সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৪ জানুয়ারি ২০০৫ | (বয়স ৭৮)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয় |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | হারবার্ট এস. গ্রিন (অস্ট্রেলিয়া) |
সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (১লা মে ১৯২৬ - ৪ঠা জানুয়ারি ২০০৫) একজন ভারতীয় বাঙালি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী যিনি এস এন বিশ্বাস নামেই সমধিক পরিচিত।[১] তিনি তাত্ত্বিক উচ্চ শক্তির পদার্থবিজ্ঞান, কণা পদার্থবিজ্ঞান এবং গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি বেশ পরিচিত ছিলেন। [২][৩]
সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ১৯২৬ সালের ১লা মে [১] অবিভক্ত বাংলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন যা বর্তমানে বাংলাদেশের অংশে অবস্থিত। তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর তিনি ১৯৫১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিফিল ডিগ্রি এবং ১৯৫৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হারবার্ট এস গ্রিনের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে কাজ করেছেন এবং প্রাথমিক কণা পদার্থবিজ্ঞানেও গবেষণা করেছিলেন। তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মুম্বাইয়ের টাটা মৌলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ফেলো ছিলেন। [৪] ১৯৬৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান এবং জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আওতাধীন উন্নত পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছিলেন। [৪] একই সময়ের মধ্যে ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিন বছরের জন্য বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বেও ছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান স্কুলের ডিন বা যাজক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৪]
অধ্যাপক বিশ্বাস ভারতীয় বিশুদ্ধ এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞান সাময়িকীর (জার্নাল অব পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স) সম্পাদকীয় পর্ষদেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস তাত্ত্বিক উচ্চ শক্তি পদার্থবিজ্ঞান এবং কণা পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিস্তৃত ক্ষেত্রে কাজ করেছেন [২][৩], যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হার্বার্ট এস গ্রিনের সাথে বেথ-স্যালপেটার সমীকরণ এবং এর সমাধান সম্পর্কে সহযোগিতায় তার প্রাথমিক কাজ, কণা পদার্থবিজ্ঞানের ঘটনাবিদ্যা বিষয়ে কয়েকটি অনুসন্ধান, দ্বি-মাত্রিক কোয়ান্টাম তড়িৎ-গতিবিজ্ঞান, কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে অ্যানহারমনিক দোলকের বিশ্লেষণ, বিচ্ছুরণ তত্ত্ব, একতা ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সংঘর্ষ প্রক্রিয়ায় মৌলিক কণার ছড়িয়ে পড়া সম্পর্কিত গবেষণা, কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম আলোকবিজ্ঞানে তরঙ্গ ফাংশনের জ্যামিতিক পর্যায়সমূহ, নিউট্রন নক্ষত্রের ও কোয়ার্ক নক্ষত্রের দশার সমীকরণ, দুর্বল মিথস্ক্রিয়া প্রক্রিয়া, নিরপেক্ষ তড়িৎ সংক্রান্ত ধীরক্ষয়, নাক্ষত্রিক শক্তি হ্রাস সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া, দুর্বল তড়িতে অতিসামঞ্জস্যতা, চিরাল ব্যতিক্রমসমূহ, অবহুপদী ক্ষেত্রের জন্য অতি-প্রসারক, গেজ তত্ত্বে দশার রূপান্তর, অতিসামঞ্জস্যপূর্ণ (সুপারসিমেট্রিক) চিরায়ত বলবিজ্ঞানের উন্নয়ন, অতিসামঞ্জস্যপূর্ণ কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান, সম্ভাব্যতার সূত্রাবলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত (স্টোকাস্টিক) কোয়ান্টায়ন, কোয়ার্ক নক্ষত্র, অব্যাহত ভগ্নাংশ তত্ত্ব, পারিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞানে অনুপরিসংখ্যানের (প্যারাস্ট্যাটিস্টিক্স) ভূমিকা।
সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ৯০ টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ লিখেছেন যেগুলি প্রচুর উদ্ধৃতি পেয়েছে। [২][৩]
• চিরায়ত বলবিদ্যা (ক্লাসিকাল মেকানিক্স) (আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৮৭১৩৪১৮৩ )
• কোয়ান্টাম বলবিদ্যা (কোয়ান্টাম মেকানিক্স) (আইএসবিএন ৯৭৮-৮১৮৭১৩৪১৭৬ )
১৯৫৮ থেকে ১৯৬৪ সাল অবধি তিনি মুম্বাইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ বা টাটা মৌলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত ফেলো ছিলেন। [৪] ১৯৭৪ সালে তিনি ইউজিসির জাতীয় প্রভাষক নির্বাচিত হয়েছিলেন [৪] এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ট্রিস্টে অবস্থিত আন্তর্জাতিক তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান কেন্দ্রের নির্বাচিত সিনিয়র সহযোগী সদস্য ছিলেন।[৪] এছাড়াও নয়াদিল্লির ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি [৪] এবং বেঙ্গালুরুতে অবস্থিত ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমির [৫] নির্বাচিত ফেলো ছিলেন। পাশাপাশি এলাহাবাদে অবস্থিত ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমিরও ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।