সাউরিয়া পাহাড়িয়া জনগোষ্ঠী (যারা মালের পাহাড়িয়া নামেও পরিচিত) হল বাংলাদেশ [১] এবং ভারতের ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার রাজ্যে বসবাসকারী এক দ্রাবিড় জাতিগত জনগোষ্ঠী। [২] [৩] রাজমহল পাহাড়ের সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়।
কুরুখ ঐতিহ্য অনুসারে, যখন তারা সোন উপত্যকায় তাদের বাসভূমি থেকে বিতাড়িত হয়, তখন তাদের প্রধান দল পালামুর দিকে চলে যায় কিন্তু একটি ছোট দল রাজমহল পাহাড়ে পৌঁছনোর পর গাঙ্গেয় উপত্যকায় নেমে যায়। সেখানে তারা দামিন-ই-কোহতে বসতি স্থাপন করে। সাউরিয়া পাহাড়িদের ভাষা ওরাওঁদের ভাষার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। [৪]
সাউরিয়া পাহাড়িদের একটি আদিম উপজাতি হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গে তাদের সম্ভাব্য নগণ্য জনসংখ্যা সহ ঝাড়খণ্ডে তাদের জনসংখ্যা প্রায় ৪৫,০০০। তারা ঝাড়খণ্ডের উপজাতীয় জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম। [৫] [৬] [৭]
সাউরিয়া পাহাড়িরা প্রধানত তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মার উপাসনা করে, যা জিওয়ে উরক্ক্যা ("যে আত্মা চলে গেছে") নামে পরিচিত। বিশেষ করে একটি নতুন ক্ষেত বপন করার আগে এই পূজা করেন। জিওয়ে উরক্ক্যা হল একটি উগ্র আত্মা। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরে পঞ্চম দিনে তাকে ভোজ দেওয়া হয় এবং তারপরে তিনি পরোপকারী হয়ে ওঠেন। এই প্রথা পালনের পরে মৃত্যুবার্ষিকীর দিনটি ভোজে নামে পরিচিত হয় এবং কর পূজার, পশু বলি ইত্যাদির মাধ্যমে সেটি উদযাপন করা হয়। কররা পূজার জন্য মহিষ সবচেয়ে বেশি পছন্দের ভোগ। ডেমানোর মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের ভোগ এবং নৈবেদ্য দেওয়া হয়। ডেমানো হলেন গ্রামের পুরোহিত। স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে তিনি জিওয়ে উরক্ক্যার কণ্ঠে কথা বলেন ও তার প্রতিনিধিত্ব করেন। সাধারণত ফসল কাটার সময় বা বন্দনা উৎসবের সময় এইসকল পুজা করা হয়। পৈতৃক উপাসনা সৌরিয়াদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ তারা বিশ্বাস করে যে, একবার নৈবেদ্য পেলে তিনি তৃপ্ত হন। তিনি সূর্য দেবতা বেরো গোসাইয়ের সাথে যোগ দেন।
সাউরিয়া পাহাড়ীরা অধুনাকালে চাষাবাদ করতে শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে ধাপ চাস বা ঝুম চাস বেশ জনপ্রিয়। তারা পারিবারিক জীবন পরিচালনা করেন। [৮]
সাউরিয়ারা তিনটি স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক দলে বিভক্ত, যথা: প্রোবিয়া, বেয়ার এবং চেটে। [৯]