শোকো আসাহরা | |
---|---|
জন্ম | চিজুও মাতসুমটো মার্চ ২, ১৯৫৫ ইয়াৎসোশিরো, কুয়ামোটো, জাপান |
মৃত্যু | 6/7/2018 |
পেশা | প্রতিষ্ঠাতা, ওম শিনরিকিও |
দাম্পত্য সঙ্গী | টুমুকো |
সন্তান | রাইকা |
শোকো আসাহরা (জাপানিজঃ 麻原 彰晃 - 6/7/2018) জাপানের নতুন ধর্মীয় সংগঠন ওম শিনরিকিও-এর প্রতিষ্ঠাতা। তাকে ১৯৯৫ সালে জাপানের টোকিওর সাবওয়েতে বিষাক্ত সারিন গ্যাস প্রয়োগের মূল পরিকল্পনাকারী এবং আরো কিছু অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করে ২০০৪ সালে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ২০১২ সালের জুনে ওম শিনরিকিওর অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের তথ্যের জন্য তার মৃত্যুদন্ড স্থগিত করা হয়।[১]
শোকো আসাহরা ১৯৫৫ সালের ২ মার্চ জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমে কুয়ামোটোতে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পরিবার টাটামি নামে একধরনের মাদুর তৈরির ব্যবসা করত। শৈশবে তিনি গ্ল্যোকৌমা রোগে আক্রান্ত হন ও বাম চোখের দৃষ্টি হারান। তিনি ডান চোখেও কম দেখতে পান। শিশু থাকাকালে তিনি অন্ধদের বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন।[২] ১৯৭৭ সালে স্নাতক সম্পন্ন করে তিনি আকুপাংচার ও চীনা ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। এটাই জাপানের অন্ধদের ঐতিহ্যবাহী পেশা।[৩] ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন। ১৯৮১ সালে তাকে লাইসেন্সবিহীন ওষুধ বিক্রি ও এটা নিয়ে গবেষণা করার জন্য ২০০,০০০ জাপানি ইয়েন জরিমানা করা হয়।[৪]
মূলত তখন থেকেই তার ধর্মীয় বিষয় নিয়ে চর্চা শুরু হয়।[৫] অবসর সময়ে ধর্ম নিয়ে পড়াশোনা করতেন, চীনা জ্যোতিষবিদ্যা, তাওবাদ, বৌদ্ধ ধর্ম, জেন ধর্ম, দর্শনের ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়েও পারদর্শী হয়ে উঠেন।[৬] ভারতীয় যোগবিদ্যার প্রতি ছিল তার প্রবল অগ্রহ। এছাড়া গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য ভারতে যান এবং সেখানে বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্ম সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করেন।
১৯৮৪ সালে শোকো আসাহরা ভারত থেকে জাপান ফিরে আসেন। তখন তিনি নিজের নাম বদলে শোকো আসাহরা নামধারন করেন ও ওম শিনরিকিও ধর্মের নিসন্ধনের জন্য জাপানি সরকারের কাছে আবেদন করেন। প্রথমদিকে কর্তৃপক্ষ অপত্তি করলেও ১৯৮৯ সালে ওম শিনরিকিওকে নতুন ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
‘ওম শিনরিকিও’র ধর্মীয় আদর্শ পালি ভাষায় বুদ্ধের আদিশিক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত। জাপানি ভাষায় ‘শিনরিকিও’ শব্দের অর্থ হলো ‘পরম সত্য’। শোকো আসাহরার বিশ্বাসের মূল ভিত্তি হলো বৌদ্ধ ধর্ম, অ্যাপোকালিপটিক খ্রিস্টধর্ম এবং ফরাসি ভবিষ্যদ্বক্তা নস্ট্রাডামুসের লেখনী।
শোকো আসাহরা মনে করতেন, বিংশ শতাপ্দীতে পৃথিবী ধংস্ব হয়ে যাবে ও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে।[৭] শোকো আসাহরা শিষ্যদের বলতেন, ‘ভারতে থাকার সময় আমার বোধিলাভ হয়েছে।’ তার দলের সদস্য সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং তিনি নিজেকে তাদের ত্রানকর্তা হিসেবে ঘোষণা করেন।[৮][৯] শিষ্যরা তার কথা মেনে চলত কেননা ভারতে থাকার সময় তিনি যোগবিদ্যার উপর অনেক জ্ঞান অর্জন করেছিলেন ও শিষ্যদের নানা বিষয় যেমন, দেহকে শূন্যে ওড়ার উপায়, ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষমতা এবং টেলিপ্যাথি ইত্যাদি শিখাতেন।[১০][১১] তিনি তার ধর্মের বিধিনিষেধ অথবা নিয়মকানুন সম্পর্কে অনেক বই লিখেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য “বিয়ন্ড লাইফ অ্যান্ড ডেথ” ও “মহায়ানা সুটরা অ্যান্ড ইনিটিয়াশন”। শোকো আসাহরার গ্রেফতার ও বিচারের পর ২০০০ সালে তার ধর্মের নাম পরিবর্তন করে ‘আলেফ’ রাখা হয়।
১৯৯৫ সালের ২০ মার্চ শোকো আসাহরার শিষ্যরা বিষাক্ত সারিন গ্যাস দিয়ে টোকিওর সাবওয়েতে বিষাক্ত সারিন গ্যাস প্রয়োগ করে। এই ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ এর বিষ ক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পরে। শোকো আসাহরাকে আরো ২৭ জন মানুস হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। তার বিচার চলাকালে তাকে টোকিওর সাবওয়েতে গ্যাস প্রয়োগের নির্দেশদাতা ও জাপানি সম্রাটকে উৎখাতের পরিকল্পনাকারী হিসেবে দোষী সাবস্থ করা হয়। তাকে অরো ১৩ থেকে ১৭ টি মামলায় দোষী সাবস্থ করে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সুপ্রীম কোর্টের এক আদেশে ২০১২ সালের জুনে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পযর্ন্ত তার মৃত্যুদন্ড স্থাগত ষোষনা করা হয়।[১]
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)