সতীশরঞ্জন দাশ | |
---|---|
![]() সতীশরঞ্জন দাশের প্রতিকৃতি | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৬ অক্টোবর ১৯২৮ | (বয়স ৫৮)
পেশা | ম্যাজিস্ট্রেট, লেখক, প্রভাষক |
পিতা-মাতা | দুর্গামোহন দাশ |
আত্মীয় | চিত্তরঞ্জন দাশ সুধীরঞ্জন দাশ অতুলপ্রসাদ সেন |
সতীশরঞ্জন দাশ ( ২৭ জুন, ১৮৭০ – ২৬ অক্টোবর, ১৯২৮) ছিলেন অবিভক্ত বাংলার অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং বড়লাটের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের আইনি সদস্য। কিছু সময়ের জন্য তিনি ভারত স্কাউট অ্যান্ড গাইডস্ এবং লজ অফ গুড ফেলোশিপের কোষাধ্যক্ষ, বাংলার সংস্কারবাদী সংগঠন ব্রাহ্মসমাজের বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন তিনি। সতীশরঞ্জন দাশ মধ্যপন্থী ভারতীয় জাতীয়তাবাদী দলের একজন হয়ে ব্রিটিশদের ধাঁচে ভারতে এক আবাসিক পাবলিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর অবশ্য দ্য দুন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।
সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান সতীশরঞ্জনের লেখাপড়া সবটাই ইংল্যান্ডে। বিদ্যালয়ের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে ব্যারিস্টার হয়ে ভারতে ফেরেন ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে। দীর্ঘদিন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করার সুবাদে ব্রিটিশ পাবলিক স্কুলগুলির সিলেবাস ও লেখাপড়ার ধাঁচে তার দুন স্কুল প্রতিষ্ঠার ভাবনা মাথায় আসে শিক্ষায় ভারতের নিজস্ব জাতীয়তাবোধে পরিচয় গড়ে তুলতে। [১]
যদিও স্কুল শুরু হওয়ার সাত বৎসর আগেই তিনি প্রয়াত হন, তিনি ও তার সহযোগীরা ১৯২০এর দশকেই প্রারম্ভিক কাজ সমাধা করেন। ব্রিটিশ পাবলিক স্কুলগুলির সিলেবাস ও লেখাপড়ার ধাঁচে ইংরাজী শিক্ষার পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতিতে সমান গুরুত্ব দিয়ে ভারতীয় ছাত্রদের শিক্ষিত করতে চান যাতে পরবর্তীকালে তারা সমাজের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারে, গ্রহণ করতে পারে ভবিষ্যতে ভারতের প্রশাসনের দায়-দায়িত্ব।
ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ পাবলিক স্কুলের ধাঁচে আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করে এর প্রতিষ্ঠাতারা ব্রিটিশদের সাথে প্রতিযোগিতা বজায় রেখে, এটিকে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতে এবং ভারতীয় জাতীয়তা ও সংস্কৃতি ত্যাগ না করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে। এ ব্যাপারে সকলে একমত না হলেও, তার পাশে দাঁড়ান সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। প্রসঙ্গত , মহাত্মা গান্ধী উৎসাহ না দেখালেও, জওহরলাল নেহরু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।[২]
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে সতীশরঞ্জন দাশ বাংলার অ্যাডভোকেট জেনারেল নিযুক্ত হন। [৩] ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভাইসরয় তথা বড়লাট লর্ড আরউইনের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হন।
সতীশরঞ্জন দাশ ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ২৭ শে জুন ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নৈহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা দুর্গামোহন দাশ ছিলেন সমাজ-সংস্কারক। তিনি ঢাকা বিক্রমপুরের তেলিরবাগের (বর্তমানে বাংলাদেশের)সম্ভ্রান্ত দাশ পরিবারের (বৈদ্য জাতির) অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এবং সুধীরঞ্জন দাশের ভ্রাতুষ্পুত্র ছিলেন। তার দুই ভগিনীর একজন হলেন গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলের প্রতিষ্ঠাত্রী সরলা রায় এবং অন্যজন বিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর স্ত্রী অবলা বসু
তিনি বনলতা দেবীকে বিবাহ করেন। তার এক প্রৌত্র শমী দাশ, ১৯৮৮ - ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ সময়ে দুন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ।
১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মে সতীশরঞ্জন দাশ ইংল্যান্ডে অনেক সময়ই অতিবাহিত করেন বিদ্যালয় পরিদর্শনে আর শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে চেনা পরিচিত শিক্ষাবিদদের সাথে আলোচনায়। গ্রীষ্মের শেষে ভারতে ফিরে কাজে যোগ দিতে সিমলা যান। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়েন, ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে অক্টোবর কলকাতায় পরলোক গমন করেন।