সমকামিতা ও মনোবিজ্ঞান

বিংশ শতাব্দী জুড়ে, মনোবিজ্ঞানের সাধারণ মানদণ্ড অনুযায়ী রোগনির্ণয়ক আদর্শসমূহের পরিভাষায় সমকামিতাকে মানসিক অসুস্থতা হিসেবে দেখা হত। পরবর্তীতে গবেষণাগুলো যখন এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা পরীক্ষা করা শুরু করে; তারা এর স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদি হাজির করতে ব্যর্থ হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আচরণিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের বহু অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ একে মানসিক অসুস্থতা হিসেবে গ্রহণ করার মাঝে আবদ্ধ থাকেন। পরবর্তী বছরগুলোতে, অনেকেই এই সিদ্ধান্তকেই সঠিক বলে দাবি করতেন, এবং মানসিক অসুস্থতার ডিএসএম নির্দেশিকার সংজ্ঞায়নেও প্রচলিত প্রভাবশালী সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা-ভিত্তিক বিশ্বাস, পুনর্বাসন সংস্থা ও অপরাধমূলক আইনি বিচার-সংস্থাগুলোর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।[]

১৯৭০-র পর থেকে, বিশ্বজুড়ে বহু স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং আচরণগত-সমাজবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ সমকামিতাকে মানব যৌন অভিমুখিতার একটি স্বাস্থ্যকর প্রকরণ হিসেবে দেখেন, যদিও কিছু বিশেষজ্ঞ একে অসুস্থতা হিসেবে বহাল রাখেন।[] ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ানিউজিল্যান্ডের মনোরোগ সংস্থা সমকামিতাকে অসুস্থতার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। এর কিছু মাস পরে মার্কিন মনোচিকিৎসক সমিতি মানসিক অসুস্থতা হিসেবে সমকামিতার সংজ্ঞাকে বাতিল করে।[] মার্কিন মনোচিকিৎসক সমিতির প্রতিনিধি কাউন্সিল ১৯৭৫ সালে[] এবং এরপর অন্যান্য স্বাস্থ্য ও মনস্তত্ব বিষয়ক বৃহত্তর সংস্থাগুলো উক্ত নতুন সংজ্ঞা অনুসরণ শুরু করে, যার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯০ সালে মানসিক বিকৃতির তালিকা থেকে সমকামিতাকে বাতিল করে দেয়।[]

বর্তমান বিশেষজ্ঞদের মতে, সমকামিতা কোন মানসিক ব্যাধি নয়। কয়েক দশক ধরে গবেষণা ও ক্লিনিকের অভিজ্ঞতার ফলে প্রধান প্রধান স্বাস্থ্য ও[] মনোস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এসব প্রবৃত্তি মানুষদের স্বাভাবিক যৌনতার একটি ভিন্ন প্রকরণ মাত্র।[] নারী ও পুরুষের মধ্যেকার সম্পর্কের মতোই সমলিঙ্গ সম্পর্কও স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর।[]

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

[সম্পাদনা]

ফ্রয়েড ও মনোসমীক্ষণ

[সম্পাদনা]

সমকামিতার ব্যাপারে সিগমন্ড ফ্রয়েডের দৃষ্টিভঙ্গি জটিল ছিল। সমকামিতার কারণ ও বিকাশকে বুঝতে গিয়ে, তিনি প্রথম উভকামিতাকে একটি "জন্মগত মৌলিক যৌন বৈশিষ্ট্য" হিসেবে ব্যাখ্যা করেন, যার দ্বারা তিনি বুঝিয়েছিলেন যে, সকল মানুষই উভকামী বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, যৌন তাড়নার একটি সমকামী অনুপাত ও একটি বিপরীতকামী অনুপাত আছে, এবং বিকাশকালীন সময়ে এ দুটোর একটি অপরটির উপর বিজয়ী হয়। এছাড়াও প্রাকৃতিক উভকামিতার ব্যাপারে একটি জৈবিক ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করতেন, যাতে বলা হয়, মানুষ জৈবিকভাবে উভয় লিঙ্গের দ্বারাই যৌন উত্তেজিত হওয়ার যোগ্য। একারণে, তিনি সমকামিতাকে মানুষের কাছে উপলব্ধ বহু প্রকারের যৌন সুযোগের মধ্যে একটি হিসেবে বর্ননা করেছেন। ফ্রয়েড প্রস্তাব করেন যে, মানুষের অন্তর্নিহিত উভকামিতা তাকে চূড়ান্তরূপে অধিক সন্তোষজনক যৌনতাকে বেছে নেওয়ার দিকে পরিচালিত করে, কিন্তু সাংষ্কৃতিক নিষিদ্ধতার কারণে অনেক মানুষের সমকামিতা অবদমিত হয়। ফ্রয়েডের মতে, যদি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকতো, তবে মানুষ তখন নিজের কাছে মনে হওয়া অধিক সন্তোষজনক সুযোগটি বেছে নিতো, এবং তাদের এই যৌন পছন্দ সারা জীবনভর পরিবর্তনশীল হিসেবে বিরাজ করতো, এতে কখনো মানুষ সমকামী হতো, আর কখনো বিষমকামী।

সমকামিতার আরও কিছু কারণের মধ্যে তিনি ইডিপাস কমপ্লেক্স নামক একটি দশাকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যেখানে কোন ব্যক্তি নিজেকে মায়ের সাথে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে এবং নিজেদেরকে অবচেতনভাবে প্রেমের বস্তু হিসেবে গ্রহণ করে। এই আত্মপ্রেমকে নার্সিসিজম বলা হয়, ফ্রয়েড মনে করতেন যে, যার মাঝে নার্সিসিজম যত বেশি তার সমকামিতার সম্ভাবনা তত বেশি, কারণ সমলিঙ্গকে ভালবাসা হল নিজেকে ভালবাসার একটি বর্ধিতরূপ।[] নারসিসিজম এবং সমকামিতার মধ্যে এই সম্পর্ক পরবর্তীতে রুবিনস্টাইন (২০১০) দ্বারা তৈরি একটি অভিজ্ঞ গবেষণার দ্বারা সমর্থন লাভ করে। গবেষণাটির ফলাফলে দেখা যায় যে, সমকামী শিক্ষার্থীরা বিষমকামী শিক্ষার্থীদের তুলনায় দুটি ভিন্ন ধরনের নারসিসিজমে উচ্চ এবং আত্মমর্যাদার মাপকাঠিতে নিম্ন স্কোর প্রদর্শন করে।[]

আলফ্রেড কিনসে

[সম্পাদনা]

যৌনবিজ্ঞানী আলফ্রেড চার্লস কিনসে (১৮৯৪-১৯৫৬) কিনসে স্কেল উদ্ভাবন করেন, যা যৌন অভিমুখিতাকে ০ থেকে ৬ ছকে শ্রেণিবিন্যাসিত করে। সেই ছকে ০ মানে সম্পুর্ণভাবে বিষমকামী এবং ৬ মানে সম্পুর্ণভাবে সমকামী।[] তার অন্বেষণ থেকে এটা দেখা যায়, যৌন অভিমুখিতায় বিশালরকমের বৈচিত্র্য আছে। কিনসে পুরুষে যৌন আচরণ (Sexual Behavior in the Human Male) এবং নারীতে যৌন আচরণ (Sexual Behavior in the Human Female) শিরোনামে বই লিখেন, যা একই সাথে তাকে করে বিতর্কিত এবং পৌঁছে দেয় খ্যাতির চূড়ায়। তৎকালীন সময়ে সমকামীদের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হত। কিনসে বইতেই প্রথমবারের মত বর্ণনা করা হয়, সমকামিতা যতটুকু ভাবা হয় তারচেয়েও অধিক হারে সমাজে বিদ্যমান। প্রস্তাবনায় বলা হয়, এই আচরণ যৌনতারই একটি স্বাভাবিক অংশ।

