সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ (এসএএ) হচ্ছে সাউথ আফ্রিকার জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন, যার হেডকোয়ার্টার গাওতেং এর কেম্পটন পার্ক এ অবস্থিত ওআর টেমবো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত । এয়ারলাইনটি এর প্রধান কেন্দ্রস্থল ওআর টেমবো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট হতে বিশ্বের ৩৮টি গন্তব্যে বিমান পরিচালনা করে থাকে ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার কর্তৃক ইউনিয়ন এয়ারওয়েজের কর্তৃত্ব লাভের পরবর্তীকালে ১৯৩৪ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারিতে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ গঠিত হয় । চল্লিশজন কর্মী, একটি ডি হাভিল্যান্ড ডিএইচ ৬০ জিপসি মথ, একটি ডি হাভিল্যান্ড ৮০এ পুশ মথ, তিনটি জানকারস এফ১৩এস এবং একটি লীজ নেওয়া জানকারস এফ১৩ নিয়ে এয়ারলাইনটির যাত্রা শুরু করে । কর্তৃত্ব লাভের পর সরকার এয়ারলাইন্সটির নাম পরিবর্তন করে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ রাখে । যা সাউথ আফ্রিকান রেলওয়েজ এন্ড হারবারস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন(বর্তমানে ট্রান্সনেট) ।[১] [২] ঐ বছরেই এয়ারলাইনটি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে । পরবর্তী বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি, এয়ারলাইনটি সাউথ ওয়েস্ট এয়ারওয়েজ(বর্তমানে এয়ার নামিবিয়া)এর কর্তৃত্ব অর্জন করে, যে এয়ারলাইনটি ১৯৩২ সাল হতে উয়িন্ডহোয়েক এবং কিম্বারলির মধ্যে সাপ্তাহিক বিমান পরিচালনা করে আসছিলো । এ সময়টিতে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ তিনটি জানকারস জেইউ ৫২/৩এম এয়ারক্রাফট অর্ডার করে, যেগুলো ১৯৩৪ সালের অক্টোবর মাসে ডেলিভারী লাভ করে এবং ১০ দিন পর সার্ভিস প্রদান শুরু করে । এই এয়ারক্রাফটগুলো ১৪ জন করে প্যাসেঞ্জার এবং চারজন ক্রু বহন করত । সেই সময়টিতে সপ্তাহে তিনদিন ডারবান-জোহানেসবার্গ রুটে এবং সপ্তাহে একবার ডারবান-ইস্ট লন্ডন-পোর্ট এলিজাবেথ-জর্জ/মোসেল বে-কেপটাউন রুটে বিমান চলাচল করত ।[৩]
সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ এর সদর দপ্তর গাওতেং এর কেম্পটন পার্ক এ অবস্থিত ওআর টেমবো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত । ভবনটি স্টৌচ ভরস্টার আর্কিটেক্টস দ্বারা নির্মিত হয়েছিলো ।
সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ পরিচালিত বিমানগুলো আফ্রিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া এ ৬টি মহাদেশের ২৬ টি দেশের ৩৭টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যস্থলে চলাচল করে থাকে ।[৪][৫]
স্টার অ্যালায়েন্স সদস্য হওয়ার পাশাপাশি, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি অনুসারে নিন্মের এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ এর কোড শেয়ার চুক্তি রয়েছে ।[৬]
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস অনুসারে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজের বিমানবহরে নিন্মের বিমানগুলো রয়েছে ।
এয়ারবাস এ৩১৯-১০০(৮টি), এয়ারবাস এ৩২০-২০০(১২টি), এয়ারবাস এ৩৩০-২০০(৬টি), এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০, এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০(৮টি), এয়ারবাস এ৩৩০-৬০০(৯টি), বোয়িং ৭৩৭-৮০০(৭টি), বোয়িং ৭৩৭-৩০০এফ(২টি) ।
সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজের এয়ারবাস এ৩৩০-২০০ বিমানগুলোতে বিজনেস ক্লাস আসনগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব ৭৩ ইঞ্চি(সামনে-পিছনে) এবং এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০/৬০০ বিমানগুলোতে ৭৩-৭৪ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে । এয়ারবাস এ৩৩০-২০০ বিমানগুলোতে বিজনেস ক্লাস এ ৩৬ জন যাত্রী এবং এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০/৬০০ বিমানগুলো বিজনেস ক্লাস এ ৩৮ থেকে ৪২ জন যাত্রীর আসন রয়েছে ।
সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজের এয়ারবাস এ৩৩০-২০০ বিমানগুলোতে ইকোনমি ক্লাস এ ১৮৬ জন যাত্রী এবং এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০/৬০০ বিমানগুলোতে ইকোনমি ক্লাস এ ২১৫ থেকে ২৭৫ জন যাত্রীর আসন রয়েছে । ইকোনমি ক্লাস এ আসন বিন্যাস হচ্ছে ২-৪-২ । এয়ারবাস এ৩৩০-২০০ বিমানগুলোতে আসনগুলোর মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩১ ইঞ্চি(সামনে-পিছনে) এবং এয়ারবাস এ৩৪০-৩০০/৬০০ বিমানগুলোতে ৩১-৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মানসম্মত খাবার এবং পানীয় পরিবেশিত হয়ে থাকে । এছাড়া সন্মানিত যাত্রীদের জন্য ওয়াইনসহ বিভিন্ন সুপেয় পানীয় এর ব্যবস্থা রয়েছে ।
সাধারণভাবে সাউথ আফ্রিকান এয়ারওয়েজের যাত্রীদের আনন্দদায়ক ভ্রমণের লক্ষ্যে অডিও, ভিডিও, মিউজিক, গেমস ইত্যাদি বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে ।