শ্রেয়া ঘোষাল শৈশব থেকেই নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং মাত্র চার বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। ছয় বছর বয়সে তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন। ষোল বছর বয়সে তিনি জিটিভিরসা রে গা মা পা সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয়ী হন। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর মায়ের নজর কাড়েন। এই প্রতিযোগিতা জয়ের পর ২০০২ সালে ভন্সালীর প্রণয়মূলক নাট্যধর্মী দেবদাস চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠ দানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তার বলিউডে অভিষেক ঘটে। এ চলচ্চিত্রের গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, এবং নতুন সঙ্গীত প্রতিভা বিভাগে ফিল্মফেয়ার আর ডি বর্মণ পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন।[২]
চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্য কণ্ঠ দানের পাশাপাশি ঘোষাল কয়েকটি টেলিভিশন সঙ্গীত অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। তিনি বিশ্বজুড়ে সঙ্গীত কনসার্টে গান পরিবেশন করে থাকেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্য তাকে সম্মাননা প্রদান করে এবং সেখানকার গভর্নর টেড স্ট্রিকল্যান্ড ২০১০ সালের ২৬ জুনকে "শ্রেয়া ঘোষাল দিবস" বলে ঘোষণা দেয়। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তিনি লন্ডনে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের সদস্যদের নিকট থেকে সম্মাননা লাভ করেন। তিনি পাঁচবার ফোর্বস-এর ভারতের শীর্ষ ১০০ তারকা তালিকায় স্থান করে নেন। ২০১৭ সালে প্রথম ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে মাদাম তুসো জাদুঘরে ঘোষালের মোমের মূর্তি স্থাপিত হয়।
শ্রেয়া ঘোষাল রাওয়াতভাতার পরমাণু শক্তি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।[৩] ১৯৯৫ সালে তিনি নতুন দিল্লিতে সঙ্গম কলা গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত অল ইন্ডিয়া লাইট ভোকাল সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ১৯৯৭ সালে তার পিতা ভাভা পরমাণু অনুসন্ধান কেন্দ্রে স্থানান্তরিত হলে তিনি তার পরিবারের সাথে মুম্বই চলে যান ও অণুশক্তি নগরে পরমাণু শক্তি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।[৮] তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য পরমাণু শক্তি জুনিয়র কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু তিনি জুনিয়র কলেজ ত্যাগ করেন এবং মুম্বইয়ের এসআইইএস কলেজ অব আর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড কমার্সে ভর্তি হন এবং ইংরেজি বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।[৩][৫][৯]
চার বছর বয়স থেকেই ঘোষাল সঙ্গীত শেখা শুরু করেন। তার মাতা তাকে তালিমে সহায়তা করতেন এবং তানপুরা বাজানোয় সঙ্গ দিতেন। শুরুতে তিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাংলা গান গাইতেন। ছয় বছর বয়সে তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু করেন।[৩] ২০০০ সালে ষোল বছর বয়সে তিনি জিটিভিরসা রে গা মা পা সঙ্গীত প্রতিযোগিতার শিশুদের বিশেষ পর্বে অংশগ্রহণ করেন এবং বিজয়ী হন।[১০][১১][১২] এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকালে তিনি এই প্রতিযোগিতার বিচারক ও সুরকার কল্যাণজী বীরজী শাহের নজর কাড়েন। কল্যাণজীর পরামর্শেই তার পরিবার মুম্বইয়ে চলে আসেন। শ্রেয়া কল্যাণজীর কাছে দেড় বছর তালিম গ্রহণ করেন এবং পরে মুক্তা ভিড়ের নিকট শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম চালিয়ে যান।[৯][১৩][১৪] তার প্রথম মঞ্চ পরিবেশনা ছিল একটি ক্লাবের বার্ষিক অনুষ্ঠানে। কোটাতেই তিনি ভারতীয় আধুনিক সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নেন।[১৫]
শ্রেয়া ঘোষালের রেকর্ডকৃত প্রথম গান হল "গানরাজ রাঙ্গি নাচাতো", এটি লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া একটি মারাঠি গানের কভার সংস্করণ।[১৬] তার প্রথম স্টুডিও অ্যালবাম হল বেঁধেছি বীণা, যা ১৯৯৮ সালের ১লা জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল। এতে ১৪টি গান রয়েছে।[১৭] তার শুরুর সময়ের আরও কয়েকটি গানের অ্যালবাম হল ও তোতা পাখি রে, একটি কথা (১৯৯৯),[১৮] এবং মুখর পরাগ (২০০০)।[১৯] ২০০২ সালে তিনি রূপসী রাতে নামে একটি বাংলা স্টুডিও অ্যালবামের রেকর্ড করেন।[২০] এছাড়া তিনি বনমালী রে (২০০২),[২১] এবং পরে কৃষ্ণ বিনা আছে কে (২০০৭) নামে দুটি ভক্তিমূলক গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন।[২২]
২০০২-২০০৪: নেপথ্য শিল্পী হিসেবে অভিষেক ও আলোচিত সাফল্য
শ্রেয়া ঘোষাল দ্বিতীয়বারের মতো জিটিভিরসা রে গা মা পা সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সময় বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর নজর কাড়েন। ভন্সালীর মা এই অনুষ্ঠান দেখছিলেন এবং ঘোষালের গান পরিবেশনার সময় ভন্সালীকে তার পরিবেশনা দেখার জন্য ডাকেন। তার পরিবেশনা দেখার পর ভন্সালী তাকে তার পরবর্তী চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।[৯] ভন্সালী বলেন ঘোষালের কণ্ঠে নিষ্পাপতা ছিল যা দেবদাস (২০০২) চলচ্চিত্রের পারো চরিত্রের জন্য প্রয়োজন ছিল।[৮][২৩]
আমাকে গানটির চূড়ান্ত রেকর্ডের পূর্বে একবার অনুশীলন করতে বলা হয়েছিল। আমি চোখ বন্ধ করে কোন বিরতি ছাড়াই গানটি গেয়েছিলাম। যখন আমি চোখ খুললাম, আমি দেখলাম রেকর্ডিং রুমের বাইরে ব্যাপক উত্তেজনা ও হুল্লোড়। তারপর সঞ্জয়জী বললেন আমি গানটি এত ভালো গেয়েছি যে তারা এক বারেই তা রেকর্ড করে নিয়েছে।
— "ব্যায়রি পিয়া" গানের রেকর্ডিঙের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ঘোষাল[৮]
দেবদাস চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার পর তিনি তাৎক্ষণিক সফলতা অর্জন করেন এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক চলচ্চিত্র শিল্পের গানে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়।[৮] ঘোষালের পরবর্তী কাজ ছিল দরবারের সুরারোপিত দেশ দেবী, এই চলচ্চিত্রে তিনি তিনটি গানে কণ্ঠ দেন।[৩০]
পূর্ববর্তী কয়েকটি চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যবাহী অর্ধ-শাস্ত্রীয় ধারার গান গাওয়ার পর ঘোষাল এম. এম. ক্রিমের সুরায়োজনে জিসম (২০০৩) চলচ্চিত্রে তিনি দুটি যৌন আবেদনময়ী গানে কণ্ঠ দেন, যার মাধ্যমে তিনি তার একই ধারার গানের ছাঁচ থেকে বেরিয়ে আসেন।[৩১] ঘোষালের মতে, এই চলচ্চিত্রের "জাদু হ্যায় নাশা হ্যায়" ও "চলো তুমকো লেকার চলে" গান দুটি সবাইকে তার দিকে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে বাধ্য করে এবং তার সামনে বৈচিত্রময় ভাবমূর্তির দুয়ার খোলে দেয়।[৩২] তিনি "জাদু হ্যায় নাশা হ্যায়" গানের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার দ্বিতীয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন।[৩৩] এরপর তিনি আনু মালিকের সুরায়োজনে "অ্যায় মেরি জিন্দগি", "সীনা পাড়া" ও "আয়ি জো তেরি ইয়াদ" গানের নারী সংস্করণ ও ভজন-ধারার "হর তরফ" গানে কণ্ঠ দেন।[৩৪] "হর তরফ" গানে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি সায়া (২০০৩) চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মত পর্দায় উপস্থিত হন, যেখানে তাকে গান গাওয়া রত একজন স্কুল শিক্ষার্থী হিসেবে দেখা যায়।[৩৫][৩৬]ইনতেহা ছাড়াও ঘোষাল মালিকের সুরায়োজনে আরও দুটি চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল মুন্না ভাই এম.বি.বি.এস. ও এলওসি: কারগিল। তন্মধ্যে তিনি প্রথম চলচ্চিত্রটিতে "চন চন" ও দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটিতে "প্যায়ার ভরা গীত" গানে সোনু নিগমের সাথে কণ্ঠ দেন।[৩৭][৩৮] এছাড়া ঘোষাল "তু হি বাতা জিন্দগি" গানের নারী সংস্করণের মধ্যে দিয়ে শঙ্কর-এহসান-লায়ের সাথে তার প্রথম গান রেকর্ড করেন। দ্য হিন্দু গানটিকে পূর্নোদ্দ্যম বলে উল্লেখ করে লিখে যে তিনি এই গানের জন্য "প্রয়োজনীয় অনুভূতি প্রদর্শনে নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে সমর্থ হয়েছেন।"[৩৯]
