সুমতি মোরারজী | |
---|---|
জন্ম | যমুনা ১৩ মার্চ ১৯০৯ বোম্বে , ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ২৭ জুন ১৯৯৮ মুম্বাই , ভারত | (বয়স ৮৯)
পরিচিতির কারণ | সিন্ধিয়া স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি |
দাম্পত্য সঙ্গী | শান্তি কুমার নরোত্তম মোরারজী |
পুরস্কার | পদ্মবিভূষণ (১৯৭১) |
টীকা | |
সুমতি মোরারজী (১৩ মার্চ ১৯০৯[২] – ২৭ জুন ১৯৯৮[৩]) ছিলেন ভারতীয় জাহাজ পরিবহণের (শিপিং) ক্ষেত্রে প্রথম মহিলা এবং ঐতিহ্যগতভাবে যাকে পুরুষদের ঘাঁটি বলে হয়, তিনি সেই জাহাজ মালিকদের একটি সংস্থার প্রধান ছিলেন। বিশ্বের প্রথম মহিলা হিসেবে তিনি ভারতীয় জাতীয় স্টিমশিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর (পরে ভারতীয় জাতীয় জাহাজ মালিক সমিতির নামকরণ করা হয়) প্রধান ছিলেন।[৪] তিনি বেসামরিক সেবার জন্য ১৯৭১ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মবিভূষণে ভূষিত হয়েছেন।[৫]
মোরারজী বোম্বেতে মথুরাদাস পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বৃন্দাবনের কৃষ্ণের সাথে যুক্ত পবিত্র নদীর নামানুসারে তার নাম যমুনা রাখা হয়েছিল। ভারতের তৎকালীন সমসাময়িক প্রথা অনুসারে, অল্পবয়সী থাকাকালীনই তিনি সিন্ধিয়া স্টিম নেভিগেশন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা নরোত্তম মোরারজির একমাত্র পুত্র শান্তি কুমার নরোত্তম মোরারজির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[৬] ১৯০৯ সালের ১৩ মার্চ মুম্বইয়ে গোঁড়া রক্ষণশীল ব্যবসায়ী পরিবারে তাঁর জন্ম। ছোট থেকে কোনও কিছুরই অভাব ছিল না তাঁর। বাধা ছিল শুধু স্বাধীনতায়। পড়াশোনাও সে ভাবে শিখে উঠতে পারেননি তিনি। রক্ষণশীল বাবা মাত্র ১৩ বছর বয়সে এসসিইন্ডিয়া স্টিম নেভিগেশন কোম্পানির মালিকের ছেলে শান্তিকুমার নরোত্তম মোরারজির সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন। পুরুষ শাসিত সমাজে তিনিই প্রথম মহিলা, যিনি একটা জাহাজ কোম্পানির মালিক হয়েছিলেন। তিনিই প্রথম মহিলা যিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল শিপ ওনারস্ অ্যাসোসিয়েশনের (ইনসা)-ও প্রধান হন। ১৯৭১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মবিভূষণে সম্মানিত হয়েছিলেন।
মোরারজি ১৯২৩ সালে ১৪ বছর বয়সে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা সংস্থায় কাজ করেন। তিনি শুরু থেকে কোম্পানিটি গড়ে তোলেন। কোম্পানির মধ্যে কয়েকটি জাহাজকে পালা করে ধীরে ধীরে বিকাশ করেন এবং ১৯৪৬ সালের মধ্যে কোম্পানির সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এরপর ছয় হাজারেরও বেশি লোককে তিনি পরিচালনা করেছেন। তিনি ইতিমধ্যেই পরিচালনা পরিষদে কাজ করছেন এবং শিপিং বাণিজ্যে তার দক্ষতা বহু বছর ধরে বিকশিত হয়েছে। তার আশ্চর্যজনক কৃতিত্বের কারণে, তিনি ১৯৫৬ সালে এবং পরবর্তী দুই বছর এবং আবার ১৯৬৫ সালে ভারতীয় জাতীয় স্টিমশিপ মালিক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তার তত্ত্বাবধানে কোম্পানিটির ৪৩টি শিপিং জাহাজের বহর ছিল, যেগুলি ৫৫২,০০০ টন ওজন পরিবহন করত।[৭]
১৯৭৯ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত, তিনি কোম্পানির সভাপতি ছিলেন, পরে তিনি ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কোম্পানির চেয়ারপারসন ইমেরিটাস হিসেবে নিযুক্ত হন।
মোরারজি মহাত্মা গান্ধীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন এবং তাঁদের বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। তিনি তাকে তার সবচেয়ে কাছের বন্ধুদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করতেন। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সালের মধ্যে তিনি তার সাথে স্বাধীনতা আন্দোলনে কাজ করেছেন।[৮]
“ | এটা বিশুদ্ধভাবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের জন্য নয় যে আমরা আজ শিপিংয়ে মনোনিবেশ করি। আমরা চাই আমাদের জনগণ বিদেশ ভ্রমণ করুক এবং বিদেশীরা আমাদের প্রাচীন ভূমি দেখতে পাবে। বিদেশে সেরা রপ্তানি করা ভারতীয় ঐতিহ্য। আমরা বহু শতাব্দী ধরে পণ্যদ্রব্যের ব্যবসা করেছি, কিন্তু আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান পণ্যসম্ভার হল সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব এবং গভীর আধ্যাত্মিকতার ধারণা। . . . সকলের প্রতি আমাদের এমন অতীন্দ্রিয় সৌভাগ্যের ঐতিহ্য সর্বত্র অব্যাহত রয়েছে। | ” |
তিনি ৮৯ বছর বয়সে ২৭ জুন ১৯৯৮ সালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।