সম্বলপুর রাজ্য ସମ୍ବଲପୁର | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ ভারতের দেশীয় রাজ্য | |||||||
১৪৯৩–১৮৪৮ | |||||||
![]() ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত পূর্বতন সম্বলপুর রাজ্যের মানচিত্র যা ব্রিটিশ ভারতের একটি জেলার ওকে গোলাপি রঙের দর্শিত | |||||||
আয়তন | |||||||
• ১৯০১ | ১,৩৯৯ বর্গকিলোমিটার (৫৪০ বর্গমাইল) | ||||||
জনসংখ্যা | |||||||
• ১৯০১ | ৭৯,৯০০ | ||||||
ইতিহাস | |||||||
• রাজ্য প্রতিষ্ঠা | ১৪৯৩ | ||||||
• ব্রিটিশ ভারতে অন্তর্ভুক্তি | ১৮৪৮ | ||||||
|
সম্বলপুর রাজ্য, (যা হীরাখণ্ড সাম্রাজ্য নামেও পরিচিত) ছিল খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠাপ্রাপ্ত একটি সার্বভৌম রাজ্য। পশ্চিম ওড়িশা এবং পূর্ব-মধ্য ভারত অঞ্চলে অন্তর্গত পূর্ব ছত্রিশগড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে এই সাম্রাজ্যটি অবস্থান করতো। তবে উনবিংশ শতাব্দী মারাঠা আগ্রাসনের পূর্ব অবধিই এই জেলার গৌরবান্বিত ইতিহাস বর্ণিত হয়। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ব্রিটিশরা এই অঞ্চলটি দখল করে প্রাথমিকভাবে দেশীয় রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হলেও পরে এটি একটি ব্রিটিশ জেলায় পরিণত হয়। বর্তমান পশ্চিম উড়িষ্যায় অবস্থিত সম্বলপুর জেলার সম্বলপুর শহরটি এই রাজ্যের রাজধানী ছিল।
খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বলরাম দেওয়ের তৎপরতায় সম্বলপুর রাজ্য প্রতিষ্ঠা পায়।[১] তিনি ছিলেন চৌহান রাজবংশের এক রাজপুত এবং পাটনাগড় রাজ্যের রাজা নরসিংহ দেওয়ের অনুজ ভ্রাতা। ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ চৌহান রাজবংশীয় শাসনাধীন পাটনাগড় রাজ্য দ্বিখণ্ডিত হয়। মহানদীর উপনদী অঙ্গ নদীর দক্ষিণ অংশ শাসন করতেন রাজা নরসিংহ দেও এবং উত্তর অংশ শাসন করতেন তার ভ্রাতা রাজা বলরাম দেও। প্রাথমিকভাবে এটি হুমা রাজ্য নামে পরিচিত ছিল। বলরাম দেও উত্তর অংশে তার নতুন রাজ্যের রাজধানী স্থাপন করেন সম্বলপুর শহরে। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সম্বলপুরের শাসন অধিকার ছিল চৌহান এর হাতেই। সম্বলপুর রাজ্যটি হীরাখণ্ড সাম্রাজ্য নামেও পরিচিতি পায়।[২]
সম্বলপুর রাজ্যের অধীনে ছিল ১৮ টি ছোট সামন্ত রাজ্য।[৩] ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে সারণগড় রাজ্যের রাজারা প্রায় সময় সম্বলপুরের রাজাদের থেকে বিভিন্নভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হতেন। এর বিপরীতে তারা সম্বলপুরের রাজাদের যেকোনো সামরিক অভিযানে সৈন্যবল বৃদ্ধি করে সাহায্য করতেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের পর সম্বলপুর নাগপুরের ভোঁসলেদের হস্তগত হয়।[৪]
১৮০৮ থেকে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ, এই সময়কালের মধ্যে সম্বলপুরে মারাঠাদের আধিপত্য কায়েম ছিল। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও মারাঠাদের মধ্যে তৃতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ হলে ব্রিটিশ গভর্ণমেন্ট সম্বলপুরের চৌহান রাজা জয়ন্ত সিংহকে তাঁর সাম্রাজ্য ফেরত দেন কিন্তু একই সাথে অন্যান্য ১৮ টি সামন্ত রাজ্যের ওপর সম্বলপুরের প্রভাব তুলে নেওয়া হয়। ১৮১৮ থেকে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এটি ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে ছিল। স্থানীয় রাজাকে পুনরায় সিংহাসনে বসে তারা স্বাভাবিকভাবেই একটি ব্রিটিশ করদ রাজ্যে পরিণত হয়। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে অপুত্রক ভাবে সম্বলপুর রাজ্যের রাজা মারা গেলে ব্রিটিশরা রাজ্যটির ওপর স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে এটিকে আত্মসাৎ করে।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের সময় সম্বলপুর রাজপরিবারের সদস্য সুরেন্দ্র সাই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। পরে তিনি বীর উপাধিতে ভূষিত হন। বিদ্রোহীরা হাজারীবাগে বন্দি সুরেন্দ্র সাই এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের বন্দীদশা থেকে মুক্ত করেন। সম্বলপুর পৌঁছে তিনি আবার ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন কিন্তু ঘটনাক্রমে ব্রিটিশরা সিপাহী বিদ্রোহ দমনে সক্ষম হলে তিনি নতি স্বীকার করেন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে সম্বলপুর ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনস্থ হলে এটি প্রাথমিকভাবে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অন্তর্ভুক্ত কটক বিভাগের অংশ হয়, পরবর্তীকালে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে এটিকে মধ্যপ্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫]
সম্বলপুরের পুরুষ শাসকরা রাজা এবং নারী শাসকরা রাণী উপাধিতে ভূষিত হতেন। [৬]