সুজান সার্যান্ডন | |
---|---|
Susan Sarandon | |
জন্ম | সুজান অ্যাবিগেল টমালিন ৪ অক্টোবর ১৯৪৬ |
জাতীয়তা | মার্কিন |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৭০-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | ক্রিস সার্যান্ডন (বি. ১৯৬৭; বিচ্ছেদ. ১৯৭৯) |
সঙ্গী | ফ্রাঙ্কো আমুরি (১৯৮৪-১৯৮৮) টিম রবিন্স (১৯৮৮-২০০৯) জোনাথন ব্রিকলিন (২০০৯-২০১৫) |
সন্তান | ৩, ইভা আমুরি সহ |
সুজান সার্যান্ডন (ইংরেজি: Susan Sarandon) নামে পরিচিত সুজান অ্যাবিগেল টমালিন (ইংরেজি: Susan Abigail Tomalin; জন্ম: ৪ অক্টোবর ১৯৪৬)[১] হলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী। তিনি একটি করে একাডেমি পুরস্কার, বাফটা পুরস্কার, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার ও দুটি দাভিদ দি দোনাতেল্লো অর্জন করেছেন এবং ছয়টি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার ও নয়টি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি তার সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তিনি ১৯৯৯ সালে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত নিযুক্ত হন[২] এবং ২০০৬ সালে অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
সার্যান্ডন ১৯৭০ সালে জো চলচ্চিত্র দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং পরে আ ওয়ার্ল্ড অ্যাপার্ট (১৯৭০-৭১) সোপ অপেরায় অভিনয় করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি টিভি চলচ্চিত্র এফ. স্কট ফিট্জেরাল্ড অ্যান্ড 'দ্য লাস্ট অব দ্য বেলেস'-এ জেল্ডা ফিট্জেরাল্ডের যুবতী বয়সের চরিত্রে এবং ১৯৭৫ সালে জনপ্রিয় কাল্ট চলচ্চিত্র দ্য রকি হরর পিকচার শো-এ অভিনয় করেন। তিনি আটলান্টিক সিটি (১৯৮০), থেলমা অ্যান্ড লুইস (১৯৯১), লরেঞ্জোস অয়েল (১৯৯২) ও দ্য ক্লায়েন্ট (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং ডেড ম্যান ওয়াকিং (১৯৯৫) ছবিতে অভিনয় করে একাডেমি পুরস্কার ও স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি দ্য ক্লায়েন্ট ছবিতে তার কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল প্রিটি বেবি (১৯৭৮), দ্য হাঙ্গার (১৯৮৩), দ্য উইচেস অব ইস্টউইক (১৯৮৭), বুল ডারহাম (১৯৮৮), হোয়াইট প্যালেস (১৯৯০), লিটল উইমেন (১৯৯৪), স্টেপমম (১৯৯৮), এনচেন্টেড (২০০৭), দ্য লাভলি বোনস (২০০৯), ট্যামি (২০১৪), দ্য মেডলার (২০১৫), এবং আ ব্যাড মমস ক্রিসমাস (২০১৭)।
সার্যান্ডন ১৯৪৬ সালের ৪ঠা অক্টোবর নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্স বরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা লেনোরা ম্যারি (জন্মনাম: ক্রিস্কিওন; জ. ১৯২৩),[৩] এবং পিতা ফিলিপ লেসলি টমালিন (১৯১৭-১৯৯৯) ছিলেন একজন বিজ্ঞাপন নির্বাহী, টেলিভিশন প্রযোজক ও এক-সময়ের নৈশক্লাবের গায়ক। সার্যান্ডন তার পিতামাতার নয় সন্তানের মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ। তার চার ভাই ফিলিপ জুনিয়র, টেরি (১৯ মে ২০১৬), টিম ও ওব্রায়ান; এবং চার বোন মেরেডিথ, বনি, অ্যামান্ডা ও মিসি।[৪][৫] তার পিতা ইংরেজ, আইরিশ ও ওয়েলস বংশোদ্ভূত।[৬] তার ইংরেজ পূর্বপুরুষগণ লন্ডনের হ্যাকনি এলাকা থেকে আগত এবং তার ওয়েলসীয় পূর্বপুরুষগণ ব্রিজেন্ড থেকে আগত। মায়ের দিক থেকে তিনি ইতালীয় বংশোদ্ভূত, এবং তারা টাসকানি ও সিসিলি অঞ্চল থেকে আগত।[৪][৭][৮] সার্যান্ডন রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী এবং তিনি রোমান ক্যাথলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি নিউ জার্সির এডিসনে বেড়ে ওঠেন,[৯][১০] সেখানে তিনি ১৯৬৪ সালে এডিসন হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন।[১১][১২] তিনি পরে ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ সালে দ্য ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব আমেরিকায় পড়াশোনা করেন,[১৩] এবং সেখান থেকে নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ও সেখানে তিনি নাট্যতত্ত্বের কোচ ও শিক্ষক ফাদার গিলবার্ট ভি. হার্টকের সাথে কাজ করতেন।[১৪]
