সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর | |
---|---|
![]() মিয়াজিমা দ্বীপ হতে সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের দৃশ্য | |
![]() অন্তর্দেশীয় সাগর এবং এর প্রধান খাড়িসমূহ | |
অবস্থান | প্রশান্ত মহাসাগর |
স্থানাঙ্ক | ৩৪°১০′ উত্তর ১৩৩°২০′ পূর্ব / ৩৪.১৬৭° উত্তর ১৩৩.৩৩৩° পূর্ব |
ধরন | সাগর |
অববাহিকার দেশসমূহ | জাপান |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ২৩,২০৩ কিমি২ (৯,০০০ মা২) |
গড় গভীরতা | ৩৮ মি (১২৫ ফু) |
সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর 瀬戸内海 (সেতো নাইকাই), কখনও কখনও সংক্ষেপে অন্তর্দেশীয় সাগর বলেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে, হলো জাপানের চারটি প্রধান দ্বীপের মধ্যে তিনটি দ্বীপ - হোনশু, শিকোকু এবং কিউশু-কে বিভক্তকারী একটি জলাধার। এটি প্রশান্ত মহাসাগরর সাথে জাপান সাগরকে সংযোগকারী জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ওসাকা উপসাগরের সাথে যুক্ত এবং ওসাকা ও কৌবে সহ কান্সাই অঞ্চলের শিল্পকেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ পথ হিসেবে সংযোগ স্থাপন করেছে। স্যানইয়ো মূল পথ স্থাপনের পূর্বে এটি কিউশু ও কান্সাইয়ের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী প্রধান পথ ছিলো।
ইয়ামাগুচি, হিরোশিমা, ওকায়ামা, হিয়েগো, ওসাকা, ওয়াকায়ামা, কাগাওয়া, এহিমে, তোকুশিমা, ফুকুওকা এবং ওওইতা প্রশাসনিক এলাকার সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের সাথে উপকূল রেখা রয়েছে; এবং হিরোশিমা, ইওয়াকুনি, তাকামাৎসু এবং মাতসুয়ামা শহরও এর পার্শ্বে অবস্থিত।
১৯৫৩ সালে আন্তর্জাতিক জললেখবিজ্ঞান সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের সীমার সংজ্ঞা নিম্নরূপ:[১]
পশ্চিমে : জাপান সাগরের দক্ষিণ-পূর্ব সীমা। পূর্বে : হোনসিউর তাকুরা সাকি (৩৪°১৬'উ) থেকে আওয়াজি দ্বীপের ঐশি হানা হয়ে এই দ্বীপের মধ্য দিয়ে সিও সাকি (৩৪°১১'উ) এবং সিকোকুর ওইসো সাকি পর্যন্ত অঙ্কিত সরল রেখা বরাবর। দক্ষিণে : সিকোকুর সাদা মিসাকি (৩৩°২০'উ) এবং কিউসিউর সেকি সাকিকে সংযোগকারী রেখা।
স্থানীয় সামুদ্রিক আইন (領海及び接続水域に関する法律) অনুযায়ী সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের পরিসীমা হল ১৯,৭০০ কিমি২ (৭,৬০০ মা২)। সেতোচি আইন এবং সেতোচি আইন প্রয়োগকারী অধ্যাদেশ অনুযায়ী সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের পরিসর হল ২১,৮২৭ কিমি২ (৮,৪২৭ মা২)।
গত বরফ যুগে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আজকের তুলনায় কম ছিল। বরফ যুগের পর সমুদ্রের জল চুগোকু পর্বতমালা এবং শিকোকু পর্বতমালার মধ্যবর্তী একটি অববাহিকায় সঞ্চিত হয়ে যেই কাঠামো গঠন করে সেটিই আজ সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর নামে পরিচিত। প্রাচীন কাল থেকে সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর তার উপকূলীয় অঞ্চলগুলির প্রধান পরিবহন পথ হিসাবে কাজ করেছিল, যার মধ্যে বর্তমানের কানসাই অঞ্চল এবং কিউশু দ্বীপও রয়েছে। এটি কোরিয়া এবং চীন সহ অন্যান্য দেশের সাথে জাপানের প্রধান পরিবহন পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এমনকি, নানকাইদো এবং সান'ইয়োডোর মতো প্রধান মহাসড়ক তৈরির পরেও সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর পথ অন্যতম প্রধান পরিবহন পথ ছিল। চীন এবং কোরিয়ার কিছু বিদেশী দূত সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর পথে আগমন করেছিল বলে রেকর্ড রয়েছে।
সেতো অন্তর্দেশীয় সাগরের উপকূলে ভারী শিল্প কারখানার অবস্থান রয়েছে এমন বহু প্রধান শহর রয়েছে, যাদের মধ্যে ওসাকা, কোবে এবং হিরোশিমা মতো শিল্পকেন্দ্রও রয়েছে। ছোট আকারের প্রস্তুতকারী ও শিল্প কারখানার দেখা পাওয়া যায় হোনশুও কুরাশিকি, কুরে, ফুকুইয়ামা ও উবে এবং শিকোকুর সাকাইদে, ইমাবারি এবং নিহামাতে। এখানকার প্রধান শিল্পের মধ্যে রয়েছে ইস্পাত উৎপাদন, যানবাহন তৈরি, জাহাজ নির্মাণ, টেক্সটাইল এবং ১৯৬০'এর দশক হতে তেল পরিশোধন এবং রাসায়নিক পণ্য উত্পাদন। জাপানের বৃহত্তম জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি ইমাবারি শিপবিল্ডিং-এর সদর দপ্তর এবং এর কয়েকটি ইয়ার্ড রয়েছে ইহিমে প্রশাসনিক অঞ্চলের ইমাবাড়িতে। সহনীয় জলবায়ু এবং সুন্দর ভূপ্রাকৃতি জন্য মাছ ধরা, কৃষি এবং পর্যটন হতে এই অঞ্চলে প্রচুর আয় হয়।