শিবমোগ্গা জেলা | |
---|---|
কর্ণাটকের জেলা | |
ಶಿವಮೊಗ್ಗ | |
ডাকনাম: মালেনাড়ুর প্রবেশদ্বার | |
স্থানাঙ্ক: ১৪°০০′ উত্তর ৭৫°১৭′ পূর্ব / ১৪.০০° উত্তর ৭৫.২৮° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কর্ণাটক |
Established | ১লা নভেম্বর ১৯৫৬ |
সদর | শিবমোগ্গা |
তালুক | শিবমোগ্গা, সাগর, শিকারীপুর, সোরাব, হোসানগর, ভদ্রাবতী, তীর্থহাল্লি |
সরকার | |
• সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ | শান্তরাজু. কে .এম, আইপিএস [২] |
• ডেপুটি কমিশনার | কেবি. শিবকুমার, আই এ এস [৩] |
আয়তন | |
• মোট | ৮,৪৯৫ বর্গকিমি (৩,২৮০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৭,৫২,৭৫৩[১] |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | কন্নড়, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
যানবাহন নিবন্ধন |
|
শিমোগা জেলা, (বা বর্তমানে প্রশাসনিকভাবে শিবমোগ্গা জেলা) হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কর্ণাটক রাজ্যের পশ্চিম দিকের একটি জেলা৷ এটি কর্ণাটকের চারটি প্রশাসনিক বিভাগের বেঙ্গালুরু বিভাগের অন্তর্গত। জেলাটির একটি বড় অংশ সহ্যাদ্রি পর্বতমালার মালেনাড়ু অঞ্চলে অবস্থিত। জেলাটির প্রশাসনিক দপ্তর শিবমোগ্গা শহরে অবস্থিত অবস্থিত। এখানে অবস্থিত যোগ জলপ্রপাতটি অন্যতম বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। ২০১১ স্টাতে জনগণনা অনুসারে শিবমোগ্গা জেলার মোট জনসংখ্যা ১৭,৫২,৭৫৩ জন।[১] জেলাটিতে মোট সাতটি তালুক রয়েছে, যথা: শিবমোগ্গা, সাগর, শিকারীপুর, সোরাব, হোসানগর, ভদ্রাবতী, তীর্থহাল্লি৷
শিবমোগ্গার পূর্বতন নাম ছিলো মণ্ডলী৷ [৪] কীভাবে "শিবমোগ্গা" নামটি এসে থাকতে পারে সেই বিষয়ে একাধিক জনশ্রুতি রয়েছে৷ তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই হিন্দু দেবতা শিবকেই এই নামের মূল কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ কারো মতে শিব-মুখ অর্থাৎ শিবের মুখমণ্ডল, কারো মতে শিবন-মুগু অর্থাৎ শিবের নাক আবার কারো মতে শিবন-মোগ্গে অর্থাৎ ত্রিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত ফুল থেকে "শিবমোগ্গা" নামটি এসেছে৷ আবার এ ব্যতীত আরেকটি জনশ্রুতিও শুনতে পাওয়া যায়, শিমোগা শব্দটি এসেছে শিহি-মোগে শব্দটি থেকে যার অর্থ মিষ্টির পাত্র৷ এই জনশ্রুতির পেছনে গল্পটি হলো, একদা এই অঞ্চলে দুর্বাসা মুনির আশ্রম ছিলো৷ তিনি প্রায়সই মিষ্টস্বাদ ভেষজ তার মাটির পাত্রে ফুটাতেন৷ স্থানীয় গোরক্ষকগণ মুনির এই মিষ্ট প্রসাদ গ্রহণ করে এই জায়গাটির নাম দেন শিহি-মোগে।[৫]
জনশ্রুতি অনুসারে ত্রেতাযুগে শ্রীরাম সোনার হরিণ রূপী মারীচকে বর্তমান তীর্থহাল্লির নিকট বাণ প্রয়োগ করে বধ করেন যা মৃগবধ বা মারীচবধ নামে পরিচিত। [৪] খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে শিবমোগ্গা অঞ্চলটি মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। [৬] পূর্বে এই জেলাটি সাতবাহন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো৷ শিকারপুর তালুক থেকে সাতবাহন রাজা সাতকর্ণীর শিলালেখ পাওয়া গিয়েছে। [৭] খ্রিস্টীয় ২০০ সনের পর সাতবাহন সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ৩৪৫ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ এই অঞ্চলটি বনবাসীর কদম্বদের অধীনস্থ হয়। [৮] কদম্বরাই প্রথম রাজবংশ ছিল যা জনসাধারণের কন্নড় ভাষাকে তাদের প্রশাসনিক জায়গায় স্থান দিয়েছিলেন। ৫৪০ খ্রিস্টাব্দের আশেপাশে তারা বাদামীর চালুক্যদের অধীনস্থ করদ রাজ্যে পরিণত হয়। [৯][১০]
খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে রাষ্ট্রকূট রাজবংশের রাষ্ট্রকূটরা এই জেলার উপর আধিপত্য বিস্তার করে। [১১] কিন্তু পরবর্তীকালে কল্যানীর চালুক্যরা রাষ্ট্রকূটদের পরাজিত করেন। এই সময়ে সাম্রাজ্য বিস্তারের সুবিধার্থে বল্লীগাভি একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। [১২] খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে কল্যাণীর চালুক্যদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শিবমোগ্গার ওপর হৈসল আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়৷ [১৩] হৈসল সাম্রাজ্যের পতনের পর সমগ্র অঞ্চল বৃহত্তর বিজয়নগর সাম্রাজ্য|বিজয়নগর সাম্রাজ্যের অধীনস্থ হয়৷ [১৪] ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বিজয়নগর সাম্রাজ্য বিপন্মুখে পতিত হয়৷ তাল্লিকোটার যুদ্ধে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং আগামী দুই শত বছর ধরে তাদেরই সামন্ত রাজা কেলাদির নায়করা সম্পূর্ণ অঞ্চল নিজেদের প্রভাবে আনেন এবং দক্ষতার সহিত শাসন করেন৷ [৬] ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে হায়দার আলি কেলাদি নায়কদের প্রশাসনিক রাজধানী দখল করেন এবং ফলস্বরূপ পুরো জেলাটিই নিজের মহীশূর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন৷ ভারতের স্বাধীনতা ও তারপর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে জেলা পুনর্গঠন আইন বলবৎ করা অবধি শিবমোগ্গা জেলা এই সাম্রাজ্যেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলো৷ [৬]
শিবমোগ্গা মালেনাড়ু অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত৷ জেলাটি চতুর্দিকে ভূমিবেষ্টিত এবং অপর কোনো রাজ্যের সহিত সীমান্ত নেই৷ শিবমোগ্গা জেলার উত্তর-পূর্বে রয়েছে হাবেরী জেলা, পূর্বদিকে রয়েছে দাবণগেরে জেলা, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে চিকমাগালুর জেলা, দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে উড়ুপি জেলা এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে উত্তর কন্নড় জেলা৷ [১৫]
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ৩,৮৩,০০৭ | — |
১৯১১ | ৩,৬৭,৩০৩ | −০.৪২% |
১৯২১ | ৩,৫৪,১০১ | −০.৩৭% |
১৯৩১ | ৩,৬৪,৯০৩ | +০.৩% |
১৯৪১ | ৩,৮১,০৫৯ | +০.৪৩% |
১৯৫১ | ৪,৭৫,৯৯৯ | +২.২৫% |
১৯৬১ | ৭,৬৩,০৭৬ | +৪.৮৩% |
১৯৭১ | ৯,৮৮,৭৪৪ | +২.৬২% |
১৯৮১ | ১২,৬১,৫৮২ | +২.৪৭% |
১৯৯১ | ১৪,৫২,২৫৯ | +১.৪২% |
২০০১ | ১৬,৪২,৫৪৫ | +১.২৪% |
২০১১ | ১৭,৫২,৭৫৩ | +০.৬৫% |
উৎস:[১৬] |
২০১১ খ্রিস্টাব্দের ভারতের জনগণনা অনুসারে শিবমোগ্গা জেলার মোট জনসংখ্যা ১৭,৫২,৭৫৩ জন,[১৭] যা গাম্বিয়া রাষ্ট্রের জনসংখ্যা[১৮] বা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা রাজ্যের জনসংখ্যার সাথে সমতুল্য৷ [১৯] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের মোট ৬৪০টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার বিচার জেলাটি ২৭৫তম স্থান দখল করেছে৷ [১৭] জেলাটির জনঘনত্ব ২০৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৫৪০ জন/বর্গমাইল)৷[১৭] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ অবধি জেলাটির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৬.৮৮ শতাংশ৷ [১৭] এখানে প্রতি হাজার পুরুষে ৯৯৫ জন নারীর বাস৷ [১৭] জেলাটির সর্বমোট সাক্ষরতার হার ৮০.৪৫ শতাংশ, যেখানে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৮৬.০৭ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ৭৪.৮৪ শতাংশ৷ [১৭]
জেলাতে শিবমোগ্গা তালুকের জনসংখ্যা সর্বাধিক ও হোসানগর তালুকের জনসংখ্যা সর্বনিম্ন৷[২০]
তালুকের নাম | গৃহ সংখ্যা | জনসংখ্যা | পুরুষ | নারী |
---|---|---|---|---|
সোরাবা | ৩৭,৩৬৩ | ১,৮৫,৫৭২ | ৯৪,২৬৭ | ৯১,৩০৫ |
শিবমোগ্গা | ৯৩,৪২৬ | ৪,৪৫,১৯২ | ২,২৬,৯২৮ | ২,১৮,২৬৪ |
ভদ্রাবতী | ৭১,৭৭১ | ৩,৩৮,৯৮৯ | ১,৭১,৯১৭ | ১,৬৭,০৭২ |
হোসানগর | ২৩,৩৫৮ | ১,১৫,০০০ | ৫৭,৩৯২ | ৫৭,৬০৮ |
সাগর | ৪১,৯১৫ | ৩,০০,৯৯৫ | ১,৫০,৯৭৭ | ১,৫০,০১৮ |
শিকারীপুর | ৪১,৩৮৯ | ২১৩,৫৯০ | ১০৮,৩৪৪ | ১০৮,২৪৬ |
তীর্থহাল্লি | ৩২,০০২ | ১৪৩,২০৭ | ৭০,৭৩৪ | ৭২,৪৭৩ |
জেলাটির ৮৫.২৫ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী, ১২.২৫ শতাংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী এবং বাকী অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়৷ [২৩] কন্নড় এই জেলার দাপ্তরিক এবং সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা৷
Gambia1,797,860July 2011 est.
Nebraska 1,826,341