শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি ශ්රී ලංකා නිදහස් පක්ෂය இலங்கை சுதந்திரக் கட்சி | |
---|---|
চেয়ারপার্সন | মৈত্রীপাল সিরিসেন |
মহাসচিব | দামিন্দা দিসানায়েকে |
প্রতিষ্ঠাতা | সলোমন বন্দরনায়েকে |
প্রতিষ্ঠা | ২ সেপ্টেম্বর ১৯৫১ |
বিভক্তি | ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি |
পূর্ববর্তী | সিংহলা মহা সভা |
সদর দপ্তর | ৩০৭ টি. বি. জয়া মাওয়াথা, কলম্বো ১০ |
সংবাদপত্র | সিংহালে, দিনাকারা |
যুব শাখা | এসএলএফপি যুব সংগঠন |
ভাবাদর্শ | সামাজিক গণতন্ত্র সিংহলী জাতীয়তাবাদ বামপন্থী জাতীয়তাবাদ[১][২] |
রাজনৈতিক অবস্থান | মধ্য-বামপন্থী |
জাতীয় অধিভুক্তি | ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স (২০০৪ – বর্তমান) পিপলস অ্যালয়েন্স (১৯৯৪-২০০৪) |
আনুষ্ঠানিক রঙ | নীল |
শ্রীলঙ্কার সংসদ | ৮০ / ২২৫ |
শ্রীলঙ্কার প্রাদেশিক কাউন্সিল | ২৬৯ / ৪১৭ |
স্থানীয় সরকার | ২,৬১১ / ৪,৩২৭ |
নির্বাচনী প্রতীক | |
হাত ![]() | |
ওয়েবসাইট | |
www |
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি (সিংহলি: ශ්රී ලංකා නිදහස් පක්ෂය Sri Lanka Nidahas Pakshaya, তামিল: இலங்கை சுதந்திரக் கட்சி) শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৯৫১ সালে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সলোমন বন্দরনায়েকে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন।[৩] এরপর থেকেই দলটি শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে দুইটি বৃহৎ শক্তির দলের একটিরূপে পরিচিত হয়ে আসছে। ১৯৫৬ সালে দলটি প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন দলের মর্যাদা পায়। সরকারের আধিপত্যবাদী দলরূপে বেশ কয়েকবার দেশ পরিচালনায় অংশ নেয়।[৪] সচরাচর দলটি সাম্যবাদী বা অগ্রসরমান অর্থনৈতিক নীতি-নির্ধারণ করে ও জাতীয়তাবাদী সিংহলী দলগুলোর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে।
স্বাধীনতা লাভের পর এসএলএফপি বিপ্লববিহীন সাম্যবাদের ধারণা নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করে। নিরপেক্ষ নীতি অবলম্বনপূর্বক সাম্যবাদী দেশগুলোর সাথে জোড়ালো সম্পর্ক বজায় রাখে। এর সামাজিক গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী নীতির কারণে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির ন্যায় বৃহৎ দলগুলোর সাথে নিজেদেরকে প্রকাশ করতে সক্ষম হয়। এস.ডব্লিউ.আর.ডি বন্দরনায়েকে দলের ভিত্তি হিসেবে পাঁচ বৃহৎ শক্তি যা পঞ্চ মহা বালাভেগায়া রয়েছে যাতে পাদ্রী, স্থানীয় ডাক্তার, শিক্ষক, কৃষক ও শ্রমজীবীরা রয়েছেন।[৫]
১৯৫২ সালে সংসদীয় নির্বাচনে ৯টি আসন পায়। কিন্তু, ১৯৪৮ সালের স্বাধীনতার প্রকৃত তাৎপর্য্য তুলে ধরে ১৯৫৬ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রধান এস.ডব্লিউ.আর.ডি বন্দরনায়েকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হন।[৬] জাতীয়তাবাদী, গণতান্ত্রিক ও সামাজিক পরিকল্পনাগুলোকে একত্রিত করে নির্বাচনে ব্যাপক বিজয় লাভ করেন। অনেক পর্যবেক্ষকই এ বিজয়কে সামাজিক বিপ্লব হিসেবে তুলে ধরেন ও পশ্চিমামুখী আভিজাত্যবাদীদের পতনরূপে আখ্যায়িত করেন।[৭]
সেপ্টেম্বর, ১৯৫৯ সালে এক চরমপন্থী বৌদ্ধ ভিক্ষু কর্তৃক সলোমন বন্দরনায়েকে নিহত হলে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হন বিজয়ানন্দ ডাহানায়েকে। এরপর দলের হাল ধরেন তার বিধবা পত্নী সিরিমাভো বন্দরনায়েকে। ১৯৬০ সালে শ্রীলঙ্কার প্রথম সরকার প্রধান তথা বিশ্বের প্রথম মহিলা সরকার প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন। তার স্বামীর গৃহীত পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন ও ১৯৬০-৬৪ এবং ১৯৭০-৭৭ মেয়াদে অনেকগুলো সামাজিক নীতি বাস্তবায়ন করেন। সিরিমাভো শ্রীলঙ্কার কমিউনিস্ট পার্টি ও লঙ্কা সমাজ পার্টিসহ অন্যান্য বামপন্থী দলের সাথে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হন যা বর্তমানে ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত।[৮]
১৯৭২ সালে এসএলএফপি নতুন সংবিধান প্রবর্তন করে। দেশের নাম সিলন থেকে শ্রীলঙ্কা রাখে ও শ্রীলঙ্কাকে প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে।[৮] ১৯৭৬ সালে জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের সভাপতি হন সিরিমাভো। এসএলএফপি নেতৃত্বাধীন সরকার চীন-ভারত যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।[৯]
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হবার পর তার সরকার অর্থনীতির পশ্চাদপদতা ও দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হলে তাদের জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে এসএলএফপি’র পরাজয় ঘটে।[১০] রাষ্ট্রপতি জুনিয়াস রিচার্ড জয়াবর্ধনে সিরিমাভো’র প্রতিকূলে ৭ বছর নাগরিক অধিকার হরণ করেন ও সংসদ থেকে বহিষ্কার করেন।[১১] ১৯৮২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হেক্টর কোব্বেকাদুয়া এসএলএফপি প্রার্থী হন। কিন্তু, দলকে তার লক্ষ্য থেকে বঞ্চিত করেন।[১২]
একই বছর সংসদ নির্বাচন ৬ বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়। এ সময়ে দলটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লিপ্ত হয়। সিরিমাভো’র কন্যা ও ভবিষ্যতের দল নেতা চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা দলে ভাঙ্গন সৃষ্টি করে শ্রীলঙ্কা পিপলস পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন।[১৩]
আগস্ট, ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে ইউপিএফএ এসএলএফপি’র তুলনায় ৯৫ আসন, প্রতিপক্ষ ইউএনএফজিজি ইউএনপি’র তুলনায় ১০৬ আসনে জয় পায়।[১৪] ফলে ইউএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হওয়ায় পারস্পরিক চুক্তিবদ্ধতায় এসএলএফপি’র সাথে যৌথভাবে সরকার গঠন করতে সম্মত হয়।[১৫]