শেখ রেহানা | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী, যুক্তরাজ্য |
পেশা | গৃহিণী |
পরিচিতির কারণ | শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | শফিক আহমেদ সিদ্দিক |
সন্তান | টিউলিপ সিদ্দিক আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তি |
শেখ রেহানা (জন্ম: ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫)[১] হলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠা কন্যা। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র বোন।[২]
১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শাহীন স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষা পাস করেন।[৩] মেট্রিক পরীক্ষার মেধাতালিকায় নারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অষ্টম স্থান অধিকার করেন তিনি। পরবর্তীতে বাংলাদেশে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তার।[৪]
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার নিহত হয়।[৫] তখন তিনি বড় বোন শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে জার্মানি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি যুক্তরাজ্যে 'রাজনৈতিক আশ্রয়' প্রার্থনা করেন। ব্রিটিশ সরকার তার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন ও সেখানেই অদ্যাবধি অবস্থান করছেন শেখ রেহানা। মাঝে মাঝে বাংলাদেশে কিছুদিনের জন্য অবস্থান করেন।[৬][৭]
২০০১ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানাকে ঢাকার ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডের ২১ নম্বর বাড়ীটি সরকারীভাবে বরাদ্দ দেয়া হয় এবং তিনি তা নগদ মূল্যে ক্রয় করেন।[৮] পরবর্তীতে ২০০৫ সালে খালেদা জিয়া'র নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার তার বাড়ীর অধিকার কেড়ে নিয়ে সেখানে ধানমন্ডি থানা হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেন। ফলে বাড়ীর অধিকার ফিরে পাবার জন্যে ২০০৬ সালের ২৪ জানুয়ারি আইনি লড়াইয়ে নামেন তিনি। কিন্তু উৎসর্গ করার মানসিকতা থেকে তিনি আর রিট পরিচালনা করতে চান না বা বাড়ী ফেরত পেতে চান না বলে ৮ আগস্ট, ২০১১ তারিখের আবেদনে উল্লেখ করেন।[৯]
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে ১০০১ টাকা টোকেন মূল্যে হাইকোর্টের আদেশে গুলশানে একটি বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয় যা তার পূর্বের বরাদ্দের বৈধতা বহাল রাখে।[১০] ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সহিংস ইতিহাসের প্রেক্ষিতে এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা, যা মোট ১৯ বার হয়েছিল, এরফলে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আজীবন বঙ্গবান্ধু পরিবারের সুরক্ষা প্রদান করবে এজন্য ২০২১ সালে সংসদে আইন পাস করা হয়।[১১][১২] ২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে এই আইনটি বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।[১৩][১৪] অতঃপর ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে এই আইনটি বাতিল করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।[১৫][১৬]
২০০৭-২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদের জরুরী অবস্থা চলাকালে শেখ হাসিনা গৃহবন্দী হন।[১৭] ঐ সময় শেখ রেহানা তার সহোদরা বড় বোন শেখ হাসিনা'র পক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হাল ধরেন। ২০০৮ সালের বাংলাদেশের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এবং শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। তারপর শেখ রেহানা বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং তার বোনকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে সহযোগিতা করে থাকেন।[১৮]
ব্যক্তিগতভাবে এখনো কর্মজীবী হিসেবে জীবন কাটান শেখ রেহানা।[১৯] শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তিন সন্তানের জননী তিনি। ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। দুই কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক।[২০] তন্মধ্যে, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে ২০২৪ সাল থেকে ট্রেজারির অর্থনৈতিক সেক্রেটারি এবং সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।[২১]
উইকিমিডিয়া কমন্সে শেখ রেহানা সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।