সৈয়দ নুরুল হাসান | |
---|---|
নবম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিক্ষা, সমাজকল্যাণ এবং সংস্কৃতি | |
কাজের মেয়াদ ২৪ মার্চ ১৯৭২ – ২৪ মার্চ ১৯৭৭ | |
পূর্বসূরী | সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় |
উত্তরসূরী | প্রতাপ চন্দ্র চন্দ্র |
১২তম সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূত | |
কাজের মেয়াদ ১৯৮৩ – ১৯৮৬ | |
পূর্বসূরী | ভি.কে. আহুজা |
উত্তরসূরী | টি.এন. কৌল |
১২তম পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যপাল | |
কাজের মেয়াদ ১২ আগস্ট ১৯৮৬ – ১ মার্চ ১৯৮৯ | |
পূর্বসূরী | উমাশঙ্কর দীক্ষিত |
উত্তরসূরী | টি. ভি. রাজেশ্বর |
কাজের মেয়াদ ৬ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ – ১২ জুলাই ১৯৯৩ | |
পূর্বসূরী | টি.ভি.রাজেশ্বর |
উত্তরসূরী | বি.সত্যনারায়ণ রেড্ডি |
৩২তম উড়িষ্যার রাজ্যপাল | |
কাজের মেয়াদ ২০ নভেম্বর ১৯৮৮ – ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | বিশ্বম্ভর নাথ পাণ্ডে |
উত্তরসূরী | যজ্ঞ দত্ত শর্মা |
কাজের মেয়াদ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ – ৩১ মে ১৯৯৩ | |
পূর্বসূরী | যজ্ঞ দত্ত শর্মা |
উত্তরসূরী | বি. সত্যনারায়ণ রেড্ডি |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | লখনউ, ব্রিটিশ ভারতের প্রেসিডেন্সি ও প্রদেশসমূহ | ২৬ ডিসেম্বর ১৯২১
মৃত্যু | ১২ জুলাই ১৯৯৩ কলকাতা, ভারত | (বয়স ৭১)
দাম্পত্য সঙ্গী | নওয়াবজাদি খুরশিদ লাকা বেগম সাহিবা |
পেশা | ইতিহাসবিদ, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক |
সৈয়দ নুরুল হাসান (২৬ ডিসেম্বর ১৯২১ - ১২ জুলাই ১৯৯৩) ছিলেন ভারতীয় ইতিহাসবিদ এবং ভারত সরকার-এ একজন প্রবীণ কূটনৈতিক ব্যক্তি। রাজ্যসভার একজন সদস্য, তিনি ছিলেন ভারত সরকারের শিক্ষা, সামজ কল্যাণ এবং সংস্কৃতি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী (স্বাধীন ভারপ্রাপ্ত) (১৯৭১-১৯৭৭) এবং পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা রাজ্যের রাজ্যপাল (১৯৮৬-১৯৯৩)। [১][২][৩]
সৈয়দ নুরুল হাসান ভারতের অঙ্গরাজ্য উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউ শহরে জন্মেছেন। তিনি সংযুক্ত অঙ্গরাজ্যের এক তালুকদারি (মদদ-ই মা'শ) পরিবারভুক্ত ছিলেন। তিনি সৈয়দ আবদুল হাসান এবং নূর ফতিমা বেগমের সন্তান ছিলেন। তার আব্বা ছিলেন জেলা সেটলমেন্ট অফিসার এবং পরবর্তীকালে সংযুক্ত অঙ্গরাজ্যে কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের সভাপতি ছিলেন। তার দাদামশাই (মাতামহ) স্যার সৈয়দ ওয়াজির হাসান, অযোধ্যা আদালতের প্রধান মাননীয় প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবং মুসলিম লিগের অতি পরিচিত সভাপতি ছিলেন, যিনি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। তার দুজন মামার একজন ছিলেন প্রখ্যাত মার্কসবাদী চিন্তানায়ক সৈয়দ সাজ্জাদ জাহির এবং অন্যজন ছিলেন মন্ত্রী এবং দেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আলি জাহির। রামপুরের নবাব রাজা আলি খান-এর বড়ো নবাবজাদি খুরশিদ লাকা বেগম সাহেবার সঙ্গে তার শাদি হয়, পূর্ববর্তী সংযুক্ত অঙ্গরাজ্যে ১৫ বার তোপ ধ্বনিতে সম্পন্ন হয়। [৪] তাদের দুই সন্তান, পুত্র সৈয়দ সিরাজুল হাসান হলেন একজন প্রখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের ডাইরেক্টর পদ থেকে অবসর নিয়েছেন এবং কন্যা সায়িদা তালাৎ ফতিমা হাসান, যিনি আমেরিকায় একজন অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী। [৪]
হাসান সাহেব সুলতান উল মাদারিস, লখনউ[[৫] শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। তারপর তিনি লা মার্টিনিয়ার বয়েজ কলেজ, কলকাতায় চলে যান।[[৬] তিনি তার স্নাতক শিক্ষাক্রম মুইর সেন্ট্রাল কলেজ, এলাহাবাদ থেকে সম্পূর্ণ করেন, যেখানে তিনি অধ্যাপক আর পি ত্রিপাঠির একজন ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি নিউ কলেজ, অক্সফোর্ড চলে যান এবং সেখানে তিনি এম এ এবং ভারতীয় ইতিহাসে ডি ফিল সম্পূর্ণ করেন। অক্সফোর্ডে তিনি অক্সফোর্ড ইন্ডিয়া মজলিসের সভাপতি ছিলেন।[[৭]
