ভিসকাউন্ট র্যাডক্লিফ | |
---|---|
লর্ড এল আপিল ইন অর্ডিনারি | |
কাজের মেয়াদ ১৯৪৯ – ১৯৬৪ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | সিরিল জন রেডক্লিফ ৩০ মার্চ ১৮৯৯ ল্যানিচান, ডেনবিগশায়ার, ওয়েলস |
মৃত্যু | ১ এপ্রিল ১৯৭৭ স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-অ্যাভন, ওয়ারউইকশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭৮)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
দাম্পত্য সঙ্গী | অ্যান্টোনিয়া ম্যারি রবি বেনসন (বি. ১৯৩৯) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
সিরিল জন রেডক্লিফ, (৩০ মার্চ ১৮৯৯ - ১ এপ্রিল ১৯৭৭) ছিলেন একজন ব্রিটিশ আইনজীবী এবং আইন লর্ড যিনি ভারত ভাগে তার ভূমিকার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তিনি ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম চ্যান্সেলর হিসেবে ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
রেডক্লিফ ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি কখনও প্যারিসের পূর্বে দিকে যাননি অর্থাৎ ব্রিটিশ ভারতেও এর আগে কখনো আসেননি। আর তাকেই ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাসের সাথে সাথে গঠিত হওয়া দুটি সীমানা কমিটির সভাপতিত্ব দেওয়া হয়েছিল। রেডক্লিফকে পাকিস্তান ও ভারত নামক নতুন দুটি দেশের সীমানা আঁকার কাজ দেওয়া হয়েছিল।সীমানা আঁকার ক্ষেত্রে শর্ত ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে নিয়ে যেন পাকিস্তানের সীমানা এবং হিন্দু ও শিখ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো নিয়ে যেন ভারতের সীমানা আঁকা হয়।তাকে কাজ শেষ করার জন্য মাত্র ৫ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল।[১] রেডক্লিফ ৯ আগস্ট ১৯৪৭-এ তার বিভাজনের মানচিত্র জমা দেন, যা পাঞ্জাব ও বাংলাকে প্রায় অর্ধেক ভাগে ভাগ করে দেয়। নতুন সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৪৭ সালের ১৭ আগস্ট তারিখে ঘোষণা করা হয়েছিল - যা পাকিস্তানের স্বাধীনতার তিন দিন পরে এবং ব্রিটিশদের থেকে ভারত স্বাধীন হওয়ার দুই দিন পরে।[২]
রেডক্লিফের আঁকা এই সীমানার কারনে প্রায় ১৪ মিলিয়ন মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।যখন তারা বুঝতে পেরেছিল রেডক্লিফের আঁকা সীমানা অনুসারে তাদের বাড়িটি ভুল দেশের সীমানার মধ্যে পড়েছে, তখন রেডক্লিফ রেখার প্রত্যেক পাশ থেকেই প্রায় ৭ মিলিয়ন মানুষ অপর পাশে পালিয়ে যায়। ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষনার পর যে সহিংসতা সংঘটিত হয়, তাতে অনুমান করা হয় প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ আহত হয়।সীমানার উভয় পাশে ঘটা তাণ্ডব দেখার পর রেডক্লিফ তার কাজের জন্য পূর্বনির্ধারিত ৪০,০০০ টাকা(তখনের ৩,০০০ পাউন্ড) পারিশ্রমিক প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৪৮ সালে তাকে নাইট গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার করা হয়েছিল।
সীমানা নির্ধারণ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি পরে বলেছিলেন-
"আমার কাছে বিকল্প কোনো উপায় ছিল না, সময় এতই কম ছিল যে আমি এর চেয়ে ভালো কাজ করতে পারতাম না।একই পরিমাণ সময় দেওয়া হলে আমি আবারো একই কাজ করতাম। তবে যদি দুই থেকে তিন বছর সময় পেতাম, তাহলে হয়তো আমি এর চেয়ে ভালো কিছু করতে পারতাম।"[১]
কবি ডব্লিউএইচ অডেন তার ১৯৬৬ সালের "পার্টিশন" কবিতায় ভারত ও পাকিস্তানের বিভাজনে রেডক্লিফের ভূমিকা উল্লেখ করেন।[৩]