সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত | |
---|---|
![]() সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ ডিসেম্বর ১৯৫২ | (বয়স ৬৫)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | এম.এ, ডি. ফিল, ডি. লিট |
মাতৃশিক্ষায়তন | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অধ্যাপনা |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি |
দাম্পত্য সঙ্গী | হিমানী দেবী |
সন্তান | মৈত্রেয়ী দেবী, চিত্রিতা দেবী সহ ৩ কন্যা এবং ৩ পুত্র |
দার্শনিক জীবন | |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | জেএমই ম্যাকটাগার্ট |
ডক্টরাল শিক্ষার্থী | দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় |
সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত (১৮ অক্টোবর ১৮৮৭ – ১৮ ডিসেম্বর ১৯৫২) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সংস্কৃত পণ্ডিত ও দার্শনিক। [১]
সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তর জন্ম ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার এক বৈদ্য পরিবারে। [২] জন্মদিনটি ছিল বাংলা আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমী তিথি [৩] অর্থাৎ শারদোৎসবের বিজয়া দশমী বা দশেরার দিন। [২] তার পৈতৃক নিবাস ছিল তৎকালীন বাংলাদেশেরই বরিশাল জেলার গৈলা গ্রামে। পিতা কালীপ্রসন্ন দাশগুপ্তর আর্থিক অবস্থা সচ্ছল ছিল না। কিন্তু শৈশবেই সুরেন্দ্রনাথের স্মৃতিশক্তি ছিল প্রবল। দুই-তিন বৎসর বয়সে তার অক্ষর পরিচয়ের পূর্বেই রামায়ণ মুখে মুখে আবৃত্তি করার অস্বাভাবিক ক্ষমতা তার মধ্যে দেখা যায়। পাঁচ থেকে সাত বৎসর বয়সে তিনি বিভিন্ন সভায় প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন দিক ও তৎকালীন সমসাময়িক বহু ঘটনার বিষয় অনায়াসে বলতে পারতেন। তাই অনেকে তাকে 'খোকা ভগবান' বলতেন। পিতা ডায়মণ্ডহারবারে বদলি হলে নয়-দশ বৎসর বয়সে তিনি 'বৃত্রসংহারে'র অনুকরণে রামায়ণের চারটি সর্গ রচনা করেন। কৃষ্ণনগর স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পাশ করেন এবং গৈলায় গিয়ে টোলে ভরতি হন। সেখানে পঞ্জি ও টীকা-সহ দুরূহ কলাপ ব্যাকরণ নিজে অধ্যয়ণের সঙ্গে অন্য ছাত্রদের পড়ান। পরে কৃষ্ণনগরের ফিরে এফ.এ পাশ করেন এবং এই সময়ে তিনি 'তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য' সংস্কৃতে রচনা করেন। পরের বৎসর রিপন কলেজ বর্তমানের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে সংস্কৃতে অনার্স সহ বি.এ পাশ করেন এবং নিস্তারিণী পদক লাভ করেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে এম.এ পাশ করেন এবং ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ্চাত্য দর্শন শাস্ত্রে এম. এ ডিগ্রি লাভ করেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এম.এ পাশের পর তিনি স্বল্প মেয়াদে রাজশাহী কলেজে প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন । পরে তিনি চট্টগ্রাম কলেজে সংস্কৃত ও বাংলার অধ্যাপক হন এবং পরে কলেজের উপাধ্যক্ষ হয়েছিলেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় দর্শনের উপর গবেষণা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন এবং 'গ্রিফিথ পুরস্কার' লাভ করেন।মহারাজা স্যার মণীন্দ্র চন্দ্র নন্দী তাঁকে ইউরোপীয় দর্শন বিষয়ে বিশদে পড়াশোনার জন্য ইউরোপ যেতে বলেন এবং গবেষণার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করেন। সুরেন্দ্রনাথ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড যান এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জেএমই ম্যাকটাগার্ট-এর অধীনে গবেষণা করে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ডি.ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। এখানে অবস্থানকালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস হতে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তার শ্রেষ্ঠ রচনার এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি-র প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। তিনি কেমব্রিজে প্রভাষক হিসাবে কিছু দিন কাজ করেন এবং প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফিলসফি কংগ্রেসে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে আসার পর এডুকেশন সার্ভিসে যোগ দিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এই বছরেই তিনি নেপলস-এ এবং ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং বাংলা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রসিদ্ধ ইতালীয় দার্শনিক বেনেদেত্তো ক্রোচের (১৮৬৬ - ১৯৫২) আমন্ত্রণে ইটালি যান এবং রোম বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডি.