সংক্রামক রোগ বলতে সেই সকল রোগ বুঝায়, যেসব রোগ একজন থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ছড়িয়ে পড়া শুধু মানুষ থেকে মানুষ নয়, পশু-পাখি থেকে মানুষে, পশু-পাখি থেকে পশু-পাখির মাঝে, কিংবা মানুষ থেকে পশু-পাখির মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। [১] ১৮৪৯ সালে জন স্নো সর্বপ্রথম কলেরাকে সংক্রামক রোগ হিসেবে প্রস্তাব করেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বা প্রকোপের কারণে অসংখ্য মহামারির ঘটনা ঘটেছে। করোনা মহামারিও এর অন্তর্ভুক্ত।
বেশিরভাগ মহামারিই সংক্রামক রোগের কারণে হয়ে থাকে, তবে এর ব্যতিক্রমও আছে যেমন- হলুদ জ্বর। সংক্রামক রোগ নানাভাবে ছড়াতে পারে, যেমন-
১। স্পর্শ : বেশ কিছু রোগ এভাবে ছড়ায়। যেমন স্কেবিস, ছত্রাকজনিত চর্ম রোগ।
২। যৌন সংস্পর্শ: এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস (বি, সি), হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ইনফেকশন যেটি জরায়ুমুুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ, লিমফো গ্রানুলোমা ভেনেরিয়াম, শ্যাংক্রয়েড।
৩। খাদ্য ও পানীয় : টাইফয়েড, পোলিও মায়েলাইটিস, হেপাটাইটিস (এ, ডি), কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন কৃমি সংক্রমণ।
৪। বায়ু বাহিত: যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস, মাম্পস, রুবেলা, বসন্ত , হাম, করোনা ভাইরাস রোগ।
৫। ভেক্টর বাহিত:
মশা: ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস।
মাছি : উদরাময়, আমাশয়, ক্রিমি সংক্রমণ, কালাজ্বর, চ্যাগাস ডিজিস, স্লিপিং সিকনেস, চোখের কৃমি (deer fly) ।
৬। ত্বকের মাধ্যমে: কিছু রোগের এজেন্ট সরাসরি ত্বকে ত্বকের সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন Tinea capitis, ছত্রাক যা দাদ সৃষ্টি করে, Tinea pedis, ছত্রাক যা ক্রীড়াবিদদের পায়ে সৃষ্টি করে এবং impetigo। যাইহোক, এই রোগ সম্ভবত প্রায়ই ফোমাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
১। ব্যাকটেরিয়াল: যক্ষ্মা, ধনুষ্টংকার, টাইফয়েড, কলেরা।
২। ভাইরাল: ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জা, রোটা ভাইরাল ডায়রিয়া, ভাইরাল হেপাটাাাইটিস, এইডস, হাম, রুবেলা।
৩। ছত্রাকজনিত : বিভিন্ন চর্মরোগ, ছত্রাক জনিত ফুসফুস সংক্রমণ, মস্তিষ্ক ও মস্তিষ্ক আবরন সংক্রমণ, মহিলাদের শ্বেতপ্রদর ইত্যাদি।
৪। প্রোটিনজনিত (প্রিয়ন): ম্যাড কাউ, ক্রুজফিল্ড জ্যাকব
সংক্রমণ ঝুঁকি: ডায়াবেটিস রোগী, জন্মগত স্বল্প রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সংক্রমণ ঝুুঁকি বেশি। কিছু রোগেও শরীর এর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যেমন এইডস, যক্ষ্মা, কালাজ্বর, ক্যনসার। তাছাড়া অতি ছোট শিশু এবং অতি বৃৃদ্ধদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।