২০০৪ সালে ঘোষাল থোড়া তুম বদলো থোড়া হাম অ্যালবামের চারটি গানে কণ্ঠ দেন। বলিউড হাঙ্গামার জোগিন্দর টুতেজা গানগুলিকে "গড়পড়তা" বলে উল্লেখ করেন।[৪০] তবে তিনি ঘোষালের খাকি চলচ্চিত্রের গান পরিবেশনায় "মুগ্ধ" হন এবং বলেন যে ঘোষালের কণ্ঠ ঐশ্বর্যা রাইয়ের জন্য মানানসই এবং "ওয়াদা রাহা" গানের সাথে বিশ্বাসযোগ্য।[৪১] অধিকন্তু, সোনু নিগমের সাথে তার দুটি দ্বৈত গান "দিল ডুবা" ও "ইয়ুঁ হি তুম মুঝসে"ও সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা অর্জন করে।[৪১] এছাড়া গর্ব: প্রাইড অ্যান্ড অনার চলচ্চিত্রের "হাম তুমকো নিগাহোঁ মেঁ" ও "সোনিয়ে" গান দুটিতে তার কণ্ঠ প্রদান প্রসঙ্গে টুতেজা বলেন যে "ঘোষালের কণ্ঠ প্রতিনিয়তই বর্তমান অভিনেত্রীদের জন্য আরও বেশি উপযোগী হচ্ছে।"[৪২]দিল বেচারা প্যায়ার কা মারা ছাড়াও ঘোষাল নিখিল-বিনয়ের সাথে আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন, সেগুলো হল ফির মিলেঙ্গে চলচ্চিত্রের "বেতাব দিল হ্যায়",[৪৩] এবং মুসকান চলচ্চিত্রের "ও হো তুম"।[৪৪]
নাদিম-শ্রাবণেরতুমসা নহিঁ দেখা: আ লাভ স্টোরি (২০০৪) চলচ্চিত্রের সুরায়োজনের সময়েই একে ঘোষালের সবচেয়ে সফল অ্যালবাম বলে গণ্য হয়, কারণ তিনি এই অ্যালবামের একটি গান ব্যতীত সবকয়টি গানে কণ্ঠ দেন।[৪৫] তিনি এই অ্যালবামের জন্য জ্যাজ থেকে শুরু করে হালকা প্রণয়মূলক সুরসহ বিভিন্ন ধারার গান পরিবেশন করেন। ঘোষালের মতে, এই অ্যালবামটি তাকে তার গান গাওয়ার সামর্থের সকল ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে।[৪৬] এছাড়া ঘোষাল আনু মালিকের সুরায়োজনে ম্যাঁয় হুঁ না (২০০৪) চলচ্চিত্রে শীর্ষ গান ছাড়াও "তুমহে জো ম্যাঁয়নে দেখা" ও "গোরি গোরি" গানে কণ্ঠ দেন।[৪৭]মিড ডে ইতিবাচক মন্তব্য করে বলে যে ঘোষাল "ম্যাঁয় হুঁ না" গানের জন্য "যথোপযুক্ত সঙ্গ" দিয়েছেন,[৪৮] অন্যদিকে রেডিফ.কম-এর সীমা পান্ত তার পরিবেশনায় মুগ্ধ হন।[৪৯] এই বছরে তিনি প্রথমবারের মত রাজেশ রোশন ও ডাবু মালিকের সাথে কাজ করেন। তিনি রোশনের সুরায়োজনে অ্যায়তবার চলচ্চিত্রের "সাঁসেইঁ গুলনে লাগি" গানে এবং মালিকের সুরায়োজনে ধুম চলচ্চিত্রের "শিকদুম" গানে কণ্ঠ দেন।[৫০][৫১]
ঘোষাল পহেলি (২০০৫) চলচ্চিত্রে "ধীরে জলনা" গানে কণ্ঠ দিয়ে তার দ্বিতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[৫২]ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস-এ বলা হয়, গানটি "হিন্দি চলচ্চিত্রের সঙ্গীতে শাস্ত্রীয় ও জনপ্রিয় ধারার ভারসাম্য ছড়িয়েছে।"[৫৩] "ধীরে জলনা" গানটি ছাড়াও এম. এম. ক্রিমের সুরে তার আরও দুটি গান - "কঙ্গনা রে" ও "মিন্নত করে" শোনা যায়।[৫৪] তিনি ক্রিমের সুরায়োজনে রোগ চলচ্চিত্রের "গুজার না যায়ে" গানেও কণ্ঠ দেন।[৫৫]পরিণীতা (২০০৫) চলচ্চিত্রে তিনি প্রথমবারের মত শান্তনু মৈত্রের সুরায়োজনে কণ্ঠ দেন।[৫৬] এতে তিনি সোনু নিগমের সাথে চারটি গানে কণ্ঠ দেন, তন্মধ্যে রয়েছে "পিয়ু বলে", "কষ্ট মাজা" ও "সুনা মন কা অঙ্গন"।[৫৭][৫৮] এরপর এই যুগল ইয়াহাঁ অ্যালবামের একসাথে কাজ করেন, এতে তিনি "নাম আদা লিখনা", "উরজু উরজু দুরকুত" ও পাঞ্জাবি ভাষার "মেলে চালিয়াঁ" গানে কণ্ঠ দেন।[৫৯] দুটি চলচ্চিত্রেই ঘোষালের কাজ ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে। ঘোষাল "পিয়ু বলে" গানের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন,[৬০] এবং স্ক্রিন পুরস্কার ও জি সিনে পুরস্কার অর্জন করেন।[৬১][৬২] প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে এই গানটির নারী কণ্ঠের জন্য অনেকজন শিল্পীর অডিশন নেওয়ার পর ঘোষালকে গানটি গাওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়।[৫৬] এক সাক্ষাৎকারে মৈত্র বলেন, "প্রদীপ গানটির মাঝে কিছুটা হাসির কম্পিত আওয়াজ চেয়েছিলেন এবং তিনি তা খুব সহজে করেছিলেন।"[৫৬]
"পিয়ু বলে" গানের পাশাপাশি তিনি জেহের চলচ্চিত্রের "আগার তুম মিল যাও" গানের পরিবেশনার জন্য আরেকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৬০] এই গানটি ও একই চলচ্চিত্রের "জানে জা জানে জা" গানটি সঙ্গীত সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে।[৬৩]হিমেশ রেশামিয়ার "আশিক বানায়া আপনে" গানে পার্শ্ব শিল্পী হিসেবে গান গাওয়ার পাশাপাশি একই বছর রেশামিয়ার সুরায়োজনে তার আরও কয়েকটি গান শোনা যায়।[৬৪] আনু মালিকের সুরায়োজনে তার গাওয়া "পেহলে সে" গানের পর্যালোচনায় বলিউড হাঙ্গামা লিখে, "ঘোষাল পরিপক্ব কায়দার গান করেন এবং নিজেকে নির্ভরযোগ্য নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রমাণ করতে আবারো ভালো করেছেন।"[৬৫]বিশাল-শেখরের সুরারোপিত শব্দ চলচ্চিত্রের "বলো তো" গানের জন্যও একই অনুভূতি ব্যপ্ত হয়েছিল।[৬৬]
২০০৬ সালে ঘোষাল বিবাহ প্রথমবারের মত রবীন্দ্র জৈনের সুরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তিনি উদিত নারায়ণের সাথে তিনটি দ্বৈত গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল "মুঝে হক হ্যায়", "দো আনজানে আজনবি" ও "মিলন আভি আধা আধুরা হ্যায়"।[৬৭] এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বাবুল সুপ্রিয়র সাথে "হামারি শাদী মেঁ", পামেলা জৈনের সাথে দুই বোনের আলাপচারিতাসহ গাওয়া "ও জিজি" এবং জৈনের সাথে একটি ভজনে কণ্ঠ দেন।[৬৮]রূপ কুমার রাঠোড়ের সুরে ও লমহে চলচ্চিত্রে "সো জাওঁ ম্যাঁয়" গানে তার অবিভূত করা কণ্ঠ প্রশংসিত হয়।[৬৯][৭০] দীর্ঘ গান হওয়া সত্ত্বেও এই অ্যালবামের এই গানটি বিশেষভাবে সমাদৃত হয়।[৭১] এই বছরে তিনি প্রথমবারের মত সুনিধি চৌহানের সাথে দ্বৈত গান পরিবেশন করেন। তারা সেলিম-সুলেমানের সুরে ডোর (২০০৬) চলচ্চিত্রে একাধিক সঙ্গীতশিল্পী-সমৃদ্ধ গান "ইমান কা আসর" গানে কণ্ঠ দেন।[৭২] তিনি শান্তনু মৈত্রর সুরে লাগে রাহো মুন্না ভাই চলচ্চিত্রে "বান্দে মেঁ থা দম" গানে পার্শ্ব শিল্পী হিসেবে গান গাওয়ার পাশাপাশি সোনু নিগমের সাথে প্রণয়মূলক দ্বৈত গান "পল পল"-এ কণ্ঠ দেন।[৭৩] এই গানটির জন্য তিনি ৫২তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে মনোনীত হন।[৭৪] এছাড়াও বিশাল ভারদ্বাজের সুরে তার গাওয়া "ও সাথী রে" গানটি অন্তরঙ্গ ও গভীর ভালোবাসার অনুভূতি এনে দেয়।[৭৫][৭৬]
২০০৬ সালে রাজেশ রোশনের সুরে ঘোষালের গাওয়া কৃষ চলচ্চিত্রের "প্যায়ার কী এক কাহানি", "কোই তুমসা নহিঁ", ও "চোরি চোরি চুপকে চুপকে" গানগুলি সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করে। বলিউড হাঙ্গামা এই অ্যালবামের পর্যালোচনায় লিখে, "ঘোষাল খুবই দক্ষ এবং বড় প্রকল্পে তার উপস্থিতির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন।" এতে আরও বলা হয় যে ঘোষাল "শ্রেণী, গুণ ও কৌশল"-এর দিক থেকে অলকা ইয়াগনিকের স্তরে পৌঁছেছেন।[৭৭] এই বছর এ আর রহমানের সুরে তামিল ভাষার সিল্লুনু অরু কাদল (২০০৬) চলচ্চিত্রে মানবে ভা গানটির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ ও তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।[৭৮]
২০০৭ সালে হিমেশ রেশামিয়া অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র আপ কা সুরুর-এ রেশামিয়ার সুরে তার সাথে ঘোষালের গাওয়া "ইয়ে তেরা মেরা মিলনা" ও "ঝুট নহি বোলনা" দ্বৈত গান দুটি প্রশংসিত হয় এবং এই অ্যালবামটি ছিল এই বছরের সপ্তম সর্বোচ্চ বিক্রীত অ্যালবাম।[৭৯] এরপর তিনি খোয়া খোয়া চান্দ চলচ্চিত্রের জন্য মুজরা ধারার একটি ঠুমরি রেকর্ড করেন।[৮০] শান্তনু মৈত্রের সুরে "চালে আও সাইয়াঁ" শিরোনামের গানটি ঘোষালের ভিন্ন ধারার কণ্ঠের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়।[৮১] এছাড়া তিনি এই অ্যালবামের আরও দুটি গানের কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল "সখী পিয়া" ও "তিরক তিরক"।[৮২] মৈত্রের সুরে তিনি পুনরায় লাগা চুনরি মেঁ দাগ চলচ্চিত্রে "হাম তো অ্যায়সে হ্যাঁয়" গানে মোহিত চৌহানের সাথে গান পরিবেশন করেন, এতে স্বানন্দ কিরকিরে ও প্রণব বিশ্বাস পার্শ্ব শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ দেন।[৮৩][৮৪] রাজা সেন এই চলচ্চিত্রের "কাচ্ছি কালিয়াঁ" গানটিকে এর "বাজে পুনর্মিশ্রণ আবহ"-এর জন্য কম আবেদনপূর্ণ বলে মনে করেন, তবে তিনি এই গানের জন্য প্রয়োজনীয় ভিত্তি গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখায় ঘোষাল, চৌহান, কেকে, নিগমের প্রশংসা করেন।[৮২] তিনি সাওয়ারিয়া চলচ্চিত্রে মন্টি শর্মার সুরারোপিত "মাশা-আল্লাহ" গানে নেপথ্যে আলাপে অংশ নেওয়া ছাড়াও "জান-ই-জাঁ" ও "সওয়ার গয়ি" গানে তার কণ্ঠ শোনা যায়।[৮৫] একই অ্যালবামের জন্য তিনি প্রথমবারের মত সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর সুরে "থোড়ে বদমাশ" গানে কণ্ঠ দেন।[৮৬]
