সীরাত ইবনে কাসির

সীরাত ইবনে কাসির
বইয়ের প্রচ্ছদ
লেখকইবনে কাসির
মূল শিরোনামالسيرة النبوية لابن كثير (আরবি ভাষা)
দেশইরাক
ভাষাআরবি
বিষয়মুহাম্মাদের জীবনী
ধরননন-ফিকশন
প্রকাশকআল কোরআন একাডেমী লন্ডন (বাংলা)
মিডিয়া ধরনমুদ্রিত গ্রন্থ (শক্তমলাট)

সীরাতুন্নবী ইবনে কাসির বা সীরাত ইবনে কাসির ইবনে কাসির লিখিত রাসুলের একটি বিখ্যাত জীবনীগ্রন্থ।[] লেখক নবীর বিশুদ্ধ জীবনী সম্পর্কিত নানা বিষয় ইতিহাসবিদ ইবনে ইসহাকের বই থেকে সংগ্রহ করেছেন।[] বইটি মূলত তার লিখিত আল বিদায়া ওয়ান নিহায়ার বইয়ের সিরাত অংশের বিস্তৃত, পরিশীলিত ও পরিশুদ্ধ রূপ। আল বিদায়া গ্রন্থকে বিস্তৃত আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এই বইটি রচনা করেছেন এবং বইটি চারটি বড় অংশে বিভক্ত করে বড় করে লিখেছেন।[] আল কোরআন একাডেমী লন্ডন গ্রন্থটির বাংলাভাষায় অনুবাদ করেছে। এটাকে ইসলামের অন্যতম বিশুদ্ধ জীবনীগ্রন্থ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

বিষয়বস্তু

[সম্পাদনা]

বইটিতে ইসলামের আগে আরবদের বক্তব্য উল্লেখ করে নবী মুহাম্মদের জীবনী পরীক্ষা করেছেন। তারপরে নবীর জন্ম এবং নাম, বংশ, স্তন্যপান ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। নবী কিছুটা বড় হবার পরে তার লালন-পালন, তার বাল্যকাল, তার মক্কার সময়কাল, তারপর তার হিজরত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বইটিতে দেখানো হয়েছে তিনি কিভাবে মদিনার জীবন থেকে শুরু করে মক্কা বিজয় করেছেন। বইয়ের চারটি খণ্ডের আলোচনা হল:

প্রথম খণ্ড: প্রাচীন আরবে গোত্রগুলোর অবস্থা এবং তাদের ইতিহাস আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও রাসূলের শৈশব, কৈশর, নবুওয়তপ্রাপ্তি এবং দাওয়াতি জীবন ব্যাপক পরিসরে বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় খণ্ড: রাসূলের মদিনায় হিজরত, সেখানে তার জীবনকাল, মদিনার পরিস্থিতি ও আবহাওয়া আলোকপাত করা হয়েছে। তার দাওয়াতি কার্যক্রম এবং ইসলামের শুরুর দিকে যেসব যুদ্ধ ও অভিযান করা হয়েছিলো সেগুলো আলোচনায় এসেছে।

তৃতীয় খণ্ড: মক্কা বিজয়ের পরের যুদ্ধগুলো আলোচনা, বিভিন্ন রাষ্ট্রে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি প্রেরণ, রাসূলের দেশ চালানোর বিভিন্ন বিষয়, নানা অঞ্চল থেকে আগত বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের সাথে যেসব আলোচনা হয়েছিলো এগুলো বইটিতে সূত্রসহ আলোচনা রয়েছে। এছাড়াও বিজিত অঞ্চলে প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

চতুর্থ খণ্ড:

রাসূলের জীবনের শেষ দিনগুলো কীভাবে কেটেছে, সেসব আলোচনায় এসেছে। রাসূলের বিদায় হজ, মৃত্যুর ইতিহাস, তার স্ত্রীদের সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছে, ওহি সংরক্ষণ, নবীর দৈহিক ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়াও নবুওয়তের দলিল ও প্রমাণ সম্পর্কেও সূত্র দেওয়া হয়েছে।

বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

তিনিই প্রথম লেখক যিনি গুরুত্বের সঙ্গে সিরাত গবেষকদের মতামতের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি সূত্রগুলোকে বিশ্লেষণ করে সিরাতশাস্ত্রে সমালোচনামূলক পাঠ্যের সূত্রপাত করেছেন। এরপরে এই কাজকে অনেকে অনুসরণ করেছেন। বইটিতে রেওয়াত ও সনদের প্রতি আলাদা গুরুত্বারোপ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশুদ্ধ সূত্র থেকে আলোকপাত করেছেন, সাথে সাথে দুর্বল সূত্র ও বর্ণনা এড়িয়ে গিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বিরল ও হারিয়ে যাওয়া অনেক বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি সীরাতে হারিয়ে যাওয়া ইবনে ইসহাক প্রাচীন সংস্করণ ও সীরাতে উকবা থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকদের থেকে তথ্য ও জ্ঞান নিয়ে সেগুলো আলোচনা করেছেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]