স্টিভ জবসড্যানি বয়েল পরিচালিত ও অ্যারন সরকিন রচিত ২০১৫ সালের মার্কিন জীবনীনির্ভর নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি ব্রিটিশ-মার্কিন যৌথ প্রযোজনায় ওয়াল্টার আইজ্যাকসন রচিত ২০১১ সালের জীবনীগ্রন্থ এবং সর্কিনের সাক্ষাৎকার অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। এতে অ্যাপল ইঙ্ক.-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরের জীবনী চিত্রিত হয়েছে। জবস চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাইকেল ফাসবেন্ডার, এবং অন্যান্য পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট, সেথ রোগেন, ক্যাথরিন ওয়াটারস্টন, মাইকেল স্টুলবার্গ, ও জেফ ড্যানিয়েলস।
সনি পিকচার্স ২০১১ সালের অক্টোবরে আইজ্যাকসনের বইয়ের স্বত্ব লাভ করে এবং এটি চলচ্চিত্রে উপযোগকরণের জন্য অ্যারন সরকিনকে নিয়োগ দেয়।[৪][৫] ২০১১ সালের নভেম্বরে জর্জ ক্লুনি এবং নোয়া ওয়াইল (যিনি এর আগে ১৯৯৯ সালে টিভি চলচ্চিত্র পাইরেটস অফ সিলিকন ভ্যালি-তে জবস চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন) নাম ভূমিকার জন্য বিবেচনা করা হচ্ছিল।[৬] ২০১২ সালের মে মাসে সরকিন আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেন যে তিনি এই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখছেন,[৭] এবং ঐতিহাসিক নির্ভুলতার জন্য অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াকের সাহায্য নেওয়া হয়।[৮] পরে সরকিন জানান যে তার চিত্রনাট্যটিতে জবসের জীবনের ১৬ বছরের তিনটি ৩০ মিনিট দীর্ঘ দৃশ্য থাকবে।[৯][১০][১১]
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সরকিনের চিত্রনাট্য লেখা শেষ হওয়ার পরে ডেভিড ফিঞ্চারের সাথে এই চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য আলোচনার মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি শুরু হয়।[১২] ফিঞ্চার ক্রিশ্চিয়ান বেলকে জবস চরিত্রের জন্য নির্বাচন করেন।[১৩] তবে, ২০১৪ সালের এপ্রিলে চুক্তি বিষয়ক দ্বন্দ্বের কারণে ফিঞ্চার প্রকল্পটি থেকে বেরিয়ে যান।[১৪]ড্যানি বয়েলকে তখন পরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়, এবং নাম ভূমিকার জন্য লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সাথে আলোচনা করা হয়।[১৫] অক্টোবর মাসে ডিক্যাপ্রিও এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যান, এবং এরপর বেল, ম্যাট ডেমন, বেন অ্যাফ্লেক এবং ব্র্যাডলি কুপারকে এই চরিত্রের জন্য বিবেচনা করা হয়।[১৬] সরকিন সেই মাসে একটি সাক্ষাত্কারে প্রকাশ করেছিলেন যে বেলকে আরও একবার এই ভূমিকার জন্য বাছাই করা হয়েছিল। ওজনিয়াক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেথ রোগেনের সাথে আলোচনা করা হয় এবং জেসিকা চ্যাস্টেইনকে একটি চরিত্রের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল।[১৭] আইকে বারিনহোল্টজ প্রকাশ করেন যে তিনি ওজনিয়াকের ভূমিকার জন্য অডিশন দিয়েছিলেন।[১৮] নভেম্বর মাসে বেল আবার এই প্রকল্পটি ছেড়ে চলে যান,[১৯]মাইকেল ফাসবেন্ডার তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য অগ্রণী ছিলেন। সনি পিকচার্স প্রকল্পটি ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে স্কার্লেট জোহ্যানসনকে একটি ভূমিকার জন্য বারবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।[২০][২১] পরে ইউনিভার্সাল পিকচার্স চলচ্চিত্রটি অধিগ্রহণ করে।[২২]
২০১৫ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর টেলুরিড চলচ্চিত্র উৎসবে স্টিভ জবস চলচ্চিত্রটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়।[২৩] ২০১৫ সালের ৯ই অক্টোবর নিউ ইয়র্ক সিটি এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে চলচ্চিত্রটি সীমিত আকারে মুক্তি দেওয়া হয়। চলচ্চিত্রটি ২০১৫ সালের ২৩শে অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেশব্যাপী মুক্তি পায়।[২৪][২৫] চলচ্চিত্রটি ২০১৫ সালের ১৩ই নভেম্বর যুক্তরাজ্যে মুক্তির এক মাস আগে বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শিত হয়েছিল।[২৬]
স্টিভ জবস ২০১৬ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ব্লু-রে এবং ডিভিডিতে প্রকাশিত হয়। ব্লু-রে ও ডিভিডিতে বয়েল, সারকিন এবং এলিয়ট গ্রাহামের ধারাভাষ্য রয়েছে। এসব ফরম্যাটে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সময়কাল সম্পর্কিত ৪৪ মিনিটের নির্মাণ-প্রামাণ্যচিত্র ইনসাইড জবস: দ্য মেকিং অব স্টিভ জবস রয়েছে।[২৭][২৮][২৯]