২০০৮ সালে তিনি ইউ মি অউর হাম, সির্ফ, ঘটোৎকচ, দশাবতার, মেরে বাপ পেহলে আপ, দে তালি, হাল-এ-দিল, থোড়া প্যায়ার থোড়া ম্যাজিক ও কিসমত কানেকশন[৯৮] চলচ্চিত্রের গান গাওয়ার পর প্রীতম চক্রবর্তীর সুরে তার গাওয়া সিং ইজ কিং (২০০৮)-এর "তেরি ওর" গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।[১০০] এটি সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করে।[১০১][১০২] এই গানটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার চতুর্থ ও সবমিলিয়ে পঞ্চম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।[১০৩] এরপর তিনি বাচনা অ্যায় হাসিনো, গড তুসি গ্রেট হো, ওয়েলকাম টু সজ্জনপুর, কিডন্যাপ, কর্জ, এক বিবাহ... অ্যায়সা ভি, দোস্তানা, ও যুবরাজ চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।[৯৮] তিনি বাংলা চলচ্চিত্র অন্তহীন... (২০০৮)-এর "ফেরারি মন"[১০৪] এবং মারাঠি চলচ্চিত্র জোগওয়া (২০০৮)-এর "জিব রংলা" গানে কণ্ঠ দিয়ে তার চতুর্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[১০৫]
২০১০ সালে ইংরেজি ভাষার হোয়েন হ্যারি ট্রাইস টু ম্যারি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তার ইংরেজি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে।[১০৬] একই বছর মালয়ালম চলচ্চিত্র আনোয়ার-এ তার গাওয়া গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই চলচ্চিত্রের "কিজাক পুক্কুম" গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ মালয়ালম নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ লাভ করেন।[১০৭] ঘোষাল এই বছর ব্যান্ড বাজা বারাত চলচ্চিত্রে সেলিম-সুলেমানের সুরে "আধা ইশ্ক" গানে কণ্ঠ দেন। গ্ল্যামশাম-এর সত্যজিৎ বলেন, "শ্রেয়া ঘোষালের নারী কণ্ঠের বুনট গীতিকবিতার জন্য সর্বদাই নির্ভরযোগ্য।"[১০৮]
২০১১ সালে ঘোষাল সচিন-জিগরের সুরে তোচি রায়নার সাথে শোর ইন দ্য সিটি চলচ্চিত্রের দ্বৈত গান "সাইবো" রেকর্ড করেন।[১০৯]গ্ল্যামশাম-এর সত্যজিৎ লিখেন, "শ্রেয়া ঘোষালের সুমধুর সুর ও সম্মোহনকারী সুললিত ধারার গায়কীর সাথে "সাইবো" গানটি নিস্তরঙ্গ বিস্ময় যা প্রণয়ের অনুভূতিকে পূর্ণতা দান করেছে।"[১০৯] এরপর এই বছরে তিনি বডিগার্ড (২০১১) চলচ্চিত্রে রাহাত ফাতেহ আলী খানের সাথে দ্বৈত গান "তেরি মেরি"-তে কণ্ঠ দেন।[১১০]হিমেশ রেশামিয়ার সুরারোপিত গানটি ইতিবাচক ও মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করে।[১১০][১১১]এনডিটিভি গানটিকে "মাঝারি গতির ও গড়পড়তা" বলে অভিহিত করে।[১১০] ঘোষাল এরপর বাপ্পী লাহিড়ীর সাথে দ্য ডার্টি পিকচার-এর "ও লা লা" গানে কণ্ঠ দেন।[১১২]গ্ল্যামশাম-এর আবিদ লিখেন, "শ্রেয়া ঘোষাল তাৎক্ষণিকভাবে সুরকৃত ও বিনোদন প্রদানকারী এবং সুন্দর পরিবেশনার সাথে হাস্যকর টেম্পো ধরে রেখেছেন।"[১১২] ঘোষাল এই বছরের "সাইবো" ও "তেরি মেরি" গানের জন্য আরও দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১১৩]
ঘোষাল ২০১২ সালে অগ্নিপথ চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় আইটেম গান "চিকনি চামেলি"-তে কণ্ঠ দেন।[১১৪]অজয়-অতুল সুরারোপিত গানটি তাদের মারাঠি চলচ্চিত্র জত্রা: হায়লাগাড রে টায়লাগাড-এর "কোম্বডি পালালি" গানের হিন্দি পুনঃসংস্করণ।[১১৫]বলিউড হাঙ্গামার জোগিন্দর টুতেজা লিখেন, "শ্রেয়া ঘোষালের বিশেষ প্রশংসার দাবীদার, তিনি তার গায়কীতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন এবং সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি এই সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কৃত্রিমতাবর্জিত স্বাদ নিয়ে এসেছেন, এবং তার পরিবেশনা অসাধারণ।"[১১৬] তিনি এই গানের জন্য এই বছরে তার প্রাপ্ত দুইটি ফিল্মফেয়ারের মনোনয়নের একটি মনোনয়ন লাভ করেন।[১১৭] পরবর্তী সময়ে তিনি বলেন যে গানটির কুরুচিপূর্ণ গীতের কারণে গানটি গাওয়া তার জন্য খুবই অস্বস্তিকর ছিল এবং তিনি এর কয়েকটি শব্দ পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিলেন।[১১৮] একই বছর তিনি সাজিদ-ওয়াজিদের সুরে রাউডি রাঠোড় চলচ্চিত্রের চারটি গানে কণ্ঠ দেন, যা সমালোচকদের নিকট থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করে।[১১৯][১২০]ফিল্মফেয়ার-এর দেবেশ শর্মা সাজিদের সাথে তার দ্বৈত গান "ধাড়াং ধাং ধাং" সম্পর্কে মন্তব্য করেন, "শ্রেয়া ঘোষাল তার পরিবেশনায় ১৯৯০-এর দশকের তড়কা নিয়ে এসেছেন" এবং ঘুমপাড়ানি গান "চন্দনিয়া" সম্পর্কে তিনি বলেন "শ্রেয়া ঘোষাল অলকা ইয়াগনিকের মত রহস্যময়ভাবে গেয়েছেন এবং প্রমাণ করেছেন তিনি সকল প্রকার গানের শিল্পী।"[১২১]বলিউড হাঙ্গামার জোগিন্দর টুতেজা "চন্দনিয়া" সম্পর্কে বলেন, "শ্রেয়া ঘোষাল পারিপার্শ্বিকতার চাহিদা অনুযায়ী যে কোন ধরনেই মানানসই হতে পারেন।"[১২২] "তেরা ইশ্ক বড়া তিখা" গানটি সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করে।[১১৯][১২০][১২১][১২২] একই বছর ঘোষাল স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার চলচ্চিত্রে উদিত নারায়ণ, বিশাল দাদলানি ও শেখর রবজিয়ানির সাথে "রাধা" গানে কণ্ঠ দিয়ে সমাদৃত হন।[১২৩] এছাড়া তিনি এ আর রহমানের সুরে জব তক হ্যায় জান চলচ্চিত্রে মোহিত চৌহানের সাথে "সাঁস" গানে কণ্ঠ দেন। গানটি সমালোচকদের মিশ্র থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করে।[১২৪][১২৫][১২৬]ইন্ডিয়া টাইমস-এর এক জরিপে, "সাঁস" গানটি "২০১২ সালের সবচেয়ে প্রণয়মূলক গান"-এর খেতাব অর্জন করে।[১২৭] এই গানটির জন্য তিনি এই বছরে তার অপর ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১১৭]
২০১৩ সালের প্রারম্ভে ঘোষাল হিম্মতওয়ালা চলচ্চিত্রের দুটি দ্বৈত গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল ন্যায়নো মেঁ সপ্না ও "তাকি ও তাকি"।[১৩০][১৩১][১৩২][১৩৩] মূল গান দুটির সুর করেছিলেন বাপ্পী লাহিড়ী, যা সাজিদ-ওয়াজিদ পুনঃসৃষ্টি করেন।[১৩০] দুটি গানই সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করেন।[১৩১] "ন্যায়নো মেঁ সপ্না" গানটি সম্পর্কে এনডিটিভির সমালোচক মন্তব্য করেন, "শ্রেয়া ঘোষালের কণ্ঠ শুনে মনে হচ্ছিল এই গানটির জন্য তিনি পূর্বনির্ধারিত ছিলেন" এবং "তাকি ও তাকি" গানটি সম্পর্কে বলেন, "ঘোষাল আবারও এই শিল্পে তার তেজের প্রমাণ দিয়েছেন।"[১৩০] "ন্যায়নো মেঁ সপ্না" সম্পর্কে কইমই-এর শিবি বলেন, "শ্রেয়া ঘোষাল লতা মঙ্গেশকরের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এবং চমৎকার কাজ করেছেন।"[১৩১] ঘোষাল আশিকি ২ চলচ্চিত্রে অঙ্কিত তিওয়ারির সুরে "সুন রাহা হ্যায়" গানের নারী সংস্করণে কণ্ঠ দেন।[১৩৪] তিনি তিওয়ারির গাওয়া এই গানের পুরুষ সংস্করণ থেকেও অধিক সমালোচনামূলক প্রশংসা অর্জন করেন।[১৩৪] এরপর তিনি রানঝানা চলচ্চিত্রের জন্য এ আর রহমানের সুরে "বানারসিয়া" গান পরিবেশন করেন।[১৩৫] গানটি বহুলাংশে ইতিবাচক পর্যালোচনা অর্জন করে।[১৩৫][১৩৬] ঘোষাল সোনু নিগমের সাথে কৃষ ৩ চলচ্চিত্রের দ্বৈত গান "গড, আল্লাহ অউর ভগবান"-এ কণ্ঠ দেন।[১৩৭] গানটি নেতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে।[১৩৭][১৩৮] ঘোষাল এরপর গোলিয়োঁ কী রাসলীলা রাম-লীলা চলচ্চিত্রের দুটি গান রেকর্ড করেন, সেগুলো হল "ধুপ" ও "নাগাড়া সাং ঢোল"। দুটি গানের সুর করেন চলচ্চিত্রটির পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালী। প্রথম গানটির জন্য তিনি ইতিবাচক ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করেন,[১৩৯][১৪০] এবং দ্বিতীয় গানটির জন্য ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করেন। কইমই-এর মোহর বসু "ধুপ" গানের প্রসঙ্গে লিখেন, "শ্রেয়া ঘোষালের কণ্ঠ গুনগুন করে ওঠে এবং গানটিতে গভীর অনুভূতি প্রদান করে।[১৩৯][১৪১] তীব্র অনুভূতি নিয়ে গাওয়া ও স্তুতিমূলক বিষয়বস্তুর গানটি প্রমাণ করে কেন ঘোষাল প্রাজ্ঞ সঙ্গীতজ্ঞদের সাথে তুলনীয়।"[১৩৯] ঘোষাল এই বছর "সুন রাহা হ্যায়" ও "নাগাড়া সাং ঢোল" গানের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৪২]
