সংহুয়া নদী রুশ: Сунгари (সুংগারি) | |
---|---|
স্থানীয় নাম | মাঞ্চুরিয়: ᠰᡠᠩᡤᠠᡵᡳ ᡠᠯᠠ (সুংগারি উলা) {{স্থানীয় নামের পরীক্ষক}} ত্রুটি: প্যারামিটারের মান ত্রুটিপূর্ণ (সাহায্য) |
অবস্থান | |
দেশ | চীন |
প্রদেশ | চিলিন, হেইলুংচিয়াং |
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
মোহনা | আমুর নদী |
• অবস্থান | তংজিয়াং, হেইলুংচিয়া |
• স্থানাঙ্ক | ৪৭°৪১′৫৬″ উত্তর ১৩২°৩১′০৩″ পূর্ব / ৪৭.৬৯৯° উত্তর ১৩২.৫১৭৬° পূর্ব |
দৈর্ঘ্য | ১,৪৩৪ কিলোমিটার |
অববাহিকার আকার | ৫,৫৭,১৮০ বর্গকিলোমিটার (২,১৫,১৩০ বর্গমাইল)[১] |
নিষ্কাশন | |
• গড় | ২,৪৬৩ ঘনমিটার/সেকেন্ড (৮৭,০০০ ঘনফুট/সে) |
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য | |
ক্রমবৃদ্ধি | আমুর নদী → ওখোৎস্ক সাগর |
উপনদী | |
• বামে | নেনজিয়াং, হুলান, টাংওয়াং |
• ডানে | মুদানজিয়াং |
সংহুয়া নদী | |||||||
চীনা নাম | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
চীনা | 松花江 | ||||||
| |||||||
বিকল্প চীনা নাম | |||||||
চীনা | 海西 | ||||||
| |||||||
মাঞ্চু নাম | |||||||
মাঞ্চু লিপি | ᠰᡠᠩᡤᠠᡵᡳ ᡠᠯᠠ | ||||||
রোমানীকরণ | sunggari ula (সুংগারি উলা) |
সংহুয়া নদী (হাইহি ও জিঙ্গাল নামেও পরিচিত, রুশ: Сунгари সুংগারি) চীনের অন্যতম প্রধান এবং আমুর নদীর দীর্ঘতম উপনদী। নদীটি ১,৪৩৪ কিলোমিটার (৮৯১ মাইল) দীর্ঘ। এটি চীন-উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে চাংবাই পর্বতমালা উদ্ভূত হয়ে চীনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের চিলিন ও হেইলুংচিয়াং প্রদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আমুর নদীতে পতিত হয়েছে। সংহুয়া নদীর অববাহিকার আয়তন ৫,৫৭,১৮০ বর্গকিলোমিটার (২,১৫,১৩০ মা২)।[২][৩] নদীটির বার্ষিক পানি প্রবাহের পরিমাণ ২,৪৬৩ ঘনমিটার প্রতি সেকেন্ড (৮৭,০০০ ঘনফুট/সে)।[৪] চীনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল অতি সমতল হওয়ায় নদীটি বহুবার গতিপথ পরিবর্তন করেছে এবং সার্পিলাকার ধারণ করেছে। গতিপথ পরিবর্তনের নিদর্শন সরূপ এর গতিপথের দুইপাশে অশ্বক্ষুরাকৃতির জলাশয় আছে। জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে এই নদী নিয়ে একটি দেশাত্মবোধক গান প্রচলিত আছে। নদীর তীরবর্তী শহরে রাসায়নিক কারখানায় দূর্ঘটনার কারণে এটি বেশকয়েকবার রাসায়নিক বর্জ্যের দুষিত হয়েছে।
সংহুয়া নদী চীনের চিলিন প্রদেশ ও উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন চাংবাই পর্বতমালা হতে উৎপন্ন হয়ে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়েছে।[৫]