লিট উপাধি লাভ করেন। এই সময়ে দশ বৎসর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে অবসর নেন এবং বিদেশ যাত্রা করেন।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক দাশগুপ্ত ভারতীয় দর্শন কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । তাঁর নিজস্ব দার্শনিক মতবাদ― থিওরি অফ ডিপেন্ডেন্ট ইমার্জেন্স নামে পরিচিত ছিল। এই মতবাদ অনুসারে― জড়পদার্থ (matter), চেতন-পদার্থ (consciousness), জীবন (life), মন (mind) প্রভৃতি গুণগত বৈপরীত্য সত্ত্বেও যে একে অপরটির ওপর নির্ভরশীল তা ব্যক্ত করে।তাঁর বিখ্যাত ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম হলেন― মিরসিয়া এলিয়েড এবং দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন এবং ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসে আন্তর্জাতিক কংগ্রেস অব রিলিজিয়ন'-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন।
বাংলার গভর্নর লর্ড রোনাল্ডশে যখন চট্টগ্রাম কলেজ পরিদর্শন করতে আসেন, তখন তিনি শ্রেণীকক্ষেই অধ্যাপক দাশগুপ্তের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে মিলিত হন এবং আলাপচারিতা ও ভারতীয় দর্শনের বিষয়ে তার বক্তব্য শুনে এতটাই মুগ্ধ হন যে, তিনি অধ্যাপক দাশগুপ্তর রচিত গ্রন্থ কবে প্রকাশিত হবে তা জানতে উৎসুক ছিলেন। প্রথমদিকে অধ্যাপক দাশগুপ্তর ইচ্ছা ছিল গ্রন্থটিকে প্রাপ্ত উপকরণের সংক্ষিপ্তসারে একটি খণ্ডে প্রকাশ করার। কিন্তু তা হয়নি। প্রথম খণ্ড ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং তিনি গ্রন্থটি গভর্নরকেই উৎসর্গ করেন।একটি খণ্ডে প্রকাশ করার পরিকল্পনা সম্ভব হয়নি, কেননা ভারতের সমস্ত অঞ্চল হতে সংগৃহীত উপকরণের বিশালতা, বহু সংখ্যক অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির উপলব্ধ বিষয়াদিতে তাঁর ইতিহাস রচনার পরিধি বিস্তার লাভ করে। শেষ পর্যন্ত সংস্কৃত, পালি এবং প্রাকৃতের মূল উৎস থেকে সরাসরি ভারতীয় চিন্তার ইতিহাস সুশৃঙ্খলভাবে লেখার প্রথম এবং একমাত্র প্রচেষ্টা পাঁটটি খণ্ডে সম্পন্ন করেন। প্রচুর পরিশ্রম, আন্তরিক নিষ্ঠা এবং অতুলনীয় উদ্যমে কাজটির কৃতিত্ব অধ্যাপক দাশগুপ্তর একার।
১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত কলেজ থেকে অবসরের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজা পঞ্চম জর্জ মানসিক ও নৈতিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি সেখানে তিন বছর অধ্যাপনা করেন এবং ধর্মীয় ইতিহাসের উপর 'লস্টেফানোস নির্মলেন্দু বক্তৃতা দেন। তিনি ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে পূরথম হৃদরোগে আক্রান্ত হন, কিন্তু তা'সত্বেও বিভিন্ন কার্যক্রম ও গবেষণা কাজ চালিয়ে যান ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক কিথের মৃত্যুতে, তাঁর শূন্য পদে সংস্কৃতের অধ্যাপক পদের প্রস্তাব পান। তার চিকিৎসকরা ইংল্যান্ডে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। কিন্তু ইংল্যান্ডে পৌঁছে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে হিন্দু ধর্মের উপর তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এক বক্তৃতা দেন। এরপর থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন তিনি। ইংল্যান্ডে অবস্থানকালে তিনি অসুস্থতা সত্ত্বেও, ঘনিষ্ঠ ছাত্রদের সাথে প্রায়শই যোগাযোগ রাখতেন।[৪] তিনি পাঁচ বছর (১৯৪৫-৫০) ইংল্যান্ডে ছিলেন। তারপরও তিনি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস হতে তাঁর এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি-র চতুর্থ খণ্ড, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ হিস্ট্রি অফ স্যান্সক্রিট লিটারেচার, রবীন্দ্রনাথ, দ্য পোয়েট অ্যান্ড ফিলজফার এবং বাংলায় নন্দনতত্ত্বের উপর একটি বই কলকাতার এক প্রকাশকের সহযোগিতায় প্রকাশ করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশে ফিরে লখনউ-এ বসবাস করতে থাকেন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর সহযোগিতায় এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি-র পঞ্চম ও শেষ খণ্ড রচনা শুরু করেন।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে হিন্দুধর্মের উপর তিনি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এক বক্তৃতা দেন। এরপর থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন তিনি। ইংল্যান্ডে অবস্থানকালে তিনি অসুস্থতা সত্ত্বেও, ঘনিষ্ঠ ছাত্রদের সাথে প্রায়শই যোগাযোগ রাখতেন।