২০১৪ সালে ঘোষাল পিকে চলচ্চিত্রের তিনটি গান রেকর্ড করেন, সেগুলো হল "নাঙ্গা পুঙ্গা দোস্ত", শানের সাথে দ্বৈত গান "চার কদম" এবং সোনু নিগমের সাথে দ্বৈত গান "লাভ ইজ আ ওয়েস্ট অব টাইম"।[১৪৩] এরপর তিনি বিশাল-শেখরের সুরে হ্যাপি নিউ ইয়ার চলচ্চিত্রের "মানওয়া লাগে" গানে অরিজিৎ সিঙের সাথে কণ্ঠ দেন।[১৪৪][১৪৫] গানটি ইউটিউবে প্রকাশের পর ৪৮ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী ২ মিলিয়ন বার দেখা হয়।[১৪৬] এই গানের জন্য ঘোষাল আরেকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৪৭]
২০১৫ সালে ঘোষাল এ আর রহমানের সুরে আই চলচ্চিত্রে কাজ করেন। তামিল ভাষায় মূল গান "পুক্কালে সত্রু ওয়িবেডুঙ্গল"-এ হরিচরণের সাথে[১৪৮][১৪৯] কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি অরিজিৎ সিঙের সাথে হিন্দি সংস্করণ "তু চলে"[১৫০] ও হরিচরণের সাথে তেলুগু সংস্করণ "পুলানে কুনুকেয়ামান্তা" গানে কণ্ঠ দেন।[১৫১] তামিল ভাষার মূল গানটি সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে, বিশেষ করে সমালোচকগণ ঘোষালের কণ্ঠের প্রশংসা করেন। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস-এর নিকি ভি.পি. তামিল সংস্করণটির ব্যাপারে মন্তব্য করেন, "হরিচরণের সুস্পষ্ট কণ্ঠ, শ্রেয়ার হিন্দুস্তানি গায়কী গানটিকে চার্ট-বাস্টারে রূপ দিয়েছে। শ্রেয়া ঘোষাল প্রসঙ্গে, তার গায়কীর প্রশংসা করার জন্য অভিধানে আমাদের নতুন বিশেষণ খুঁজতে হবে।"[১৪৮] এই বছর তিনি হামারি আধুরি কাহানী চলচ্চিত্রে অমি মিশ্র'র সুরে "হাসি" গানের নারী সংস্করণে কণ্ঠ দেন, যা অমি মিশ্র'র গাওয়া পুরুষ সংস্করণ থেকে অধিক সমাদৃত হয়।[১৫২][১৫৩]ফিল্মফেয়ার-এর দেবেশ শর্মা মন্তব্য করেন, "শ্রেয়া ঘোষালের গাওয়া "হাসি" গানের নারী সংস্করণটি অতিথি সুরকার অমি মিশ্র'র নিজের গাওয়া পুরুষ সংস্করণের চেয়ে বেশি কার্যকর। ঘোষাল তার অনবদ্য প্রচেষ্টার ও কোমল সঙ্গীতায়োজনের মধ্য দিয়ে সর্বোপরি গানটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।"[১৫২] এছাড়া তিনি ব্রাদার্স চলচ্চিত্রে অজয়-অতুলের সুরে "গায়ে যা" গানের নারী সংস্করণে কণ্ঠ দেন, যা সঙ্গীত সমালোচকদের নিকট থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা অর্জন করে।[১৫৪][১৫৫][১৫৬][১৫৭]দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখে, "শ্রেয়া ঘোষাল তার এই পরিবেশনার জন্য মিষ্টিস্বভাবের ক্ষুদ্রকায় পরীর মত সুর দিয়েছেন।"[১৫৬]গ্ল্যামশাম ঘোষালের কণ্ঠের প্রশংসায় লিখে যে তা "মিষ্টি ও খুবই নিয়ন্ত্রীত।"[১৫৪]বলিউড লাইফ মন্তব্য করে, "শ্রেয়া ঘোষাল তার সুমধুর কণ্ঠ দিয়ে শ্রোতাদের বিস্মিত করেছেন।"[১৫৫]
একই বছর তিনি সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর সাথে বাজীরাও মস্তানী চলচ্চিত্রে কাজ করেন।[১৫৮] তিনি এই চলচ্চিত্রের তিনটি গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলি হল "মোহে রং দো লাল", "দিওয়ানি মস্তানী", ও "পিঙ্গা"।[১৫৯][১৬০] এই গানগুলির তামিল ও তেলুগু সংস্করণেও তিনি কণ্ঠ দেন।[১৬১][১৬২] কাওয়ালি সমৃদ্ধ "দিওয়ানি মস্তানী" গানটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার পঞ্চম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।[১৬৩][১৬৪] এছাড়া তিনি এই বছর মালয়ালম ভাষার এন্ন নিন্টে মোইধিঁ চলচ্চিত্রের "কাতিরুন্নু কাতিরুন্নু" গানে কণ্ঠ দিয়ে শ্রেষ্ঠ মালয়ালম নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ অর্জন করেন।[১৬৫]
২০১৬ সালের শুরুতে তিনি ওয়াজির চলচ্চিত্রে "তেরে বিন" দ্বৈত গানে সোনু নিগমের সাথে কণ্ঠ দেন।[১৬৬]শান্তনু মৈত্র সুরারোপিত ও বিধু বিনোদ চোপড়া রচিত গানটি সমালোচকদের নিকট থেকে ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে।[১৬৬][১৬৭]বলিউড হাঙ্গামার সমালোচক গানটিকে "চলচ্চিত্রের সুন্দর শুরু" হিসেবে উল্লেখ করে মন্তব্য করেন, "যদিও এই গানটির শব্দ বর্তমান সময়ের পটভূমিতে নির্মিত একটি চলচ্চিত্রের জন্য অনেকাংশে শাস্ত্রীয় ধারার, তবে যে কেউ প্রত্যাশা করতে পারেন যে এটি যে কোন বর্ণনায় উপযোগী হবে।"[১৬৬] এরপর জিৎ গাঙ্গুলীর সুরে সনম রে চলচ্চিত্রে "তুম বিন জিয়া যায়ে" গানে ঘোষালের কণ্ঠ শোনা যায়।[১৬৮] এটি নিখিল-বিনয়ের সুরে কে. এস. চিত্রার গাওয়া ২০০১ সালের তুম বিন চলচ্চিত্রের একই শিরোনামের গানের পুনঃসংস্করণ। এই গানটি ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ধরনের পর্যালোচনা লাভ করে।[১৬৮][১৬৯][১৭০] ঘোষাল ইশ্ক ফরেভার চলচ্চিত্রে নাদিম সাইফির সুরে "মেরে আঁখোঁ সে নিকলে আঁসু" ও "ইশ্ক কি বারিশ" গানে কণ্ঠ দেন, সমালোচকগণ ঘোষালের গায়কীর ধরনকে অলকা ইয়াগনিকের ধরনের সাথে তুলনা করেন।[১৭১][১৭২][১৭৩] "মেরে আঁখোঁ সে নিকলে আঁসু" গান প্রসঙ্গে দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া মন্তব্য করে, "শ্রেয়া জাদু সৃষ্টি করেছেন, যা হৃদয় থেকে আসে।"[১৭১] ঘোষাল মারাঠি চলচ্চিত্র সৈরাট-এ অজয়-অতুলের সুরের "আতাচ বায়া কা বাবার্লা" গান পরিবেশন করেন, যা সমাদৃত হয়।[১৭৪][১৭৫]অঙ্কিত তিওয়ারির সুরে তার গাওয়া রুস্তম চলচ্চিত্রের "জব তুম হোতে হো" গানটিও সমাদৃত হয়।[১৭৬][১৭৭]ফিল্মফেয়ার-এর দেবেশ শর্মা গানটিকে "বিষণ্ণ" বলে উল্লেখ করেন এবং এই গানে ঘোষালের "সুমধুর" কণ্ঠের ব্যবহারের প্রশংসা করেন।[১৭৭] ঘোষাল এরপর তামিল চলচ্চিত্র দেবী-এর "রং রং রঙ্গোলি" গান পরিবেশন করেন।[১৭৮] তিনি এই গানটির হিন্দি সংস্করণ "রাঙ্গা রে" গানেও কণ্ঠ দেন[১৭৯] এবং গানটির তেলুগু সংস্করণ "রং রং রঙ্গারে" গানে কণ্ঠ দেন শ্বেতা মোহন। ইন্ডিয়া ওয়েস্ট হিন্দি সংস্করণটির প্রশংসা করে মন্তব্য করেন, "ঘোষাল গানটির কয়েকটি অংশে প্রমাণ করেছেন যে তিনি সুনিধি চৌহানের মত গাইতে পারেন এবং তার বলিষ্ঠ কণ্ঠ নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পীদের জন্য বলিষ্ঠ উদাহরণ উপস্থাপন করেছে।"[১৭৯] তামিল সংস্করণটিও ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে।[১৭৮]
২০১৭ সালের শুরুতে ঘোষাল বদ্রীনাথ কি দুলহনিয়া চলচ্চিত্রের আমাল মালিকের সুরে তার সাথে দ্বৈত গান "আশিক সারেন্ডার হুয়া" পরিবেশন করেন। গানটি শাব্বির আহমেদের লেখা অদ্ভুত গীতের জন্য প্রশংসিত হয়। "আশিক সারেন্ডার হুয়া" ঘোষালের স্বাভাবিকের চেয়ে নিম্ন স্বরে গাওয়া অল্প কয়েকটি গানের মধ্যে অন্যতম। ফার্স্টপোস্ট-এর শ্বেতা রামকৃষ্ণন বলেন, "এই গানটির সবচেয়ে ভালো দিক হল শ্রেয়া ঘোষাল নিম্ন স্বরগ্রামে গাইছেন; যা খুবই অল্পই শোনা যায়।"[১৮০]বলিউড লাইফ-এর গৌরঙ্গ চৌহান এই গানের দুজন সঙ্গীতশিল্পী সম্পর্কে বলেন, "এমন একটি গানের জন্য দুজনেই অদ্বিতীয় নির্বাচন ছিল এবং তারা সেটা প্রমাণ করেছেন।"[১৮১] এরপর ঘোষাল নাম শাবানা চলচ্চিত্রের "রোজানা" গানে কণ্ঠ দেন। সমালোচকগণ এই গানটিতে তার কণ্ঠের প্রশংসা করেন। সিনেস্তান-এর শ্রিরাম আয়েঙ্গার মন্তব্য করেন, "ঘোষালের কণ্ঠ গানটিতে আনন্দ ও সন্তুষ্টির ভারসম্য বজায় রেখে সম্মোহক স্পর্শ নিয়ে এসেছে।"[১৮২] "রোজানা" গানে ঘোষালের কণ্ঠের প্রশংসা করে ইন্ডিয়া ওয়েস্ট মন্তব্য করে, "বলতে গেলে তিনি এই চলচ্চিত্রের সঙ্গীতে তার সর্বোচ্চ প্রদান করেছেন যা প্রয়োজনের চেয়েও অধিক।"[১৮৩] এছাড়া তিনি এ আর রহমানের সুরে হরিহরণের সাথে ভাইসরয়স হাউজ চলচ্চিত্রের হিন্দি সংস্করণের জন্য "দো দিলোঁ কে" গানে,[১৮৪] এবং টয়লেট: এক প্রেম কথা চলচ্চিত্রের "হাঁস মাত পাগলি" গানে সোনু নিগমের সাথে কণ্ঠ দেন।[১৮৫] দুটি গানই সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। দ্বিতীয় গানটি প্রসঙ্গে বলিউড হাঙ্গামার জোগিন্দর টুতেজা বলেন, "সোনু-শ্রেয়ার যুগলবন্দী গানটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে এবং বারবার শ্রবণযোগ্য করে তুলেছে।"[১৮৬]
