সংবাদ সংস্থা, দেশ-বিদেশে কর্মরত ও বিভিন্ন সংবাদপত্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন স্তরের সাংবাদিকদের সংগঠন। সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন বিষয় ও ঘটনা নিয়ে তাদের সৃষ্ট সংবাদ, প্রতিবেদন, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, আলোকচিত্র ইত্যাদি ঐ সংগঠনে প্রেরণ করেন। সংবাদ সংস্থাগুলো দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন সংবাদপত্র, সাময়িকী, বেতার, টেলিভিশন ইত্যাদি গণমাধ্যমে নির্দিষ্ট শর্তাবলীর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংবাদ নির্দিষ্ট দিন কিংবা সময়ে প্রেরণ করে।
পৃথিবীর প্রাচীনতম সংবাদ বা বার্তা সংস্থা হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছে ফ্রান্স তথা বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা সংবাদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এজেন্সী ফ্রান্স-প্রেস। তবে প্রতিষ্ঠানটি সর্বসমক্ষে এএফপি হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত হয়ে আছে।[১] এটি ১৮৩৫ সালে প্যারিসের বিখ্যাত অনুবাদক ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি চার্লস-লুইস হাভাসের গঠিত এজেন্সী হাভাসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি এএফপি'র প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত। এজেন্সী হাভাস হচ্ছে ফ্রান্সের ২য় বৃহত্তম বিজ্ঞাপনী প্রচারণা সংস্থা। চার্লস-লুইস হাভাসের অধীনে কর্মরত ছিলেন পল জুলিয়াস রয়টার এবং বার্নহার্ড ওল্ফ। পরবর্তীকালে তাঁরা লন্ডন এবং বার্লিনে নতুন একটি সংবাদ সংস্থা গড়েছিলেন।
১৮৫৩ সালে ইটালীর তুরিনে গুগলাইলমো স্টিফানী এজেনজিয়া স্টিফানী নামে সংবাদ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। 'এজেনজিয়া স্টিফানী' বার্তা সংস্থাটি পরবর্তীকালে ইটালী রাজতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সংস্থা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। এটি ম্যানলিও মোরগ্যাগনি'র সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সৃষ্টি করেছিল।
ব্যয়ভার হ্রাস এবং ব্যবসায়ে অত্যন্ত লাভজনক বিজ্ঞাপন প্রচারের স্বার্থে ১৮৫২ সালে উত্তরাধিকারী হিসেবে হাভাসের পুত্র রয়টার এবং ওল্ফের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হন এএফপি'র কর্ণধার। এরফলে তারা পারস্পরিকভাবে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে সংবাদ এলাকা নির্ধারণ করেন।
সংবাদ সংস্থাগুলো সমিতিরূপে সংবাদ বিক্রির মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। তন্মধ্যে - প্রেস এসোসিয়েশন, থমসন রয়টার্স, এল হেডলাইন নিউজ বা এএইচএন অন্যতম। অন্যান্য সংস্থাগুলো বৃহৎ প্রচার মাধ্যমের প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহযোগিতামূলক কাজ করে। কেন্দ্রীয়ভাবে সংবাদগুলোকে একত্রিত করা হয় এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। বৃহৎ সংবাদ সংস্থাগুলো এগুলো সংগ্রহ করতে পারে এবং পুনরায় বিতরণের ব্যবস্থা করে। এপি বা এসোসিয়েটেড প্রেস, এএফপি কিংবা এপিএ বা আমেরিকান প্রেস এজেন্সী অন্যতম। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংবাদকে ঘিরে ব্যবসা করার লক্ষ্যে তাদের তৈরীকৃত সংবাদগুলো অন্যান্য সংবাদপত্রে প্রেরণ করে। বিজনেস ওয়্যার, দ্য হাগিন গ্রুপ, গ্লোবনিউজওয়্যার, মার্কেওয়্যার, পিআর নিউজওয়্যার, সিশনওয়্যার এবং এবিএন নিউজওয়্যার অন্যতম।
প্রধান সংবাদ সংস্থার মধ্যে আছে:
সরকার কর্তৃকও সংবাদ সংস্থা পরিচালিত হয়। চীনের জিনহুয়া, কানাডা, রাশিয়ার ইতার-তাস এবং বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশেও সংবাদ সংস্থা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানও অন্যান্য সংবাদ সংস্থা থেকে সংবাদ বা খবর সংগ্রহ করতে পারে।[২]
বাংলাদেশে বেশ কিছু সংবাদ সংস্থা আছে।[৩]
প্রধান সংবাদ সংস্থাগুলো সাধারণতঃ প্রধান ও অতীব জরুরি সংবাদ এবং বৈশিষ্ট্যমূলক মূল প্রবন্ধ তৈরী করে থাকে। পরবর্তী পর্যায়ে এগুলো অন্যান্য সংবাদ সংগঠনগুলোর কাছে প্রেরণ করা হয়। অতঃপর যৎকিঞ্চিৎ পরিবর্তন অথবা কোনরূপ পরিবর্তন ছাড়াই পুণঃব্যবহারের উদ্দেশ্যে ঐ সংবাদ ও প্রবন্ধগুলো অন্যান্য সংবাদ প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয় করে দেয়া হয়।
উৎপত্তিগতভাবে বা শুরু থেকেই তারা টেলিগ্রাফ ব্যবহার করতো। বর্তমানকালে উন্নত ও উচ্চ প্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাবলীল ও সহজভাবে খুব দ্রুতলয়ে সংবাদ প্রেরণ করা হয়। ভোক্তা হিসেবে বিভিন্ন কর্পোরেশন, ব্যক্তি, বিশ্লেষক এবং গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন স্তর ও পর্যায়ে গ্রাহকদের কাছে প্রেরণ করা হয়।
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)