শ্রোণিচক্রীয় সঞ্চালন বা শ্রোণি সঞ্চালন (ইংরেজি: Pelvic thrust, পেলভিক থ্রাস্ট) হল পেলভিস বা শ্রোণিচক্র অঞ্চলের গতিশীল সঞ্চালনা, যা বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যেমন নৃত্য বা যৌনকর্ম।
মানুষ সহ স্তন্যপায়ীদের বহু প্রজাতি যৌনসঙ্গমের সময় বা অন্যান্য যৌনকর্মের জন্য (যেমন অনাভেদী যৌনক্রিয়া) শ্রোনিচক্রীয় সঞ্চালন করে থাকে।[১][২][৩][৪]. ২০০৭ সালে, জার্মান বিজ্ঞানীগণ উল্লেখ করেন যে, স্ত্রী বানরেরা সঙ্গমকালে চিৎকার করার মাধ্যমে পুরুষ বানরের শ্রোনিচক্রীয় সঞ্চালনের উদ্যম ও পরিমাণকে বৃদ্ধি করতে পারে।[৫] ভার্জিনিয়া হরিণের যৌনমিলনে মাত্র একবার শ্রোণিচক্রীয় সঞ্চালন সঙ্ঘটিত হয়।[৬]
এলভিস প্রেসলি সর্বপ্রথম এই অঙ্গভঙ্গি মঞ্চে পরিবেশন করেন,যা সুস্পষ্ট যৌন অর্থ বহন করার কারণে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিল। উক্ত সমালোচনার কারণে, তাকে মাঝেমধ্যে টিভিতে কোমরের উপর থেকে দেখানো হত (যেমনভাবে দ্য এড সুলিভিয়ান শোতে তাকে তৃতীয়বার দেখা গিয়েছিল।)।[৭] পরবর্তীতে, পেলভিক সঞ্চালন মাইকেল জ্যাকসনেরও নিজস্ব সুপরিচিত নাচের মুদ্রাগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে।[৮] পশ্চাৎ দিক থেকে শ্রোণি সঞ্চালনও নাচের একটি মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা পশ্চিমা হিপহপ নাচের অত্যন্ত একটি জনপ্রিয় মুদ্রা। কোমরের উভয়পার্শ হতে পেলভিক সঞ্চালন হল ভারত ও বাংলাদেশে একটি বিখ্যাত নারী নৃত্যের মুদ্রা এবং তা "ঠুমকা" নামে পরিচিত। বলিউডের বিভিন্ন গানের কথায় এটি দেখতে পাওয়া যায়।
বানর, বনমানুষ ও মানুষের নবজাতদের মধ্যে পেলভিক সঞ্চালন দেখতে পাওয়া য়ায়। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে প্রাণী-আচরণবিদ জন বোলবি (১৯৬৯) অভিমত দেন যে, নবজাতক যৌন আচরণ সম্ভবত স্তন্যপায়ীদের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য, এটি কোন ব্যতিক্রম নয়। ৮ থেকে দশ মাস বয়সে মানব শিশুতে শ্রোনিচাক্রিক সঞ্চালন দেখা যায়, এবং সম্ভবত তা স্নেহ বা আদরের বহিঃপ্রকাশমূলক আচরণ। সাধারণত, নবজাতক প্রথমদিকে মা-বাবার সঙ্গে এঁটে থাকে, এরপর নাক ঘষে, শ্রোণি সঞ্চালন করে, এবং কয়েক সেকেন্ডের জন্য শ্রোণিদেশ বা কোমর ঘোরায়।[৯]