২০১৭ সালে তিনি ফারহান সাঈদের সঙ্গীত পরিচালনায় তার সাথে হাফ গার্লফ্রেন্ড চলচ্চিত্রের "তোড়ি দের" গানে কণ্ঠ দেন। গানটি প্রশংসিত হয় এবং এই গানের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৮৭][১৮৮][১৮৯]কইমই লিখে, "তোড়ি দের গানে ঘোষালের কণ্ঠ মধুর মত মিষ্টি যা শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে।"[১৮৯]গ্ল্যামশাম লিখে, "ঘোষাল এক কথায় চমৎকার এবং গানটি বারবার শুনার যোগ্য।"[১৮৮] একই বছর তিনি টি-সিরিজের ওয়েব ধারাবাহিক মিক্সটেপ-এর পঞ্চম পর্বে তার পরিবেশিত দুটি গান ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া অর্জন করে।[১৯০] ঘোষালের চারটি কন্নড় ভাষার গান দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার "২০১৭-এর শীর্ষ ১০ প্রণয়মূলক গান" তালিকায় স্থান লাভ করে, গানসমূহ হল হেব্বুলি চলচ্চিত্রের "উসিরে উসিরে", চক্রবর্তী চলচ্চিত্রের "ওন্ডু মালেবিল্লু", মুগুলু নাগে চলচ্চিত্রের "নিন্না স্নেহাদিন্দা", ও মাস্তি গুড়ি চলচ্চিত্রের "চিপ্পিনোলাগাড়ে"।[১৯১] এছাড়া সারাইনোডু চলচ্চিত্রে তার গাওয়া "ব্লকবাস্টার" গানটি দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার ২০১৭-এর শীর্ষ ১০ পার্টি গান তালিকায় শীর্ষ স্থান লাভ করে।[১৯২]
২০১৮ সালে ঘোষাল এস. থামনের সুরে ভাগমতি চলচ্চিত্রের "মানধরা" গান এবং তোলি প্রেমা চলচ্চিত্রের "আল্লাসানি বারি" গানে কণ্ঠ দেন।[১৯৩] এছাড়া তিনি ফির সে... চলচ্চিত্রে চারটি গানে কণ্ঠ দেন।[১৯৪] তিনি ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী পদ্মাবত চলচ্চিত্রের "ঘুমর" গানে স্বরূপ খানের সাথে কণ্ঠ দেন। চলচ্চিত্রটির পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালী এই গানটি রাজস্থানের রাজপুত রানীর ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও নৃত্য ধারা অবলম্বনে সুর করেন।[১৯৫][১৯৬] এই গানটি সমাদৃত হয় এবং সমালোচকগণ ঘোষালের সঙ্গীত পরিবেশনার প্রশংসা করেন।[১৯৭][১৯৮][১৯৯]টাইমস নাউ-এর গৌরঙ্গ চৌহান মন্তব্য করেন, "গানটি আবেদনময়ী এবং যদি এখনো না হয়ে থাকে তবে ভারত জুড়ে নৃত্য পরিবেশকদের কাছে জনপ্রিয় হবে।"[১৯৯] "ঘুমর" গানটির জন্য ঘোষাল তার ষষ্ঠ শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন।[২০০] এরপর তিনি বাগী ২ চলচ্চিত্রে জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের উপর চিত্রায়িত তেজাব (১৯৮৮) চলচ্চিত্রের "এক দো তিন" গানের পুনঃসংস্করণে[২০১] এবং নবাগত ইশান খট্টর ও জাহ্নবী কাপুর অভিনীত ধড়ক চলচ্চিত্রের শীর্ষ গানে কণ্ঠ দেন।[২০২]
ঘোষাল ২০১৯ সাল শুরু করেন অভিষেক বর্মণের নাট্যধর্মী কলঙ্ক চলচ্চিত্রের দুটি ধ্রুপদী ধারার গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে। "ঘর মোরে পরদেশিয়া" ও "তবাহ হো গয়ে" গান দুটি বিপুল প্রশংসা লাভ করে।[২০৩][২০৪] গান দুটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জি সিনে পুরস্কার-সহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি আমাল মালিকের সুরে কবির সিং চলচ্চিত্রে শাহিদ কাপুর ও পার্শ্ব অভিনেত্রী নিকিতা দত্তার উপর চিত্রায়িত "ইয়ে আয়না" গানে[২০৫] এবং সাজিদ-ওয়াজিদের সুরে দাবাং ৩ চলচ্চিত্রে জুবিন নটিয়ালের সাথে "হাবিবি কে নয়ন" গানে কণ্ঠ দেন, সমালোচকগণ গানটিকে সুমধুর, হৃদয়গ্রাহী ও সুললিত বলে উল্লেখ করে।[২০৬][২০৭] এই বছরের পরবর্তী সময়ে তিনি রাজ নিদিমরু ও কৃষ্ণ ডি. কে. পরিচালিত আমাজন প্রাইম ভিডিওর মৌলিক ধারাবাহিক দ্য ফ্যামিলি ম্যান-এর দুটি গানে কণ্ঠ দেন। সচিন-জিগরের সুরে র্যাপার মেলো ডি'র সাথে তার গাওয়া গান দুটি হল "কিসকে লিয়ে তু মরেগা" ও "দেগা জান", যা এই ধারাবাহিকের আপবিট শীর্ষ গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দুটি গানে তার পরিবেশনা ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে, এবং ভারতীয় সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংগ্রামের মহিমাকীর্তন করা গীত বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়।[২০৮]
ঘোষাল কয়েকটি স্বাধীন একক গান দিয়ে নতুন দশক শুরু করেন।[২০৯] এতে তিনি সৌম্যদীপ ঘোষালের সাথে সুরকার হিসেবেও কাজ করেন।[২১০] তিনি "নাহ ও ম্যাঁয়" শীর্ষক স্বাধীন একক গান প্রকাশ করেন। এরপর তিনি মন ভিতর (২০২০) অ্যালবামের জন্য পণ্ডিত বিরজু মহারাজের কবিতার সঙ্গীতরূপ রেকর্ড করেন।[২১১] তিনি এই অ্যালবামের শীর্ষ গান "মন ভিতর" ও "ভারি ভারি" নামক দুটি শাস্ত্রীয় গান রেকর্ড করেন।[২১২] পরবর্তীকালে তিনি ভারতের ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সম্মাননা স্বরূপ "আপনি মাটি" গান প্রকাশ করেন।[২১৩] গানটি এর দেশাত্মবোধক বার্তার জন্য প্রশংসিত হয় এবং সধগুরুর ইশা ফাউন্ডেশনের "মাটি বাঁচাও" আন্দোলনের প্রচারণায় ব্যবহৃত হয়।[২১৪] ঘোষাল এরপর দর্শন রাবলেরজুদাইয়াঁ (২০২০) অ্যালবামের "জুদাইয়াঁ" গানের তার সাথে কণ্ঠ দেন। এটি বিলবোর্ড শীর্ষ ট্রিলার গ্লোবাল চার্টে ১ নং স্থান অধিকার করে।[২১৫][২১৬] এছাড়া তিনি সেলিম-সুলেমানেরভূমি (২০২০) অ্যালবামের "মুরালিয়া" গানে কণ্ঠ দেন।[২১৭] ২০২০ সালে তিনি তানহাজী চলচ্চিত্রের "মায় ভবানী", শিকারা চলচ্চিত্রের "ঘর ভরা সা লাগে", দিল বেচারা চলচ্চিত্রের "তারে গিন" এবং শকুন্তলা দেবী চলচ্চিত্রের "পহেলি"-সহ আরও কয়েকটি বলিউড চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।
ঘোষাল ২০২১ সালে সায়না চলচ্চিত্রের বীরগাঁথাধর্মী "চল ওয়াহিঁ চলেঁ" গানটি প্রশংসিত হয়। ফিল্মফেয়ার ভিত্তিক একজন সমালোচক তার পর্যালোচনায় লিখেন, "শ্রেয়া জানেন কীভাবে গীতে লুকিয়ে থাকা সামান্য তারতম্যকে বের করা আনা যায় এবং আমাল মালিক এই সঙ্গীতশিল্পীকে এই সুরেলা গানটিতে প্রধান ভূমিকা পালনের সুযোগ করে দেন।"[২১৮] এরপর মিমি চলচ্চিত্রের "পরম সুন্দরী" গানে ঘোষালের কণ্ঠ শোনা যায়, যা এই বছরের অন্যতম শ্রোতাপ্রিয় গান হয়ে ওঠে[২১৯] এবং বিলবোর্ড গ্লোবাল এক্সক্লুডিং ইউ.এস. চার্টে ১৮৪ নং স্থান অধিকার করে।[২২০] এই গানের জন্য তিনি সমাদৃত হন এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২২১] ঘোষালের পরবর্তী গান ছিল ভুজ: দ্য প্রাইড অব ইন্ডিয়া চলচ্চিত্রের "জালিমা কোকা কোলা"।[২২২] এরপর তিনি অতরঙ্গি রে চলচ্চচিত্রের "চকা চক" ও "তেরে রঙ" গানে কণ্ঠ দেন, দুটি গানই সমাদৃত হয়।[২২৩][২২৪] প্রথম গানটি তাৎক্ষণিক জনপ্রিয়তা অর্জন করে ও ইন্সটাগ্রাম রিলে ভাইরাল হয়।[২২৫][২২৬] গানটির জন্য তিনি আরেকটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২২১] "চকা চক", "পরম সুন্দরী" ও "জালিমা কোকা কোলা" গানগুলো ২০২১ সালের সবচেয়ে বেশি বার দেখা শীর্ষ ২৫ হিন্দি গানের মধ্যে ছিল।[২২৭] ২০২১ সালে ঘোষাল কয়েকটি স্বাধীন গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল টনি কক্করের সাথে "ও সনম",[২২৮] আমাল মালিকের সাথে "প্যায়ার এক তরফা",[২২৯] জাভেদ-মহসিনের সাথে "প্যায়ার করতে হো না"[২৩০] এবং তার নিজের গীত ও সুরে "আঙ্গনা মোরে"।[২৩১] তার একক স্বাধীন গানটি বিলবোর্ড টপ ট্রিলার গ্লোবাল চার্টে শীর্ষ স্থানে ছিল।[২৩২]
ঘোষাল পাঞ্জাবি ভাষার একক গান "উফ" দিয়ে ২০২২ সাল শুরু করেন।[২৩৩][২৩৪] তার পরবর্তী গান গঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াডি চলচ্চিত্রের "জব সাইয়াঁ" সমাদৃত হয়।[২৩৫][২৩৬]ফার্স্টপোস্ট-এর লক্ষ্মী গোবিন্দ্রজন তার সঙ্গীত পর্যালোচনায় গানটিকে এই অ্যালবামের সেরা গান বলে উল্লেখ করেন এবং লিখেন, "হারমোনিয়াম ও সারেঙ্গি দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রণয়গাঁথা নিখুঁত অলঙ্কৃত কথা আবহ সৃষ্টি করে। গণিকালয়ের পটভূমিতে হলেও এতে সুমধুর কণ্ঠ ও এতটা নিষ্কলুষতা জড়ানো রয়েছে যা শুধু শ্রেয়া ঘোষালের মত ক্ষমতাসম্পন্ন সঙ্গীতশিল্পীই গণিকালয় থেকে এমন সতীত্বপূর্ণ কিছু বের করে আনতে পারেন"।[২৩৫]দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও পিঙ্কভিলা "জব সাইয়াঁ" গানটিকে তাদের ২০২২ সালের অন্যতম সেরা গান হিসেবে তালিকাভুক্ত করে[২৩৭][২৩৮] এবং এর জন্য ঘোষাল ফিল্মফেয়ার ও আইফা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২৩৯][২৪০] ঘোষালের এরপর বচ্চন পাণ্ডে চলচ্চিত্রের "হীর রাঞ্ঝানা" গানে কণ্ঠ দেন। এই গানের বিলবোর্ড নিউ ইয়র্কেরটাইমস স্কয়ারে প্রদর্শিত হয়।[২৪১] ঘোষাল এরপর বহুভাষী রাধে শ্যাম চলচ্চিত্রের দুটি গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল তেলুগু ভাষায় "নিন্নেলে" ও তামিল ভাষায় "উন্নালে"।[২৪২][২৪৩] তিনি অজয়-অতুলের সুরে মারাঠি ভাষার সঙ্গীতধর্মী চন্দ্রমুখী-তে দুটি গানে কণ্ঠ দেন, তন্মধ্যে একটি লাবণী ধারার "চন্দ্রা" ও গাঁথা "তু চাঁদ রাতি", দুটি গানই সমাদৃত হয়।[২৪৪][২৪৫] প্রথম গানটির জন্য তিনি মারাঠি ফিল্মফেয়ারের মনোনয়ন লাভ করেন[২৪৬] এবং গানটি ইনস্টাগ্রাম রিলের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করে।[২৪৭][২৪৮]