নদীটির যাত্রাপথ বাইসান, হংশি ও ফেংম্যান জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বাঁধ দ্বারা বাধাগ্রস্থ হয়েছে। ফেংম্যান বাঁধের কারণে ৬২ কিলোমিটার (৩৯ মাইল) দীর্ঘ একটি হ্রদের সৃষ্টি হয়। ফেংম্যান বাঁধ অতিক্রম করে সংহুয়া নদীর দ্বিতীয় শাখা বের হয়েছে। এই শাখাটি উত্তর দিকে চিলিন প্রদেশে প্রবেশ করে। নদীটি চিলিন প্রদেশের উপর দিয়ে উত্তর পশ্চিম দিক বরাবর প্রবাহিত হয়ে দা'ন শহরের নিকট নেন নদীর সাথে মিলিত হয়ে মূল সংহুয়া নদী হিসেবে প্রবাহিত হয়।
এরপর নদীটি পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে হারবিন শহর অতিক্রম করে। আরও সামনে অতিক্রম করে সংহুয়া নদী দক্ষিণ দিক থেকে অশি নদী এবং এরপর উত্তর দিক থেকে হুলান নদীর সাথে মিলিত হয়।
২০০৭ সালে হারবিন শহরের ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বায়ান কাউন্টিতে সংহুয়া নদীর উপর একটি নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এই বাঁধের কারণে সৃষ্ট হ্রদটি দাদিংশান (চীনা: 大顶山; ফিনিন: Dàdǐng Shān; আক্ষরিক: "Big Topped Mountain") জলাধার নামে পরিচিত।[৬]
সংহুয়া নদী আরো উত্তর দিকে জিয়ামুসি শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ছোট খিংআন পর্বতমালার দক্ষিণ দিক দিয়ে হেইলুংচিয়াং প্রদেশের তংজিয়াং-এর কাছে আমুর নদীর সাথে মিশেছে।
শীত ঋতুতে, নভেম্বর হতে মার্চ পর্যন্ত, সংহুয়া নদী জমে বরফে রূপ নেয়, এসময় নদীর বেশিরভাগ অংশই তুষার আবৃত থাকে। বসন্তে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে বরফ গলতে থাকে। এ সময় সংহুয়াতে বছরের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি পানি প্রবাহ দেখা যায়।
চীনের চিলিন, হারবিন ও জিয়ামুসি শহর সংহুয়া নদীর তীরে অবস্থিত। হারবিন শহর পর্যন্ত এই নদীতে মধ্যম সারীর নৌযান চলাচল করতে পারে। এছাড়াও ছোট নৌযান দিয়ে চিলিন এবং নেন নদীপথে কিকিহার পর্যন্ত যাতায়াত করা যায়।
২০০৫ সালের নভেম্বরে সংহুয়া নদীতে বেনজিনের দূষণ ঘটে। দূষণের ফলে হারবিনে পানি সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছিল।[৭] বেনজিনের দূষণ চীন-রাশিয়া সীমান্তে আমুর নদী পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) ছড়িয়ে পড়েছিল।[৮] ২০১০ সালের ২৮ জুলাই, বন্যায় চিলিন শহরের দুইটি রাসায়নিক কারখানা থেকে কয়েক হাজার ব্যারেল রাসায়নিক তরল নদীতে ভেসে যায়। এই রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যে ১৭০ কিলোগ্রাম (৩৭০ পা) ট্রাইমিথাইলসিলাইল ক্লোরাইড ও হেক্সামিথাইল ডাইসিলক্সেনের মত বিস্ফোরক পদার্থও ছিল।[৯][১০] ২০১৬ সালে সংহুয়া নদীতে মৃদু বন্যার কারণে চিলিন শহরের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি নিমজ্জিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের সময় সংহুয়া নদী নিয়ে গীতিকার ঝাং হানুই সংহুয়া জিয়াং শাং নামের দেশাত্মবোধক গান রচনা করেন। গানটিতে যুদ্ধের বাস্তবতায় মাঞ্চুরিয়া অঞ্চলে সংহুয়া নদীর তীর বাসকারী জনগণের বাস্তুচ্যুত্ত হওয়ার করুণ আর্তি আছে। গানটি সেসময় চীন ও তাইয়ানে গাওয়া হতো।[১১]