[৪] তিনি পাঁচ বছর (১৯৪৫-৫০) ইংল্যান্ডে ছিলেন। তারপরও তিনি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস হতে তাঁর এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি-র চতুর্থ খণ্ড, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ হিস্ট্রি অফ স্যান্সক্রিট লিটারেচার, রবীন্দ্রনাথ, দ্য পোয়েট অ্যান্ড ফিলজফার এবং বাংলায় নন্দনতত্ত্বের উপর একটি বই কলকাতার এক প্রকাশকের সহযোগিতায় প্রকাশ করেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশে ফিরে লখনউ-এ বসবাস করতে থাকেন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর সহযোগিতায় এ হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়ান ফিলজফি-র পঞ্চম ও শেষ খণ্ড রচনা শুরু করেন।
তিনি দুই খণ্ডে তার নিজস্ব দার্শনিক মতবাদের উপর লেখার পরিকল্পনাও করেছিলেন। তার বন্ধুরা ও ছাত্ররা তাঁকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি ভারতীয় দর্শনের উপর তাঁর পাঁচ খন্ডে গ্রন্থ টিকে তাঁর জীবনের মহান উদ্দেশ্য হিসাবে দেখেছিলেন। অধ্যাপক দাশগুপ্তর ইউরোপীয় দর্শন বিষয়ে পড়াশোনা মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র নন্দীর অর্থানুকূল্যে সম্ভব হয়েছিল, তার প্রতিদানস্বরূপ, তিনি নিজের সুবৃহৎ গ্রন্থাগারটি মণীন্দ্রচন্দ্রের নামে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন।[১]
অধ্যাপক সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত বহু বিচিত্র বিষয়ের উপর ইংরাজী ও বাংলা ভাষায় গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার গ্রন্থ সংখ্যা বাইশ। তার মধ্যে পাঁচটি মৌলিক কাব্যগ্রন্থ এবং একটি উপন্যাস। এছাড়া চিত্রকলা, অলঙ্কারশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়েও প্রবন্ধাদি রচনা করেছেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল―
ওয়ারশ ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক দাশগুপ্তকে একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর সাম্মানিক ফেলো মনোনীত করে। তিনি রয়্যাল সোসাইটি অফ লিটারেচারের ফেলো নির্বাচিত হন। প্যারিসের সোসাইটি ডেস অ্যামিস ডু মন্ডে তাঁকে এক বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করে। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত ভারততত্ত্ববিদ লুই রেনউ তাঁর সম্বন্ধে লিখেছিলেন-
"যখন আপনি আমাদের মধ্যে ছিলেন, তখন আপনাকে আমাদের মনে হয়েছিল যেন একজন 'শঙ্কর' বা 'পতঞ্জলি' যিনি পুনর্জন্মে আমাদের মাঝে আবির্ভূত হয়েছেন।"
অধ্যাপক সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও বোম্বে টকিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা হিমাংশু রায়ের ভগিনী হিমানী দেবীকে বিবাহ করেন। তাদের ছয় সন্তান- তিন কন্যা ও তিন পুত্র। দুই লেখিকা মৈত্রেয়ী সেন (১৯১৪-১৯৮৯) ও চিত্রিতা দেবী (গুপ্ত) (১৯১৯-২০০১)। সর্বকনিষ্ঠা কন্যা হলেন সুমিত্রা মজুমদার। পুত্রেরা হলেন - শুভায়ু দাশগুপ্ত, সুগত দাশগুপ্ত ও অধ্যাপক শুভচারী দাশগুপ্ত। সর্বকনিষ্ঠা কন্যা সুমিত্রা মজুমদার ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে গোয়ায় মারা যান। অবসরের পর পারিবারিক অশান্তির জেরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে হিমানী দেবীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয় এবং বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। সেই সময় তাঁর সেবাশুশ্রূষার ভার নেন তার এক ছাত্রী সুরমা মিত্র (১৯০৭-১৯৯৮)। সুরমা ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা ডক্টরেট। অপবাদ ও কলঙ্কের মত অবস্থার পরিপেক্ষিতে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁরা আর্যমতে বিবাহ করেন। স্ত্রী সুরমা বিবাহের পর গবেষণার জন্য লণ্ডনে যান। সেসময় সুরেন্দ্রনাথও এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে যান। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে স্ত্রী সুরমা লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন-এর অধ্যাপিকা হিসাবে যোগ দিলে, সুরেন্দ্রনাথ লখনউ-এ বসবাস করেন। [১]
সদালাপী, সরল ও ভদ্রলোক অধ্যাপক দাশগুপ্ত অসুস্থতার মধ্যেও জীবনের শেষদিন পর্যন্ত ভারতের দর্শন নিয়ে কিছু না কিছু কাজ করে গেছেন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ১৮ই ডিসেম্বর তিনি চিরশান্তি লাভ করেন।