মনোবিদ্যায় বৃহত্তর গবেষণা

[সম্পাদনা]

সমকামিতা নিয়ে বৃহত্তর মনস্তত্ব বিষয়ক গবেষণাকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে:[১০]

  1. কি কারণে কিছু লোক নিজের সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে?
  2. কী কারণে সমকামিতামুলক যৌন অভিমুখিতার প্রতি বৈষম্য করা হয় এবং বৈষম্য কীভাবে প্রভাবিত হয়?[১১]
  3. ব্যক্তি সমকামী হলে সেটা কী তার স্বাস্থ্যে, মানসিক দক্ষতায় অথবা জনস্বাস্থ্যে কোনো প্রভাব ফেলে?
  4. সমকামী হলেই তাকে সমাজ বিচ্ছিন্ন হতে হবে কেন, যৌনতার এই প্রকরণের পরিচয়ের জন্য কাওকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বানানো কতটা যৌক্তিক[১২]
  5. সমকামী মানুষের সন্তান কীভাবে বেড়ে উঠবে?

মনস্তাত্ত্বিক এই গবেষণাগুলো সবসময় সমকামী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে হিংসামুলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করতে সহায়ক হয়ে এসেছে, এই গবেষণাগুলো গুরুত্ববহন করেছে সাধারণ এলজিবিটি মানুষদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে।[১০]

সমকামিতার কারণ

[সম্পাদনা]

“সমকামিতার বিকাশ” ব্যাখ্যা করার জন্য বহুবিধ তত্ত্ব এখন পর্যন্ত প্রস্তাবিত হয়েছে তবে সমকামিতা কেন হয় বা তার উৎস কি তা নিয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো সার্বজনীন তত্ব নেই।[১৩]

বৈষম্য

[সম্পাদনা]

সমকামি বিরোধী এ মনোভাব এবং আচরণ (যাকে মাঝে মাঝে 'হোমোফোবিয়া' নামে অভিহিত করা হয়) মনস্তাত্ত্বিক গবেষণাগুলোর একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধরনের গবেষণাগুলোতে সমাজে নারী সমকামীর তুলনায় পুরুষ সমকামীদের প্রতি যে বৈরী আচরণ সচরাচর পরিলক্ষিত হয়, তাই ফুটে উঠেছে।[১০] যারা সমকামীদের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত নন, সমকামী-বিরোধী মনোভাব মুলত তাদের মধ্যেই দেখা যায়। [১৪] সমকামী ও উভকামী ব্যক্তিরা নিজেদের যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তনের জন্য যদি মনোথেরাপি নিতে যায়, তবে সমকামী হওয়া থেকে তাদের প্রতিহত করতে সমকামীতার প্রতি বিদ্বেষমুলক যেসব কথাবার্তা থেরাপিষ্টরা বলেন, তা এলজিবিটি মানুষদের মানসিক ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। [১৫] এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব সমকামী থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, সেসব সমকামীদের প্রায় অর্ধ শতাংশই তাদের যৌন অভিমুখিতার জন্য বেশিরভাগ সময় সমাজের পুরুষ দ্বারা (যেমন: তার পরিবারের পুরুষ সদস্য, তার পুরুষ বন্ধুবান্ধব বা পুরুষ প্রতিবেশী) মৌখিক বা শারীরিকভাবে সহিংসতার শিকার হয়েছিলো, এই নিগ্রহের সাথে স্ট্রেস পরবর্তী বিভিন্ন লক্ষণ (যেমনঃ হতাশা, উদ্বেগজনিত সমস্যা, রগচটা সমস্যা সহ নানা সমস্যা) একজন নিগৃহীত সমকামীতে দেখার উচ্চতর ঝুকি থাকে।[১৬] গবেষকেরা দেখিয়েছেন, শিশুর যৌন অভিমুখিতা নিয়ে যেসমস্ত অভিভাবকেরা ঋণাত্মক চিন্তাধারণা পোষণ করেন, তাদের সন্তানেরা আত্মগ্লানিতে ভুগে এবং নারীদের প্রতি ঋণাত্মক চিন্তাজ্ঞাপন করে। এই ধরনের পিতামাতাদের তাদের সন্তানের সমকামিতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হতে; তাদের সন্তানকে বুঝতে দীর্ঘ সময় লাগে।[১৭]

উপরন্তু, গবেষণায় প্রস্তাব করা হয়েছে, "যেসব পরিবার তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ অনুসরণ করে, ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে, বিবাহ এবং সন্তানাদি থাকার প্রতি জোর দেয়, সেসব পরিবারের; উদার মনোভাবাপন্ন পরিবারের তুলনায় সমকামিতাকে গ্রহণ করার মানসিকতা কম দেখা যায়।" [১৮] তবে আরো একটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে, এটি সর্বজনীন নয়। অর্থাৎ এর উল্টোটাও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, চানা এটেনংফ এবং কোলেট ডাইয়েট কর্তৃক "এপিএ'র সাইকোলজি অফ রিলিজিয়ন অ্যান্ড স্পিরিচুয়ালিটি" (APA's Psychology of Religion & Spirituality) নামক জার্নালে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা গেছে যে; বেশ কিছু ধর্মীয় পরিবারের সদস্যরা তাদের কোনো সদস্যের ভিন্ন যৌন অভিমুখিতাকে ধর্মীয় মুল্যবোধ ও ধর্মীয় গ্রন্থ দ্বারাই স্বীকার বা সমর্থন করেছেন। যেমনঃ একজন ক্যাথলিক মা, তার সমকামী পুত্রের অভিব্যক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, "স্রষ্টার সকল নির্দেশনার উর্ধ্বে যে নির্দেশনা আছে; তা হলো ভালোবাসা"। একইভাবে একজন মেথোডিস্ট মা তার সমকামী পুত্রের সাথে এ বিষয়ে কথা আলোচনা করতে গিয়ে যীশুকেই তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, "আমি যীশুর বার্তা পড়ি, তার বার্তায় তিনি ভালোবাসার কথা বলেছেন, ক্ষমার কথা বলেছেন, এবং আমি মনে করি না, একজন মানুষকে কখনোই তার ভালোবাসার ন্যায় কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া যায়।" একই বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে একজন ধার্মিক মরমন পিতার দ্বারা, তিনি বলেছেন, "যদি তুমি কাওকে ভালোবাসো, তাহলে সেটা স্বীকার করে নেওয়াই সবচেয়ে বেশি যৌক্তিক এবং সমাজের কোনো অধিকার নেই; এজন্য তাকে শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর।"[১১]

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা

[সম্পাদনা]

মনস্তাত্ত্বিক গবেষণাগুলো সমকামী, উভকামী ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরীক্ষণ করেছে। গবেষকরা সমকামী ব্যক্তির হতাশা, মানসিক উদ্বেগ কেমন হয়, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন। দেখেছেন এই সমস্ত সমস্যার ফলে তাদের খাদ্যভ্যাসে কোনো প্রভাব পরে কিনা।

