সরবজিৎ | |
---|---|
পরিচালক | উমং কুমার |
প্রযোজক | বাসু ভাগনানী ভূষণ কুমার সন্দীপ সিং উমং কুমার দীপশিখা দেশমুখ কৃষ্ণ কুমার জ্যাকি ভাগনাণী রাজেশ সিং |
রচয়িতা | উৎকর্ষিনী বশিষ্ঠ, রাজেশ বেরি |
শ্রেষ্ঠাংশে | ঐশ্বর্যা রাই রণদীপ হুডা রিচা চন্দা দর্শন কুমার |
সুরকার | জিৎ গাঙ্গুলী অমল মল্লিক তানিস্ক বাগচী শাইল-প্রীতেশ শশী শিবম |
চিত্রগ্রাহক | কিরণ দেওহানস |
সম্পাদক | রাজেশ পান্ডে |
প্রযোজনা কোম্পানি | |
পরিবেশক | টি-সিরিজ |
মুক্তি |
|
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ১৫০ মিলিয়ন[১] |
আয় | ৪৩৮ মিলিয়ন[২] |
সরবজিৎ উমং কুমার পরিচালিত ২০১৬ সালের একটি ভারতীয় জীবনী কাহিনী চলচ্চিত্র। ছবিতে দলবীর কৌর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঐশ্বর্যা রাই এবং শিরোনাম-চরিত্র সরবজিৎ সিং এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রণদীপ হুডা। সরবজিৎ সিং এক ভারতীয় ব্যক্তি যাঁকে ১৯৯১ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিন এবং তার ফলে সন্ত্রাসবাদ ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিনি ২২ বছর কারাগারে কাটিয়েছিলেন। রিচা চন্দা এবং দর্শন কুমার সহঅভিনেতার ভূমিকায় অভিনয় করেন।[৩][৪][৫][৬][৭]
ছবির নির্মাণ বাজেট ₹১৫ কোটি এবং বিপণন খরচ ₹৮ কোটি।[১] সরবজিৎ এর প্রিমিয়ার হয়েছিল ৬৯ তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে এ।[৮] ২০ মে ২০১৬ মুক্তি পাওয়ার পর ছবিটি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লাভ করেছিল।[৯][১০] দুই সপ্তাহ চলার পর ছবিটি থেকে বিশ্বব্যাপি বক্স-অফিসে আয় প্রায় ₹৪৩.৪৪ কোটি টাকা হওয়ায় এই সিনেমাটি একটি লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হয়েছিল।[১১][১২][১৩]
দলবীর কৌর (ঐশ্বর্যা রাই) তাঁর মৃতসন্তান প্রসব করার দু'বছর পরে তিনি তাঁর অবমাননাকর স্বামী বলদেবকে (অঙ্কুর ভাটিয়া) ত্যাগ করে সরবজিতের পরিবারে এসে থাকা শুরু করেন। তিনি সরবজিতের পাশাপাশি পরিবারকে সহায়তা করতে একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করেন। সরবজিৎ সিং (রণদীপ হুডা) তাঁর স্ত্রী সুখপ্রীত (রিচা চন্দা) আর তাঁদের দুই মেয়ে পুনম (অঙ্কিতা শ্রীবাস্তব) ও স্বপনদীপকে (শিওয়ানি সায়নী) নিয়ে পাঞ্জাবে বাস করেন। তাঁর বাবা একজন দর্জি এবং তিনি নিজে একজন কৃষক ও ভালোবাসার ছোট ভাই (দলবীরের)।
১৯৯০ সালে মাতাল হয়ে সরবজিৎ ঘটনাক্রমে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে যান। সেখানে তাঁকে ভারতীয় গুপ্তচর হিসাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। রনজিৎ সিং নামে এক ব্যক্তি লাহোর এ বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। সরবজিৎই সেই ব্যক্তি বলে অভিযোগ করা হয়। তাঁর নির্দোষিতার দাবি উপেক্ষা করা হয় এবং একটি চিঠির মাধ্যমে তাঁর পরিবারকে তার বন্দিদশা সম্পর্কে অবহিত করতে পারার আগে কয়েক মাস ধরে তাঁকে নির্যাতন করা হয়। পাকিস্তানি পুলিশকে খুশি করার প্রয়াসে সরবজিৎ তাঁর বিরুদ্ধে আনীত সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ স্বীকার করে নেন এবং তৎক্ষণাত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাঁর ভাইকে মুক্তি দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দলবীর আইনজীবী আওইস শেখ (দর্শন কুমার) এর সহায়তা তালিকাভুক্ত করেন। তাঁদের ন্যায়বিচারের আবেদন পুরো ভারতজুড়ে সমর্থিত হয় এবং পাকিস্তানে নিন্দা করা হয়; উভয় দেশের গণমাধ্যমও এই মামলাটির প্রচার করে চলে। যার ফলে সরবজিতের সাজা বারবার বিলম্বিত হয়।
২০১২ সালে ২২ বছর কারাবাসের পরে সরবজিতের পরিবার তাঁকে কারাগারে দেখার অনুমতি পান। নির্যাতিত বন্দী হিসাবে তাঁকে দেখে তাঁর পরিবারের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়লেও তিনি নিজে এই স্বল্প-কালীন পুনর্মিলনে আনন্দিত হন। পরবর্তীকালে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কারাগারে বন্দী জীবন যাপনে রূপান্তরিত হয়। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের প্রায় এক স্ট্যান্ডার্ড যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দৈর্ঘ্যের দ্বিগুণ সময় কাটানোর পরে ধারণা করা হয়েছিল যে তাঁকে ক্ষমা করা হবে এবং তাঁর মুক্তি আসন্নপ্রায়। পাকিস্তান সরকার শীঘ্রই পরিষ্কার করে দেয় যে তারা যে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে তা সরবজিতের জন্য নয়, সেটি সুরজিৎ নামে একজন বন্দীর পক্ষে দেওয়া হয়েছে। ব্যাপারটি সর্বজিতের পরিবারকে একেবারে বিধ্বস্ত করে দেয়। এক বছর পরে বন্দী সরবজিৎকে তাঁর কারাগারে কিছু পাকিস্তানি বন্দী আক্রমণ করে এবং গুরুতর অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে কোমোটোস অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর দিদি, স্ত্রী এবং বেড়ে ওঠা তাঁর মেয়েরা তাঁকে দেখতে আসেন। তবে মৃত্যুর অল্প আগেই তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। সরবজিতের মরদেহ ভারতে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর জীবনের কথা স্মরণ করে তাঁর গ্রাম ও পরিবারে শোক প্রকাশ করা হয়। ছবিটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে দলবীর প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি নির্দোষ মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তাঁর মৃত্যুকালীন ইচ্ছাটি পূরণ করার চেষ্টা সর্বদা চালিয়ে যাবেন।