স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, লন্ডন-এর লেকচারার থেকে সৈয়দ নুরুল হাসান তার শিক্ষাগত জীবনধারা শুরু করেন। আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগে তিনি অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত হন, যে বিভাগে তিনি সর্বোচ্চ পদেও ছিলেন। প্রথম দিকের বছরগুলোতে, তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে মহান অবদান রেখেছেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং তারপর সভাপতি হয়েছিলেন। তিনি লন্ডনের দ্য রয়াল হিস্ট্রি সোসাইটি এবং দ্য রয়াল এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো ছিলেন।
সৈয়দ নুরুল হাসান বামপন্থী বিশ্বাস মেনে চলার সঙ্গে একজন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী ছিলেন; তিনি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন, ১৯৭১ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত ভারত সরকারের শিক্ষা, সমাজ কল্যাণ এবং সংস্কৃতি দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বে) ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ, নয়াদিল্লি। নয়াদিল্লির ভারতীয় সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা পর্ষদ (আইসিএসএসআর)-এর রক্ষণাবেক্ষণে সংগঠিত ২৭টা সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা তৈরির পিছনে তিনিও একজন স্থপতি ছিলেন; উদাহরণস্বরূপ, সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস, কলকাতা (১৯৭৩)।[[৮] তার মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে, সংসদের আইন মোতাবেক, রামপুর রাজা লাইব্রেরির ব্যয়ভার বহন ও পরিচালনা ভারত সরকারে ন্যস্ত হয়েছিল। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত তিনি কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর), নয়াদিল্লির সহ-সভাপতি ছিলেন।[[৯]
শিক্ষাজগতে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি বামপন্থী কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জীবনধারা উন্নয়ন প্রকল্পে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা নিয়েছিলেন। হাই স্কুল, জুনিয়র কলেজ এবং প্রাক-স্নাতক স্তরের শিক্ষায় ১০+২+৩ পদ্ধতি আরম্ভ করার ক্ষেত্রেও তিনি খুবই সহায়তা করেছিলেন। সংসদে যে বিষয়ের বিন্যাসে তিনি মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন তা হল, "সমতার লক্ষ্যে: ভারতীয় মহিলাদের অবস্থা সম্পর্কে কমিটির রিপোর্ট (১৯৭৪-৭৫)", যেটা ভারত সরকার দ্বারা নিয়োজিত কমিটি পেশ করেছিল।[[১০] যে রিপোর্ট দেখেই দিল্লির সেন্টার ফর উওমেন্স ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল। তিনি ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন।[[১১] তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজ্যপাল ছিলেন। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ওডিশারও রাজ্যপাল ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ, কলকাতা (১৯৯৩)। তিনি প্রতিষ্ঠান সোসাইটির প্রথম সভাপতি ছিলেন।[[১২]
১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ৭১ বছর বয়সে সৈয়দ নুরুল হাসান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালীন অবস্থায় কিডনি অকেজো হয়ে কলকাতায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
দ্য নুরুল হাসান এডুকেশন ফাউন্ডেশন তার নামেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।[[১২]
SHRI M. M. RAJENDRAN
NAME OF THE GOVERNORS OF Odisha