  • মানসিক ব্যাধি: একটি ডাচ গবেষণা অনুসারে বিষমকামী পুরুষের তুলনায় সমকামী পুরুষে মেজাজউদ্বিগ্নতা বিশৃঙ্ক্ষল থাকে, তারা অস্থিরচিত্ত নয়, ক্ষণে ক্ষণে মানসিক ধী পরিবর্তিত হয়, সমকামী নারীরা বিষমকামী নারীর তুলনায় অনেক বেশি হতাশাপ্রবণ থাকে (অন্যান্য উদ্বিগ্নতায় পার্থক্য তাদের দেখা যায় নি)।[১০]
  • শারীরিক বাহ্যরুপ ও খাদ্যাভাসে বিশৃঙ্ক্ষলা: সমকামী পুরুষেরা বিষমকামী পুরুষের তুলনায় তাদের শারীরিক শ্রী এর প্রতি বেশি মনোযোগী থাকে; তারা সচেতন থাকে; তাদের দেখে অন্য মানুষরা ইতিবাচক না নেতিবাচক মন্তব্য করছে; তার ব্যাপারে।[১৯] খাদ্যাভাসে বিশৃঙ্ক্ষলায় সমকামী নারীরা বিষমকামী নারীর তুলনায় কম ঝুঁকির শিকার হয়।[২০]
  • জৈবিক ভাবে নির্ধারিত লিঙ্গের সমাজ দ্বারা সংজ্ঞায়িত আচরণের বাইরে অন্য আচরণ সংক্রান্ত সমস্যা: সমাজ কর্তৃক জৈবিক লিঙ্গ ব্যক্তিবর্গের মানুষের আচরণ কেমন হবে; তা মোটামুটি নির্ধারিত। যেমনঃ একজন ছেলে বাইরে কাজ করবে, শার্ট প্যান্ট পরবে, হাটার সময় গটগট করে হাটবে, আর নারীরা ঘরে বসে থাকবে, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরবে; হাঁটার সময় ধীরে ধীরে হাটবে, এধরনের আচরণ একটা সমাজ জৈবিক ভাবে নির্ধারিত লিঙ্গের মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে। কিন্তু সমকামী পুরুষেরা যখন কিছু মেয়েলী আচরণ জনসম্মুখে করে, তখন তাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।[২১] তবে সমকামী নারীদের এই সমস্যার মুখোমুখি কম হতে হয়।[২২]
  • সংখ্যা লঘুর চাপ: সমকামী ব্যক্তিরা প্রতিটা সমাজেই যৌন সংখ্যালঘু; আর নিজের যৌন প্রবৃত্তি এভাবে কম হওয়ার জন্য তাদের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ সবসময় কাজ করে।
  • আত্ম-স্বতন্ত্র যৌন অভিমুখিতা: যৌন অভিমুখিতা ও ধর্মীয় পরিচয়ের মধ্যে যদি বিরোধার্থক ভাব থাকে; তবে তা কিছু মানুষকে তীব্র মানসিক পীড়ার মধ্যে ফেলে দেয়। এর ফলে কিছু কিছু মানুষ তার যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তন করতে চায়।
  • যৌন সম্পর্কের ব্যাধি: সমকামী ব্যক্তিরা যখন বিপরীত লিঙ্গের কাওকে বিবাহ করে (মিশ্রবিবাহ) তখন তারা এই ভেবে দ্বন্দ্বে থাকেন, তাদের বিবাহ হয়তো ভেঙে যাবে। যৌন সম্পর্কের ব্যাধি এমন এক প্রকার ব্যাধি; যেখানে যৌন পরিচয় তার সম্পর্কের গঠনে হস্তক্ষেপ করে।

আত্মহত্যা

[সম্পাদনা]

বিষমকামীদের তুলনায় সমকামী নারী-পুরুষ অথবা উভকামীদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়।[২৩][২৪][২৫] সমকামী ও উভকামী পুরুষের তুলনায় উভকামী ও সমকামী নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার উচ্চ প্রবণতা দেখা যায়।[২৬]

গবেষণাগুলো বিষমকামী ও সমকামীদের আত্মহত্যার প্রবণতার নিখুত পার্থক্য কেমন হতে পারে; তার চূড়ান্ত কোনো ফলাফল প্রদর্শন করতে সক্ষম হয় নি। একটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে সমকামী নারীদের বিষমকামীদের তুলনায় ০.৮-১.১ গুণ বেশি[২৭] ও সমকামী পুরুষের বিষমকামীদের তুলনায় ১.৫-২.৫ গুণ বেশি আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায়।[২৮][২৯] এধরনের অসংখ্য পারিসংখ্যানিক উপাত্ত থাকলেও, আত্মহত্যার প্রবণতার হার সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে এরকম একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে; সমকামী নারীরা; বিষমকামীদের তুলনায় ৪.৬ গুণ[৩০] ও সমকামী পুরুষেরা বিষমকামীদের তুলনায় ১৪.৬ গুণ বেশি আত্মহননের পথ বেছে নেয়।[১০]

সমকামী নারী পুরুষের মধ্যে যারা আত্মহত্যা করতে চায়; তারা সমকামী বিদ্বেষী বিভিন্ন আচরণের শিকার হয়। দেখা যায়, যারা আত্মহত্যা করে না; তাদের তুলনায় আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক সমকামীরা অধিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব, বৈষম্য[১০][৩১][৩২] ও পরিবার থেকে ত্যাজ্য; এরকম ঘটনার মধ্য দিয়ে যায়।[৩৩] আরেকটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে; যেসব সমকামীরা আত্মহননের পথ বেছে নেয়; তারা অধিক হারে (যৌন ক্রিয়ায়) নারীর ভূমিকা পালন করে।[৩৪] যারা অবিষমকামী পরিচয় তরুণ বয়সেই গ্রহণ করে; তাদের মধ্যে অনেকেই যৌন নির্যাতনের, মাদকাসক্তের শিকার হয়; বিভিন্ন আচরণগত কারণে গ্রেফতার হয়।[৩৪] একটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে নরওয়ের যেসব কিশোররা আত্মহত্যা করতে যায়; তাদের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে বলে দেওয়া যায়; এই কিশোররা সমলিঙ্গে যৌনাচারণ করতে ইচ্ছুক। তবে তারা সমকামী এমনটা বলা যাবে না।[৩৫]

