সিরিয়ায় স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় সিরিয়ায় অবস্থিত নাগরিকদের শারীরিক অবস্থা, মৃত্যুর হার, চিকিৎসা সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধা, হাসপাতাল ইত্যাদির একটি সামগ্রিক অবস্থা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা বাথ পার্টি সিরিয়ায় স্বাস্থ্যের দিকটি অধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং উন্নত করেছে। যদিও বর্তমানে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের কারণে অনেক হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে নানান চিকিৎসার সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সিরিয়ায় চিকিৎসার দিকটি খুব একটা উন্নত হচ্ছে না।[১] তবুও, যুদ্ধহীন এলাকাগুলোতে, যেখানে সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে, সেসব জায়গাগুলোতে সরকারি-বেসরকারি দুভাবেই চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যের দিকটির উন্নতি ঘটছে।
২০১৪ সালে, স্থুল আভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৩.৩ শতাংশ, সিরিয়ার স্বাস্থ্য ব্যয় থেকে এসেছে।[২]
২০১৭ সালের জুলাই মাসে, সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৮,০২৮,৫৪৯[২] এবং ২০১৭ সালে, সিরিয়ার জনগণের গড় আয়ু ছিল ৭৫ বছর, যেখানে পুরুষদের গড় আয়ু ৭২ এবং মহিলাদের গড় আয়ু ৭৭,[২] যা ১৯৬০ সালের গড় আয়ুর তুলনায় অনেক ভালো। কারণ ১৯৬০ সালে, সিরিয়ার জনগণের গড় আয়ু ছিল ৫২ বছর।[৩]
২০১৭ সালে, প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষদের গড় স্থূলতা বিএমআই-এর মাপকাঠিতে ছিল ২৭.৮, ২০০৯ সালে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ১০% শিশু ছিল স্থূল বা মোটা।[২] ২০১৬ সালে, সবচেয়ে স্থূলতার দেশসমূহের মধ্যে সিরিয়ার ক্রম ছিল ৩৫। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তালিকাটি প্রকাশ করে।[৪]
২০১৫ সালে, ৯৫.৭% মানুষ টয়লেট ব্যবহার করতে পারত এবং ৯০.১% মানুষ সুপেয় পানি পানের সুযোগ পেতো।[২] বর্তমানে, সিরিয়ায় পানি দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং সুপেয় পানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে আলেপ্পোর কুয়েক নদী এবং ক্রন্তিস নদীর নিচের অংশের পানিতে অধিক পরিমাণে অ্যামোনিয়া, নিষিদ্ধ পদার্থ এবং অধিক মাত্রার বিওডি পাওয়া গিয়েছে। যা পানযোগ্য পানির সীমাকে অতিক্রম করেছে।[৫] এছাড়া সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে, টিউবওয়েলগুলোতে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধাতুর নাইট্রেট আয়ন, আ্যমোনিয়া পাওয়া গিয়েছে, সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ভূগর্ভস্থ পানির সাথে মিশ্রিত হওয়ায় বিশুদ্ধ পানিও লবণাক্ত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে খনন কাজ এবং মাত্রাতিরিক্ত সারের ব্যবহারকেই দায়ী করা হয়।[৫]
বিশেষ করে সিগারেট ও হুক্কাকে কেন্দ্র করে, সিরিয়ার জনগণের মধ্যে ধূমপান খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিরীয়রা প্রতিবছর নেশাজাতীয় দ্রব্যের পেছনে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে।[৬] ২০১০ সালে, ২০% নারী এবং ৬০% পুরুষ ধূমপান করত। মোট জনসংখ্যার ৯৮% কোন না কোনভাবে ধূমপান দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতো।[৭]
সিরিয়ায় ১৮ বছরের কম বয়সীদের নেশাজাতীয় দ্রব্য কেনা সম্পূর্ণ নিষেধ।[৮]