শুদ্ধোধন | |
---|---|
![]() শুদ্ধোধন | |
দাম্পত্য সঙ্গী | মায়াদেবী মহাপজাপতি গোতমী |
সন্তান | সিদ্ধার্থ গৌতম নন্দা নন্দ |
পিতা-মাতা | সিহহনু কচ্চনা |
শুদ্ধোধন (সংস্কৃত: शुद्धोधन) ছিলেন বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের পিতা।[১] তিনি ছিলেন শ্রামণ ধর্মের অনুসারী তিনি শাক্য প্রজাতন্ত্রের নির্বাচিত প্রধান ছিলেন।[২]
রাজা শুদ্ধোধনের পিতার নাম শিহহনু এবং মাতার নাম কচ্ছানা। ধোতোদন, সক্কোদন, সুক্কোদন, অমিতোদন নামক তার চার ভ্রাতা ও অমিতা ও পমিতা নামক দুই ভগিনী ছিল। তার স্ত্রী ছিলেন মায়াদেবী এবং ও তার বোন মহাপজাপতি গোতমী। তার জ্যেষ্ঠ সন্তান সিদ্ধার্থ গৌতম ছিলেন শুদ্ধোধন ও মায়াদেবীর সন্তান। এছাড়া মহাপজাপতি গোতমীর গর্ভে তিনি রাজকুমারী নন্দা এবং রাজকুমার নন্দের জন্ম দেন।[৩]।
শুদ্ধধোনের প্রথম পুত্র সিদ্ধার্থ গৌতমের জন্মের সময় বা সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়। শুদ্ধোধন শিশুর জন্মের পঞ্চম দিনে তার নামকরণের জন্য আটজন ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ জানালে তারা শিশুর নাম রাখেন সিদ্ধার্থ অর্থাৎ যিনি সিদ্ধিলাভ করেছেন।[৪]:৯,১২ এই সময় পর্বতদেশ থেকে আগত অসিত নাম একজন সাধু নবজাত শিশুকে দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে এই শিশু পরবর্তীকালে একজন রাজচক্রবর্তী অথবা একজন সিদ্ধ সাধক হবেন।[৪]:৯,১২ একমাত্র সর্বকনিষ্ঠ আমন্ত্রিত ব্রাহ্মণ কৌণ্ডিন্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, এই শিশু পরবর্তীকালে সংসার ত্যাগ করে বুদ্ধত্ব লাভ করবেন।[৪]:১১-১২ কৌণ্ডিন্যের এই বক্তব্যে সন্ত্রস্ত শুদ্ধোধন সিদ্ধার্থের জীবন বিলাসিতায় পরিপূর্ণ করে বহিঃজগতের সমস্ত দুঃখ কষ্ট থেকে তাকে দূরে রাখার ব্যবস্থা করেন। ষোলো বছর বয়সে সিদ্ধার্থকে সংসারের প্রতি মনোযোগী করার জন্য শুদ্ধোধন তাকে কোলিয় গণের সুন্দরী কন্যা যশোধরার সাথে বিবাহ দেন ও রাহুল নামক এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। সিদ্ধার্থ তার জীবনের প্রথম উনত্রিশ বছর রাজপুত্র হিসেবে অতিবাহিত করেন। বৌদ্ধ পুঁথিগুলি অনুসারে পিতা শুদ্ধোধন তার জীবনে বিলাসিতার সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও সিদ্ধার্থ বস্তুগত ঐশ্বর্য্য যে জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না, তা উপলব্ধি করেন।[৪]:১৪
সিদ্ধার্থ গৌতম উনত্রিশ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করলে বিষাদগ্রস্ত শুদ্ধোধন তাকে খোঁজার বহু চেষ্টা করেন। সিদ্ধার্থ গৌতমের বুদ্ধত্ব লাভের এক বছর পরে শুদ্ধোধন তার পুত্রকে কপিলাবস্তু শহরে আমন্ত্রণ জানান। শুদ্ধোধনের নির্দেশমতো সিদ্ধার্থের বাল্যবন্ধু কলুদায়ী তাকে পিতৃরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিন বছর পরে রোহিণী নদীর জলের অংশ নিয়ে শাক্যদের সাথে কোলীয় গণের একটি বিবাদ উপস্থিত হলে গৌতম বুদ্ধ সেই বিবাদের মীমাংসা করেন। এর কয়েকদিনের মধ্যে শুদ্ধোধন মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে গৌতম বুদ্ধ তার মৃত্যুশয্যায় তাকে ধর্মশিক্ষা প্রদান করেন।