যৌন অভিমুখিতা এবং সত্তার ক্রমবিকাশ

[সম্পাদনা]
  • প্রকাশ্যে আসা: অনেক সমকামী, উভকামী ব্যক্তিরা জীবনের একটা পর্যায়ে নিজের যৌন পরিচয় "প্রকাশ করেন"। মনস্তাত্ত্বিকদের মতে এই প্রকাশ্যে আসার বিষয়টি কয়েকটি স্তরে বিভক্ত। তারা প্রথম স্তরে বুঝতে পারেন, তাদের যৌন চাহিদা সংখ্যাগরিষ্ঠের যৌন প্রবৃত্তি থেকে আলাদা। তখন তারা তাদের যৌন পরিচয়কে প্রশ্ন করতে থাকে। এরপর তারা ব্যবহারিকভাবে কিছু ক্ষেত্রে নিজের যৌন পরিচয়কে প্রকাশ করেন এবং এই পরিচয়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়। চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে তারা তাদের যৌন ইচ্ছাসমূহকে একত্রিত করে ও নিজেদেরকে সম্পুর্ণভাবে বুঝতে পারে।"[১০] তবে এই প্রক্রিয়াটি রৈখিক নয়[৩৬] এটি উভকামী, নারী সমকামী, পুরুষ সমকামীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়।[৩৭]
  • প্রকাশ্যে আসার ভিন্ন স্তর: একটি গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে সমকামী পুরুষেরা; তাদের সহ কর্মজীবি, পিতামাতা এবং দুরের দিকের আত্মীয়ের তুলনায় বন্ধু এবং সহোদরের কাছে নিজেকে বেশি প্রকাশ করেন।[৩৮]
  • প্রকাশ্যে আসা এবং ভালো থাকা: যেসব সমলিঙ্গের দম্পতি প্রকাশ্যে আসেন, তারা তাদের সম্পর্ক নিয়ে তুলনামুলক ভাবে বেশি তৃপ্ত থাকেন।[৩৯] যেসব নারীরা নিজেদের সমকামী হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন, তারা কম উদ্বিগ্ন থাকেন, ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী থাকে।[৪০]
  • নিজের সমকামী সত্তাকে প্রত্যাখান: যেসব ধার্মিক ব্যক্তি নিজ নিজ সমকামী সত্তাকে ধর্মের সাথে সমকামিতার বিবাদ দেখে প্রত্যাখান করে, তারা নির্ভার হয়েই বসবাস করতে পারে।[৪১][৪২][৪৩][৪৪] এই গবেষণাসমুহকে পুনঃপরীক্ষণের পর মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠনের প্রধান জুডিথ গ্লাসগোল্ড বলেছেন, ধর্মীয় কারণে নিজের সমকামী সত্তাকে প্রত্যাখান করলে ক্ষতি হয়, এমনটা বলা যায় না।[৪৫]

যৌন অভিমুখিতার তারল্য

[সম্পাদনা]

তরলের ধর্ম তারল্য হওয়ায়, তা যে পাত্রে রাখা হয়, সে পাত্রের আকার ধারণ করে, অর্থাৎ তরল পদার্থ সময়ের সাথে তার আকার বদলায়, মানুষের ক্ষেত্রে যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তিত হতে পারে বলেই, একে তারল্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে।

মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন (APA) এবিষয়ে বিবৃতিতে বলে, "কেও কেও মনে করে, যৌন অভিমুখিতা সহজাত এবং সুনির্দিষ্ট, যাইহোক; যৌন অভিমুখিতা একজন মানুষের গোটা জীবন জুড়েই ক্রমান্বয়ে প্রকাশিত হতে পারে।[৪৬] আমেরিকার বৃহৎ বৃহৎ স্বাস্থ্য বিষয়ক সংগঠনের সাথে মিলিতভাবে মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন বিবৃতি দেয় "ভিন্ন ভিন্ন লোক জীবনের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বুঝতে পারে, তারা বিসমকামী, সমকামী, না উভকামী।[৪৭] মানসিক স্বাস্থ্য এবং আসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের তথ্য মতে, "কিছু লোকের জন্য যৌন অভিমুখিতা সবসময়ের জন্য একই রকম থাকে, তবে কিছু মানুষের জন্য যৌন অভিমুখিতা তারল্যের ন্যায় সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।[৪৮] লিসা ডায়মণ্ডের "বয়ঃসন্ধি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক- নারীর উভকামিতা" নামক গবেষণা থেকে এটা দেখা গিয়েছে যে, "সমকামি ও বিসমকামী নারীদের স্বভাব, আত্মপরিচয়ে অভিমুখিতার তারল্য দেখা যায়"।[৪৯][৫০]

পরিবার প্রতিপালন

[সম্পাদনা]

এলজিবিটি পিতামাতা বলতে বুঝানো হয়, যখন লেসবিয়ান, গে, উভকামী এবং রুপান্তরকামী (এলজিবিটি) মানুষরা এক বা একাধিক সন্তানের প্রতি পিতামাতার ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে তারা সেসব সন্তানের জৈবিক (মানে তারাই জন্মদিয়েছেন) অথবা অজৈবিক পিতামাতা হতে পারেন। সমকামী পুরুষরা গর্ভভাড়া, আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় ভাবে সন্তান দত্তক নিয়ে, কোনো নারীর সাথে যৌন সম্পর্কে না জড়িয়ে সহপিতা হিসেবেও সন্তানের পিতা হতে পারেন।[৫১][৫২][৫৩][৫৪][৫৫] এলজিবিটি পিতামাতা গণ সিঙ্গেল পিতা অথবা মাতাও হতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০০০ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, ৩৩ শতাংশ নারী সমকামী ও ২২ শতাংশ পুরুষ সমকামীর ১৮ বছরের নিচে অন্তত একটি সন্তান আছে, এমন তথ্য নথিবদ্ধ হয়।[৫৬] কিছু সন্তান জানেই না, তাদের পিতা অথবা মাতা এলজিবিটি সম্প্রদায়ভুক্ত, কিছু পিতা-মাতা তাদের সন্তানের কাছে নিজের অভিমুখিতার পরিচয় গোপন রাখতেই প্রত্যয়ী।[৫৭][৫৮] কিছু দেশে এলজিবিটি মানুষের সন্তান পরিচর্যাতাদের সন্তান দত্তক নেওয়া বিতর্কিত। জানুয়ারি ২০০৮ এ ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত সমকামী দম্পতির সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকারের পক্ষে রায় দেয়।[৫৯][৬০] যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি রাজ্যে এলজিবিটি মানুষ সন্তান দত্তক নিতে পারেন।[৬১]

যদিও এটা মাঝেমাঝে বলা হয়, বিষমকামী দম্পতিরা মজ্জাগতভাবেই সমকামী দম্পতির তুলনায় ভালো পিতামাতা হয়ে থাকেন অথবা বিষমকামী দম্পতির তুলনায় সমকামী দম্পতির সন্তানেরা খারাপভাবে বড় হয়, কিন্তু এই ধরনের দাবী কোনোভাবে বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত নয়।[][৬২] সমলিঙ্গের পিতামাতা দ্বারা প্রতিপালিত শিশুরা যে বিষমকামীদের চেয়ে খারাপভাবে বড় হয় না, এরপক্ষেই উলটা প্রচুর গবেষণা প্রবন্ধ আছে। এই গবেষণাগুলোতে শিশুর শারীরিক, মানসিক, অনুভূতিগত এবং আচরণগত বিষয়ের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে। তারা এখানে শিশুর ক্ষতির কোনো ঝুকি দেখতে পাননি।[৬৩] কোনো গবেষণা এটা প্রমাণ করতে সমর্থ হয় নি, পিতামাতার লিঙ্গ কোনোভাবেই সন্তানের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।[৬৪] গে, লেসবিয়ান অথবা উভকামী পিতামাতারা যদি বিষমকামী পিতামাতার চেয়ে সন্তান পালনে কম দক্ষ হয়; তবে তাদের প্রতিপালিত সন্তানের মধ্যে এই অদক্ষতার প্রমাণ দেখা যাবে। যা কখনোই এই গবেষণায় দেখা যায় নি।[৬৫]

নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জুডিয়াখ স্টেচি বলেন “সামাজিক বিজ্ঞানের যে কোনো গবেষণার ক্ষেত্রে এমনটা খুব কমই দেখা যায়, গবেষকদের গবেষণা একে অপরের সাথে একমত পোষন করেছে। কিন্তু সমকামী দম্পতিরা পিতামাতা হিসেবে; সন্তানের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে কেমন হবেন; সে সংক্রান্ত গবেষণার সকল ফলাফল এক সরলরেখায় মিলিত হয়ে গেছে। দেখা গিয়েছে মার্কিন শিশুরোগ সংক্রান্ত একাডেমী এবং সমস্ত বৃহত্তর পেশাদার সংগঠন যারা শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তারা বৈপ্লবিক ভাবে গে এবং লেসবিয়ান মানুষের পিতামাতা হওয়ার অধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছে।"[৬৬] এইধরনের সংগঠনের মধ্যে আছে মার্কিন শিশুরোগ সংক্রান্ত একাডেমী,[৬৩] শিশু এবং কিশোরের বয়োসন্ধিকালীন মনোবিদ্যা একাডেমী,[৬৭] মার্কিন মনোরোগ সংগঠন,[৬৮] মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন,[৬৯] মার্কিন মনোবিশ্লেষনী সংগঠন,[৭০] সামাজিক কর্মীদের জাতীয় সংগঠন,[] মার্কিন শিশুর স্বাস্থ্য লীগ,[৭১] নর্থ আমেরিকান কাউন্সিল,[৭২] এবং কানাডীয় মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন (সিপিএ)। কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান সিপিএর মনস্তাত্ত্বিক গবেষণার ফলাফলকে অপব্যখ্যা করায় এই সংগঠন উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে।[৭৩]

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ "মধ্যবিত্ত পরিবার আর সেই প্রথায় আটকে নেই; যেখানে বিবাহের পরে বাবা কাজের জন্য বাইরে যাবে, আর মা ঘরে বসে থাকবে এবং তাদের গর্ভ ও ঔরস জাত নিজ সন্তানকে মা ঘরে বসে বসে পালন করে বড় করবে।" ১৯৮০ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কিশোররা প্রথাগত পরিবারের মত করে অপ্রথাগত পরিবারের সাথেও মানিয়ে নিতে সক্ষম।[৭৪]

মানসিক থেরাপি

[সম্পাদনা]

বিষমকামী ব্যক্তিরা চাপ, সম্পর্ক, সমস্যা, সামাজিক কর্মে নিজেকে রাখতে সমস্যায় পরলে বিভিন্ন থেরাপি নিয়ে থাকে। সমকামী ব্যক্তিদের অনেকেই বিষমকামী ব্যক্তি হিসেবে জীবন ধারণের জন্য নিজের যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তনের নিমিত্তে এরকম থেরাপি নিতে চায়। কিন্তু এই থেরাপি গুলো যারা বিষমকামী নয়, তাদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক ঝুঁকি তৈরী করতে পারে।[১৫]

সম্পর্কে কাউন্সেলিং

[সম্পাদনা]

যৌন অভিমুখিতা যাই হোক না কেন, সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দম্পতির মধ্যে আলোচনা হয়। কিন্তু এলজিবিটি সদস্যরা সমাজ কর্তৃক নিপীড়নের শিকার হতে হবে; এমন ভয়ে ভীত থাকে। ফলে সমকামী যুগলকে; বিষমকামীদের তুলনায় অতিরিক্ত ভাবে কীভাবে সমকামী বিদ্বেষীতাকে মোকাবিলা করা যায়, এবিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হয়। স্বতন্ত্রভাবে অনেকেই যখন তার অভিমুখিতাকে প্রকাশ করে; তাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সমলিঙ্গের দম্পতির সামনে এমন কোনো সমলৈঙ্গিক জুটি নেই; যাকে তারা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে এবং সেই আদর্শকে দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরে নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে নির্ভার থাকতে পারে। সমাজ কর্তৃক লিঙ্গ নির্ধারণের বিষয় নিয়ে বিষমকামী দম্পতির জন্য সমাজ দ্বারা কোনো জটিলতা তৈরী হয় না; কিন্তু সমকামী দম্পতিকে সমাজ অনেকসময় সরলভাবে গ্রহণ করে না; ফলে তাদের নানাবিধ জটিলতা মোকাবিলা করতে হয়।[৭৫]

অনেক সমকামীকে​ মিশ্র বিবাহের মধ্য (নিজে সমকামী জানা সত্ত্বেও বিষমকামীকে বিবাহ) দিয়ে যেতে হয়; যা তাদের মানসিক ভাবে পীড়িত করে।[৭৬] থেরাপি সমকামীদের তাদের সত্তা স্বীকার করতে কিছুটা সাহায্য করতে পারে।[৭৭] যদি কেও নিজেকে মন থেকে সম্পুর্ণভাবে সমকামী মনে করে, তবে তা বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা তৈরী করে।[৭৮]

সমকামী সত্তাকে স্বীকার করার মনোথেরাপি

[সম্পাদনা]

সমকামী সত্তাকে স্বীকার করার মনোথেরাপি; মনোথেরাপিরই একটি অংশ। এই থেরাপি দ্বারা সমকামী মক্কেলকে, নিজের যৌন অভিমুখিতা স্বীকার করে নিতে উৎসাহ এবং সামাজিক চাপে পরে, নিজের অভিমুখিতা পরিবর্তন করে বিষমকামিতায় যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়। মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন (APA) এবং ব্রিটিশ মনোতাত্ত্বিক সংগঠন সমকামী সত্তাকে স্বীকার করে নেওয়া মনোথেরাপির নির্দেশিকা তৈরী করেছে।[৭৯][৮০] এই থেরাপি প্রদানকারী মনোঃচিকিৎসকেরা বিবৃতিতে বলেন, সমকামিতা বা উভকামিতা কোনো মানসিক অসুস্থতা নয়। তারা বিবৃতিতে বলে, নিজের সত্তাকে স্বীকার করে নেওয়ার মাধ্যমে তারা অন্য মানসিক অসুস্থতা উৎপত্তির ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবে।[৭৯]

যৌন অভিমুখিতা পরিচয়ের অনুসন্ধান

[সম্পাদনা]

এপিএ তাদের প্রস্তাবনায় বলেন, কেও যদি তাদের যৌন অভিমুখিতা পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে থেরাপি বিশেষজ্ঞদের চিকিৎসা শুরুর পুর্বে এটা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন, কেন সে অভিমুখিতা পরিবর্তন করতে চায়।[৮১] যৌন অভিমুখিতা পরিচয় অনুসন্ধানের একটি উদাহরণ হলো যৌন পরিচয় থেরাপি

যৌন অভিমুখিতার পরিচয়ের যে অনুসন্ধান, এই অনুসন্ধানের পথপরিক্রমায় ব্যক্তি তার সত্তা সম্বন্ধে পুনঃপরিচিত হয়। প্রকৃত মনোথেরাপি; অবিষমকামী ব্যক্তির অপর সত্তা; যাকে সে সমাজ থেকে লুকিয়ে রেখেছে, তা প্রকাশে উৎসাহিত করে। এর মাধ্যমে ব্যক্তি তার নিজ সম্বন্ধে জ্ঞাত হয়, তার পরিচয়ের প্রতি সে হয়ে উঠে আত্মবিশ্বাসী। এই ধরনের থেরাপি দৃঢ়প্রতিজ্ঞভাবে ব্যক্তির স্বীয় সত্তাকে প্রকাশে করে আত্মপ্রত্যয়ী। সমাজের নিয়ম নীতির বেড়াজালে যে বাঁধা তৈরী করা হয়েছে তা ভাঙতে মনোবল করে তুলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