সার্যান্ডন ১৯৬৯ সালে তার স্বামী ক্রিস সার্যান্ডনের সাথে জো চলচ্চিত্রের জন্য ডাক পেয়ে তিনি এই চলচ্চিত্রের সেটে যান। ক্রিস তার প্রত্যাশিত চরিত্রটি না পেলেও এই চলচ্চিত্রের একটি প্রধান চরিত্রে সুজানকে নির্বাচন করা হয়। পরে ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে তিনি আ ওয়ার্ল্ড অ্যাপার্ট সোপ অপেরায় প্যাট্রিস ক্যালম্যান ও সার্চ ফর টুমরো সোপ অপেরায় সারাহ ফেয়ারব্যাঙ্কস চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি টিভি চলচ্চিত্র এফ. স্কট ফিট্জেরাল্ড অ্যান্ড 'দ্য লাস্ট অব দ্য বেলেস'-এ জেল্ডা ফিট্জেরাল্ডের যুবতী বয়সের চরিত্রে এবং ১৯৭৫ সালে জনপ্রিয় কাল্ট চলচ্চিত্র দ্য রকি হরর পিকচার শো-এ ও রবার্ট রেডফোর্ডের বিপরীতে দ্য গ্রেট ওয়াল্ডো পেপার (১৯৭৫) চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি লুই মালের পরিচালনায় দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন, সেগুলো হল প্রিটি বেবি (১৯৭৮) ও আটলান্টিক সিটি (১৯৮০) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। দ্বিতীয় কাজটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১৩]
তার সবচেয়ে বিতর্কিত চলচ্চিত্র হল টনি স্কটের দ্য হাঙ্গার (১৯৮৩)। এতে তাকে কাত্রিন দ্যনোভের সাথে সমকামী যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার দৃশ্যে দেখা যায়।[১৫] তিনি জ্যাক নিকোলসন, শের, ও মিশেল ফাইফারের সাথে হাস্যরসাত্মক-কল্পনাধর্মী দ্য উইচেস অব ইস্টউইক (১৯৮৭) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সার্যান্ডনের প্রথম বড় সাফল্য আসে কেভিন কসনার ও টিম রবিন্সের সাথে অভিনীত বুল ডারহাম (১৯৮৮)। ছবিটি বাণিজ্যিক ও সমালোচনামূলকভাবে সফল হয়।[১৬] শিকাগো সান-টাইমস-এ এক পর্যালোচনায় রজার ইবার্ট সার্যান্ডনের অভিনয় সম্পর্কে লিখেন, "আমি জানি না তারা অ্যানি স্যাভয় চরিত্রের জন্য আর কাকে নিতে পারতো, সার্যান্ডনের চরিত্রটি তার হৃদয় ও শরীর দিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু আমি সন্দিহান সার্যান্ডনের চমৎকার অভিনয় ছাড়া এই চরিত্রটি বিকাশ লাভ করতে পারত কিনা।"[১৭]
তিনি ১৯৯০ সালে হোয়াইট প্যালেস চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি ১৯৯০-এর দশকে চারটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, তন্মধ্যে থেলমা অ্যান্ড লুইস (১৯৯১), লরেঞ্জোস অয়েল (১৯৯২) ও দ্য ক্লায়েন্ট (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং ডেড ম্যান ওয়াকিং (১৯৯৫) ছবিতে সিস্টার হেলেন প্রেজিন চরিত্রে অভিনয় করে একাডেমি পুরস্কার ও স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার লাভ করেন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর জ্যানেট মাসলিন ডেড ম্যান ওয়াকিং চলচ্চিত্রের তার অভিনয়ের প্রসঙ্গে বলেন, "মিস সার্যান্ডন লরেঞ্জোস অয়েল ছবিতে একগুঁয়ে মায়ের চরিত্রে কাজের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। তিনি তার অভিনয়ে সমবেদনা পাওয়ার ভুল পথ এড়িয়ে গিয়েছেন।"[১৮] ১৯৯৪ সালে তিনি চলচ্চিত্রে নারী বিভাগে ক্রিস্টাল পুরস্কার লাভ করেন।[১৯] তিনি দ্য ক্লায়েন্ট ছবিতে তার কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে বাফটা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি লিটল উইমেন (১৯৯৪) এবং স্টেপমম (১৯৯৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২০]