সার্বজনীন ভবিষ্যত তহবিল হল ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রকের অধীনে ন্যাশনাল সেভিংস ইনস্টিটিউট দ্বারা পরিচালিত একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ ব্যবস্থা যা ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। নাগরিকদের ছোট বিনিয়োগগুলিকে একত্রিত করে একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা এবং সাথে কর ছাড়ের সুবিধা উপলব্ধ করানো হোল এই ফান্ডের অন্যতম উদ্দেশ্যে।[১][২]
পিপিএফ অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগকৃত অর্থ আয়কর ধারা 80C অনুযায়ী EEE (এক্সেম্পট) বিভাগের অধীনে পড়ে, অর্থাৎ মূল পরিমাণ, অর্জিত সুদ এবং জমাকৃত পরিমাণের সম্পূর্ণটাই কর মুক্ত।[৩]
সুদের হারঃ সুদের হার প্রতি ত্রৈমাসিকে সরকার দ্বারা নির্ধারিত করা হয়। অর্থবর্ষ ২০২৩-২৪ এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অর্থাৎ ১লা জুলাই থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সুদের হার ৭.১% নির্ধারণ করা হয়েছে৷[৪][৫]
বিনিয়োগের সীমাঃ পিপিএফ অ্যাকাউন্টে এককালীন বা বার্ষিক সর্বোচ্চ ১২টি কিস্তির মাধ্যমে বছরে সর্বনিম্ন ₹৫০০/- এবং সর্বোচ্চ ₹১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেতে পারে৷ অ্যাকাউন্টটি সক্রিয় রাখতে প্রতি বছর পিপিএফ অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করতে হবে।[৬][৭]
মেয়াদঃ পিপিএফের মেয়াদকাল হোল ১৫ বছর। তবে মেয়াদপূর্তির পরেও অ্যাকাউন্টটি ৫ বছরের জন্য চালু রাখা যায়, এবং এই সময় বিনিয়োগ করা বাধ্যতামূলক নয়।[৮][৯]
কর ছাড়ঃ পিপিএফের কর নীতি এক্সেম্পট বা অব্যাহতি (EEE) বিভাগের অধীনে পড়ে অর্থাৎ PPF অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ করা অর্থ, অর্জিত সুদ এবং জমাকৃত রাশি আয়কর ধারা 80C অনুযায়ী সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হয়।[১০][১১]
ঋণ লাভঃ পিপিএফ আমানতের বিনিময়ে ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। একজন অ্যাকাউন্টধারী তৃতীয় আর্থিক বছর থেকে এই ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন, এবং এই সুবিধাটি শুধুমাত্র ষষ্ঠ আর্থিক বছরের শেষ পর্যন্ত উপলব্ধ থাকে।[১২][১৩]
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলি আবশ্যিকঃ
PPF অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নিম্নলিখিত নথিগুলির প্রয়োজনঃ
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম
ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করার জন্য KYC নথি যেমন আধার কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড, বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
ঠিকানা প্রমাণ
প্যান কার্ড
পাসপোর্ট সাইজের ছবি
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে আবেদন করা যেতে পারে। এছাড়া পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে গিয়ে সরাসরি আবেদনপত্র জমা দিয়ে এই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।[১৯][২০]
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার ৬ বছর পূর্ণ হওয়ার পরেই শুধুমাত্র আংশিক উত্তোলন করা যেতে পারে এবং ৭ম আর্থিক বছর থেকে মোট আমানতের ৫০% পর্যন্ত অর্থ উত্তোলন করা যাবে। একটি আর্থিক বছরে শুধুমাত্র একবারই অর্থ উত্তোলন করা যায়।[২১][২২][২৩]
পিপিএফ অ্যাকাউন্টে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নমিনি করা যায়। নমিনেশনের জন্য অ্যাকাউন্টধারীকে ফর্ম E জমা দিতে হবে। একাধিক ব্যক্তিদের মনোনীত করার ক্ষেত্রে প্রতিটি মনোনীত ব্যক্তির শতাংশের ভাগ উল্লেখ করতে হবে।[২৪]
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলার পাঁচ বছরের মধ্যে তা বন্ধ করা যাবে না। এরপর কিছু বিশেষ পরিস্থিতির ক্ষেত্রে যেমন অ্যাকাউন্টধারী, তার পত্নী, তার নির্ভরশীল সন্তান বা পিতামাতার চিকিৎসা অথবা সন্তানের উচ্চ শিক্ষা বা বাসস্থানের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিয়ে অকাল বন্ধ করা যেতে পারে।[২৫]
পিপিএফ অ্যাকাউন্ট দেশের যে কোন স্থানে স্থানান্তর করা যেতে পারে। নিম্নলিখিত উপায় পিপিএফ অ্যাকাউন্ট অন্য ব্যাঙ্কের শাখা বা পোস্ট অফিসগুলিতে স্থানান্তরিত করা যায়ঃ