সরকারের আসন হচ্ছে (ব্রিওয়ারের রাজনীতি দ্বারা সংজ্ঞায়িত)" একটি কিংবা কয়েকটি ভবন অথবা একটি শহর যেখান থেকে সরকার তার কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে"।[১]
বেশিরভাগ দেশে রাজধানীই হচ্ছে সে দেশের সরকারের আসন। তাই সেই শহরটিকে যথাযথভাবে সরকারের জাতীয় আসন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তবে 'রাজধানী' এবং 'সরকারের আসন' সম্পূর্ণ সমার্থক নয়, কারণ কয়েকটি দেশের সরকারের আসন রাজধানী থেকে পৃথক। উদাহরণস্বরূপ, নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হচ্ছে আমস্টারডাম; কিন্তু সে দেশের সরকারের আসন হেগ। একই ভাবে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা হলেও জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর) হিসাবে মনোনীত পুরো মেট্রো ম্যানিলাকে হচ্ছে ফিলিপাইন সরকারের আসন।
স্থানীয় এবং আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের সাধারণত একটি আসন থাকে, যাকে প্রশাসনিক কেন্দ্রও বলা হয়। বিভিন্ন স্তরের এবং বিভিন্ন দেশে স্থানীয় সরকারের আসনের শর্তাদি অন্তর্ভুক্ত:
বলিভিয়া: সুক্রে সাংবিধানিক রাজধানী। আবার এখানে বলিভিয়ার সর্বোচ্চ ট্রাইব্যুনাল অবস্থিত হওয়ায় এটি একই সাথে বলিভিয়ার বিচারিক রাজধানী। অন্যদিকে প্যালাসিও কুইমাদো (রাষ্ট্রপতিরবাসভবন), জাতীয় কংগ্রেস এবং জাতীয় নির্বাচনী আদালত লা পাজে অবস্থিত। তাই এটি সে দেশের সরকারের আসন।
নেদারল্যান্ডস: আমস্টারডামনেদারল্যান্ডসের সাংবিধানিক জাতীয় রাজধানী হলেও ডাচ সরকার, সংসদ, সুপ্রীম কোর্ট, রাজ্য কাউন্সিল, এবং রাজপ্রাসাদ (ও কার্যালয়) এবং সব দূতাবাস হেগ শহরে অবস্থিত।
তানজানিয়া: ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দারুস সালামতানজানিয়ার রাজধানী শহর ছিল। তারপর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জুলিয়াস নাইয়েরের আদেশে দোদোমাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।[৩] ১৯৯৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানী স্থানান্তর সম্পন্ন হয়। যদিও ২০১৮ সালেও দারুস সালাম প্রশাসনিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে দেশের সব প্রশাসনিক কেন্দ্র দোদোমাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে।
মন্টসেরাট (বিওটি): এর সরকারি রাজধানী প্লাইমাউথ। তবে ১৯৯৮ সালে সাউফ্রিয়ার পাহাড়ের আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের দ্বারা এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেলে শহরটি স্থায়ীভাবে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। 1998 সাল থেকে এর কার্যত (ডি ফ্যাক্টো বা দে ফ্যাক্টো) রাজধানী ব্র্যাডেস।[৫] প্রথমদিকে ব্র্যাডেসে অস্থায়ীভাবে রাজধানী স্থানান্তর করা হলেও তখন থেকেই এটির দ্বীপটির ডি ফ্যাক্টো রাজধানী হিসেবেই আছে।[৬] লিটল বে এলাকায় এখন একটি নতুন সরকারি রাজধানী প্রতিষ্ঠিত জন্য বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হচ্ছে।
সুইজারল্যান্ড: ২০২০ সাল পর্যন্ত কোনও সুইজারল্যান্ডের কোন শহরের আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীর মর্যাদা নেই। ১৮৪৮ সালে ফেডারেল অ্যাসেম্বলি বার্নকে সরকারের আসন করার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত এটির কোনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে এটি "ফেডারেল শহর" হিসাবে পরিচিত। অর্থাৎ এটি কার্যত (ডি ফ্যাক্টো বা দে ফ্যাক্টো) রাজধানী তথা সরকারের আসন।
নাউরু: ইয়ারেন জেলা (পূর্ব নাম: মকওয়া/মকোয়া), হচ্ছে নাউরুর কার্যত (ডি-ফ্যাক্টো) রাজধানী তথা সরকারের আসন। তবে নাউরুর কোন সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত রাজধানী নেই।[৭][৮]
ফ্রান্স রাজ্য: ফ্রান্স রাজ্যের ঐতিহাসিক রাজধানী ছিল প্যারিস। যদিও ১৬৮২ সাল থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত প্যারিসের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি তুলনামূলক গ্রামীণ এলাকায় ভার্সাই প্রাসাদে সরকারের আসন অবস্থিত ছিল।