শ্রেয়া গুহঠাকুরতা | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | সঙ্গীত শিল্পী |
কর্মজীবন | ১৯৭৯–বর্তমান |
পরিচিতির কারণ | রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুজয় মজুমদার |
শ্রেয়া গুহঠাকুরতা (৩রা ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫) একজন ভারতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা।
শ্রেয়া গুহঠাকুরতা প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। চার বছর বয়সে সঙ্গীতের সাথে তাঁর পরিচয় শুরু হয়েছিল। তিনি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী শাশ্বতী গুহঠাকুরতা এবং অভিনেতা ভীষ্ম গুহঠাকুরতার[১] কন্যা। তিনি ছয় বছর বয়সে একজন নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রয়াত অরুন্ধতী দেবী পরিচালিত "দীপার প্রেম" চলচ্চিত্রের জন্য গান করেছেন। এই ছবিতে শ্রেয়া অভিনয়ও করেছেন।
পরবর্তীতে ১৫ বছর বয়সে, তিনি প্রয়াত তপন সিনহা পরিচালিত জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র 'অন্তর্ধান'-এর জন্য নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে গান করেছেন। কলকাতার দুটি রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিষ্ঠান গীতবিতান ও দক্ষিণীর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী শুভ গুহঠাকুরতার[২] নাতনি হলেন শ্রেয়া।[৩] তিনি দক্ষিণী থেকে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ এবং ডিপ্লোমা পেয়েছেন, ১৯৯৪ সালে তিনি স্নাতক হন।[৪]
শ্রেয়া ডিস্টিংশন (বিশেষ মর্যাদা) নিয়ে সঙ্গীতশিক্ষায় পাশ করেছিলেন। এরপর তিনি নিজের কাকা সুদেব গুহঠাকুরতার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ চালিয়ে যান। খুব ছোটবেলা থেকেই, শ্রেয়া প্রয়াত কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকেও সঙ্গীত শিক্ষায় 'তালিম' পেয়েছিলেন। তিনি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থাৎ "মোহর-দিদা" কে তাঁর সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা বলে মনে করেন। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রতিবেদক ঋতু গুহর ভাগিনেয়ী।[৫]
শ্রেয়া সারা বিশ্ব জুড়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।[৬][৭] তাঁর অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে সিঙ্গাপুর, কানাডা, বাংলাদেশ[৩][৮][৯][১০] যুক্তরাজ্য, প্যারিস, অস্ট্রেলিয়া, বার্লিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ''তারা মিউজিক'', "চ্যানেল আই" ইত্যাদির মতো টিভি চ্যানেলের নিয়মিত শিল্পী হলেন শ্রেয়া।
তিনি ঢাকার বেঙ্গল ফাউণ্ডেশনের জন্য ১২টি গানের রেকর্ডিং সম্পন্ন করেছেন। বাজে করুণ সুরে শিরোনামের একটি অ্যালবামে শ্রেয়া গান গেয়েছেন।[১১] তাঁর রেকর্ড করা বেশ কিছু সিডি রয়েছে।[১২] এর মধ্যে কয়েকটির শিরোনাম হলো 'বিমল আনন্দে', 'সুরের দরিয়ায়', যেগুলি বাংলাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এইচএমভি সারেগামা এ পর্যন্ত তাঁর 'মন ভুলায় রে', 'অন্তবিহীন পথ', এবং 'আনন্দধারা' গানের ৩টি সিডি প্রকাশ করেছে,[১৩] তাঁর একটি সিডির শিরোনাম 'খাঁচার পাখি'।[৩][৮] অসংখ্য সঙ্গীত সাইটে তাঁর গান তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।[১৪]
শ্রেয়া 'তারা মিউজিক'-এর জন্য ৮০০টিরও বেশি গান এবং "সারেগামা" দ্বারা প্রকাশিত গীতবিতান আর্কাইভের জন্য বেশ কয়েকটি গান রেকর্ড করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্যামা, চণ্ডালিকা-এর মতো নৃত্যনাট্যে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য শ্রেয়া সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছেন। চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য নিয়ে তিনি ভারতের বেশ কয়েকটি শহর যেমন দিল্লি, বরোদা, হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালোর, রাঁচি এবং জামশেদপুর ভ্রমণ করেছেন।[১৫]
শ্রেয়া গুহঠাকুরতা লন্ডন এবং প্যারিসে স্থায়ী বাঙালি ছাত্রদের জন্য স্কাইপের মাধ্যমে অনলাইন রবীন্দ্রসঙ্গীত কর্মশালা পরিচালনা করেন।[১৬]
সঙ্গীত ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অবদানের জন্য শ্রেয়া 'শ্যামল সেন স্মৃতি পুরস্কার'-এ ভূষিত হয়েছেন। তিনি ২০১১ সালের রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগে সেরা গায়িকা হিসাবে কলকাতার রেডিও বিগ এফএম দ্বারা পুরস্কৃত হয়েছিলেন।
শ্রেয়া এই প্রজন্মের অন্যতম রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা। বিশেষ করে, তাঁর সঙ্গীত শৈলীকে প্রায়ই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই শ্রেয়ার পরিবেশনা সুরেলা অথচ বিষণ্ণ ও দুঃখজনক কিন্তু তা আত্মাকে আলোড়িত করে। তাঁর জনপ্রিয়তার সবচেয়ে বড় কারণ হল ধ্রুপদী পুরানো 'ঘরানা' শৈলী এবং নতুন যুগের উপস্থাপনার মধ্যে ব্যবধান পূরণ করার ক্ষমতা।
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; ReferenceA
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি