সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থা | ফিফা |
---|---|
উপনাম | সৈকত ফুটবল, বিচ ফুটি, বিসাল, ফুটেবোল দে আরিয়া, ফুটেবোল দে প্রাইয়া |
প্রথম খেলা হয়েছে | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর লস অ্যাঞ্জেলেস এ উইল রজার্স বিচ, ১৯৯২ সালে[১] |
বৈশিষ্ট্যসমূহ | |
শারীরিক সংস্পর্শ | হ্যাঁ |
দলের সদস্য | এক সাথে ৫ জন |
ধরন | দলগত খেলা, বল খেলা |
খেলার সরঞ্জাম | ফুটবল |
প্রচলন | |
অলিম্পিক | না |
সৈকতে সকার যা সৈকত ফুটবল,বালু ফুটবল বা বিসাল নামেও পরিচিত অ্যসোসিয়েশন ফুটবল এর এই সংস্করণটি সৈকত -এ বা বালুকা ভূমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই খেলায় শ্যুটিংয়ের লক্ষ্যে দক্ষতা, তৎপরতা এবং নির্ভুলতার উপর জোর দেওয়া হয়।[২]
যদিও সৈকতে অ-আনুষ্ঠানিকভাবে বহু বছর ধরে ফুটবল চালু আছে তবে প্রকৃতপক্ষে সৈকতে সকার পরিচয় দেওয়ার জন্য খেলাটিতে একটি নিয়মাবলী প্রবর্তনের প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৯২ সালে বিচ সকার ওয়ার্ল্ডওয়াইড এর প্রতিষ্ঠাতার দ্বারা এটি তৈরি করা হয়েছিল। এই সংস্থাটি এই ক্রীড়াটির বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আজ অবধি এর বেশিরভাগ টুর্নামেন্টের জন্য দায়বদ্ধ রয়েছে। এটিই এই খেলার প্রধান ভিত্তি যা বর্তমানে সৈকতে সকার হিসাবে পরিচিত এবং তাদের কারণে এই খেলাটি জনপ্রিয়তার সাথে দ্রুত বৃদ্ধিও পেয়েছে। [৩]
নরম-বালির অসমান খেলার পৃষ্ঠের জন্য ফুটবলের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা ঘরানায় খেলার প্রয়োজন পড়ে যাতে তাৎক্ষণিক প্রয়োগ দক্ষতার অনেক বেশি দরকার হয়। একটি সাধারণ ফুটবল মাঠের চেয়ে অনেক ছোট নিবিড় মাঠে খেলোয়াড়দের বালির যে কোনও জায়গা থেকে স্কোর করার সুযোগ রয়েছে। ফলে এক একটি খেলায় গোলের প্রচেষ্টা গড়ে ষাটটির মতো দেখা যায়। প্রতি তিন বা চার মিনিটে গড়ে একটি করে গোল করার হার অনুসারে খেলায় গড়ে মোট এগারটি গোল হতে দেখা যায়। [৪]
বিচ ফুটবল (beasal or futebol de areia) শুরু হয়েছিল ব্রাজিল এ এবং আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে রিও ডি জেনিরোতে। ১৯৫০ সালে প্রথম সরকারীভাব টুর্নামেন্টটি ছোট ছোট ট্যুরিজেনগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল যা ১৯৪০ সাল থেকে ঘটে আসছিল। [৫] বিশাল জনপ্রিয়তা লাভের পরে এটি একটি আন্তর্জাতিক খেলা হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখ্যাত খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে যেমন দুর্দান্ত ফরাসীয় এরিক ক্যান্টোনা, কিংবদন্তি স্প্যানিশ স্ট্রাইকার মিশেল এবং জুলিও সালিনাস এবং ব্রাজিলীয় তারকা রোমারিও, জুনিয়র এবং জিকো প্রমুখের জন্য টেলিভিশন সম্প্রসারণ বিশ্বব্যাপী ১৭০ টিরও বেশি দেশে এই খেলাকে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে।
সৈকতে সকার বিনোদন হিসাবে সারা বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েক বছর ধরে এবং বিভিন্ন ফরম্যাটে খেলেনো হয়ে আসছে। ১৯৯২ সালে এই খেলার আইনগুলি রচনা করা হয়েছিল এবং লস অ্যাঞ্জেলেস এর বিএসডাব্লুডাব্লিউয়ের প্রতিষ্ঠাতা অংশীদারদের দ্বারা একটি পাইলট ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৯৩ সাল নাগাদ মিয়ামি বিচ এ প্রথম পেশাদার সৈকতে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে অংশগ্রহণ করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং ইতালির মতো দলগুলি।
১৯৯৪ সালের এপ্রিলে নেটওয়ার্ক টেলিভিশনে সৈকতে সকারের প্রথম সম্প্রচার করা হয়েছিল রিও ডি জেনিরো এর কোপাচাবানা সৈকতে এ। এই শহরেই ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম সৈকতে সকার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ। আয়োজক দেশ ব্রাজিল জয়লাভ করে সৈকত সকারে প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে। এই টুর্নামেন্টের সাফল্যের ফলে বাণিজ্যিক আগ্রহে মাঠের বিভিন্ন উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে এবং বিশ্বজুড়ে এই খেলার ক্রমবর্ধমান চাহিদায় ১৯৯৬ সাল থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে প্রো বিচ সকার সফর।
প্রথম প্রো বিচ সকার সফরে দুই বছরে দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে মোট ৬০ টি খেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। সে গুলিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য খেলার মাঠে এবং মাঠের বাইরেও নামী ব্যক্তিদের হাজির করা হয়েছিল। এই সফরের ফলে উৎসাহিত হয়ে ইউরোপে ১৯৯৮ সালে ইউরোপীয় প্রো বিচ সকার লীগ তৈরি হয়। এতে পরিকাঠামোগত উন্নতির সাথে সাথে সমস্ত স্তরের পেশাদারিত্বকেও বাড়িয়ে তোলে। ইপিবিএসএল যা এখন ইউরো বিএস লীগ হিসাবে পরিচিত মহাদেশ থেকে প্রবর্তকদের একত্রিত করে এবং মিডিয়া, স্পনসর এবং অনুরাগীদের দাবী পূরণ করেছে। এটি তৈরির মাত্র চার বছর পরেই প্রো বীচ সকার খেলাধুলার জন্য প্রথম বৈধ বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার কাঠামো তৈরির সফল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।