শাহ তুরকান

শাহ তুরকান
দিল্লীর সুলতান রুকনউদ্দিন ফিরোজের মা।
রাজত্বমে ১২৩৬ - নভেম্বর ১২৩৬
উত্তরসূরিসুলতানা রাজিয়া
মৃত্যুদিল্লী, মামলুক সালতানাত
দাম্পত্য সঙ্গীশামসুদ্দিন ইলতুতমিশ
Childrenরুকনউদ্দিন ফিরোজ
ধর্মইসলাম (সুন্নী)

শাহ তুরকান (১৩ শতক) ছিলেন দিল্লি সুলতানী বংশের মামলুক শাসক ইলতুৎমিশের উপপত্নী। সুলতান ইলতুৎমিশ এবং শাহ তুরকানের সন্তান ছিল রুকনউদ্দিন ফিরোজ। কিংবদন্তি অনুসারে, ইলতুৎমিশ তার সুযোগ্যা কন্যা রাজিয়াকে তার উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। একথা জানার পর শাহ তুরকান তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

ইলতুৎমিশের মৃত্যুর পর সম্ভ্রান্তরা তার পুত্র রুকনউদ্দিন ফিরোজকে দিল্লীর নতুন সুলতান হিসাবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু রুকনউদ্দিন একজন দক্ষ শাসক ছিলেন না। তিনি বিলাসী জীবন যাত্রায় মগ্ন হয়ে ওঠেন এবং তার মায়ের হাতে রাজ্যের ও তার বিষয় সম্পত্তি পরিচালনার ভার ছেড়ে দেন। প্রাথমিক জীবনে তুরকান ছিলেন একজন তুর্কি ক্রীতদাসী। সুলতানের উপপত্নী হওয়ার পর তিনি তার হারেমের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিতে চেয়েছিলেন। তার সন্তান ররুকনউদ্দিন ফিরোজের শাসনকালে যখন রাজ্যের ভার তার হাতে আসে তখন সেই সুযোগের সদ্ব্যা‌বহার করে তিনি সেই সমস্ত ব্যাক্তির উপর প্রতিশোধ নিতে শুরু করেন যারা অতীতে তাকে অপমান করেছিল। তুরকান ও রুকনউদ্দিন তাদের যৌথ ষড়যন্ত্রে, ইলতুৎমিশের জনপ্রিয় পুত্র কুতুবুদ্দিনকে অন্ধ করে দেয় এবং তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। তার প্রতিহিংসা পরায়ন রাজনীতির কারণস্বরূপ রুকনউদ্দিনের শাসনকাল কলঙ্কিত হয়ে পড়ে। রাজ্যে অনাচারের সৃষ্টি হয় ও প্রজাদের মধ্যে অসন্তোষের ফলে বিদ্রোহের সুচনা হয়। শাহ তুরকানের উচ্চাভিলাশা বহু অভিজাতদেরও শাসনবিমুখ করে তোলে এবং তারা বিদ্রোহে ভাগ নেয়। এমনকি তৎকালীন উজির (প্রধানমন্ত্রী) নিজামুল মুলক জুনাইদিও বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেন।[] এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে, যখন রুকনউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ তুর্কি বংশোদ্ভূত কর্মকর্তারা সালতানাতের তাজিক (অ-তুর্কি) কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনা করে। এর ফলে জুনাইদির ছেলে জিয়াউল মুলক এবং তাজুল মুলক মাহমুদ সহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ তাজিক কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়, যারা রাজিয়াকে সুলতান ইলতুতমিসের উত্তরাধিকারী হিসাবে স্পষ্ট সমর্থন দিয়েছিলেন।[] রুকনউদ্দিন যখন বিদ্রোহীদের সাথে লড়াই করার জন্য কুহরামের দিকে অগ্রসর হন, শাহ তুরকান দিল্লিতে রাজিয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কথিত আছে একটি জামাতের নামাজে রাজিয়া শাহ তুরকানের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে উস্কে দেন। এরপর একদল জনতা রাজপ্রাসাদে হামলা চালায় এবং শাহ তুরকানকে আটক করে। ১২৩৬ সালে রুকনুদ্দিনকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর রাজিয়া সিংহাসনে আরোহণ করেন। []

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. K. A. Nizami 1992, পৃ. 235।
  2. K. A. Nizami 1992, পৃ. 235–236।
  3. Chandra, Satish (২০০৪)। Medieval India : from Sultanat to the Mughals. (Revised সংস্করণ)। New Delhi: Har-Anand Publications। পৃষ্ঠা 48। আইএসবিএন 9788124110645। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৭