতকালীন অবস্থার পর তিনি কংগ্রেস সমাজবাদী দলে যোগদান করেন ও ১৯৮৭ সনে তিনি রাষ্ট্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন সমস্যার সন্মুখীন হন। মেঘালয় অসম থেকে বিভাজন হওয়ার পর রাজ্যের রাজধানী শিলং থেকে দিসপুরে স্থানান্তর করা, রাজ্যের সর্বত্রে অসমীয়া ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘটিত ১৯৭২ সনের ভাষা আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদিই ছিল প্রধান সমস্যা। গুয়াহাটি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও বঙাইগাঁও তৈল শোধনাগার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট ছিল।[৪] তিনি রাজ্যের অনুন্নত জন-জাতির বিকাশের জন্য পঞ্চায়তী রাজ ব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন। রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য সমবায় খণ্ডের জন্ম দিয়েছিলেন। শারদ পাওয়ার কংগ্রেস দল ত্যাগ করে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি গঠন করার পর তিনিও তাঁর সহযোগ করেন ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অসমে সেই দলকে নেতৃত্ব প্রদান করেন।[৫]
২০০৫ সনের ২৫ ডিসেম্বর তারিখে গুয়াহাটিতে নিজ বাসগৃহে শরৎ চন্দ্র সিংহ মৃত্যুবরণ করেন।[৩][৬]