ঘোষাল ২০২২ সালে এ আর রহমানের সুরকৃত কয়েকটি ভিন্ন ভাষার গানে কণ্ঠ দেন। প্রথমে তিনি তামিল ভাষার ইরাবিন নিজাল চলচ্চিত্রের "মায়াবা থোয়াবা" গানটির জন্য ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাভ করেন।[২৪৯] তিনি এই গানের তেলুগু ভাষার সংস্করণ "মায়াবা চায়াবা" গানেও কণ্ঠ দেন,[২৫০] যার জন্য তিনি পঞ্চমবারের মত শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ঘোষাল এরপর তামিল ভাষার বেন্ধু থানিন্ডাথু কাডু চলচ্চিত্রের "উন্না নেনাচাধুম" গানে কণ্ঠ দেন।[২৫১] তিনি তামিল ভাষার কোবরা চলচ্চিত্রের "থুম্বি থুল্লাই" গানের জন্য সমাদৃত হন।[২৫২][২৫৩] এছাড়া তিনি এই গানের কন্নড় সংস্করণ "ডাম্বি ডাম্বি",[২৫৪] মালয়ালম সংস্করণ "থুম্বি থুল্লাই",[২৫৫] ও তেলুগু সংস্করণ "চুপে ওহাল্লো" গানেও কণ্ঠ দেন।[২৫৬] ২০২২ সালের এ আর রহমানের সুরে তার শেষ গানটি ছিল তামিল ভাষার পোন্নিয়িন সেল্বন: ১ চলচ্চিত্রের "রাতচাসা মামানি"।[২৫৭] তিনি এই গানের তেলুগু সংস্করণ "রাচাসা মাভায়া",[২৫৮] কন্নড় সংস্করণ "রাক্ষস মামানে",[২৫৯] হিন্দি সংস্করণ "রাক্ষস মামা রে"[২৬০] ও মালয়ালম সংস্করণ "রাক্ষস মামানে"[২৬১] এবং এই চলচ্চিত্রের হিন্দি সাউন্ডট্র্যাকের "বোল" গানে কণ্ঠ দেন।[২৬২] ঘোষাল দুটি গানের জন্য সমাদৃত হন, যেখানে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর সুয়াংশু খুরানা তার সঙ্গীত পর্যালোচনায় ঘোষালের "রাক্ষস মামা রে" গান গাওয়ায় "অসাধারণ মাধুর্যের" উল্লেখ করেন এবং আরও লিখেন ঘোষাল আলাপ ও চমৎকার "বোল" গানে সব ছাপিয়ে গেছেন।[২৬৩] ঘোষাল এরপর মাজা মা চলচ্চিত্রের গর্বা গান "বুম পাড়ি" গানের জন্য প্রশংসিত হন।[২৬৪][২৬৫] তিনি এরপর ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান – শিবা চলচ্চিত্রের "রসিয়া" গানে কণ্ঠ দেন,[২৬৬] যার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে আইফা পুরস্কার অর্জন করেন।[২৬৭][২৪০] তিনি এরপর সেলিম-সুলেমানের অ্যালবাম ভূমি (২০২২)-এর "লট আ মেরে দেস" গানে কণ্ঠ দেন।[২৬৮] তার পরবর্তী গান ছিল মার্কিন অ্যা কাপেলা সঙ্গীতদল পেন্টাটোনিক্সের গ্র্যামি মনোনীত অ্যালবাম অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড (২০২২)-এর "ইনভিন্সিবল"।[২৬৯][২৭০] ঘোষাল এরপর সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর গজলের অ্যালবাম সুকুন (২০২২)-এর দুটি গজলে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল "তুঝে ভি চাঁদ" ও "কারার"।[২৭১][২৭২] সমালোচক সুভাষ কে. ঝা তার পর্যালোচনায় "তুঝে ভি চাঁদ" গানে আমোদপূর্ণ মাদকতা ও শিল্পানুগ হুক ছত্রের প্রশংসা করেন এবং "কারার" গানের প্রশংসা করে লিখেন "মোমিন খান মোমিনের অমর গজল ও জো হাম মেঁ তুম মেঁ কারার থা" এর শ্রেয়ার গায়কী শ্রমসাধ্য ছিল"।[২৭৩][২৭৪] ঘোষাল সালাম ভেঙ্কি চলচ্চিত্রের "জো তুম সাথ হো" (দ্বৈত ও ঘুমপাড়ানি সংস্করণ),[২৭৫]সার্কাস চলচ্চিত্রের "সুন জরা"[২৭৬] ও মারাঠি চলচ্চিত্র বেদ-এর "সুখ কালালে" দিয়ে ২০২২ সাল সমাপ্ত করেন,[২৭৭] তন্মধ্যে তিনি সুখ কালালে" গানটি সমাদৃত হয়,[২৭৮][২৭৯] এবং তিনি এই গানের জন্য মারাঠি ফিল্মফেয়ারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২৪৬]
শ্রেয়া ২০১৫ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি তার শৈশবের বন্ধু শিলাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের সাথে বাঙালি হিন্দু রীতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[২৮০] বিয়ের পূর্বে তাদের ১০ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘোষাল তার নিজের সম্পর্কে বলেন যে তিনি গান গাওয়ার পাশাপাশি ভ্রমণ করতে ও বই পড়তে পছন্দ করেন, কিন্তু রান্না তাকে অধিক তৃপ্তি দেয়।[২৮১]
ঘোষাল বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন। ২০১৩ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যান এবং ব্রিসবেন কনভেনশন সেন্টার, মেলবোর্নের ডালাস ব্রুকস সেন্টার, সিডনি অপেরা হাউজ ও অকল্যান্ডের ভোডাফোন ইভেন্টস সেন্টারে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।[২৮২] একই বছর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।[২৮৩] এছাড়া এই বছর তিনি পাইলেসে স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মরিশাসে তীব্র বৃষ্টিপাতে হতাহতদের সাহাযার্থে আয়োজিত এক কনসার্টে অংশগ্রহণ করেন।[২৮৪] তিনি ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ১৮তম বার্ষিক দিবস উপলক্ষ্যে হৃষীকেশ রানাদের সাথে মঞ্চে পরিবেশনা করেন।[২৮৫] তিনি ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দুইবার লন্ডন সফরে যান এবং সেখানে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে পরিবেশনা করেন। ২০১৩ সালে প্রথম সফরে তিনি বলিউডের ১০০ বছর পূর্তি উদ্যাপনের অংশ হিসেবে একাধিক বলিউডের পুরাতন হিট গান পরিবেশন করেন।[২৮৬][২৮৭][২৮৮]
২০১৬ সালে ঘোষাল ১৭ বছর বয়সী এক অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লুকেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সাহাযার্থে একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন।[২৯৫] একই বছর তিনি সিডনি অলিম্পিক পার্কে একটি কনসার্টে গান পরিবেশন করেন।[২৯৬] ২০১৭ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটের ফক্স থিয়েটারে চল্লিশ সদস্য বিশিষ্ট সিমফনি ব্যান্ডের সাথে একটি কনসার্টে গান পরিবেশন করেন।[২৯৭]
শ্রেয়া ঘোষালের প্রথমদিকের সঙ্গীত বিষয়ক স্মৃতি হল তার মাতা শর্মিষ্ঠা ঘোষালের গান শোনা, তিনি একটি ক্লাবে শাস্ত্রীয় বাংলা গান গেয়েছিলেন।[২৯৮] শৈশবে তিনি তার মায়ের মাধ্যমেই সঙ্গীতের সাথে পরিচিত হন, তার মাকে তিনি তার প্রথম "গুরু" হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।[৬] তার বলেন যে তা মাতা তার সর্বশ্রেষ্ঠ সমালোচক।[২৯৯]
ঘোষাল নিম্ন স্বরে গান পরিবেশন করে থাকেন।[৩০৬]মেট্রো টাইমস তার কণ্ঠকে "মিষ্টি ও ধোঁয়াটে সোপরানো" বলে উল্লেখ করে,[৩০৭] এবং দ্য হিন্দু তার কণ্ঠকে "সুমধুর" ও "কিছুটা রুক্ষ" বলে বর্ণনা করে।[৩০৮] এক সাক্ষাৎকারে ঘোষাল উল্লেখ করেন যে তার কণ্ঠ শুরুর সময়ের "মেয়েলি চড়া সুর" থেকে আরও পরিপক্বতা লাভ করেছে।[৩০৬] গণমাধ্যমে তার কণ্ঠকে উচ্চ-স্বরের সঙ্গীত পরিবেশনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী বলে বর্ণিত হয়েছে, যদিও কয়েকজন সমালোচক বলেছেন যে যখন তিনি উচ্চ স্বরগ্রামে পৌঁছান তার কণ্ঠ চিৎকারে পরিণত হয়।"[৩০৯] একই ভাবে কনফেশন অব আ কাওয়ার্ড - অ্যান ইন্ডিয়ান অ্যাডভেঞ্চার বইতে বর্ণিত হয়েছে যে ঘোষালের উচ্চ-স্বরের কণ্ঠ আকর্ষণীয় ও হৃদয়গ্রাহী, কিন্তু প্রায়ই একই রকমের মনে হয়।[৩১০] ঘোষাল স্বয়ংক্রিয়-সুর ব্যবহার করে স্বরগ্রাম ঠিক করার বিপক্ষে কথা বলেন।[৩১১][৩১২] তার গান গাওয়া ও গানের মহড়ার ধরন সম্পর্কে তিনি বলেন, "যখন আমাকে গান শোনানো হয়, তখন আমার গীত লেখার বিশেষ ধরন রয়েছে। গানটি যে ভাষাতেই হোক না কেন, এমনকি বাংলা ভাষায় হলেও, আমি তা হিন্দি ভাষায় লেখি। আমার নির্দিষ্ট স্বরলিপি ও কীভাবে উচ্চারণ করা হবে তা দাগানোর কৌশল রয়েছে। আমি মনে করি দেবনাগরী লিপি ভাষার ধ্বনিতত্ত্বের খুবই নিকটবর্তী। ইংরেজি অক্ষরগুলো এই কাজের জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। এছাড়া আমার নিকট যখন গানের কথা পড়ে শোনানো হয় তখন আমি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনি ও যতটুকু সম্ভব আয়ত্ত করার চেষ্টা করি।"[৬]
