সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৯ এপ্রিল ১৯৪৮ | (বয়স ৮২)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) ভারত (১৯৪৮ সাল পর্যন্ত) |
পেশা | শিক্ষাব্রতী |
পরিচিতির কারণ | জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা |
দাম্পত্য সঙ্গী | চারুলতা মুখোপাধ্যায় |
পিতা-মাতা |
|
সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (৫ জুন ১৮৬৫ - ১৮ এপ্রিল ১৯৪৮) ভারতে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথিকৃৎ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শ্রী অরবিন্দ।
সতীশচন্দ্রের জন্ম অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বাণীপুরে।[২] কলকাতার ভবানীপুরের সাউথ সাবার্বান স্কুলের ছাত্র হিসাবে, সতীশচন্দ্র ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন এবং অশ্বিনীকুমার দত্ত, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিপিনচন্দ্র পাল, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (তাঁর সহপাঠী), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্রীঅরবিন্দ, রাজা সুবোধ মল্লিক এবং তাঁর সহপাঠী নরেন্দ্রনাথ দত্ত (স্বামী বিবেকানন্দ) এবং তাঁর বন্ধু কালীপ্রসাদ চন্দ্র (স্বামী অভেদানন্দের) মত মানুষদের সাথে পরিচিতি ছিল। তিনি পণ্ডিত শশধর তর্ক চুড়ামণির "ষট-দর্শন" ("হিন্দু দর্শনের ছয়টি বিদ্যালয়") শীর্ষক বক্তৃতা শুনতে অ্যালবার্ট হলে উপস্থিত ছিলেন, এই সভার সভাপতিত্ব করেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। যার মূল প্রতিপাদ্য ছিলো, "ধর্মনিরপেক্ষ বা ধর্মীয়, পূর্ব বা পাশ্চাত্য, এবং অন্যান্য সমস্ত পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা এবং উপযোগিতার সাথে বাঁচুন"।
সতীশচন্দ্রের তীব্র ধর্মীয় স্বভাব হিন্দু জীবন, চিন্তাভাবনা এবং বিশ্বাসের অধ্যয়নের উপর জোর দিয়েছিল। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে-ভর্তি হয়ে ১৮৮৬ সালে এমএ এবং ১৮৯০ সালে বি.এল. ডিগ্রী লাভ করেন। এরপ তিনি নিজেকে কলকাতা হাইকোর্টে উকিল হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। ১৮৮৭ সালে তিনি বহরমপুর কলেজের ইতিহাস ও অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৮৯৫ সালে তিনি উচ্চতর পড়াশোনার বিকল্প পদ্ধতির প্রথম প্রচেষ্টা, ভাগবত চতুষ্পাঠী, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
সতীশচন্দ্রের পিতা কৃষ্ণনাথ মুখোপাধ্যায়,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ছিলেন বিচারপতি দ্বারকানাথ মিত্রের শৈশবের বন্ধু এবং সহপাঠী। মিত্র তাঁকে কলকাতা উচ্চ আদালতে সরকারী নথির অনুবাদক হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। মিত্র প্রত্যক্ষবাদী ওগ্যুস্ত কঁতের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মানবতার ধর্মের বিশ্বাসীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ছিলেন। এই দর্শনে বিশ্বাসী, মানুষ এবং সমাজের সেবক, নাস্তিক কৃষ্ণনাথ তাঁর দুই পুত্র, তিনকড়ি এবং সতীশের মধ্যেও এই আদর্শকে অঙ্কিত করে দিয়েছিলেন।[৩] বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নিজে কঁৎ এবং তাঁর দর্শন নিয়ে ভারতের মধ্যে প্রথম লিখেছেন তাই নয়, যোগেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ এবং রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রবল উদ্দীপনাপূর্ণ প্রত্যক্ষবাদী বন্ধুও তাঁর ছিলেন।
১৮৭৪ সালে, বঙ্কিম তাঁর বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রত্যক্ষবাদ সম্পর্কিত শেষোক্ত জনের প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। এটি শুরু হয়েছিল এই ভাবে, "আমাদের দেশে সত্যিকারের শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে কঁতের দর্শন নিয়ে প্রচুর চেতনা রয়েছে।" মনস্তাত্ত্বিক পরিশোধন নিয়ে লেখার সময় বঙ্কিম লিখেছিলেন: "যিনি মনস্তাত্ত্বিকভাবে শুদ্ধ হয়েছেন তিনি হলেন সেরা হিন্দু, সেরা খ্রিস্টান, সেরা বৌদ্ধ, সেরা মুসলিম, সেরা প্রত্যক্ষবাদী।"[৪]
১৮৮৪ সালে, তাঁর দেবী চৌধুরানী উপন্যাসের উপস্থাপনায়, বঙ্কিম ইতিবাচক ধর্মের প্রশ্নোত্তর থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন: "মানুষের অগ্রগতির সাধারণ আইন (…) এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যে মানুষ আরও বেশি ধর্মীয় হয়।"[৫]
The Origins of the National Educational Movement- Haridas Mukherjee and Uma Mukherjee, Jadavpur University, Calcutta, 1957