মার্কিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সংগঠন এই বিষয়ে বক্তব্যতে বলেছে: কনভার্সন থেরাপির মত থেরাপিগুলো অবিষমকামী ব্যক্তির জন্য নানাবিধ ঝুঁকি নিয়ে আসে। এই ধরনের থেরাপি নিলে অবিষমকামী ব্যক্তির উপর হতাশা, দুশ্চিন্তা, আত্ম-বিনাসী ভাবনা সহ বিভিন্ন আচরণ ভর করে। যারা এই ধরনের থেরাপি দেয়, তাদের প্রায়সয়ই সমকামীতার বিরুদ্ধে মনগড়া কথা বলতে হয়, থেরাপিষ্টরা সমকামী বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে অবিষমকামীদের। তাদের মনে পরোক্ষভাবে গেথে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, সমকামীরা কখনো সুখী হতে পারে না, সমাজ তাদের স্বীকার করবে না, এরুপ নানাবিধ প্রচারণা। অথচ একজন অবিষমকামী ব্যক্তি সমকামী, উভকামী হয়েও সুখী হতে পারে, নিজের মনোমত সঙ্গী বাছাই করেও সম্পর্কে সন্তুষ্ট থাকতে পারে; ইচ্ছাকৃতভাবেই এবিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়।"[৮২] এসমস্ত কারণে, একজন অবিষমকামী ব্যক্তির মধ্যে তার যৌন অভিমুখিতার জন্য ভর করে রাজ্যের হতাশা।

মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন সমকামিতা সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে মানসিক সমস্যার তালিকা বা শ্রেণিবিন্যাস থেকে বাদ দিয়েছে।[৮৩] এই সংগঠন মনে করে, সমকামী, উভকামী মানুষ; তাদের প্রান্তিক যৌনতা সম্বন্ধে পর্যাপ্তভাবে জ্ঞাত না থাকায়; নিজের যৌন প্রবৃত্তি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে না জানার দরুন মানসিক পীড়ায় ভুগে থাকে।[৮৪]

