শুজা শাহ দুররানি | |||||
---|---|---|---|---|---|
আফগানিস্তানের আমির | |||||
আফগানিস্তানের আমির | |||||
রাজত্ব | ১৮০৩–১৮০৯ ১৮৩৯–১৮৪২ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ১৩ জুলাই ১৮০৩ | ||||
পূর্বসূরি | মাহমুদ শাহ দুররানি | ||||
উত্তরসূরি | দোস্ত মুহাম্মদ খান | ||||
জন্ম | ৪ নভেম্বর ১৭৮৫ | ||||
মৃত্যু | ৫ এপ্রিল ১৮৪২ | ||||
স্ত্রীগণ |
| ||||
| |||||
রাজবংশ | দুররানি রাজবংশ | ||||
পিতা | তিমুর শাহ দুররানি |
আফগানিস্তানের ইতিহাস |
---|
সময়রেখা |
শুজা শাহ দুররানি (শাহ শুজা, শুজা আল-মুলক নামেও পরিচিত) (৪ নভেম্বর ১৭৮৫ – ৫ এপ্রিল ১৮৪২) দুররানি সাম্রাজ্যের শাসক। তিনি ১৮০৩ থেকে ১৮০৯ এবং ১৮৩৯ থেকে ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর আগপর্যন্ত শাসন করেছেন। তিনি ছিলেন তিমুর শাহ দুররানির পুত্র।
মাউন্টস্টুয়ার্ট এলফিনস্টোন লিখেছেন, "কাবুলের বাদশাহ [শাহ শুজা] সুদর্শন ব্যক্তি"। এলফিনস্টোন যখন তার সাথে সাক্ষাত করেন তখন শুজা শাহ ব্রেসলেটে কোহিনূর হীরা পরিধান করে ছিলেন।[১] এলফিনস্টোনের সফরসঙ্গী উইলিয়াম ফ্রেসার বলেছেন যে তিনি পাঁচফুট ছয় ইঞ্চি দীর্ঘ ছিলেন এবং তার গায়ের রং ফর্সা হলেও মলিন ছিল। তার দাড়ি ছিল ঘন ও কালো বর্ণের। তিনি আরও বলেছেন যে তার গলার স্বর উচ্চ ছিল।[২]
১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতা লাভের পর বারাকজাইদের সাথে বৈরিতা সমাপ্ত করে তাদের ক্ষমা করে দেন। মিত্রতা স্থাপনের জন্য তিনি বারাকজাই রমণী ওয়াফা বেগমকে বিয়ে করেছিলেন।[৩]
শুজা শাহ ১৭৯৮ থেকে ১৮০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত হেরাতের গভর্নর ছিলেন। তার ভাই জামান শাহ দুররানির ক্ষমতাচ্যুতির পর ১৮০১ এর অক্টোবরে তিনি নিজেকে আফগানিস্তানের বাদশাহ দেন। কিন্তু তিনি মূলত ১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জুলাই ক্ষমতা লাভ করেছিলেন।
আফগানিস্তান ও ভারতে রুশ আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য শুজা শাহ ও ব্রিটেনের মধ্যে ১৮০৯ খ্রিষ্টাব্দে মিত্রতা স্থাপিত হয়।[৪]
১৮০৯ খ্রিষ্টাব্দের জুনে[৫] মাহমুদ শাহ দুররানি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। এরপর শুজা শাহ ভারতে নির্বাসনে যান। ভারতে তিনি জাহানদাদ খান বামিজাই কর্তৃক ধৃত ও বন্দী হন। তাকে প্রথমে এটক (১৮১১-১২) ও পরে কাশ্মির (১৮১২-১৩) নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মাহমুদ শাহর উজির ফতেহ খান রণজিৎ সিঙের বাহিনীর সাথে কাশ্মির আক্রমণ করলে শুজা শাহ শিখদের সাথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৮১৩ থেকে ১৮১৪ পর্যন্ত তিনি লাহোরে ছিলেন। নিজের স্বাধীনতার বিনিময়ে তিনি কোহিনুর হীরা রণজিৎ সিংকে দিয়ে দেন এবং মুক্তি পান। প্রথমে তিনি পাঞ্জাবে থাকলেও পরে তিনি লুধিয়ানা চলে যান। লুধিয়ানায় তার অবস্থানস্থল বর্তমানে সদর পোস্ট অফিস কর্তৃক ব্যবহৃত হয় এবং ভবনের ভেতরে একটি সাদা মার্বেল পাথর দেখা যায় যা তার অবস্থান নির্দেশ করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দে শুজা শাহ দুররানি ও রণজিৎ সিঙের মধ্যে সমঝোতা হয় যে শুজা শাহ পাঞ্জাবের মধ্য দিয়ে নিজ বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হতে পারবেন এবং তারা যদি পেশাওয়ার দখল করতে পারে তবে বিনিময় হিসেবে পেশাওয়ার শিখদের হাতে দিতে হবে। পরের বছর শুজা কান্দাহারের দিকে যাত্রা করেন এবং অন্যদিকে হরি সিং নালওয়ার নেতৃত্বে শিখরা পেশাওয়ার আক্রমণ করে। জুলাই মাসে শুজা শাহ কান্দাহারে দোস্ত মুহাম্মদ খানের অধীন আফগানদের কাছে প্রায় পরাজিত হয়ে পালিয়ে যান। শিখরা অন্যদিকে পেশাওয়ার দখল করে নেয়।
দোস্ত মুহাম্মদ খানের সাথে লড়াইয়ের জন্য ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ ও রণজিৎ সিঙের সমর্থন পান। এর ফলে প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের (১৮৩৮-১৮৪২) সূচনা হয়। ১৮৩৯ এর ৭ আগস্ট ব্রিটিশরা শুজা শাহকে ক্ষমতায় বসায়।[৬] কিন্তু ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ এপ্রিল তিনি শুজাউদ্দৌলার হাতে নিহত হন।[৭]
রাজত্বকাল শিরোনাম | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী মাহমুদ শাহ দুররানি |
আফগানিস্তানের আমির ১৮০৩–১৮০৯ |
উত্তরসূরী মাহমুদ শাহ দুররানি |
পূর্বসূরী দোস্ত মুহাম্মদ খান |
আফগানিস্তানের আমির ১৮৩৯–১৮৪২ |
উত্তরসূরী ওয়াজির আকবর খান |