সরাইকেল্লা রাজ্য | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ ভারতের দেশীয় রাজ্য | |||||||
১৬২০–১৯৪৮ | |||||||
পতাকা | |||||||
![]() ইম্পেরিয়াল গেজেটিয়ার অব ইন্ডিয়া থেকে প্রাপ্ত ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের সরাইকেল্লা জেলার মানচিত্র | |||||||
আয়তন | |||||||
• ১৮৯২ | ১,১৬৩ বর্গকিলোমিটার (৪৪৯ বর্গমাইল) | ||||||
জনসংখ্যা | |||||||
• ১৮৯২ | ৭৭,০৯৭ | ||||||
ইতিহাস | |||||||
• প্রতিষ্ঠিত | ১৬২০ | ||||||
১৯৪৮ | |||||||
|
সরাইকেল্লা রাজ্য ছিলো ব্রিটিশ শাসিত ভারতে অবস্থিত একটি দেশীয় রাজ্য৷ এটি উড়িষ্যার দেশীয় রাজ্যগোষ্ঠীর মধ্যে অবস্থিত ও বর্তমানে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের একটি পূর্বতন স্বাধীন দেশীয় রাজ্য। [২] রাজ্যটির রাজধানী ছিলো সরাইকেল্লা শহরে৷
রাজ্যটি মোটামুটিভাবে ১১৬৩ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ছিলো এবং ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের নথি অনুসারে বার্ষিক রাজস্বের পরিমাণ ছিলো ৯২,০০০ ভারতীয় মুদ্রা৷ এটি ছোটনাগপুরের নয়টি দেশীয় রাজ্যের একটি, যা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অধীনস্থ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার অন্তর্গত ছিলো৷ [৩] রাজ্যটির শেষ শাসক রাজা আদিত্যপ্রতাপ সিংহদেও ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই মে তারিখে রাজ্যটি ভারতীয় অধিরাজ্যে যোগদান করার সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করেন৷
১৬২০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান সিংহদেও পরিবারের অগ্রদূত ও পূর্বপুরুষ রাজা বিক্রম সিংহ এই রাজ্যর পত্তন ঘটান৷ রাজ্যটি খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকে নাগপুরের মারাঠা শাসকদের প্রভাবে তাঁদের অধীনস্থ হয়৷ এটি ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে ওড়িশার দেওগাঁওতে হওয়া দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের পরিণতি স্বরূপ ব্রিটিশ ভারতের একটি দেশীয় রাজ্যে পরিণত হয়৷ যুদ্ধোত্তর কালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরাইকেল্লা রাজ্যটিকে ছোটনাগপুর রাজ্য কমিশনারের অন্তর্ভুক্ত করেন৷ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সরাইকেল্লা রাজ্যকে বিহার ও উড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ নতুন এই প্রদেশটি ঐ বছরই বাঙ্গালার পশ্চিমপ্রান্তের জেলাগুলিকে নিয়ে গঠন করা হয়েছিলো৷ ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্যটিকে আবার নবগঠিত উড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ সরাইকেল্লা সহ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এজেন্সির আরো ২৪ টি দেশীয় রাজ্যকে ১লা জানুয়ারী ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার ভারতীয় অধিরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার এবং নিজ ইচ্ছায় স্বাধীন উড়িষ্যা প্রদেশে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেন৷
ফলস্বরূপ সরাইকেল্লা এবং খরসোয়াঁ উভয় দেশীয় রাজ্যকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের অন্তর্গত উড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি তারিখেই উভয় দেশীয় রাজ্যের সংখ্যাগুরু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনজাতি সম্প্রদায় উড়িষ্যা রাজ্যের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার বিরুদ্ধাচারণ শুরু করেন। রাজা আদিত্যপ্রতাপ সিংহদেওয়ের তৃতীয় পুত্র পতায়েৎ সাহেব মহারাজকুমার ভূপেন্দ্রনারায়ণ সিংহদেও রাজ্যবাসীর এই আন্দোলনকে সমর্থন দিলে ফলস্বরূপ তাকে কারারুদ্ধ করে এই জনপ্রিয় আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। কেন্দ্র সরকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য বৌদকর মহাশয়ের অধীনস্থ একজন কমিশনারকে নিযুক্ত করেন। বৌদকর কমিশনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে সরাইকেল্লা এবং খরসোয়াঁ পূর্বতন দেশীয় রাজ্য দুটিকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই মে তারিখে বিহার প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৫ই নভেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে বিহার রাজ্য ভেঙে ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠন হলে এই দুটি নবগঠিত রাজ্যের সরাইকেল্লা খরসোয়া জেলায় পরিণত হয়৷ এই পর্যায়ের মধ্যবর্তী সময়ে বহু উপজাতি-বহির্ভুক্ত ওড়িয়া সম্প্রদায়ের লোক সরাইকেল্লা খরসোয়া, পূর্ব সিংভূম ও পশ্চিম সিংভূম জেলা ছেড়ে পাকাপাকিভাবে ওড়িশায় অভিপ্রয়াণ করেন৷
১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দের পূর্বে এই দেশীয় রাজ্যের শাসকগণ কুনওয়ার বা কুনোয়ার উপাধিতে ভূষিত হতেন৷[৪]