শ্রমিক সংঘ

শ্রমিক সংঘ বলতে একাধিক অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে একত্রিত শ্রমিকদের এক ধরনের সংগঠনকে বোঝায়। এইসব লক্ষ্যগুলির মধ্যে তাদের জীবিকা বা পেশার অখণ্ডতা রক্ষা করা, নিরাপত্তার আদর্শ বা মানগুলি উন্নত করা, উন্নততর মজুরি আদায়, উন্নততর সুবিধা আদায় (যেমন ছুটি, স্বাস্থ্যবীমা, অবসর ভাতা, ইত্যাদি), উন্নততর কাজের পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, ইত্যাদি থাকতে পারে। শ্রমিক সংঘ এসব ব্যাপারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, নিয়োগকর্তা বা ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাথে দর কষাকষিতে অধিকতর ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে, যা এককভাবে কোনও শ্রমিকের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। শ্রমিক সংঘের সদস্যরা নিয়মিত চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিক সংঘের প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠন, এর প্রধান কার্যালয় ও আইন দলের কর্মকাণ্ডগুলিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করে। সংঘের ভেতরে গণতান্ত্রিক উপায়ে স্বেচ্ছাসেবী শ্রমিকদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়।

শ্রমিক সংঘ নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ ও দরকষাকষি সমিতির মাধ্যমে সংঘের সাধারণ সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব করেন ও কাজে নিয়োগকর্তাদের সাথে দর কষাকষি ও শ্রমিক চুক্তি সংক্রান্ত আপোসরফা করেন। শ্রমিক সংঘগুলি সবচেয়ে সাধারণ উদ্দেশ্য হল তাদের "কর্মসংস্থানের শর্তাবলি বজায় রাখা বা উন্নত করা।"[] এগুলির মধ্যে মজুরি বা বেতন, কাজের নিয়মকানুন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার আদর্শ, অভিযোগ পদ্ধতিসমূহ, কর্মচারীদের মর্যাদা নির্ধারক নিয়ম যেমন পদোন্নতি, চাকুরি থেকে অব্যাহতির জন্য ন্যায়সম্মত কারণ ও শর্তাবলি, এবং চাকুরির বা কর্মসংস্থানের সুযোগসুবিধা, ইত্যাদি উল্লেখ্য।

শ্রমিক সংঘগুলিতে কোনও নির্দিষ্ট পেশার দক্ষ শ্রমিকেরা একত্রিত ও সংগঠিত হতে পারে, যাকে বৃত্তিগত শ্রমিক সংঘবাদ (Craft unionism) বলা হয়।[] আবার বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের একটি মিশ্রণ একত্রিত হয়ে শ্রমিক সংঘ গঠন করতে পারে, যাকে সাধারণ শ্রমিক সংঘবাদ (General unionism) বলে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Webb, Sidney; Webb, Beatrice (১৯২০)। History of Trade Unionism। Longmans and Co. London।  ch. I
  2. Poole, M., 1986. Industrial Relations: Origins and Patterns of National Diversity. London UK: Routledge.