মার্কিন কলেজ অব পেডিয়াট্রিক্স; যৌনতা নিয়ে যারা মনোকষ্টে ভুগে তাদের পরামর্শ বার্তায় এভাবেই বলে: "তুমি স্বাভাবিক মানুষ। সমকামিতা কোনো মানসিক রোগ নয়। মার্কিন মনস্তাত্ত্বিক সংগঠন, মার্কিন মনোরোগ সংগঠন এবং আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স এর মত সমস্ত বৃহত্তম মনোসংগঠন গুলো মনে করে, সমকামিতা কোনো অসুখ বা ব্যাধি (ডিসঅর্ডার) নয়। শুধুমাত্র যৌন প্রবৃত্তির একটি বহিঃপ্রকাশ। কেও জানে না, কী কারণে মানুষ সমকামী, উভকামী বা বিষমকামী হয়। অনেকগুলো ফ্যাক্টর এর পিছনে কাজ করে থাকতে পারে। কেও হয়তো জৈবিক কারণে সমকামী হয়, কেওবা মনস্তাত্ত্বিক কারণে। এই কার্য কারণ ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। বাস্তবতা হলো, কেও ইচ্ছাকৃতভাবে সমকামী, বিষমকামী বা উভকামী হতে পারে না।"[৮৫]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Case No. S147999 in the Supreme Court of the State of California, In re Marriage Cases Judicial Council Coordination Proceeding No. 4365(…)
  2. American Psychological Association: Appropriate Therapeutic Responses to Sexual Orientation
  3. This American Life
  4. Bayer, Ronald (১৯৮৭)। Homosexuality and American Psychiatry: The Politics of Diagnosis। Princeton: Princeton University Press। আইএসবিএন 0-691-02837-0 [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
  5. Bayer, Ronald (১৯৮৭)। Homosexuality and American Psychiatry: The Politics of Diagnosis। Princeton: Princeton University Press। আইএসবিএন 0-691-02837-0 [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
  6. Freud, Sigmund (১৯৫৩)। Three essays on the theory of sexuality। London: Hogarth Press। 
  7. Ruitenbeek, H.M. (১৯৬৩)। The problem of Homosexuality in modern society। New York: Dutton। 
  8. Rubinstien, Gigi (৬ জানুয়ারি ২০১০)। "Narcissism and self esteem among homosexual and heterosexual male students" (পিডিএফ)Journal of Sex & Marital Therapy36 (1): 24–34। ডিওআই:10.1080/00926230903375594পিএমআইডি 20063233। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  9. Geddes, Donald Porter (১৯৫৪)। An analysis of the Kinsey reports on sexual behavior in the human male and female। New York: Dutton। 
  10. Sandfort, T., সম্পাদক (২০০০)। "2"। Lesbian and Gay Studies: An Introductory, Interdisciplinary Approachআইএসবিএন 978-0-7619-5417-0 
  11. Etengoff C.; Daiute C. (২০১৪)। "Family Members' Uses of Religion in Post–Coming-Out Conflicts With Their Gay Relative"। Psychology of Religion and Spirituality6 (1): 33–43। ডিওআই:10.1037/a0035198 
  12. Etengoff C.; Daiute C. (২০১৫)। "Clinicians' perspectives of religious families' and gay men's negotiation of sexual orientation disclosure and prejudice"। Journal of Homosexuality62 (3): 394–426। ডিওআই:10.1080/00918369.2014.977115 
  13. LeVay, Simon (1996). Queer Science: The Use and Abuse of Research into Homosexuality. Cambridge: The MIT Press আইএসবিএন ০-২৬২-১২১৯৯-৯[পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
  14. Jensen, Jeffrey (৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯)। Affirmation - Homosexuality: A Psychiatrist's Response to LDS Social Services। National Affirmation Annual Conference। Portland, Oregon। ৪ জুলাই ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  15. Cabaj, Robert P.; Steine, Terry S., সম্পাদকগণ (১৯৯৬)। Textbook of Homosexuality and Mental Health। American Psychiatric Press। পৃষ্ঠা 421আইএসবিএন 978-0-88048-716-0 
  16. Herek, et al. (1997)
  17. Holtzen, David W.; Agresti, Albert A. (১ সেপ্টেম্বর ১৯৯০)। "Parental Responses to Gay and Lesbian Children: Differences in Homophobia, Self-Esteem, and Sex-Role Stereotyping"Journal of Social and Clinical Psychology9 (3): 390–399। আইএসএসএন 0736-7236ডিওআই:10.1521/jscp.1990.9.3.390 
  18. Newman, Bernie Sue; Muzzonigro, Peter Gerard (১৯৯৩)। "The Effects of Traditional Family Values on the Coming Out Process of Gay Male Adolescents"Adolescence28 (109): 213। 
  19. Brand, et al. (1992).
  20. Siever, Michael D.। "Sexual orientation and gender as factors in socioculturally acquired vulnerability to body dissatisfaction and eating disorders"। Journal of Consulting and Clinical Psychology (ইংরেজি ভাষায়)। 62 (2): 252–260। ডিওআই:10.1037/0022-006x.62.2.252 
  21. Hiatt, Deirdre; Hargrave, George E. (আগস্ট ১৯৯৪)। "Psychological Assessment of Gay and Lesbian Law Enforcement Applicants"Journal of Personality Assessment63 (1): 80–88। আইএসএসএন 0022-3891ডিওআই:10.1207/s15327752jpa6301_6 
  22. Finlay, Barbara; Scheltema, Karen E. (২৬ জুন ১৯৯১)। "The Relation of Gender and Sexual Orientation to Measures of Masculinity, Femininity, and Androgyny:"। Journal of Homosexuality21 (3): 71–86। আইএসএসএন 0091-8369ডিওআই:10.1300/J082v21n03_04পিএমআইডি 1880402 
  23. Westefeld, John; Maples, Michael; Buford, Brian; Taylor, Steve (২০০১)। "Gay, Lesbian, and Bisexual College Students"। Journal of College Student Psychotherapy15 (3): 71–82। ডিওআই:10.1300/J035v15n03_06 
  24. Fergusson DM, Horwood LJ, Ridder EM, Beautrais AL (জুলাই ২০০৫)। "Sexual orientation and mental health in a birth cohort of young adults"Psychological Medicine35 (7): 971–81। ডিওআই:10.1017/S0033291704004222পিএমআইডি 16045064 
  25. Silenzio VM, Pena JB, Duberstein PR, Cerel J, Knox KL (নভেম্বর ২০০৭)। "Sexual Orientation and Risk Factors for Suicidal Ideation and Suicide Attempts Among Adolescents and Young Adults"American Journal of Public Health97 (11): 2017–9। ডিওআই:10.2105/AJPH.2006.095943পিএমআইডি 17901445পিএমসি 2040383অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  26. Gay, Lesbian, Bisexual & Transgender "Attempted Suicide" Incidences/Risks Suicidality Studies From 1970 to 2009
  27. Bell, Alan P; Weinberg, Martin S (১৯৭৯)। Homosexualities: a Study of Diversity Among Men and Women। New York: Simon and Schuster। পৃষ্ঠা 453–454 (Tables 21.14 & 21.15)। আইএসবিএন 978-0-671-25150-5ওসিএলসি 5126171 
  28. Safren SA, Heimberg RG (ডিসেম্বর ১৯৯৯)। "Depression, hopelessness, suicidality, and related factors in sexual minority and heterosexual adolescents"Journal of Consulting and Clinical Psychology67 (6): 859–66। ডিওআই:10.1037/0022-006X.67.6.859পিএমআইডি 10596508 
  29. Russell ST, Joyner K (আগস্ট ২০০১)। "Adolescent Sexual Orientation and Suicide Risk: Evidence From a National Study"American Journal of Public Health91 (8): 1276–81। ডিওআই:10.2105/AJPH.91.8.1276পিএমআইডি 11499118পিএমসি 1446760অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  30. Saghir MT, Robins E, Walbran B, Gentry KA (আগস্ট ১৯৭০)। "Homosexuality. IV. Psychiatric disorders and disability in the female homosexual"The American Journal of Psychiatry127 (2): 147–54। ডিওআই:10.1176/ajp.127.2.147পিএমআইডি 5473144 
  31. Rotheram-Borus, Mary J.; Hunter, Joyce; Rosario, Margaret (১ অক্টোবর ১৯৯৪)। "Suicidal Behavior and Gay-Related Stress among Gay and Bisexual Male Adolescents"Journal of Adolescent Research9 (4): 498–508। আইএসএসএন 0743-5584ডিওআই:10.1177/074355489494007 
  32. Proctor, Curtis D.; Groze, Victor K. (১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪)। "Risk Factors for Suicide among Gay, Lesbian, and Bisexual Youths"Social Work (ইংরেজি ভাষায়)। 39 (5): 504–513। আইএসএসএন 0037-8046ডিওআই:10.1093/sw/39.5.504 
  33. Ryan C, Huebner D, Diaz RM, Sanchez J (জানুয়ারি ২০০৯)। "Family rejection as a predictor of negative health outcomes in white and Latino lesbian, gay, and bisexual young adults"। Pediatrics123 (1): 346–52। ডিওআই:10.1542/peds.2007-3524পিএমআইডি 19117902 
  34. Remafedi G, Farrow JA, Deisher RW (জুন ১৯৯১)। "Risk factors for attempted suicide in gay and bisexual youth"Pediatrics87 (6): 869–75। পিএমআইডি 2034492 
  35. "Sexual orientation and suicide attempt: a longitudinal study of the general Norwegian adolescent population"। 112 (1)। ফেব্রুয়ারি ২০০৩: 144–51। ডিওআই:10.1037/0021-843X.112.1.144পিএমআইডি 12653422  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |2= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  36. Rust, Paula C. (১ মার্চ ১৯৯৩)। "'Coming Out' in the Age of Social Constructionism: Sexual Identity Formation among Lesbian and Bisexual Women"Gender & Society7 (1): 50–77। আইএসএসএন 0891-2432ডিওআই:10.1177/089124393007001004 
  37. de Monteflores, Carmen; Schultz, Stephen J. (১ জুলাই ১৯৭৮)। "Coming Out: Similarities and Differences for Lesbians and Gay Men"। Journal of Social Issues34 (3): 59–72। আইএসএসএন 1540-4560ডিওআই:10.1111/j.1540-4560.1978.tb02614.x 
  38. Berger, Raymond M. (২৯ অক্টোবর ১৯৯২)। "Passing and Social Support Among Gay Men"। Journal of Homosexuality23 (3): 85–98। আইএসএসএন 0091-8369ডিওআই:10.1300/j082v23n03_06পিএমআইডি 1431083 
  39. Berger RM (জুলাই ১৯৯০)। "Passing: impact on the quality of same-sex couple relationships"Social Work35 (4): 328–32। পিএমআইডি 2392712 
  40. Jordan KM, Deluty RH (১৯৯৮)। "Coming out for lesbian women: its relation to anxiety, positive affectivity, self-esteem, and social support"। Journal of Homosexuality35 (2): 41–63। ডিওআই:10.1300/J082v35n02_03পিএমআইডি 9524921 
