সিয়ার-ই নবী মুহাম্মাদ এর জীবনীভিত্তিক তুর্কি মহাকাব্য। ১৩৮৮ সালের দিকে এটি লেখার কাজ সম্পন্ন হয়। কায়রোর মামলুক শাসক সুলতান বেরকুকের নির্দেশে এরজুরুমের মৌলভি তরিকার দরবেশ মুস্তাফা বিন ইউসুফ এটি রচনা করেছেন। ১৩শ শতাব্দীতে আল-বাকরির আরবিতে লিখিত সিরাতের ভিত্তিতে এটি প্রণীত হয় যার এর মূল উৎস আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২) রচিত মুহাম্মাদ এর জীবনী।
উসমানীয় সুলতান তৃতীয় মুরাদ (শাসনকাল: ১৫৭৪-১৫৯৫) এই গ্রন্থের একটি বিলাসবহুল ও চিত্রায়িত সংস্করণ তৈরীর নির্দেশ দেন। একে মুসলিম চিত্রশিল্পের ক্ষেত্রে "দীর্ঘতম একক চক্র" এবং মুহাম্মাদ এর জীবনের উপর "সবচেয়ে সম্পূর্ণ চিত্রায়িত কর্ম" হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১] বিখ্যাত মানচিত্রবিদ লুতফি আবদুল্লাহ রাজপ্রাসাদের স্টুডিওর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুরাদের উত্তরসূরি তৃতীয় মুহাম্মদের শাসনামলে ১৫৯৫ সালের ১৬ জানুয়ারি এই কাজ সম্পন্ন করেন। এই সংস্করণটি ছয়টি খণ্ডে বিভক্ত এবং এতে ৮১৪টি অণুচিত্র রয়েছে। এসব চিত্রে তৎকালীন প্রথামাফিক মুহাম্মাদ কে চেহারা ঢাকা অবস্থায় দেখানো হয়েছে। এছাড়াও তাকে অগ্নিশিখা বেষ্টিত অবস্থায়ও দেখানো হয়েছে।
প্রথম, দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ খণ্ড তোপকাপি জাদুঘরে, তৃতীয় খন্ডটি নিউ ইয়র্ক পাবলিক লাইব্রেরি, চতুর্থ খন্ডটি ডাবলিনের চেস্টার বেটি লাইব্রেরিতে রক্ষিত রয়েছে।[২] পঞ্চম খন্ডটির পাওয়া যায়নি। প্রায় দুই ডজন অণুচিত্র ব্যক্তিগত সংগ্রাহকদের নিকট রয়েছে। চারটি ১৯৮৪ সালের মার্চে হোটেল ড্রট অকশন হাউসে বিক্রি হয়।
১৭শ শতাব্দীতে রাজদরবারের শিল্পীদের প্রস্তুতকৃত চতুর্থ খণ্ডের একটি কপি ইস্তানবুলের সুলতানআহমেদে অবস্থিত মিউজিয়াম অব টার্কিশ এন্ড ইসলামিক আর্টে সংরক্ষিত রয়েছে। এটি ইস্তানবুলের আকসারাইয়ের একটি মসজিদের গ্রন্থাগারে সুলতানের মা ১৮৬২-৬৩ সালে দান করেছিলেন।[৩]
উইকিমিডিয়া কমন্সে সিয়ার-ই নবী সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।