সাইদ আল-আন্দালুসি (صاعِدُالأندلسي) | |
---|---|
জন্ম | ১০২৯ আলমেরিয়া, আল-আন্দালুস |
মৃত্যু | ১০৭০ টলেডো, আল-আন্দালুস |
অন্যান্য নাম | আবু আল-কাসিম সাঈদ
ইবনে আবু আল-ওয়ালিদ আহমাদ ইবনে আবদ আল-রহমান ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সাঈদ ইবনে উসমান আল-তাগলিবি আল-কুরতুবি (صاعِدُ بنُ أحمدَ بن عبد الرحمن بن محمد بن صاعدٍ التَّغْلِبيُّ) |
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি | |
যার দ্বারা প্রভাবিত | আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযম (أبي محمد بن حَزْم) |
উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্ম | |
যুগ | বনু ধীব-ন-নুন রাজবংশ, উমাইয়া খিলাফত |
প্রধান আগ্রহ | জ্যোতির্বিদ্যা, বিজ্ঞান, দর্শন, সর্বজনীন ইতিহাস |
উল্লেখযোগ্য কাজ | তাবাকাত আল-উমাম |
যাদের প্রভাবিত করেন | আল-কিফতি |
সাইদ আল-আন্দালুসি (আরবি: صاعِدُ الأندلسي) মুসলিম স্পেনের টলেডোর একজন আরব কাজী। তিনি বিজ্ঞান, দর্শন এবং ইতিহাসের উপর গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ লিখেছেন। তিনি জ্যোতির্বিদ্যায় বিশেষ অবদান রাখার পাশাপাশি গণিতশাস্ত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন।[১]
সাঈদ আল-আন্দালুসি আল-আন্দালুসের আলমেরিয়ায় বানু ধীব-ন-নুন রাজবংশের সময় জন্মগ্রহণ করেন এবং টলেডোতে মারা যান। তিনি আরব বংশোদ্ভূত তাঘলিব গোত্রে জন্মগ্রহণ করের। তার পরিবার গৃহযুদ্ধের সময় আলমেরিয়ায় আশ্রয় নিতে কর্ডোভা থেকে পালিয়ে যায়। তার দাদা সিডোনিয়ার কাজী একজন বিচারক ছিলেন এবং তার পিতা ১০৫৭ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টলেডোর কাজী ছিলেন। পরবর্তীতে সাঈদ তার পদে স্থলাভিষিক্ত হন।
জীবনীকার ইবনে বাশকুয়াল, ইবনে উমাইরা আল-ধাব্বি, আল-সাফাদি এবং আহমেদ মোহাম্মদ আল-মাক্কারিএর মতে টলেডোতে সাঈদের শিক্ষকরা ছিলেন আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযম (أبو محمد بن حَزْم), আল-ফাতাহ ইবনে আল-ক্বত (আল-ফাতাহ) এবং আবু ওয়ালিদ আল-ওয়াকশি (أبو الوليد الوَقّشِي)। তিনি ফিকাহে (আইনশাস্ত্র) শিক্ষা লাভ করেছিলেন এবং ১০৪৬ সালে টলেডো থেকে আঠারো বছর বয়সে এই বিষয়ে স্নাতক পাশ করে। টলেডো তৎকালীন সময়ে শিক্ষার একটি বড় কেন্দ্র ছিল। সাঈদ ফিকাহ (আইন), তাফসির (কুরআনের ব্যাখ্যা), আরবি ভাষা এবং আল-আদাব আল-আরাবি (আরবি সাহিত্য) বিষয়ে অধ্যয়ন করতেন। তার শিক্ষক আবু ইসহাক ইব্রাহিম ইবনে ইদ্রিস আল-তাজিবি তাকে গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যা পড়াতেন। এই বিষয়গুলোতে তিনি খুবই পারদর্শী ছিলেন। গভর্নর ইয়াহিয়া সাঈদকে টলেডোর কাজী হিসাবে নিযুক্ত করে।[২]
১০৬৮ সালে রচিত তাবাকাত আল-উমাম (তাবাকাত) হলো একটি বিজ্ঞানের ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ[৪] যা আটটি জাতির বিজ্ঞানীদের জীবনী এবং বৈজ্ঞানিক সাফল্য নিয়ে রচিত। জাতিগুলোর ক্ষেত্রে ভারতীয়, পারস্য, ক্যাল্ডিয়ান, মিশরীয়, গ্রীক, বাইজেন্টাইন, আরব এবং ইহুদি উল্লেখযোগ্য। সাঈদ এই বইটিতে প্রতিটি জাতির পাটিগণিত, জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসা ইত্যাদির বিভিন্ন শাখার এবং পিথাগোরাস, সক্রেটিস, প্লেটো এবং অ্যারিস্টটল সহ অনেক প্রাচীনতম বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের বিজ্ঞানচর্চা ও সাফল্যে বিবরণ দিয়েছে। বইটির দ্বিতীয়ার্ধে রয়েছে যুক্তিবিদ্যা, দর্শন, জ্যামিতি, টলেমাইক জ্যোতির্বিদ্যার বিকাশ, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, বছরের দৈর্ঘ্য নির্ধারণের জন্য ত্রিকোণমিতি, গণিতের গণনা, সূর্যের কক্ষপথের উন্মত্ততা, এবং জ্যোতির্বিদ্যা সারণী নির্মাণ ইত্যাদি বর্ণনা করা হয়েছে।[৫]
"তাবাকাত আল-উমাম" বিভিন্ন ভাষায় প্রতিলিপি ও অনুবাদ করা হয়েছে। বইটির মূল নথিটি এখন আর বিদ্যমান নেই। বইটির শব্দ, বাক্য, অনুচ্ছেদ বা সম্পূর্ণ বিভাগ বাদ দিয়ে সংস্করণের বিষয়বস্তুতে বর্তমানে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।