  41. Ponticelli C. M. (১৯৯৯)। "Crafting stories of sexual identity reconstruction"Social Psychology Quarterly62: 157–172। ডিওআই:10.2307/2695855 
  42. Erzen, Tanya (২৭ জুন ২০০৬)। Straight to Jesus: Sexual and Christian Conversions in the Ex-Gay Movement। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-93905-9 [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
  43. Thumma S (১৯৯১)। "Negotiating a religious identity: The case of the gay evangelical"। Sociological Analysis52: 333–347। ডিওআই:10.2307/3710850 
  44. Kerr, R. A. (1997). The experience of integrating gay identity with evangelical Christian faith" Dissertation Abstracts International 58(09), 5124B. (UMI No. 9810055).
  45. Simon, Stephanie (৭ আগস্ট ২০০৯)। "A New Therapy on Faith and Sexual Identity"অর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজনWall Street Journalআইএসএসএন 0099-9660 
  46. American Psychiatric Association (মে ২০০০)। "Gay, Lesbian and Bisexual Issues"। Association of Gay and Lesbian Psychiatrics। ৩ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১৭ 
  47. "Just the Facts About Sexual Orientation & Youth: A Primer for Principals, Educators and School Personnel"American Academy of Pediatrics, American Counseling Association, American Association of School Administrators, American Federation of Teachers, American Psychological Association, American School Health Association, The Interfaith Alliance, National Association of School Psychologists, National Association of Social Workers, National Education Association। ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৮ 
  48. "ARQ2: Question A2 – Sexual Orientation"। Centre for Addiction and Mental Health। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-২৮ 
  49. Diamond, Lisa M. (জানুয়ারি ২০০৮)। "Female bisexuality from adolescence to adulthood: Results from a 10-year longitudinal study" (PDF)Developmental Psychology44 (1): 5–14। ডিওআই:10.1037/0012-1649.44.1.5পিএমআইডি 18194000 
  50. "Bisexual women – new research findings"। Women's Health News। জানুয়ারি ১৭, ২০০৮। 
  51. Berkowitz, D; Marsiglio, W (২০০৭)। "Gay Men: Negotiating Procreative, Father, and Family Identities"Journal of Marriage and Family69: 366–381। ডিওআই:10.1111/j.1741-3737.2007.00371.x 
  52. Butler, Katy (৭ মার্চ ২০০৬)। "Many Couples Must Negotiate Terms of 'Brokeback' Marriages"The New York Times 
  53. Coleman, Eli (১৪ ডিসেম্বর ১৯৮৯)। "The Married Lesbian"। Marriage & Family Review14 (3-4): 119–135। আইএসএসএন 0149-4929ডিওআই:10.1300/J002v14n03_06 
  54. Büntzly G (১৯৯৩)। "Gay fathers in straight marriages"। Journal of Homosexuality24 (3–4): 107–14। ডিওআই:10.1300/J082v24n03_07পিএমআইডি 8505530 
  55. Bozett, Frederick W. (১৯ আগস্ট ১৯৮৭)। "The Heterosexually Married Gay and Lesbian Parent"। Gay and Lesbian Parents। পৃষ্ঠা 138। আইএসবিএন 0-275-92541-2 
  56. "APA Policy Statement on Sexual Orientation, Parents, & Children"। ২৮ জুলাই ২০০৪। ১৫ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০০৭ 
  57. Dunne EJ (১৯৮৭)। "Helping gay fathers come out to their children"। J Homosex14 (1–2): 213–22। ডিওআই:10.1300/J082v14n01_16পিএমআইডি 3655343 
  58. Buxton, Amity P. (৩১ মার্চ ২০০৫)। "A Family Matter: When a Spouse Comes Out as Gay, Lesbian, or Bisexual"। Journal of GLBT Family Studies1 (2): 49–70। আইএসএসএন 1550-428Xডিওআই:10.1300/J461v01n02_04 
  59. EMRK is for the LGBT adoption [অকার্যকর সংযোগ]
  60. "Gleichgeschlechtliche Adoptiveltern - Gerichtshof rügt Frankreich"euronews (জার্মান ভাষায়)। ২২ জানুয়ারি ২০০৮। ২৪ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৮ 
  61. "Adoption Laws: State by State"। Human Rights Campaign। ১৮ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০০৮ 
  62. Canadian Psychological Association (২ জুন ২০০৫)। "Brief presented to the Legislative House of Commons Committee on Bill C38" (পিডিএফ)। ১৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  63. Pawelski JG, Perrin EC, Foy JM, ও অন্যান্য (জুলাই ২০০৬)। "The effects of marriage, civil union, and domestic partnership laws on the health and well-being of children"। Pediatrics118 (1): 349–64। ডিওআই:10.1542/peds.2006-1279পিএমআইডি 16818585 
  64. Biblarz, Timothy J.; Stacey, Judith (১ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "How Does the Gender of Parents Matter?" (পিডিএফ)Journal of Marriage and Family72 (1): 3–22। আইএসএসএন 1741-3737ডিওআই:10.1111/j.1741-3737.2009.00678.x 
  65. Herek GM (সেপ্টেম্বর ২০০৬)। "Legal recognition of same-sex relationships in the United States: a social science perspective" (পিডিএফ)The American Psychologist61 (6): 607–21। ডিওআই:10.1037/0003-066X.61.6.607পিএমআইডি 16953748। ১০ জুন ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  66. Cooper, L.; Cates, P.। "Too high a price: The case against restricting gay parenting"। New York: American Civil Liberties Union: 36। , as cited in Short, Elizabeth; Riggs, Damien W.; Perlesz, Amaryll; Brown, Rhonda; Kane, Graeme (আগস্ট ২০০৭)। "Lesbian, Gay, Bisexual and Transgender (LGBT) Parented Families: A Literature Review prepared for The Australian Psychological Society" (পিডিএফ)। ৪ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৮ 
  67. "Children with Lesbian, Gay, Bisexual and Transgender Parents"। American Academy of Child and Adolescent Psychiatry। ১৫ জুন ২০১০। ১৫ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  68. "Adoption and Co-parenting of Children by Same-sex Couples"। American Psychiatric Association। ১১ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  69. "Sexual Orientation, Parents, & Children"। American Psychological Association। 
  70. "Position Statement on Gay and Lesbian Parenting"। American Psychoanalytic Association। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  71. "Position Statement on Parenting of Children by Lesbian, Gay, and Bisexual Adults"। Child Welfare League of America। ১৩ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  72. "NACAC's Positions on Key Issues"The North American Council on Adoptable Children (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ এপ্রিল ২০১৭। ১৯ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৮ 
  73. "Marriage of Same-Sex Couples – 2006 Position Statement" (পিডিএফ)। Canadian Psychological Association। ১৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  74. Affidavit of Michael Lamb in টেমপ্লেট:Cite court
  75. Bigner, Jerry; Wetchler, Joseph L.; Buxton, Amity P. (১৪ জানুয়ারি ২০১৪)। "Paths and Pitfalls: Howe Heterosexual Spouses Cope When Their Husbands or Wives Come Out"। Relationship Therapy with Same-Sex Couples। Routledge। আইএসবিএন 978-1-317-78689-4 
  76. Wolf TJ (১৯৮৭)। "Group psychotherapy for bisexual men and their wives"। J Homosex.14 (1–2): 191–9। ডিওআই:10.1300/J082v14n01_14পিএমআইডি 3655341 
  77. Coleman E (১৯৮১)। "Bisexual and gay men in heterosexual marriage: conflicts and resolutions in therapy"। J Homosex.7 (2–3): 93–103। ডিওআই:10.1300/J082v07n02_11পিএমআইডি 7346553 
  78. Schneider JP, Schneider BH (১৯৯০)। "Marital satisfaction during recovery from self-identified sexual addiction among bisexual men and their wives"J Sex Marital Ther.16 (4): 230–50। ডিওআই:10.1080/00926239008405460পিএমআইডি 2079706 
  79. "Guidelines for Psychotherapy with Lesbian, Gay, & Bisexual Clients"। American Psychological Association। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  80. British Psychological Society। "Guidelines and Literature Review for Psychologists Working Therapeutically with Sexual and Gender Minority Clients" (পিডিএফ)British Psychological Society 
  81. "Resolution on Appropriate Affirmative Responses to Sexual Orientation Distress and Change Efforts"। American Psychological Association। ১১ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  82. "Psychiatric Treatment and Sexual Orientation POSITION STATEMENT"Psychiatric Treatment and Sexual Orientation POSITION STATEMENT। American Psychiatric Association। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১১ 
  83. Conger, John J. (১৯৭৫)। "Proceedings of the American Psychological Association, Incorporated, for the Year 1974: Minutes of the Annual Meeting of the Council of Representatives."American Psychologist30 (6): 633। আইএসএসএন 0003-066Xডিওআই:10.1037/h0078455 
  84. "Resolution on Appropriate Therapeutic Responses to Sexual Orientation"Resolution on Appropriate Therapeutic Responses to Sexual Orientation। American Psychological Association। ২১ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১১ 
  85. "Gay, Lesbian, and Bisexual Teens: Facts for Teens and Their Parents"Healthy ChildrenAmerican Academy of Pediatrics। ২৬ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ 

পাঠ্য ও বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
আমেরিকান মনোবিজ্ঞান সংস্থা
American Academy of Pediatrics

British Psychological Society

[সম্পাদনা]
National Mental Health Association

Join statements by professional bodies in the United Kingdom

[সম্পাদনা]