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনুসারে, "তার কণ্ঠে প্রশান্তি" ও "ঈর্ষনীয় উঠানামা" তাকে তার সমসাময়িক সঙ্গীতশিল্পীদের থেকে আলাদা করেছে।[৩১১] তার কণ্ঠের ওঠানামার বৈচিত্র সম্পর্কে তারা আরও উল্লেখ করে, "তার কণ্ঠের স্বর পরিবর্তন এতটাই সুমধুর যে রেকর্ডিং স্টুডিওতে নিয়ে আসার পর তা কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে দুষ্টুমি-সম্পন্ন, আবেদনময়, গম্ভীর, দুঃখ ভারাক্রান্ত, হাস্যরসাত্মক ও বিশুদ্ধ ধ্রুপদী সুরে পরিবর্তন করা যায়।"[৩১১] শ্রেয়া ঘোষালকে "এই প্রজন্মের সবচেয়ে বৈচিত্রপূর্ণ সঙ্গীতশিল্পী" হিসেবে উল্লেখ করে ইন্ডিয়া ওয়েস্ট "নিম্ন স্বরগ্রাম থেকে উচ্চ স্বরগ্রামে" যাওয়ার সময়ে তার কণ্ঠের নিস্তরঙ্গতার প্রশংসা করে।[৩১৩]দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া অনুসারে, ঘোষাল ধ্রুপদী থেকে শুরু করে বিশুদ্ধ বাণিজ্যিক সঙ্গীতসহ বিভিন্ন ধরনের গানে গাওয়ার মধ্য দিয়ে তার সঙ্গীতে "বৈচিত্রতার ছাপ" ধরে রাখেন।[৩১৪] ২০০৩ সালে ঘোষাল স্বীকার করেন যে তিনি তার কণ্ঠ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, ফলে কোন সঙ্গীত পরিচালকই তাকে কোন নির্দিষ্ট মোড়কে আচ্ছাদিত করতে পারেননি।[৩১৪]
ঘোষাল কল্যাণজী বীরজী শাহের নিকট কণ্ঠের তালিম নেন এবং কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তিনি কণ্ঠ প্রদান, সরল স্বরগ্রাম, ও কম্পন সম্পর্কিত কৌশল সমূহ রপ্ত করেন। তিনি মনে করেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেপথ্য সঙ্গীতের অন্যতম সম্পদ কারণ তা কণ্ঠকে মানানসই ও সতেজ রাখে।[৩২] সঙ্গীত পরিচালক শেখর রবজিয়ানি ঘোষালের গায়কীর বৈচিত্রতার প্রশংসা করেন।[৩১৫]সোনু নিগমের মত ঘোষালের সর্বোত্তম গুণ হল তার অভিব্যক্তিগুলো সঠিক ঢঙের সাথে আসে।[৩১৬][৩১৭]সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীতশিল্পী এম. জয়চন্দ্রণ ঘোষালের প্রশংসা করে বলেন, "তিনি যেভাবে গীতগুলো হিন্দিতে লিখেন তা চমৎকার এবং এরপর মালয়ালম শব্দে তার স্বরূপে অভিব্যক্তি গুলো প্রকাশ করে থাকেন।[৩১৮] এক সাক্ষাৎকারে ঘোষাল মন্তব্য করেন, "আমি দ্বৈত-অর্থবোধক গান বা কুরুচিপূর্ণ গীত সমৃদ্ধ গানসমূহ গাইতে পারি না।"[৩১৯]
ঘোষালের সম্মানার্থে ২০১০ সালের ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রেরওহাইও রাজ্যের গভর্নর টেড স্ট্রিকল্যান্ড দিনটিকে "শ্রেয়া ঘোষাল দিবস" হিসেবে ঘোষণা দেন।[৩৫৩] তার ভক্তরা জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রথম শ্রেয়া ঘোষাল দিবস পালন করে।[৩৫৪] ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের সদস্যবৃন্দ কর্তৃক প্রদত্ত লন্ডনের সর্বোচ্চ সম্মাননা লাভ করেন।[৯]
২০১২ সালে ঘোষাল ভারতের তারকাদের আয় ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে তৈরি করা ফোর্বস সাময়িকীর ১০০ তারকা তালিকায় স্থান লাভ করেন। তিনি টানা পাঁচ বছর এই তালিকায় শীর্ষ ৫০-এ অবস্থান করেন; তন্মধ্যে ২০১২-১৩ সালে ৪২তম, ২০১৪ সালে ২৮তম, ২০১৫ সালে ৩৩তম, এবং ২০১৬ সালে ২৮তম।[৩৫৫][৩৫৬][৩৫৭][৩৫৮][৩৫৯] ২০১৩ সালে ফোর্বস ইন্ডিয়া তাকে তাদের "শীর্ষ ৫ তারকা ১০০ সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ" তালিকায় স্থান প্রদান করে।[৩৬০]ভার্ভ-এর "২০১৬-এর ৫০ ক্ষমতাধর নারী" তালিকায় তিনি একমাত্র ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে স্থান লাভ করেন।[৩৬১]
ঘোষাল তার স্টাইল ও ফ্যাশন-বোধের জন্যও সুপরিচিত।[৩৬২][৩৬৩] ঘোষাল বলেন যে তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্লেখ করেন যে তার এতে আগ্রহ কম।[৩৬৪] ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদপত্র ইস্টার্ন আই তাদের "৫০ যৌন আবেদনময়ী এশীয় নারী" তালিকায় তাকে ৪৩তম স্থান প্রদান করে।[৩৬৫] ২০১৫ সালে এই সংবাদপত্রের "সেরা ২০ বলিউড নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী" তালিকায় তার অবস্থান ছিল সপ্তম।[৩৬৬] পুরুষদের জন্য ভারতীয় লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট মেন্সএক্সপি.কমের "শীর্ষ দশ যৌন আবেদনময়ী নারী বলিউড সঙ্গীতশিল্পী" তালিকায় তার অবস্থান ছিল তৃতীয়।[৩৬৭]
ঘোষাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয়। সোশ্যালবেকার্সের পরিসংখ্যান অনুসারে তিনি ফেসবুকে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ লাইকধারী ভারতীয় ব্যক্তিত্ব এবং টুইটারে ৪৭তম সর্বাধিক অনুসরণকৃত ভারতীয় ব্যক্তিত্ব।[৩৬৮][৩৬৯][৩৭০] তিনি গুগল অনুসন্ধানে শীর্ষ দশ সর্বোচ্চ অনুসন্ধানকৃত ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীদের একজন।[৩৭১] ২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রথম ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে দিল্লিতেমাদাম তুসো জাদুঘরের ভারতীয় শাখায় তার মোমের মূর্তি স্থাপিত হয়।[৩৭২][৩৭৩]
ঘোষাল একাধিক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেছেন, তন্মধ্যে বানারস (২০০৯), বীরপুত্রন ও রতিনির্বেদম (২০১১), হাউ ওল্ড আর ইউ? (২০১৪), এবং আমি (২০১৮) চলচ্চিত্রের গানের জন্য চারটি কেরল রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন; এবং সিল্লুনু অরু কাদল (২০০৬) চলচ্চিত্রের "মুনবে বা"[৩৭৯] ও কুমকি (২০১২) চলচ্চিত্রের "সল্লিতালে আবা কাদল"[৩৮০] গানের জন্য দুটি তামিলনাড়ু রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
↑ কখগনাগরঞ্জন, সরস্বতী (৭ এপ্রিল ২০১০)। "Queen of the charts"। দ্য হিন্দু। ৩০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"Shreya Ghoshal Live In Auckland"। ইন্ডিয়ান উয়িকেন্ডার। ৭ জুলাই ২০১০। ৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"Original Soundtrack Devdas"। অলমিউজিক (ইংরেজি ভাষায়)। ১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑ কখগঘ"48th Filmfare Awards" (ইংরেজি ভাষায়)। রেডিফ.কম। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৩। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑ কখ"50th National Film Awards"(পিডিএফ)। চলচ্চিত্র উৎসব অধিদপ্তর। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল(PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"'Desh Devi' songs"। সাভন। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৪।
↑বিজয়কর, রাজিব (১৭ মার্চ ২০১৩)। "Reigning queen bees"। ডেকান হেরাল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑ কখবিজয়কর, রাজিব (২৮ জুলাই ২০১২)। "Notes from a singer"। ডেকান হেরাল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑সিদ্দিকী, রানা (৩০ জানুয়ারি ২০০৩)। "Melody kid"। দ্য হিন্দু (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑ কখটুতেজা, জোগিন্দর (২ জানুয়ারি ২০০৪)। "Khakee – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২ জানুয়ারি ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২৮ মে ২০০৪)। "Garv – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ৪ আগস্ট ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑কুসনূর, নরেন্দ্র (২১ জানুয়ারি ২০০৪)। "Music review of 'Muskaan'"। মিড ডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জানুয়ারি ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑কুসনূর, নরেন্দ্র (৩ মার্চ ২০০৪)। "Music review of 'Main Hoon Na'"। মিড ডে (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ এপ্রিল ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑কুসনূর, নরেন্দ্র (২৬ নভেম্বর ২০০৩)। "Music review of 'Aetbaar'"। মিড ডে (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ ডিসেম্বর ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (৯ জুলাই ২০০৪)। "Dhoom – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ১৩ মার্চ ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"53rd National Film Awards"(পিডিএফ)। চলচ্চিত্র উৎসব অধিদপ্তর। ২৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল(PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২৪ নভেম্বর ২০০৪)। "Rog – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (৩০ জুন ২০০৫)। "Yahaan – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২৬ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৫)। "Yahaan – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (৩০ মে ২০০৫)। "Fareb – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (১১ ডিসেম্বর ২০০৪)। "Shabd – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২৯ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑বর্মা, সুকন্যা (৩ অক্টোবর ২০০৮)। "Vivah's music disappoints" (ইংরেজি ভাষায়)। রেডিফ.