সুফি কবিতা (ফরাসি: شعر صوفی) হলো মূলত মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত পারসি ও অন্যান্য ভাষায় লেখা ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিকতা ও প্রার্থনা ও জিকিরের সময় পড়ার জন্য লেখা গীতিকবিতা।
পাঞ্জাবি কবিতা, সিন্ধি কবিতা, আরবি কবিতা ও বিশেষত পারসি কবিতার ধরন ও বিষয়বস্তু ইসলামি বিশ্বের সুফি কবিতায় বিশেষ প্রভাব ফেলেছে, যার কিছু পড়েছে সুফি সঙ্গীতেও। পাঞ্জাবে সিন্ধ ও বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের অন্য কিছু প্রদেশে বিভিন্ন সময় জাতিগত সম্প্রীতি বজায় রাখতে সুফি কবিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের আঞ্চলিক ভাষাতেই সাধারণত বেশীরভাগ সময় সুফি কবিতা লেখা হয়, এর পরম অনুভূতি ও তাল মানুষকে ঐশ্বরিক প্রেমের সন্ধানে উদ্ধুদ্ধ করে আসছে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ও সিলেট সুফি সঙ্গীতের জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত।
রাবেয়া বসরী, ৮ম শতাব্দীর একজন নারী মরমিসাধক, ইসলামে সুফিবাদী প্রেমের ধারণাকে জনপ্রিয় করেন। আত্মজ্ঞানের ধারণারূপে মাওলানা জালাল আল-দিন মুহাম্মদ রুমির কাজে "মৃত্যু" এবং "প্রেম" দুটো আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি হিশেবে এসেছে। প্রেমকে সুফিবাদে "সর্বগ্রাসী" বলে বিবেচনা করা হয়, যেহেতু এটা প্রেমিকের সমস্ত সত্তাকে গ্রাস করে নেয়। মাওলানা জালাল আল-দিন মুহাম্মদ রুমি এ বিষয়ে লিখেন, "জুমলা মাশুক আস্ত ও আশেক পর্দায়ে"(প্রেমাস্পদই সত্তা, প্রেমিক শুধু খোলস মাত্র)। ধারণা করা হয়, সুফিবাদের ঐতিহ্যটি এসেছে হিন্দুবাদ বা পারসি সংস্কৃতি ও আচার থেকে। ইহুদি বা খ্রিস্টান ধর্মে ৯ম শতকে এমন কোন ধারণা প্রচলিত ছিলো না। মাওলানা জালাল আল-দিন মুহাম্মদ রুমির মতে স্রষ্টার ইচ্ছা থেকেই প্রেমের উৎপত্তি। [১]
সুফি কবিতায় মানবাত্মা ও পরমাত্মার মিলনের কথাও বলা হয়। যেখানে বলা হয় সৃষ্টির প্রবাহে মানবাত্মা ও পরমাত্মা আলাদা হলেও, পরমাত্মার প্রতি প্রতি মানবাত্মার স্বভাবগত আকর্ষণ কখনও যায় না। [১]