শেলডন ম্যানর ইংল্যান্ডের সিফেনহামের নিকট উইল্টসায়্যারে অবস্থিত। ম্যানর হাউস হচ্ছে উইল্টসায়্যারের প্রাচীন ইংল্যান্ডের স্যাক্সন যুগের আবাসস্থল। ম্যানরের বেশির ভাগ কাঠামো সপ্তদশ শতকের এবং এটা প্রথম শ্রেণীর তালিকা ভুক্ত দালান।
শেলডন মধ্যযুগীয় ভুমিজরিপে[২] প্রথম উল্লেখিত হয় ৮০৩ সালে, জনপদ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জরিপে নাম বেশি দিন স্থায়ী হয়নি তাই ১৫৮২ সালের মধ্যে বিচ্ছিন্ন মধ্যযুগীয় গ্রামে পরিণত হয়।[৩] ১৯৭৬ সালের জরিপে এটা ম্যানরের নিকটে থাকার এবং এটা পুরাতন আবাসস্থল এর উপর অবস্থানের কারণে জরিপে উল্লেখিত হয় যা হলোওয়ে নামে পরিচিত[৪] শেলডন ম্যানর ১১৮০ সালে স্যার উইলিয়াম বিউভিলিয়ানের মালিকানা স্বীকৃত হয়।[৩] তার মৃত্যুর পরে কোন উত্তরাধিকারী না থাকায় এবং তিনি নরম্যান হওয়ায় এটা রাজার সম্পত্তিরূপে বাজেয়াপ্ত হয়। ১২৩১ সালে ইংলন্ডের তৃতীয় হেনরি কর্তৃক গডারভিল পরিবারের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়।[৪] ১২৫০ সালে ডি গডারভিলের সাথে বিয়ে হলে ম্যানর স্যার জিওফ্রে গ্যাসলিন মালিকানা পায়।[৩] ১৪২৪ সালে ম্যানর প্রথম ব্যারন হ্যাংগারফোর্ডের নিকট বিক্রি করা হয়।[৫] এবং কিছুকাল পরে শেষ পর্যন্ত ক্যাথারিন পার সাময়িক ভাবে হাগারফোর্ড সংখাগরিষ্টতা পাওয়া পর্যন্ত বরাদ্দ পায়।[৫] হ্যাংগারফোর্ড ১৬৮৪ সাল অবধি ম্যানর বিক্রি না করা বহুবছর সম্পত্তিটি খাজনার বিনিময়ে দখল হিসেবে থাকে। ১৭১১ উইলিয়াম নরিস ম্যানর কিনেছিলেন তিনি ১৮২৮ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।[৫] ১৮৫৪ সালে গ্যাব্রিয়েল গোল্ডনি এটা ক্রয় করেন, বেইলি পরিবারের পর তিনার পুত্র ১৯১১ সাল পর্যন্ত এখানে বাস করেন।[৫][৬]
১৯১৮ সাল থেকে গিবস পরিবার ম্যানরের মালিক ছিল।[৩] মেজর মার্টিন এনন্থনি গিবস (১৯১৬-১৯৯৪) তিনি ছিলেন উইল্টসায়্যারের একজন প্রাক্তন রাজকীয় ব্যক্তি। স্ত্রী এলসি মআর্গেট বিবাহ (১৯২২-২০১২) তাদের ছয় ছেলেমেয়ে।[৭] ১৯৮২ মেসার্স গিবস ম্যানরের ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যকলার বর্ণনা প্রকাশ করেন।[৩]
ম্যানর এখন সিফেনহামের সিভিল প্যারিশ। ১২৮২ থেকে এটা উইল্টসায়্যারের লাগাতার সর্ববৃহৎ ম্যানর হাউস।[৩][৯] ১৯৬০ সালে ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক দালান ও মনুমেন্ট কমিশনের মতে গ্রেডের তালিকা ভুক্ত দালানের স্বীকৃতি পায়। [১০]
অবকাঠামোর প্রথম নির্মিত অংশ যথা পশ্চিমের জানালা ও আবৃত ঢোকার পথ ত্রয়োদশ শতকের বলে মনে করা হয়।[১০] এই আবৃত ঢোকার পথটিকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় বলে মনে করা হয়, কিন্তু বর্তমানের গৃহের চাইতে এটি খুব বেশি বড়।[১১] প্রধান অবকাঠামোর আড়াই তলা বিশিষ্ট এবং রুবল পথরের টাইলস এর ছাদ ফস্টার সাহেবের জন্যে ১৬৫৯ খ্রিষ্টীয় সনে তৈরি হয়েছিল। যদিও কিছু অংশ আরো আগের।[১০]
নিচ তলায় একটি পাথরের তৈরি ছোট প্রার্থনার স্থান আছে, মনে করা হয় হাংগারফোর্ড পরিবারের এবং পরিবারের দাসদের জন্য ১৪৫০ সালে নির্মিত। এটার একটা পূর্ব দরজা আছে যা গোথিক স্থাপত্যকলার টেরাকোটা।[১১] দীর্ঘদিন আস্তাবল হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পরে বিংশ শতকে এটা পুনরুদ্ধার হয়।[১৩] এখানে আছে ইটের তৈরি স্টোর হাউস, ইদুঁরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আর আছে স্যাডল স্টোন (ফসল বা অন্যান্য বস্তু উচু রাখার ঠ্যাঙা দেওয়া পাথর)। [৪]
ম্যানরের সংগ্রহে আছে নেলসিয়া কাচ, পার্সিয়ান হস্তশিল্প, ঘোড়ার জিনের থলে, চিনামাটির বাসন কোসন ওক কাঠের আসবাবপত্র, এলিজাবেদিয়ান ভোজনশালার চেয়ার টেবিল।[১৪] এখানে জেমস টিসট, ডেভিড তিনিয়ার, ডেভিড বেসানোর চিত্রশিল্প, মরগানের ফুলদানি, এবং সাধারন্ত ব্যবহার হয়না এমন হাটার কাচের ছড়ি।[১৫]
প্রথম অটোমোবাইল এসোসিয়েশন বিজয়ী এবং এর স্থাপত্যকলার মাহত্ব্য এবং উঞ্চ স্বাগতিক আবহের জন্য ম্যানরটি এনপিআই ঐতিহাসিক গৃহ পুরস্কার পায়।[৬] ভবন ছাড়া এর বাগান গুলো সাধারনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এখানকার উল্লেখযোগ্য গোলাপ, ইউ বাগান এবং ম্যালবেরী কুঞ্জ।[৬]
এটা স্বীকৃত বিবাহ তীর্থ।[১৬] এবং এর নিচতলায় গ্রীষ্ম কালীন সেক্সপেরিয়ান অপেরা মঞ্চায়ন হয়।[১৭] বিপন্ন প্রায় ঘোড়া বংশ বিস্তারের প্রকল্প ক্লিভল্যান্ড বে ইন্ডেভার এর জন্য এটা মাতৃভুমি।[১৮] ১৯৮৮ সালে এই গৃহের স্বত্বাধীকারী সম্পর্কে দি নিউওর্ক টাইম পত্রিকায় বলা হয় "এত ঐতিহাসিক ভবন, হ্রদ, চলমানতা এবং এর অতীত ঐতিহ্যে ম্যানর যেন পুরাবস্তু নয় এ যেন এক জীবসত্ত্বা[১৫]
১৯৫৫-এ ম্যানর বিবিসি প্রযোজিত শীর্ষস্থানীয় চিত্র নির্মাণের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হত।[১৯] এবং ২০০৮ এ বিবিসি ওয়ানের' বনকিকার্স নামক নাটকের একটি পর্ব এখানে ধারণ করা হয়।[১৭]