সৈয়দ আহমদ খান | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৭ মার্চ ১৮৯৮ | (বয়স ৮০)
অন্যান্য নাম | স্যার সৈয়দ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | দি মোহামেডান কমেন্ট্রি অন দি হোলি কোরআন (কোরআনের তাফসির). |
সন্তান | সৈয়দ মাহমুদ |
আত্মীয় | রস মাসুদ (নাতি) |
পুরস্কার | স্টার অব ইন্ডিয়া |
যুগ | উনবিংশ শতাব্দি |
ধারা | ইসলামিক এবং রেনেসাঁর দর্শন |
প্রতিষ্ঠান | ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইন্ডিয়ান জুডিশিয়াল ব্রাঞ্চ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রধান আগ্রহ | প্রাগম্যাটিজম, অধিবিদ্যা, ভাষা, নন্দনতত্ত্ব, খ্রিস্টান ও ইসলাম |
উল্লেখযোগ্য অবদান | দ্বি-জাতি তত্ত্ব, আধুনিকতাবাদী ধারণার মুসলিম গ্রহণ |
ভাবগুরু | |
ভাবশিষ্য
| |
স্বাক্ষর | |
আলিগড় আন্দোলন |
---|
Part of a series on |
স্যার সৈয়দ আহমদ খান বাহাদুর, (উর্দু: سر سید احمد خان; ১৭ অক্টোবর ১৮১৭ – ২৭ মার্চ ১৮৯৮, জন্মনাম সৈয়দ আহমেদ তাকভি; উর্দু: سید احمد تقوی),[১] সাধারণত স্যার সৈয়দ নামে সমধিক পরিচিত, ভারতের একজন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক [২][৩][৪]ও রাজনীতিবিদ[৫] যিনি ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতের মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন[৬][৭] ।
যদিও তিনি প্রথমে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষপাতী ছিলেন, পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় মুসলমান জাতীয়তাবাদের অগ্রদূত হয়ে উঠেন এবং তাকে পাকিস্তান আন্দোলনের আধার হিসেবে পরিচিত "দ্বিজাতি তত্ত্ব"-এর জনক হিসেবে মনে করা হয়।[২][৮][৯][১০][১১][১২] আহমদ একটি মুঘল দরবারের সাথে যুক্ত এমন একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি দরবারেই বিজ্ঞান এবং কোরআন অধ্যয়ন করেছিলেন। ১৮৮৯ সালে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক এলএলডি ডিগ্রি প্রদান করে।[১৩][১০][৭]
১৮৩৮ সালে সৈয়দ আহমদ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে চাকরি শুরু করেন এবং ১৮৬৭ সালে একটি স্বল্প এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতের বিচারক হন। তিনি ১৮৭৬ সালে এই পদ থেকে অবসরগ্রহণ করেন। ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের সময় তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পক্ষে ছিলেন এবং ইউরোপীয়দের জীবন রক্ষা করতে তার পদক্ষেপের জন্য পরিচিত ছিলেন[২][৩]। বিদ্রোহের পরে, তিনি "ভারতীয় বিদ্রোহের কারণ" শীর্ষক একটি পুস্তিকা রচনা করেন। এটি ছিল সে সময়ের জন্য একটি সাহসী সমালোচনা, যেখানে তিনি বিভিন্ন ব্রিটিশ নীতির সমালোচনা করেন এবং সেগুলোকে বিদ্রোহের জন্য দায়ী করেন।
পশ্চাৎপদ মুলমানদের উচ্চ শিক্ষা বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজন উপলব্ধি করে তিনি বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তিনি আধুনিক স্কুল ও জার্নাল প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলিম ব্যবসায়ীদের সংগঠনও করেন[১৪]। এই লক্ষ্যে তিনি ১৮৫৮ সালে মোরারাদাবাদে একটি বিদ্যালয় খোলেন। একই ভাবে তিনি ১৮৬৩ সালে গাজিপুরে ভিক্টোরিয়া স্কুল এবং ১৮৬৪ সালে গাজীপুরে ‘আলিগড় বৈজ্ঞানিক সমিতি’ যার উদ্দেশ্য ছিল পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বই ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা[১৫]। তিনি ১৮৭৫ সালে মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে।[১৬] এছাড়া তিনি ‘তাহজিব-উল-আখলাক’ নামে একটি উর্দু পত্রিকা প্রকাশ করেন। তদুপরি তিনি কমিটি ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ লার্নিং নামে একটি সংস্থা স্থাপন করেন। তার কর্মজীবনে, সৈয়দ আহমদ খান মুসলিমদের বিট্রিশ রাজের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে বারবার আহ্বান জানান এবং ভারতীয় মুসলিমদের জন্য উর্দুকে যোগাযোগের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার প্রচার করেন। তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসেরও সমালোচনা করেন।[২]
তিনি পাকিস্তানে এবং ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে একটি শক্তিশালী উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেন, বিশেষ করে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং আল্লামা ইকবালের মতো কর্মীদের জন্য। ইসলামের যৌক্তিক ঐতিহ্যের প্রতি তার সমর্থন এবং কোরআনকে বিজ্ঞান ও আধুনিকতার সাথে সংযোগ করতে বিস্তৃত, মৌলিক পুনঃব্যাখ্যার প্রচার এখনও বৈশ্বিক ইসলামি সংস্কারের উপর প্রভাব ফেলে। পাকিস্তানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ভবন তার নাম বহন করে। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর স্যার সৈয়দ আহমদ খানের ২০০তম জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করে অনেক উৎসাহের সঙ্গে। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম ভারতবর্ষে মুসলমানদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দেয়। এর প্রভাবে প্রভাবান্বিত এই মুসলমান বুদ্ধিজীবীরাই পরবর্তীতে আলিগড় আন্দোলনের সূচনা করেন যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করা। তবে এই আন্দোলন গোঁড়া মৌলবি ও মােল্লাদের বিরােধিতা সম্মুখীন হয়।
নিজের বিভিন্ন উদ্যোগ ও বৃটিশদের পৃষ্ঠপোষকতার ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে সৈয়দ আহমদ ভারতবর্ষের জাতীয় নেতায় পরিণত হন। ১৮৭৮ সালে লর্ড লিটন তাঁকে রাজকীয় আইনসভায় মনোনয়ন দান করেন। ১৮৮৭ সালে লর্ড ডাফরিন তাঁকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। ১৮৮৮ সালে বৃটিশ সরকার তার ‘নাইটহুড’ প্রদান করে। এর পর থেকে তিনি স্যার সৈয়দ আহমদ; হিসাবে পরিচিত হতে থাকেন। ১৮৯৮ সালের ২৭ মার্চ ভারতে মুসলিম জাগরণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব স্যার সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু হয়৷[১৭]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; Shirali
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; cybercity
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি