সরোপোডোমর্ফ সময়গত পরিসীমা: অন্ত্য ট্রায়াসিক–অন্ত্য ক্রিটেশিয়াস, ২৩.১৪–৬.৬কোটি | |
---|---|
প্ল্যাটিওসরাস এঙ্গেলহার্টি-র পুনর্নির্মিত কঙ্কাল, টুবিঙেন বিশ্ববিদ্যালয় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
উপপর্ব: | ভার্টিব্রাটা |
শ্রেণী: | সরীসৃপ |
বর্গ: | সরিস্কিয়া |
উপবর্গ: | সরোপোডোমর্ফা হিউন, ১৯৩২ |
উপবিভাগসমূহ | |
সরোপোডোমর্ফা (উচ্চারণ: সও-রো-পও-ডো-মর্-ফা; ˌsɔːrəˌpɒdəˈmɔːrfə[১]) গ্রীক শব্দ। এর অর্থ "টিকটিকির মত পা-ওয়ালা প্রাণী"। এরা হল লম্বা গলাবিশিষ্ট তৃণভোজী সরিস্কিয়ান ডাইনোসরদের একটি অধুনা-বিলুপ্ত ক্লেড। সমস্ত সরোপড ও তাদের বিবর্তনীয় জ্ঞাতিরা এদের অন্তর্গত। সরোপড-রা সাধারণত হত বিশালায়তন, চতুষ্পদ, খুব লম্বা গলা ও লেজের অধিকারী এবং পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বকালের বৃহত্তম স্থলচর প্রাণীগোষ্ঠী। বিবর্তনের ধারায় সরোপডদের পূর্বসূরী "প্রোসরোপড"-রা ছিল ক্ষুদ্রতর ও ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিপদ গমনে সক্ষম। মেসোজোয়িক মহাযুগের অধিকাংশ জুড়ে সরোপোডোমর্ফরা ছিল প্রধান স্থলচর তৃণভোজী। আজ থেকে ২৩ কোটি বছর আগে মধ্য ট্রায়াসিকে এদের আবির্ভাব ও ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে ক্রিটেশিয়াস যুগের শেষে এদের বিলুপ্তি।
সরোপোডোমর্ফরা সমসাময়িক অন্যান্য তৃণভোজীদের চেয়ে বেশি উঁচুতে গলা বাড়িয়ে গাছের পাতা চিবোতে পারত। উচ্চতা ছাড়া অন্যান্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য থেকেও এই তত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়, যথা: খুব লম্বা গলার (দশটি বা তারও বেশি সংখ্যক দীর্ঘায়িত গ্রীবা কশেরুকাযুক্ত) শেষে হালকা ও ছোট করোটি। দেহের পিছনে এই লম্বা গলার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এদের লেজও হত খুব লম্বা (অতিরিক্ত একটা, দুটো বা তিনটে পুচ্ছ কশেরুকা সংবলিত)।
এদের দাঁত হত দুর্বল, এবং আকারে চামচ বা গাছের পাতা সদৃশ। পেষক দাঁতের বদলে এদের পাকস্থলীতে থাকত গ্যাস্ট্রোলিথ জাতীয় পাথর, যা কার্যগতভাবে আজকের পাখি ও কুমীরদের গিজার্ড পাথরের অনুরূপ, অর্থাৎ শক্ত বা অপাচ্য উদ্ভিদ তন্তুকে পিষে পরিপাকের উপযোগী করে তোলাই ছিল এগুলোর কাজ। মুখের উপরের দিকটা সামনে ঝুঁকে এসে চঞ্চুসদৃশ এক গঠন নির্মাণ করত।
অন্যতম প্রাচীনতম সরোপোডোমর্ফ প্রজাতি স্যাটার্নালিয়ার আয়তন ছিল ছোট (১.৫ মিটার, বা ৫ ফুট লম্বা), কিন্তু ট্রায়াসিকের শেষভাগে এরাই বৃহত্তম তৃণভোজী প্রাণীগোষ্ঠীর স্থান দখল করে। এর পর জুরাসিক ও ক্রিটেশিয়াসে এদের আয়তন ক্রমশ বেড়েই চলে। বিবর্তনের শেষ লগ্নে উদ্ভূত সুপারসরাস, ডিপ্লোডোকাস ও আর্জেন্টিনোসরাস প্রভৃতি বৃহত্তম সরোপোডোমর্ফ প্রজাতির দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছিল ৩০-৪০ মিটার (১০০–১৩০ ফুট) এবং দেহের ভরের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল ৬০,০০০–১,০০,০০০ কিলোগ্রাম।
প্রাথমিকভাবে দ্বিপদী হলেও দেহের ভর বেড়ে ওঠার সাথে সাথে সরোপোডোমর্ফরা হাতির মত অভিকর্ষানুবর্তী চতুষ্পদ দেহগঠন লাভ করে, অর্থাৎ গমনের সময় তাদের চারটে পা-ই সব সময় দেহের ঠিক নিচে অবস্থান করে অল্প অল্প করে সামনে এগিয়ে যেত। ফলে তারা স্থায়ীভাবে অত্যন্ত মন্থর হয়ে যায়। বিবর্তনের অপর সরিস্কিয়ান ধারা থেরোপডদের সাথে তাদের সাধারণ পূর্বপুরুষ মাংসাশী ছিল বলে ধারণা করা হয় প্রাথমিক সরোপোডোমর্ফরা খুব সম্ভবত ছিল সর্বভুক। তৃণভোজী খাদ্যাভ্যাসের বিবর্তন তাদের লম্বা গলা ও দেহের আয়তনের বিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলেছিল।
সরোপোডোমর্ফদের নাসারন্ধ্রের আয়তন হত বিশাল, এবং অগ্রপদে একটা করে নখযুক্ত বুড়ো আঙুল থাকত, যা হয়তো আত্মরক্ষার কাজে ব্যবহৃত হত। অবশ্য সরোপোডোমর্ফদের আত্মরক্ষার প্রধান অভিযোজন ছিল তাদের সুবিশাল আয়তন।
২০১১ তে প্রকাশিত ফার্নান্দো ই. নোভাস প্রমুখের তত্ত্বানুসারী ক্ল্যাডোগ্রাম:[২]
সরোপোডোমর্ফা |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নিচে ২০১৫ খ্রিঃ ওটেরো প্রমুখ প্রকাশিত সরোপোডোমর্ফদের ক্ল্যাডোগ্রামটি দেওয়া হল।[৩]
সরিস্কিয়া |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||