সম্ভাব্যতা |
---|
![]() |
সম্ভাব্যতার দুইটি ক্ষেত্র রয়েছে: একদিকে অনুমানের সম্ভাবনা তাদের প্রমাণ প্রদান করে থাকে এবং অন্যদিকে পাশা অথবা মুদ্রা নিক্ষেপের মত দৈব প্রক্রিয়া পদ্ধতির ব্যবহার করে থাকে। পূর্বের বিষয়ের অধ্যয়ন ঐতিহাসিকভাবে অধিক পুরাতন, উদাহরনস্বরূপ, প্রমাণ আইন, যা ১৬তম ও ১৭তম শতাব্দীর মধ্যে কার্দানো, পাস্কাল এবং ফের্মার কাজের মাধ্যমে পাশার গাণিতিক পদ্ধতির শুরু হয়। সম্ভাব্যতা ও পরিসংখ্যানের মাঝে পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে; দেখুন পরিসংখ্যানের ইতিহাস। যেখানে পরিসংখ্যান বিভিন্ন উপাত্ত ও এর থেকে অনুমিত তথ্য নিয়ে কাজ করে, সেখানে সম্ভাব্যতা দৈব প্রক্রিয়া (অনির্দিষ্ট) নিয়ে কাজ করে যা উপাত্ত অথবা ফলাফলের উপর নির্ভর করে।
বিভিন্ন আধুনিক ভাষায় ব্যবহৃত সম্ভাব্য (প্রবাবল), সম্ভাব্যতা (প্রবাবিলিটি) এবং তাদের সমপ্রকৃতির শব্দ মধ্যযুগীয় ল্যাটিন প্রবাবিলিস হতে উদ্ভূত যা আবার সিসারো হতে উদ্ভূত হয়েছে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অথবা সাধারন অনুমোদন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। [১] সম্ভাব্যতা (প্রবাবিলিটি) শব্দটি প্রাচীন ফরাসি শব্দ প্রবাবিলাইট (১৪শ শতাব্দী) এবং ল্যাটিন প্রবাবিলিট্যাটেম (প্রবাবিলিটাস সম্বন্ধনীয়) থেকে এসেছে যার অর্থ "বিশ্বাসযোগ্যতা, সম্ভাব্যতা" এবং এটি আবার প্রবাবিলিস (দেখুন প্রবাবল) থেকে এসেছে। ১৭১৮ সাল থেকে এই শব্দটির গাণিতিক রূপ সৃষ্টি হয়েছে। ১৮শ শতাব্দীতে সুযোগ শব্দটিও "সম্ভাব্যতার" গাণিতিক রূপ হিসেবে ব্যবহৃত হত (এবং সম্ভাব্যতার থিওরিকে সুযোগের মতবাদ বলা হত)। এই শব্দটি প্রকৃতপক্ষে ল্যাটিন ক্যাডেনসিয়া থেকে এসেছে যার অর্থ "পড়ে যাওয়া বা ঘটনা ঘটা"। ইংরেজি বিশেষণ লাইকলি (সম্ভবত) এর মূল জার্মান ভাষা থেকে আগত এবং এটি খুব সম্ভবত প্রাচীন নরওরের likligr (প্রাচীন ইংরেজিতে একই রূপের কিছু geliclic ছিল) থেকে আগত যার প্রকৃত অর্থ "শক্তিশালী বা সক্ষম হবার প্রদর্শন" বা "একই রূপ বা গুণ অর্জন" এবং এগুলো "প্রবাবলি (সম্ভবত)" শব্দের অর্থ হিসেবে ১৫শ শতাব্দীর মাঝামাঝি নথিভুক্ত করা হয়। উদ্ভূত প্রবাবলি (সম্ভবত) বিশেষ্যটির অর্থ ছিল "সাদৃশ্য বা প্রতিচ্ছায়া" কিন্তু ১৫শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে এর অর্থ হয় "সম্ভাব্যতা"। ১৫৭০ থেকে আবার এর অর্থ "সম্ভবত সত্যের মত" হয়।
৮ম ও ১৩শ শতাব্দীর মধ্যে আরব গণিতবিদগণ তথ্যগুপ্তিবিদ্যা অধ্যয়নের সময় সম্ভাব্যতা এবং পরিসংখ্যানের ধারণা বিকশিত করেন। আল-খলিলের (৭১৭-৭৮৬) বুক অফ ক্রিপ্টোগ্রাফিক মেসেজেস এর মধ্যে সর্বপ্রথম বিন্যাস এবং সমাবেশের ব্যবহার ছিল যাতে তিনি স্বরবর্ণসহ এবং স্বরবর্ণছাড়া সকল আরবি শব্দের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন। [২] আল-কিন্দি (৮০১-৮৭৩) গুপ্তায়িত বার্তা বিগুপ্তায়িত করার জন্যে সর্বপ্রথম পরিসংখ্যান ব্যবহার করেছিলেন এবং কম্পাঙ্ক বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে বাগদাদের বাইতুল হিকমাহতে গুপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের গাণিতিক পরিভাষা বিকশিত করেছিলেন। তিনি ম্যানুস্ক্রিপ্ট অন ডিসাইফারিং ক্রিপ্টোগ্রাফিক মেসেজেস নামের বই রচনা করেন এবং এতে পরিসংখ্যান বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছিলেন। [৩] আল-কিন্দি গুপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও কম্পাঙ্ক বিশ্লেষণের জন্যে সর্বপ্রথম পরিসংখ্যান বিষয়ক অনুমিতির ব্যবহার করেছিলেন। কম্পাঙ্ক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপাত্তের আকার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইবনে আদলানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। [২] প্রাচীন এবং মধ্যযুগীয় আইনের প্রমাণের মাধ্যমে প্রমাণের মাত্রা, সম্ভাব্যতা, অনুমান এবং অর্ধ-প্রমাণের বিষয়শ্রেণী বিকশিত হয় যা আদালতে প্রমাণের অনিশ্চয়তা নিয়ে কাজ করে। [৪] রেনেসাঁর সময় "দশ থেকে এক" এর সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে বাজি ধরা হত এবং ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে উপকূলবর্তী বীমার পুরস্কার ঘোষণা করা হত কিন্তু এই সম্ভাবনা এবং পুরস্কার কীভাবে নির্ণয় করা হত এর উপর কোন মতবাদ নেই। [৫]
সর্বপ্রথম ১৫৬০ সালে (যদিও ১০০ বছরের আগে প্রকাশিত হয় নি) জিরোলামো কার্দানো সম্ভাব্যতার গাণিতিক পদ্ধতি উত্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে পিয়ের দ্য ফের্মা এবং ব্লেজ পাস্কাল (১৬৫৪) সম্ভাবনার ভগ্ন খেলা সম্পর্কিত প্রশ্নের ন্যয়সঙ্গত বিভাজন করেন। ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস (১৬৫৭) এই বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। [৬][৭]
এফ.এন.ডেভিডের গেমস, গডস এন্ড গাম্বলিং আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮৫২৬৪-১৭১-২ হতে: