শাকদ্বীপ (সংস্কৃত: शाकद्वीप; সেগুন বৃক্ষের দ্বীপ), হল একটি দ্বীপ যা হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে বর্ণিত হয়েছে। দ্বীপটির নামকরণ করা হয়েছে একটি বড় সেগুন গাছের নামানুসারে যা দ্বীপটির মাঝে অবস্থিত। এটি দ্বীপবাসীদের দ্বারা সর্বদা পূজিত হয়। পুরাণে এর ভূ-খণ্ড এবং অধিবাসীদের বর্ণনা করা হয়েছে।[১]
ব্রহ্মপুরাণ অনুসারে, ক্ষীর সাগর নামে পরিচিত সাগরটি শাকদ্বীপ দ্বারা বেষ্টিত, যা অন্য দ্বীপ ক্রৌঞ্চদ্বীপের দ্বিগুণ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই দ্বীপের অধিপতির নাম ছিল ভব্য, এবং তার সাতটি পুত্র ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যার প্রত্যেককে শাকদ্বীপ সাত ভাগে ভাগ করে প্রদান করা হয়েছে: জলদ, সুকুমার, কৌমার, মণিচক, কুসুমোত্তর, মোদক এবং মহাদ্রুম। এই দ্বীপে যে সাতটি পর্বত রয়েছে তা হল উদয়, জলধর, রৈবতক, শ্যাম, অম্বিকেয়, আস্তিকেয় এবং কেশরী। সেখানে গন্ধর্ব এবং সিদ্ধ দ্বারা সেবিত একটি বড় শাক (সেগুন) গাছের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এখানে বসবাসকারী চারটি বর্ণের লোকেরা কোনো রোগে আক্রান্ত না হয়েই বর্ণাশ্রম ধর্ম পালন করেন। মগরা হল ব্রাহ্মণ, মগধরা হল ক্ষত্রিয়, মানসরা হল বৈশ্য, এবং মন্দগরা হল শূদ্র। এই দ্বীপের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সাতটি পবিত্র নদী হলো সুকুমারী, কুমারী, নলিনী, রেণুকা, ইক্ষু, ধেনুকা এবং গবস্তি। কোনো স্নেহ-আবেগের মাত্রাধিক্য দ্বীপবাসীদের স্পর্শ করে না। দ্বীপবাসিরা পরস্পর সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করেন। বিষ্ণু এখানে তাঁর সূর্য রূপে পূজিত হন।[২][৩]
বিষ্ণু পুরাণে শাকদ্বীপের বিবরণ ব্রহ্ম পুরাণের মত একই। এই দ্বীপের বাসিন্দাদের অত্যন্ত গুণী বলে বর্ণনা করা হয়েছে, তারা কোন হিংসা অনুভব করে না এবং কোন সীমা লঙ্ঘন করেন না।[৪]