কম। ১৪ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "Vivah – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২৯ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (১৬ আগস্ট ২০০৬)। "Woh Lamhe – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑বিজয়কর, রাজীব (১৭ মার্চ ২০১৩)। "Reigning queen bees"। ডেকান হেরাল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (৫ জুলাই ২০০৬)। "Omkara – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ৩ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑বর্মা, সুকন্যা (১২ জুলাই ২০০৮)। "Omkara's music rocks" (ইংরেজি ভাষায়)। রেডিফ.কম। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২৮ এপ্রিল ২০০৬)। "Krrish – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑টুতেজা, জোগিন্দর (২১ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "Saawariya – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ৯ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"Barso Re song info" (ইংরেজি ভাষায়)। সাভন। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑"Guru – Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। ওয়ানইন্ডিয়া। ২২ নভেম্বর ২০০৬। ৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
↑ কখসত্যজিৎ (১৪ মে ২০১২)। "Music Review of Rowdy Rathore"। গ্ল্যামশাম (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑ কখশর্মা, দেবেশ (৩০ মে ২০১২)। "Music Review of Rowdy Rathore"। ফিল্মফেয়ার (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑ কখগশিবি (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Music Review of Himmatwala"। কইমই (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑রাফাত (৩ মে ২০১২)। "Music Review of Himmatwala"। গ্ল্যামশাম (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑ কখবসু, মোহর (১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Raanjhana Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। কইমই। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑ কখগ"Ram-Leela Music Review"। বসু, মোহর (ইংরেজি ভাষায়)। কইমই। ৫ অক্টোবর ২০১৩। ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২০।
↑"'I' audio review"। সাইফি (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪। ৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑"I-Hindi track list"। সাভন (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑"I-Telugu track list"। আইটিউনস ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ কখরাফাত (৩ আগস্ট ২০১৫)। "Music Review of Brothers"। গ্ল্যামশাম (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ কখসুধাকরণ, শ্রীজু (১২ আগস্ট ২০১৫)। "Music Review of Brothers"। বলিউড লাইফ (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ কখগটুতেজা, জোগিন্দর (২৬ ডিসেম্বর ২০১৫)। "Music Review: Wazir" (ইংরেজি ভাষায়)। বলিউড হাঙ্গামা। ১৩ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑রেডকর, সুরভী (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Sanam Re Music Review" (ইংরেজি ভাষায়)। কইমই। ২৫ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ঘোষ, সংখ্যায়ন (২৪ এপ্রিল ২০১৬)। "Music beyond words"। দ্য হিন্দু (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ কখশর্মা, দেবেশ (১৬ জুলাই ২০১৬)। "Music Review: Rustom"। ফিল্মফেয়ার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑ কখ"Devi Songs Review"। বিহাইন্ড উডস (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑"Mann Bheetar Songs"। বলিউড হাঙ্গামা (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Apni Maati l Shreya Ghoshal"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ – ইউটিউব-এর মাধ্যমে।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Billboard Top Triller Global Chart"। বিলবোর্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ নভেম্বর ২০২০। ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Bhoomi 2020" (ইংরেজি ভাষায়)। মার্চেন্ট রেকর্ডস। ২৮ মে ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Saina Music review" (ইংরেজি ভাষায়)। ফিল্মফেয়ার। ১১ এপ্রিল ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Billboard Top Triller Global Chart"। বিলবোর্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ১৫ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑ইনোস, মরগান (২০২৩-১১-১০)। "2024 GRAMMY Nominees of the Year"। গ্র্যামি। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Ved - Review"। মহারাষ্ট্র টাইমস (মারাঠি ভাষায়)। ১ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২৪।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑রুহানি, ফহিম (৯ জানুয়ারি ২০০৬)। "Stars come to the AID(S)"। Daily News and Analysis (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
↑রঞ্জিত, সহয়া (২৬ জুন ২০০৬)। "Just cause"। ইন্ডিয়া টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০২০।
↑"Shreya Ghoshal top 10 songs" (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্ডিয়া টিভি। ১২ মার্চ ২০১৫। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০২০।
↑যশরাজ, পণ্ডিত (১১ অক্টোবর ২০১১)। "'Kahaan tum chale gaye'"। আফটারনুন (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০২০।
↑শ্রীনিবাস, সরস্বতী (২৫ এপ্রিল ২০০৭)। "Ilayaraja creates history" (ইংরেজি ভাষায়)। রেডিফ.কম। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২০।
↑হান্দু, ঋত্বিকা (১৬ জানুয়ারি ২০১৫)। "Interview with Richa Sharma" (ইংরেজি ভাষায়)। জি নিউজ। ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২০।
↑"2013 Celebrity 100 List"। ফোর্বস ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।
↑"2014 Celebrity 100 List"। ফোর্বস ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।
↑"2015 Celebrity 100 List"। ফোর্বস ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।
↑"2016 Celebrity 100 List"। ফোর্বস ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"Top 5 Celeb100 Singers and Musicians" (ইংরেজি ভাষায়)। ফোর্বস ইন্ডিয়া। ৩১ জানুয়ারি ২০১৩। ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।
↑"India Facebook page statistics" (ইংরেজি ভাষায়)। সোশ্যালবেকার্স। ৫ ডিসেম্বর ২০১৩। ৮ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।
↑"Twitter statistics for India" (ইংরেজি ভাষায়)। সোশ্যালবেকার্স। ৫ ডিসেম্বর ২০১৩। ৫ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০।